মুন্সীগঞ্জে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ভেজাল খাদ্যপণ্য

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার মিরকাদিম বাজারে প্রশাসনের নাকের ডগায় কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের ভেজাল খাদ্যপণ্য। মিরকাদিম এলাকার সেকান্দর মিয়ার বাড়িসহ বিভিন্ন বাসাবাড়ীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিমকি, কটকটি, ঝুঁড়ি নিমকি, আঙ্গুরি খাজা,খাস্তা গজা, লালুবুলুসহ নানা ধরনের বেকারি পন্য। নিম্নœমানের বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য কিনে একদিকে প্রতারিত হচ্ছে গ্রাহক, অপরদিকে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। মানুষ না জেনে এসব বেকারি পণ্য কিনে দিন দিন প্রতারিত হচ্ছে। অপরদিকে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ার তারা মানুষের সাথে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে সাধারণ মানুষকে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মিরকাদিম বাজারে সেকান্দার বিভিন্ন রকমের শিশু খাদ্য পণ্যের পসরা সাজিয়ে তার দোকানে। তার দোকানের পেছনে রয়েছে একটি কারখানা। সেখানে কর্মচারীরা হাতে গ্লাভস ছাড়াই ময়দাকে দু’হাতে পিষছে। পাশেই কড়াই থেকে নিমকি, গজা, লালুবুলু তেলে ভেজে ফ্লোরে রাখছেন। জুতা পায়ে দিয়ে কর্মচারীরা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন রকমের পন্য ফ্লোরে রাখছেন। অনেকে খালি গায়ে আটা - ময়দার স্তুপে পায়ের কষরতে ময়দা মাখাচ্ছে। কেউ বা আবার ময়দার খামিকে মেশিনে দিয়ে শুকাচ্ছে। খালি হতের এসব ভাড়া পন্যে কাঁচা তেল, চিনি এবং গুঁড় মিশ্রিত পানিতে চুবিয়ে নোংরা জায়গায় রাখছে প্যাকেটিং করার জন্য। ওই এলাকার অধিকাংশ বেকারি’র নেই কোন ট্রেড লাইসেন্স ও বিএসটিআই‘র অনুমোদন। অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও সেঁতস্যাতে পরিবেশে নিন্মমানের বিভিন্ন ধরনের লাড্ডু, নিমকি, লালুবুলুসহ শিশু খাদ্য পণ্য তৈরি হচ্ছে। কাপড়ের রং ও পাউডার মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মুখরোচক এসব খাবার। বেকারি শ্রমিকরা খালি গায়ে, শরীর থেকে ঘাম বেয়ে পরছে, ময়লা হাতে কখনো দেখা যায় একহাতে সিগারেট অন্য হাত দিয়ে কাজ করছে । খোলাভাবে তেলভর্তি ড্রাম রাখা হয়েছে। তার ওপরে মাছি ভনভন করছে, ইদুর ও তেলাপোকার বিস্টা দিয়ে জীবাণু ছড়াচ্ছে, খোলা পরিবেশে বেকারি পণ্য তৈরির ফলে বাতাসে উড়ে এসে ময়লা-কালি ও ধুলো-বালি পড়ছে। পাশেই রয়েছে ক্ষতিকর বিভিন্ন প্রকার রং ও স্যাকারিন। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিম্নœমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা এসব খাবার সামগ্রী খেলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে। পেটব্যথা, শরীর দুর্বলসহ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে।

সদর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. জামাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, আমরা নিয়মিত বেকারি পণ্য প্রস্তুতকারী কারখানাগুলোতে মনিটরিং করি। তাদের বার বার সতর্ক করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের জরিমানা করেছি। এরপর যদি তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য তৈরি অব্যাহত রাখে, তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৪ মাঘ ১৪২৭, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

মুন্সীগঞ্জে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ভেজাল খাদ্যপণ্য

প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ

image

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার মিরকাদিম বাজারে প্রশাসনের নাকের ডগায় কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের ভেজাল খাদ্যপণ্য। মিরকাদিম এলাকার সেকান্দর মিয়ার বাড়িসহ বিভিন্ন বাসাবাড়ীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিমকি, কটকটি, ঝুঁড়ি নিমকি, আঙ্গুরি খাজা,খাস্তা গজা, লালুবুলুসহ নানা ধরনের বেকারি পন্য। নিম্নœমানের বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য কিনে একদিকে প্রতারিত হচ্ছে গ্রাহক, অপরদিকে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। মানুষ না জেনে এসব বেকারি পণ্য কিনে দিন দিন প্রতারিত হচ্ছে। অপরদিকে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ার তারা মানুষের সাথে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে সাধারণ মানুষকে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মিরকাদিম বাজারে সেকান্দার বিভিন্ন রকমের শিশু খাদ্য পণ্যের পসরা সাজিয়ে তার দোকানে। তার দোকানের পেছনে রয়েছে একটি কারখানা। সেখানে কর্মচারীরা হাতে গ্লাভস ছাড়াই ময়দাকে দু’হাতে পিষছে। পাশেই কড়াই থেকে নিমকি, গজা, লালুবুলু তেলে ভেজে ফ্লোরে রাখছেন। জুতা পায়ে দিয়ে কর্মচারীরা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন রকমের পন্য ফ্লোরে রাখছেন। অনেকে খালি গায়ে আটা - ময়দার স্তুপে পায়ের কষরতে ময়দা মাখাচ্ছে। কেউ বা আবার ময়দার খামিকে মেশিনে দিয়ে শুকাচ্ছে। খালি হতের এসব ভাড়া পন্যে কাঁচা তেল, চিনি এবং গুঁড় মিশ্রিত পানিতে চুবিয়ে নোংরা জায়গায় রাখছে প্যাকেটিং করার জন্য। ওই এলাকার অধিকাংশ বেকারি’র নেই কোন ট্রেড লাইসেন্স ও বিএসটিআই‘র অনুমোদন। অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও সেঁতস্যাতে পরিবেশে নিন্মমানের বিভিন্ন ধরনের লাড্ডু, নিমকি, লালুবুলুসহ শিশু খাদ্য পণ্য তৈরি হচ্ছে। কাপড়ের রং ও পাউডার মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মুখরোচক এসব খাবার। বেকারি শ্রমিকরা খালি গায়ে, শরীর থেকে ঘাম বেয়ে পরছে, ময়লা হাতে কখনো দেখা যায় একহাতে সিগারেট অন্য হাত দিয়ে কাজ করছে । খোলাভাবে তেলভর্তি ড্রাম রাখা হয়েছে। তার ওপরে মাছি ভনভন করছে, ইদুর ও তেলাপোকার বিস্টা দিয়ে জীবাণু ছড়াচ্ছে, খোলা পরিবেশে বেকারি পণ্য তৈরির ফলে বাতাসে উড়ে এসে ময়লা-কালি ও ধুলো-বালি পড়ছে। পাশেই রয়েছে ক্ষতিকর বিভিন্ন প্রকার রং ও স্যাকারিন। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ ছাড়াই বাহারি মোড়কে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেজাল কেমিক্যাল ও নিম্নœমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা এসব খাবার সামগ্রী খেলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে। পেটব্যথা, শরীর দুর্বলসহ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে।

সদর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. জামাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, আমরা নিয়মিত বেকারি পণ্য প্রস্তুতকারী কারখানাগুলোতে মনিটরিং করি। তাদের বার বার সতর্ক করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের জরিমানা করেছি। এরপর যদি তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য তৈরি অব্যাহত রাখে, তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।