ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার আশ্বাস

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ-এর (বিসিআই) নবনির্বাচিত নেতারা। গতকাল বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ-এর (বিসিআই) নবনির্বাচিত সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) দ্বি-বার্ষিক (২০২১-২০২৩) মেয়াদের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ সময় নেতারা এই আশ্বাস দেন।

গতকাল বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বিসিআই’র বোর্ড রুমে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সভার শুরুতে বিসিআই নির্বাচন বোর্ডের পক্ষ হতে আবদুল হক, চেয়ারম্যান বিসিআই নির্বাচন বোর্ড বিসিআই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন। আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) (চেয়ারম্যান, ইভেন্স গ্রুপ এবং সাবেক সভাপতি, বিজিএমইএ) বিসিআই’র সভাপতি, মিসেস প্রীতি চক্রবর্তী (চেয়ারম্যান, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল লি. এবং পরিচালক, এফবিসিসিআই) এবং শহিদুল ইসলাম নিরু (পরিচালক, ইকোক্যাম বাংলাদেশ প্রা. লি.) যথাক্রমে ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বিসিআই ও এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একে. আজাদ উপস্থিত ছিলেন। বিসিআইর নেতারা জানান, নতুন কমিটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নেবে। পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে আরও উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন সংগঠনের সাবেক নেতারা। স্বাগত বক্তব্যে মিসেস প্রীতি চক্রবত্ততী, ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি, বিসিআই কার্যক্রম উপস্থাপন করেন এবং বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের সব শিল্পের জন্য একটি কমন প্লাটফর্ম হিসেবে বিসিআইকে গড়ে তুলতে চান এবং করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প সহায়তার কাজ করবে বিসিআই।

একে. আজাদ বলেন, দেশে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিসিআইকে সহযোগী ভূমিকা নিতে হবে। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কমিটিতে জোরদার ভূমিকা রাখতে হবে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প পুনরুদ্ধারে বিসিআইকে এগিয়ে এসে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

বিসিআই সভাপতি বলেন, যেহেতু বিসিআই সরা বাংলাদেশভিত্তিক একক এবং একমাত্র জাতীয় শিল্প চেম্বার সেহেতু স্থানীয় সব শিল্পের পথে সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা নিরসনে আমাদের সবাইকে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালনের চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল, রেমিট্যান্স এবং কৃষি খাতের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এলডিসি থেকে উত্তরণের পর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল-এর ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে কিছু সম্ভাবনা খাত যেমন লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষিভিত্তিক শিল্প, হালাল পণ্য, ব্লু ইকোনোমি, চামড়াজাত পণ্য ইত্যাদি খাতের উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। বিসিআই নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষিভিত্তিক শিল্প খাতের উন্নয়নে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। বিসিআই রংপুর বিভাগে সফর করে রংপুর বিভাগের অন্তর্গত অন্যান্য জেলা চেম্বারের সঙ্গে সভা করেছে, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন-এর সঙ্গে সভাও করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিসিআই আগামীতে অন্যান্য বিভাগ সফর করে বিভাগের আওতাধীন জেলা চেম্বারগুলোর সঙ্গে সভা করে সারাদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একটি যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের জোর প্রচেষ্টা চালানো হবে।

বিসিআইকে আরও শক্তিশালী সংগঠনে রূপ দিতে এর কার্যক্রম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে বিদায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, স্থানীয় শিল্পের উন্নয়নে সুরক্ষা দেয়া জরুরি। এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রস্তাব তুলে ধরবে বিসিআই। সভায় বিসিআই-এর বিদায়ী পরিচালক এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রহমান বিসিআই’র সঙ্গে একত্রে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যা নিরসনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। সভা শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন নবনির্বাচিত সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম নিরু।

রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৪ মাঘ ১৪২৭, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার আশ্বাস

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ-এর (বিসিআই) নবনির্বাচিত নেতারা। গতকাল বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ-এর (বিসিআই) নবনির্বাচিত সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) দ্বি-বার্ষিক (২০২১-২০২৩) মেয়াদের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ সময় নেতারা এই আশ্বাস দেন।

গতকাল বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বিসিআই’র বোর্ড রুমে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সভার শুরুতে বিসিআই নির্বাচন বোর্ডের পক্ষ হতে আবদুল হক, চেয়ারম্যান বিসিআই নির্বাচন বোর্ড বিসিআই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন। আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) (চেয়ারম্যান, ইভেন্স গ্রুপ এবং সাবেক সভাপতি, বিজিএমইএ) বিসিআই’র সভাপতি, মিসেস প্রীতি চক্রবর্তী (চেয়ারম্যান, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল লি. এবং পরিচালক, এফবিসিসিআই) এবং শহিদুল ইসলাম নিরু (পরিচালক, ইকোক্যাম বাংলাদেশ প্রা. লি.) যথাক্রমে ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে বিসিআই ও এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একে. আজাদ উপস্থিত ছিলেন। বিসিআইর নেতারা জানান, নতুন কমিটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নেবে। পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে আরও উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন সংগঠনের সাবেক নেতারা। স্বাগত বক্তব্যে মিসেস প্রীতি চক্রবত্ততী, ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি, বিসিআই কার্যক্রম উপস্থাপন করেন এবং বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের সব শিল্পের জন্য একটি কমন প্লাটফর্ম হিসেবে বিসিআইকে গড়ে তুলতে চান এবং করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প সহায়তার কাজ করবে বিসিআই।

একে. আজাদ বলেন, দেশে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বিসিআইকে সহযোগী ভূমিকা নিতে হবে। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী কমিটিতে জোরদার ভূমিকা রাখতে হবে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প পুনরুদ্ধারে বিসিআইকে এগিয়ে এসে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

বিসিআই সভাপতি বলেন, যেহেতু বিসিআই সরা বাংলাদেশভিত্তিক একক এবং একমাত্র জাতীয় শিল্প চেম্বার সেহেতু স্থানীয় সব শিল্পের পথে সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা নিরসনে আমাদের সবাইকে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালনের চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল, রেমিট্যান্স এবং কৃষি খাতের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এলডিসি থেকে উত্তরণের পর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল-এর ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে কিছু সম্ভাবনা খাত যেমন লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষিভিত্তিক শিল্প, হালাল পণ্য, ব্লু ইকোনোমি, চামড়াজাত পণ্য ইত্যাদি খাতের উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। বিসিআই নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষিভিত্তিক শিল্প খাতের উন্নয়নে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। বিসিআই রংপুর বিভাগে সফর করে রংপুর বিভাগের অন্তর্গত অন্যান্য জেলা চেম্বারের সঙ্গে সভা করেছে, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ অ্যাগ্রো-প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন-এর সঙ্গে সভাও করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিসিআই আগামীতে অন্যান্য বিভাগ সফর করে বিভাগের আওতাধীন জেলা চেম্বারগুলোর সঙ্গে সভা করে সারাদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একটি যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের জোর প্রচেষ্টা চালানো হবে।

বিসিআইকে আরও শক্তিশালী সংগঠনে রূপ দিতে এর কার্যক্রম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে বিদায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, স্থানীয় শিল্পের উন্নয়নে সুরক্ষা দেয়া জরুরি। এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রস্তাব তুলে ধরবে বিসিআই। সভায় বিসিআই-এর বিদায়ী পরিচালক এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রহমান বিসিআই’র সঙ্গে একত্রে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যা নিরসনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। সভা শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন নবনির্বাচিত সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম নিরু।