আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ ৪ নির্বাহী গ্রেপ্তার

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ (সহ-অধিনায়ক) ৪ নির্বাহীকে গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড শেখ কামাল হোসেন, মামলা ও কারা দপ্তরের নির্বাহী সোহেল রানা, গাজীপুরের বিভাগীয় নায়ক রবি আহমেদ পাপ্পু, দাওয়াহ্ দপ্তরের প্রধান খালেকুজ্জামান, মামলা ও কারা দপ্তরের সহযোগী মনিরুজ্জামান ওরফে মিলন। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ফার্মগেট ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল এটিইউ’র এসপি (মিডিয়া) মোহাম্মদ আসলাম খান জানান, ফার্মগেট তেজতুরী বাজার সংলগ্ন প্যাসিফিক হোমস টাওয়ারের নিচতলা থেকে জঙ্গি সংগঠনটির সহ-অধিনায়ক কামাল ও নির্বাহী সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যানুসারে, মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকার শেরেবাংলা রোডে অভিযান পরিচালনা করে অন্য ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন, ভিসা কার্ড ও কারাবন্দীদের টাকা প্রদানের স্লিপ এবং ৩৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।

এটিইউ’র এসপি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কামাল হোসেন ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে আল্লাহর দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। তিনি ২০০৪ সালে আল্লাহর দলের প্রধান মতিন মেহেদীর কাছে শপথ গ্রহণ করে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত খুলনা জেলায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলায় এবং ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি কেন্দ্রের বিভিন্ন পদে দায়িত্বে ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত খালেকুজ্জামান ২০০০ সালে মতিন মেহেদীর মাধ্যমে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলায়, ২০১৭ সাল থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত ঢাকা জেলার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি কেন্দ্রের দাওয়াহ্ দপ্তরের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

মনিরুজ্জামান ওরফে মিলন আল্লাহর দল প্রধান মতিন মেহেদীর ভাগ্নে। ১৯৯৯ সাল থেকে সে মতিন মেহেদীর একান্ত সহযোগী হিসেবে আল্লাহর দলের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। সোহেল রানা ২০১৮ সালে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। তারা আল্লাহর দলের গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে মামলা বিষয়াবলী দেখাশোনা, কারাবন্দী ও তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগপূর্বক সহযোগিতায় নিয়োজিত ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত রবি আহাম্মেদ পাপ্পু ২০১৮ সালে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। তিনি ২০১৯ সাল থেকে গাজীপুর জেলায় বিভাগীয় নায়েক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। উল্লেখ্য, গ্রেপ্তারকৃত সদস্যরা দেশের বর্তমান নির্বাচনী ও ভোটাধিকার ব্যবস্থা বিশ্বাস করে না এবং সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে তারা শয়তানের দল বলে অভিহিত করে। তারা দেশের সংবিধান ও জাতীয় সংসদকে স্বীকার করে না। তারা নিজেরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে না এবং অন্যকেও ভোটাধিকার প্রদানে নিরুৎসাহিত করে। তারা নারী নেতৃত্বে বিশ্বাস করে না এবং প্রচলিত যাকাত ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে। তাদের মতাদর্শের সদস্যের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা উত্তোলন করে দেশ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তারা ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুঁজি করে ধর্মের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে তাদের আদর্শের অনুকূলে সদস্য সংগ্রহ ও চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

আরও খবর
বাংলাদেশ ও ভারত মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ়তর হবে প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর
বিএনপি সমাবেশের নামে সহিংসতা করলে দমন করা হবে কাদের
ভারতে সাংবাদিক কেন আক্রান্ত
এবারের কলকাতার বইমেলা উৎসর্গ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে
ঋত্বিক ঘটকের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
টেরাকোটার ভাষায় বাংলাদেশ
বগুড়ায় পিঠা উৎসব
ফের বাড়ছে দাম চাল-পিয়াজে
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা খুবই দুর্বল ন্যাপ
গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হচ্ছে কৃষিমন্ত্রী
ইউল্যাব শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও হত্যা বান্ধবী নেহা রিমান্ডে
বিএসএমএমইউ চিকিৎসক গ্রেপ্তার
বেরোবি সিন্ডিকেট সভা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

শনিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৩ মাঘ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ ৪ নির্বাহী গ্রেপ্তার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডসহ (সহ-অধিনায়ক) ৪ নির্বাহীকে গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো আল্লাহর দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড শেখ কামাল হোসেন, মামলা ও কারা দপ্তরের নির্বাহী সোহেল রানা, গাজীপুরের বিভাগীয় নায়ক রবি আহমেদ পাপ্পু, দাওয়াহ্ দপ্তরের প্রধান খালেকুজ্জামান, মামলা ও কারা দপ্তরের সহযোগী মনিরুজ্জামান ওরফে মিলন। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ফার্মগেট ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল এটিইউ’র এসপি (মিডিয়া) মোহাম্মদ আসলাম খান জানান, ফার্মগেট তেজতুরী বাজার সংলগ্ন প্যাসিফিক হোমস টাওয়ারের নিচতলা থেকে জঙ্গি সংগঠনটির সহ-অধিনায়ক কামাল ও নির্বাহী সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যানুসারে, মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকার শেরেবাংলা রোডে অভিযান পরিচালনা করে অন্য ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন, ভিসা কার্ড ও কারাবন্দীদের টাকা প্রদানের স্লিপ এবং ৩৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে।

এটিইউ’র এসপি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কামাল হোসেন ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে আল্লাহর দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। তিনি ২০০৪ সালে আল্লাহর দলের প্রধান মতিন মেহেদীর কাছে শপথ গ্রহণ করে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। ২০০৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত খুলনা জেলায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলায় এবং ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি কেন্দ্রের বিভিন্ন পদে দায়িত্বে ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত খালেকুজ্জামান ২০০০ সালে মতিন মেহেদীর মাধ্যমে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাবনা জেলায়, ২০১৭ সাল থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত ঢাকা জেলার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি কেন্দ্রের দাওয়াহ্ দপ্তরের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

মনিরুজ্জামান ওরফে মিলন আল্লাহর দল প্রধান মতিন মেহেদীর ভাগ্নে। ১৯৯৯ সাল থেকে সে মতিন মেহেদীর একান্ত সহযোগী হিসেবে আল্লাহর দলের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। সোহেল রানা ২০১৮ সালে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। তারা আল্লাহর দলের গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে মামলা বিষয়াবলী দেখাশোনা, কারাবন্দী ও তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগপূর্বক সহযোগিতায় নিয়োজিত ছিলেন। গ্রেপ্তারকৃত রবি আহাম্মেদ পাপ্পু ২০১৮ সালে আল্লাহর দলে যোগদান করেন। তিনি ২০১৯ সাল থেকে গাজীপুর জেলায় বিভাগীয় নায়েক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। উল্লেখ্য, গ্রেপ্তারকৃত সদস্যরা দেশের বর্তমান নির্বাচনী ও ভোটাধিকার ব্যবস্থা বিশ্বাস করে না এবং সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে তারা শয়তানের দল বলে অভিহিত করে। তারা দেশের সংবিধান ও জাতীয় সংসদকে স্বীকার করে না। তারা নিজেরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে না এবং অন্যকেও ভোটাধিকার প্রদানে নিরুৎসাহিত করে। তারা নারী নেতৃত্বে বিশ্বাস করে না এবং প্রচলিত যাকাত ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে। তাদের মতাদর্শের সদস্যের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা উত্তোলন করে দেশ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তারা ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুঁজি করে ধর্মের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে তাদের আদর্শের অনুকূলে সদস্য সংগ্রহ ও চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।