চিঠিপত্র : ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতন হোন

ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতন হোন

৪ ফেব্রুয়ারি ছিল বিশ্ব ক্যানসার দিবস। ধূমপান, শারীরিক অনুশীলন না করা, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। সামাজিক ট্যাবু, অসচেতনতা, চিকিৎসা সুবিধার অপ্রতুলতা, উচ্চ ব্যয় ইত্যাদি ক্যানসার চিকিৎসাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যনসার শনাক্তকরণের মাধ্যমে আগামী ১০ বছরে এর হার অর্ধেকে কমিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের নারীরা যে দুটি ক্যানসারে বেশি ভোগে সেগুলো হলো- জরায়ু মুখের ক্যানসার ও স্তন ক্যানসার। পুরুষের ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যানসার। তিনটি ক্যানসারই সচেতনতা ও প্রাথমিক শনাক্তকরণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রজনন স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ, ধূমপান বর্জন করে এই ক্যান্সারগুলোর প্রবণতা অনেকখানি কমিয়ে ফেলা যায়। তাই সবার সচেতন অংশগ্রহণ প্রয়োজন। নিজে জানতে হবে, অপরকেও জানাতে হবে।

ক্যানসার ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন একটি সমন্বিত নীতিমালা, দক্ষ জনবল, ওষুধের সহজলভ্যতা, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং উদার বিনিয়োগ। জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসার নিবন্ধন প্রণয়ন, ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, দক্ষ জনবল সৃষ্টি, মৌলিক গবেষণা পরিচালনা এবং যথাযথ চিকিৎসাপদ্ধতি বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন। এই নীতিমালার আলোকে আমাদের দেশের ক্যানসার চিকিৎসা এগিয়ে নিতে হবে।

মো. আবদিম মুনিব

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

পাটশিল্প রক্ষা করুন

বাংলার ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে পাটশিল্প। পরিবেশবান্ধব পাটজাতদ্রব্য বিশ্ববাজারে সমাদৃত ছিল একসময়। পাটশিল্পের যে সমৃদ্ধির গল্প জনশ্রুতি ছিল, সে সমৃদ্ধির জোয়ারে ভাটা পড়েছে কালের বিবর্তনে।

নব্বই-এর দশকে ১২ লাখ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন হতো। কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৭ বা ৮ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। জিডিপির প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে যে পাটশিল্পের ভূমিকা ছিল অনন্য সেই পাটশিল্পের অবস্থা এখন নাজুক। পাটপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা কিছু বাজার হারিয়ে ফেলেছি। নতুন বাজারও তৈরি হচ্ছে না। কয়েক বছর আগেও পাটপণ্য রপ্তানির ৩০-৩৫ শতাংশ যেত ভারতে। সেই বাজারে অ্যান্টিডাম্পিং শুল্কারোপ হওয়ায় রপ্তানি কমে গেল। আমাদের পাটপণ্যের আরেক বড় বাজার ইরানে রপ্তানি করতে পারছি না। দেশটির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমরা ডলারে লেনদেন করতে পারি না। সুদান আরেকটি বড় বাজার হলেও সেখানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে। ফলে রপ্তানি বন্ধ।

পাটশিল্প আরেক দফা ধাক্কা খায় যখন ২০২০ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরিবেশবান্ধব পাটজাত দ্রব্যের পরিবর্তে আমরা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে অভ্যস্ত হচ্ছি, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। যে দেশের বিজ্ঞানীরা পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কার করতে পারেন, যে দেশকে বহির্বিশ্ব সোনালি আঁশের দেশ হিসেবে চেনে, সেই দেশে ফের পাটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা কঠিন নয়। বাইরের দুনিয়ায় যখন পরিবেশসম্মত পণ্য হিসেবে পাটের ব্যবহার বেড়েছে, তখন বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে কেন? পাটের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে চাই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন। পাটের উৎপাদক, পাটকল মালিক, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার স্বার্থ সমুন্নত রেখে পাট খাতকে এগিয়ে নিতে হবে।

মো. জওয়াদুল করিম

আরও খবর

শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২২ মাঘ ১৪২৭, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চিঠিপত্র : ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতন হোন

ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতন হোন

৪ ফেব্রুয়ারি ছিল বিশ্ব ক্যানসার দিবস। ধূমপান, শারীরিক অনুশীলন না করা, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। সামাজিক ট্যাবু, অসচেতনতা, চিকিৎসা সুবিধার অপ্রতুলতা, উচ্চ ব্যয় ইত্যাদি ক্যানসার চিকিৎসাকে বাধাগ্রস্ত করছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যনসার শনাক্তকরণের মাধ্যমে আগামী ১০ বছরে এর হার অর্ধেকে কমিয়ে আনা সম্ভব। বাংলাদেশের নারীরা যে দুটি ক্যানসারে বেশি ভোগে সেগুলো হলো- জরায়ু মুখের ক্যানসার ও স্তন ক্যানসার। পুরুষের ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যানসার। তিনটি ক্যানসারই সচেতনতা ও প্রাথমিক শনাক্তকরণের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রজনন স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ, ধূমপান বর্জন করে এই ক্যান্সারগুলোর প্রবণতা অনেকখানি কমিয়ে ফেলা যায়। তাই সবার সচেতন অংশগ্রহণ প্রয়োজন। নিজে জানতে হবে, অপরকেও জানাতে হবে।

ক্যানসার ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন একটি সমন্বিত নীতিমালা, দক্ষ জনবল, ওষুধের সহজলভ্যতা, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং উদার বিনিয়োগ। জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসার নিবন্ধন প্রণয়ন, ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, দক্ষ জনবল সৃষ্টি, মৌলিক গবেষণা পরিচালনা এবং যথাযথ চিকিৎসাপদ্ধতি বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন। এই নীতিমালার আলোকে আমাদের দেশের ক্যানসার চিকিৎসা এগিয়ে নিতে হবে।

মো. আবদিম মুনিব

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

পাটশিল্প রক্ষা করুন

বাংলার ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে পাটশিল্প। পরিবেশবান্ধব পাটজাতদ্রব্য বিশ্ববাজারে সমাদৃত ছিল একসময়। পাটশিল্পের যে সমৃদ্ধির গল্প জনশ্রুতি ছিল, সে সমৃদ্ধির জোয়ারে ভাটা পড়েছে কালের বিবর্তনে।

নব্বই-এর দশকে ১২ লাখ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন হতো। কিন্তু বর্তমানে মাত্র ৭ বা ৮ লাখ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। জিডিপির প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে যে পাটশিল্পের ভূমিকা ছিল অনন্য সেই পাটশিল্পের অবস্থা এখন নাজুক। পাটপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা কিছু বাজার হারিয়ে ফেলেছি। নতুন বাজারও তৈরি হচ্ছে না। কয়েক বছর আগেও পাটপণ্য রপ্তানির ৩০-৩৫ শতাংশ যেত ভারতে। সেই বাজারে অ্যান্টিডাম্পিং শুল্কারোপ হওয়ায় রপ্তানি কমে গেল। আমাদের পাটপণ্যের আরেক বড় বাজার ইরানে রপ্তানি করতে পারছি না। দেশটির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আমরা ডলারে লেনদেন করতে পারি না। সুদান আরেকটি বড় বাজার হলেও সেখানে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলছে। ফলে রপ্তানি বন্ধ।

পাটশিল্প আরেক দফা ধাক্কা খায় যখন ২০২০ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত সব পাটকল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরিবেশবান্ধব পাটজাত দ্রব্যের পরিবর্তে আমরা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে অভ্যস্ত হচ্ছি, যা কোনভাবেই কাম্য নয়। যে দেশের বিজ্ঞানীরা পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কার করতে পারেন, যে দেশকে বহির্বিশ্ব সোনালি আঁশের দেশ হিসেবে চেনে, সেই দেশে ফের পাটের সোনালি দিন ফিরিয়ে আনা কঠিন নয়। বাইরের দুনিয়ায় যখন পরিবেশসম্মত পণ্য হিসেবে পাটের ব্যবহার বেড়েছে, তখন বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে কেন? পাটের পুনরুজ্জীবন ঘটাতে চাই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন। পাটের উৎপাদক, পাটকল মালিক, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার স্বার্থ সমুন্নত রেখে পাট খাতকে এগিয়ে নিতে হবে।

মো. জওয়াদুল করিম