মার্চের মধ্যে বসছে ৪ হাজার ইএফডি

চলতি বছরের মার্চের মধ্যে দেশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৪ হাজার ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস (ইএফডি) বসানো হবে। জুনের মধ্যে বসবে ১০ হাজার মেশিন। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ইএফডিএমএস-এর প্রথম লটারি ড্র অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (নীরিক্ষা ও গোয়েন্দা) জাকিয়া সুলতানা বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪৭১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি ও এসডিসি মেশিন বসানো হয়েছে। ইএফডি উদ্বোধনের পর প্রথম পর্যায়ে ১১৭টি, দ্বিতীয় পর্যায় ১০৬১টি, তৃতীয় পর্যায়ে ২৯৩টিসহ এক হাজার ৪৭১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি ও এসডিসি মেশিন বসানো হয়েছে। তবে আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার ইএফডি ও এসডিসি মেশিন স্থাপন করা হবে।

ইএফডি হলো আধুনিক হিসাবযন্ত্র। এটি ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রারের (ইসিআর) উন্নত সংস্করণ। এনবিআর বলছে, এ যন্ত্র বসানো হলে প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত লেনদেন বা বিক্রির তথ্য জানতে পারবে এনবিআর। এরমধ্যে কত অংশ ভ্যাট তা জানা যাবে। ফলে কর ফাঁকি বন্ধ হবে এবং আদায় বাড়বে।

এছাড়া ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) ব্যবহার করে দোকান থেকে কেনাকাটায় লটারির প্রথম ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রথম পুরস্কার হিসেবে কর মুক্ত এক লাখ টাকা পেয়েছেন ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা পূর্বের ০২২২১এঊগগডঅক০৩৯ নাম্বার কুপন। গতকাল সকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে এই লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত সারাদেশের প্রায় দেড় হাজার ইএফডি মেশিনে কেনাকাটা করে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ১১টি কুপন তৈরি হয়। এদের মধ্য থেকে ১০১টি কুপন নির্বাচিত করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

লটারিতে প্রথম পুরস্কার হিসেবে এক লাখ টাকা, ২য় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা (৫টি কুপন)। এভাবে ১০ হাজার টাকার (৯৪টি কূপন) স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম লটারি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, একটি অনাস্থার জায়গা ছিল দীর্ঘদিন ধরে। জনগণ যে ভ্যাট দিচ্ছেন তার টাকা সরকারি কোষাগারে ঠিকমতো জমা হচ্ছে কিনা। এই অনাস্থা ইএফডি মেশিন আসার পর কেটে গেছে। এই ইএফডি নিয়ে অনেক দূরে যাব। জনগণের কাছে আমাদের অনুরোধ আপনারা ভ্যাট দিন। আমরা আপনাদের ভ্যাট প্রদান সহজ করে দিব। যত বেশি ভ্যাট আসবে, তত বেশি ভ্যাট হার কমাতে পারব। তত ভ্যাটের লোড কমাতে পারব। পর্যায়ক্রমে ভ্যাট প্রদানকে কষ্টের বিষয় না করে আনন্দের বিষয় করতে চাই।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, লটারির ড্র ঘোষণার ৩ কর্মদিবসের মধ্যে কুপনের নম্বর রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ও জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হবে। যাদের কাছে কুপনগুলো আছে, তাদের যেকোন কমিশনারেটে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পুরস্কার প্রাপ্তির আবেদন করতে হবে। এছাড়া পুরস্কার পেতে কোন সমস্যা হলে ০১৯৬৩৬৩৬৫৫৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা শহরেই ৬০ হাজারেরও বেশি হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং মিষ্টি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর অনলাইন লেনদেন ট্র্যাক করতে এবং খুচরা দোকান থেকে ভ্যাট সংগ্রহ নিশ্চিত করতে দুই লাখ ইএফডি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর। এগুলো বসানোর পর বিদ্যমান ইসিআরগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। ২০০৮ সালে এনবিআর ১৩ ধরনের ব্যবসায়ের জন্য ইসিআর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিল। এগুলো হচ্ছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ফাস্টফুড শপ, মিষ্টান্ন, গহনা, বিউটি সেলুন, ফার্নিচার শপ, আরএমজি শপ বা বুটিক শপ, ইলেকট্রনিক্স শপ, কমিউনিটি সেন্টার, সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান শপিংমল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সাধারণ দোকান বা সুপার শপ, পাইকারি এবং বড় খুচরা দোকান।

শনিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৩ মাঘ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

