জন্মসনদের শর্তজুড়ে দেয়ায় উপবৃত্তি উত্তোলনে বিড়ম্বনা

নিয়মিত শিক্ষার্থী তালিকায় নাম, উপস্থিতির হার, পরীক্ষায় পাস হওয়ার শর্তে প্রাথমিকে উপবৃত্তি পেত শিক্ষার্থীরা। প্রথমে বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র, পরে মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্টে অভিভাবকের (মা) নামে রেজিস্ট্রিকৃত সিম শর্তের পর এবার জন্মসনদ শর্ত পূরণে অভিভাবকরা পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়।

করোনা মহামারীর এ সময়ে পদে পদে হয়রানি, অর্থ ব্যয়ে অভিভাবক-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে এসব নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে পোর্টালে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ডাটা এন্ট্রি শতভাগ না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে চতুর্থ কিস্তির এ সময়ে বাদ পড়তে পারে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর একটা বড় অংশ।

সম্প্রতি উপবৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর জন্ম সনদ নম্বরটি নতুন শর্তে যুক্ত হয়। এবার অভিভাবক শিক্ষক পড়েন আরেক ভোগান্তিতে। করোনা চলাকালে বন্ধ থাকা বিদ্যালয়ে অবস্থান করে অভিভাবকদের সঙ্গে ফোনে কন্ট্রাক্ট করে বিষয়টি জানালে তারা আবার ছুটছেন জন্ম সনদ তুলতে। পৌরসভার/ইউপি’র আইটি সেন্টারে গিয়ে তারা খাচ্ছেন চরম ধাক্কা। সন্তানের জন্ম সনদ নিতে গিয়ে লাগছে তার নিজের জন্ম সনদ, জমির কাগজপত্র অথবা হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদের কপি, ছেলেমেয়ের টিকা কার্ড, বিদ্যালয়ের প্রধানের প্রত্যয়ন, অভিভাবকদের জন্য রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের প্রত্যয়নপত্র। আর এসব জোগাড়ে অভিভাবকদের রীতিমতো যুদ্ধে নামতে হয়েছে।

শিক্ষকরা জানান, শিক্ষার্থীদের ২০২০ সালের শেষ নয় মাসের উপবৃত্তি বকেয়া পড়েছে। সেই বকেয়া পেতে সরকারি নির্দেশনায় অভিভাবকদের সনদ সংগ্রহে এ যুদ্ধে নামতে হচ্ছে। অরণখোলা ইউনিয়নের কাকরাইদ এলাকার সুলতান জানান, অভিভাবক পর্যায়ে এ নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। যার দুই সন্তান প্রাথমিকের শিক্ষার্থী তার চারজনের স্বাভাবিকভাবে জন্ম সনদ তুলতে ডাক্তারের প্রত্যয়ন, ইউনিয়নের আইটি সেন্টারে মিলে গড়ে প্রতিটি ৫-৭শ টাকা করে ব্যয় হচ্ছে। মধুপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মদন গোপাল আঙ্গিনাপাড়ার দেবোত্তর জমিসংক্রান্ত জটিলতায় শতাধিক পরিবারের কোন হোল্ডিং নম্বর নেই। তারা এ জটিলতায় থাকায় তাদের সন্তানরা সরকারের উপবৃত্তি থেকে বাদ পড়ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাত সরকার এমন তথ্য জানান। মধুপুর পৌরসভার আইটি সেন্টারে গিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের হোল্ডিং নম্বর না থাকার সত্যতা মিলেছে। সেন্টার থেকে বলা হচ্ছে- প্রয়োজনীয় তথ্যের সংকটে সুবিধা থাকলেও জন্ম সনদ দিতে নাগরিকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ পর্যন্ত পৌর এলাকার ৪৯৩ জনকে সনদ দেয়া গেছে। দুই হাজারের মতো পাইপলাইনে আছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে এ হার খুব কম। এ ব্যাপারে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আলমগীর মুহাম্মদ মনছুরুল আলমকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। খুদেবার্তায় পরিচয় দিয়েও কোন উত্তর না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ১৬ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর ডাটা এন্ট্রির হার এখনও ৫০ ভাগে পৌঁছায়নি। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, গত তিন কিস্তি পাওয়া উপবৃত্তি সুবিধাভোগীর বিরাট অংশ ২৫ জানুয়ারির পরও বাদ থেকে যাবে।

আরও খবর
মৃত্যুর আগে স্কুলের নামটি পরিবর্তন হবে তো?
শেরপুরে স্বামী পরিত্যক্তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা গ্রেফতার ১
৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ বিশে^র ইতিহাসে বিরল-ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
হরিরামপুরে স্পিরিট বিক্রি : দণ্ডিত দুই
বরিশালে যৌবন ফিরে পেয়েছে মরা খাল
মানবতার ফেরিওয়ালা মান্দার ওসি শাহিনুর
চট্টগ্রাম ক্যান্সার হাসপাতালে ৫ কোটি অনুদান ভূমিমন্ত্রীর
নবীনগরের কাইতলা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি
গাজীপুরে অপহরণকারী চক্রের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার
মাগুরায় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে মোগল আমলের মসজিদ
নবীনগরে ড্রেজারের কৃষিজমি খনন জরিমানা আড়াই লাখ টাকা
গফরগাঁওয়ে ভাটার ড্রাম চিমনি ভাঙার ৫ ঘণ্টা পরেই ফের চালু!
দশমিনায় আলোর মুখ দেখছে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল গ্রন্থাগার ভবন
তাহিরপুরে সংবাদ প্রতিনিধির ওপর হামলায় ২ জেলায় প্রতিবাদ
কেশবপুরে ১৬ ভাটার ১০টি অবৈধ : হুমকিতে পরিবেশ

শনিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৩ মাঘ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

জন্মসনদের শর্তজুড়ে দেয়ায় উপবৃত্তি উত্তোলনে বিড়ম্বনা

জেলা বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

নিয়মিত শিক্ষার্থী তালিকায় নাম, উপস্থিতির হার, পরীক্ষায় পাস হওয়ার শর্তে প্রাথমিকে উপবৃত্তি পেত শিক্ষার্থীরা। প্রথমে বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র, পরে মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্টে অভিভাবকের (মা) নামে রেজিস্ট্রিকৃত সিম শর্তের পর এবার জন্মসনদ শর্ত পূরণে অভিভাবকরা পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়।

করোনা মহামারীর এ সময়ে পদে পদে হয়রানি, অর্থ ব্যয়ে অভিভাবক-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে এসব নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে পোর্টালে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ডাটা এন্ট্রি শতভাগ না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে চতুর্থ কিস্তির এ সময়ে বাদ পড়তে পারে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর একটা বড় অংশ।

সম্প্রতি উপবৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর জন্ম সনদ নম্বরটি নতুন শর্তে যুক্ত হয়। এবার অভিভাবক শিক্ষক পড়েন আরেক ভোগান্তিতে। করোনা চলাকালে বন্ধ থাকা বিদ্যালয়ে অবস্থান করে অভিভাবকদের সঙ্গে ফোনে কন্ট্রাক্ট করে বিষয়টি জানালে তারা আবার ছুটছেন জন্ম সনদ তুলতে। পৌরসভার/ইউপি’র আইটি সেন্টারে গিয়ে তারা খাচ্ছেন চরম ধাক্কা। সন্তানের জন্ম সনদ নিতে গিয়ে লাগছে তার নিজের জন্ম সনদ, জমির কাগজপত্র অথবা হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদের কপি, ছেলেমেয়ের টিকা কার্ড, বিদ্যালয়ের প্রধানের প্রত্যয়ন, অভিভাবকদের জন্য রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের প্রত্যয়নপত্র। আর এসব জোগাড়ে অভিভাবকদের রীতিমতো যুদ্ধে নামতে হয়েছে।

শিক্ষকরা জানান, শিক্ষার্থীদের ২০২০ সালের শেষ নয় মাসের উপবৃত্তি বকেয়া পড়েছে। সেই বকেয়া পেতে সরকারি নির্দেশনায় অভিভাবকদের সনদ সংগ্রহে এ যুদ্ধে নামতে হচ্ছে। অরণখোলা ইউনিয়নের কাকরাইদ এলাকার সুলতান জানান, অভিভাবক পর্যায়ে এ নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। যার দুই সন্তান প্রাথমিকের শিক্ষার্থী তার চারজনের স্বাভাবিকভাবে জন্ম সনদ তুলতে ডাক্তারের প্রত্যয়ন, ইউনিয়নের আইটি সেন্টারে মিলে গড়ে প্রতিটি ৫-৭শ টাকা করে ব্যয় হচ্ছে। মধুপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মদন গোপাল আঙ্গিনাপাড়ার দেবোত্তর জমিসংক্রান্ত জটিলতায় শতাধিক পরিবারের কোন হোল্ডিং নম্বর নেই। তারা এ জটিলতায় থাকায় তাদের সন্তানরা সরকারের উপবৃত্তি থেকে বাদ পড়ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাত সরকার এমন তথ্য জানান। মধুপুর পৌরসভার আইটি সেন্টারে গিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের হোল্ডিং নম্বর না থাকার সত্যতা মিলেছে। সেন্টার থেকে বলা হচ্ছে- প্রয়োজনীয় তথ্যের সংকটে সুবিধা থাকলেও জন্ম সনদ দিতে নাগরিকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ পর্যন্ত পৌর এলাকার ৪৯৩ জনকে সনদ দেয়া গেছে। দুই হাজারের মতো পাইপলাইনে আছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে এ হার খুব কম। এ ব্যাপারে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আলমগীর মুহাম্মদ মনছুরুল আলমকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। খুদেবার্তায় পরিচয় দিয়েও কোন উত্তর না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ১৬ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর ডাটা এন্ট্রির হার এখনও ৫০ ভাগে পৌঁছায়নি। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, গত তিন কিস্তি পাওয়া উপবৃত্তি সুবিধাভোগীর বিরাট অংশ ২৫ জানুয়ারির পরও বাদ থেকে যাবে।