ভেজাল মদ প্রসঙ্গে

বিষাক্ত মদপানের ঘটনায় বগুড়ায় গত বুধবার মারা গেছে আরও দুজন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৮ জন। নকল ও বিষাক্ত মদ খেয়ে গত এক মাসে অন্তত ৩৫ জন মারা গেছে।

ভেজাল মদপানে একের পর এক এমন মৃত্যুর খবর উদ্বেগজনক। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মধ্যেও এই উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভেজাল মদবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশ্ন হচ্ছে এই ধরনের অভিযান চালিয়ে কাক্সিক্ষত সাফল্য মিলবে কি না। অতীতেও ভেজাল মদ খেয়ে মানুষ মারা গেছে। তখনও অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। কারণ এটা শুধু আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা নয়। সমস্যাটা আরও গভীর। চাহিদার সঙ্গে বৈধ জোগানের ভারসাম্যহীনতা এই সমস্যাকে আরও বাড়িযে তুলেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র কোম্পানি বৈধভাবে মদ উৎপাদন করে। আইনি সীমার মধ্যে থেকে উচ্চহারে কর দিয়ে অল্পকিছু প্রতিষ্ঠান এটা আমদানি করে। বৈধ আমদানি বা বেচাকেনায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ যত কড়া নজরদারি করে, ভেজাল মদের ক্ষেত্রে তাদের ততটাই শৈথিল্য দেখা যায়। এ কারণেই একশ্রেণীর মধ্যে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা তৈরি হয়, আরেক শ্রেণী পাড়া-মহল্লার হোমিও দোকানে ভেজাল মদ বিক্রি করতে অন্যায় উৎসাহ পায়।

আইনি নানা শর্ত মেনে চড়া দাম দিয়েও যখন বৈধ উপাযে কোন চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না হয় তখন অবৈধ উৎসের প্রতি অনেকে ঝুঁকে পড়ে। অসাধু চক্র এর অন্যায় সুযোগ নেয়, নিজেদের পকেট ভারি করে। আর সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। ভেজাল মদ খেয়ে প্রায়ই মানুষ মারা যায়।

শুধু অভিযান চালিয়ে, দু-একটি অবৈধ কারখানা বা বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে এই সমস্যার সমাধান হবে না। বৈধ জোগানের ঘাটতির কারণে বাস্তব চাহিদাকে অসাধু চক্র যেন পুঁজি করতে না পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতারক চক্রকে বাজারে সংকটের সুযোগ নিতে দেয়া যাবে না। এমন কোন পদক্ষেপ নেয়া ঠিক হবে না, যার ফলে ভেজাল মদ নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। ব্যবস্থা নিতে হবে এমনভাবে যাতে ভেজাল মদ তৈরি, বিক্রি এবং পান স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে যায়।

শনিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৩ মাঘ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ভেজাল মদ প্রসঙ্গে

বিষাক্ত মদপানের ঘটনায় বগুড়ায় গত বুধবার মারা গেছে আরও দুজন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৮ জন। নকল ও বিষাক্ত মদ খেয়ে গত এক মাসে অন্তত ৩৫ জন মারা গেছে।

ভেজাল মদপানে একের পর এক এমন মৃত্যুর খবর উদ্বেগজনক। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মধ্যেও এই উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভেজাল মদবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশ্ন হচ্ছে এই ধরনের অভিযান চালিয়ে কাক্সিক্ষত সাফল্য মিলবে কি না। অতীতেও ভেজাল মদ খেয়ে মানুষ মারা গেছে। তখনও অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। কারণ এটা শুধু আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা নয়। সমস্যাটা আরও গভীর। চাহিদার সঙ্গে বৈধ জোগানের ভারসাম্যহীনতা এই সমস্যাকে আরও বাড়িযে তুলেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র কোম্পানি বৈধভাবে মদ উৎপাদন করে। আইনি সীমার মধ্যে থেকে উচ্চহারে কর দিয়ে অল্পকিছু প্রতিষ্ঠান এটা আমদানি করে। বৈধ আমদানি বা বেচাকেনায় সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ যত কড়া নজরদারি করে, ভেজাল মদের ক্ষেত্রে তাদের ততটাই শৈথিল্য দেখা যায়। এ কারণেই একশ্রেণীর মধ্যে শুল্ক ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা তৈরি হয়, আরেক শ্রেণী পাড়া-মহল্লার হোমিও দোকানে ভেজাল মদ বিক্রি করতে অন্যায় উৎসাহ পায়।

আইনি নানা শর্ত মেনে চড়া দাম দিয়েও যখন বৈধ উপাযে কোন চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না হয় তখন অবৈধ উৎসের প্রতি অনেকে ঝুঁকে পড়ে। অসাধু চক্র এর অন্যায় সুযোগ নেয়, নিজেদের পকেট ভারি করে। আর সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। ভেজাল মদ খেয়ে প্রায়ই মানুষ মারা যায়।

শুধু অভিযান চালিয়ে, দু-একটি অবৈধ কারখানা বা বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে এই সমস্যার সমাধান হবে না। বৈধ জোগানের ঘাটতির কারণে বাস্তব চাহিদাকে অসাধু চক্র যেন পুঁজি করতে না পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতারক চক্রকে বাজারে সংকটের সুযোগ নিতে দেয়া যাবে না। এমন কোন পদক্ষেপ নেয়া ঠিক হবে না, যার ফলে ভেজাল মদ নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। ব্যবস্থা নিতে হবে এমনভাবে যাতে ভেজাল মদ তৈরি, বিক্রি এবং পান স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে যায়।