মার্চের মধ্যে বসছে ৪ হাজার ইএফডি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

চলতি বছরের মার্চের মধ্যে দেশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৪ হাজার ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস (ইএফডি) বসানো হবে। জুনের মধ্যে বসবে ১০ হাজার মেশিন। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ইএফডিএমএস-এর প্রথম লটারি ড্র অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (নীরিক্ষা ও গোয়েন্দা) জাকিয়া সুলতানা বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪৭১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি ও এসডিসি মেশিন বসানো হয়েছে। ইএফডি উদ্বোধনের পর প্রথম পর্যায়ে ১১৭টি, দ্বিতীয় পর্যায় ১০৬১টি, তৃতীয় পর্যায়ে ২৯৩টিসহ এক হাজার ৪৭১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি ও এসডিসি মেশিন বসানো হয়েছে। তবে আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার ইএফডি ও এসডিসি মেশিন স্থাপন করা হবে।

ইএফডি হলো আধুনিক হিসাবযন্ত্র। এটি ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রারের (ইসিআর) উন্নত সংস্করণ। এনবিআর বলছে, এ যন্ত্র বসানো হলে প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত লেনদেন বা বিক্রির তথ্য জানতে পারবে এনবিআর। এরমধ্যে কত অংশ ভ্যাট তা জানা যাবে। ফলে কর ফাঁকি বন্ধ হবে এবং আদায় বাড়বে।

এছাড়া ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) ব্যবহার করে দোকান থেকে কেনাকাটায় লটারির প্রথম ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রথম পুরস্কার হিসেবে কর মুক্ত এক লাখ টাকা পেয়েছেন ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা পূর্বের ০২২২১এঊগগডঅক০৩৯ নাম্বার কুপন। গতকাল সকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে এই লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত সারাদেশের প্রায় দেড় হাজার ইএফডি মেশিনে কেনাকাটা করে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ১১টি কুপন তৈরি হয়। এদের মধ্য থেকে ১০১টি কুপন নির্বাচিত করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

লটারিতে প্রথম পুরস্কার হিসেবে এক লাখ টাকা, ২য় পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা (৫টি কুপন)। এভাবে ১০ হাজার টাকার (৯৪টি কূপন) স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম লটারি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, একটি অনাস্থার জায়গা ছিল দীর্ঘদিন ধরে। জনগণ যে ভ্যাট দিচ্ছেন তার টাকা সরকারি কোষাগারে ঠিকমতো জমা হচ্ছে কিনা। এই অনাস্থা ইএফডি মেশিন আসার পর কেটে গেছে। এই ইএফডি নিয়ে অনেক দূরে যাব। জনগণের কাছে আমাদের অনুরোধ আপনারা ভ্যাট দিন। আমরা আপনাদের ভ্যাট প্রদান সহজ করে দিব। যত বেশি ভ্যাট আসবে, তত বেশি ভ্যাট হার কমাতে পারব। তত ভ্যাটের লোড কমাতে পারব। পর্যায়ক্রমে ভ্যাট প্রদানকে কষ্টের বিষয় না করে আনন্দের বিষয় করতে চাই।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, লটারির ড্র ঘোষণার ৩ কর্মদিবসের মধ্যে কুপনের নম্বর রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ও জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হবে। যাদের কাছে কুপনগুলো আছে, তাদের যেকোন কমিশনারেটে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পুরস্কার প্রাপ্তির আবেদন করতে হবে। এছাড়া পুরস্কার পেতে কোন সমস্যা হলে ০১৯৬৩৬৩৬৫৫৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা শহরেই ৬০ হাজারেরও বেশি হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং মিষ্টি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর অনলাইন লেনদেন ট্র্যাক করতে এবং খুচরা দোকান থেকে ভ্যাট সংগ্রহ নিশ্চিত করতে দুই লাখ ইএফডি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর। এগুলো বসানোর পর বিদ্যমান ইসিআরগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। ২০০৮ সালে এনবিআর ১৩ ধরনের ব্যবসায়ের জন্য ইসিআর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছিল। এগুলো হচ্ছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ফাস্টফুড শপ, মিষ্টান্ন, গহনা, বিউটি সেলুন, ফার্নিচার শপ, আরএমজি শপ বা বুটিক শপ, ইলেকট্রনিক্স শপ, কমিউনিটি সেন্টার, সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান শপিংমল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সাধারণ দোকান বা সুপার শপ, পাইকারি এবং বড় খুচরা দোকান।