আ’লীগ নেতার জমির মাটি ভাটায় বিক্রি : ভাঙছে চারপাশ

আইন অমান্য করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা তার ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছেন বিভিন্ন ইটভাটায়। ওই নেতার নাম মো. জাফর সিদ্দিকী। তিনি ফরিদপুর জেলা পরিষদের সদস্য ও বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের হাটুভাঙ্গা মীরেরচর মাঠে তার মালিকানাধীন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে দীঘি খনন করছেন। এতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ফসলি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হচ্ছে। এছাড়া খননকৃত ওই দীঘির চারপাশেই ফসলি জমি ও মাটি আনা নেয়ার কাজে নিয়োজিত ট্রাকগুলো চলাচলের ফলে একপাশের বিস্তীর্ণ ফসলি জমিও নষ্ট হচ্ছে। এক্সকেভেটর (ভেকু) চালক মামুন শেখ বলেন, গত আড়াই মাস যাবত ঘণ্টা চুক্তিতে এখানে মাটি কাটছি। মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত ময়না ইউনিয়নের বান্দুগ্রাম নিবাসী আমীর হোসেন জানান, জাফর সিদ্দিকী এখানে ২শ ১৯ শতাংশ জায়গায় পুকুর খনন করে উত্তোলিত মাটি আশপাশের বিভিন্ন ভাটায় বিক্রি করছেন। প্রতি ট্রাক মাটি ৯শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন এ মাটি টানার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ৭-৮টি ট্রাক। নিজের ইটের ভাটায়ও ওই মাটি নিচ্ছেন। সূত্র মতে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পুকুর, খাল-বিল, নদ-নদী, চরাঞ্চল, পতিত ও আবাদি জমি থেকে মাটি কাটা নিষিদ্ধ। এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে কোন ভারি যানবাহন দিয়ে ইটভাটার কাঁচামাল আনা নেয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু এর কোন নিয়মই মানছেন না স্থানীয় ওই প্রভাবশালী আ’লীগ নেতা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পার্শ্ববর্তী জমির একাধিক মালিক জানান, জাফর সিদ্দিকী প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি কোন নিষেধ শুনছেন না। ট্রাক বারবার যাওয়া-আসা করায় ধুলোতে আমাদের ফসলের অনেক ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। আ’লীগ নেতা জাফর সিদ্দিকী বলেন, ওই জমিতে ভালো ফসল হয় না। তাই পুকুর খননের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছিলাম। তিনি ওই জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নিকট আবেদন করতে বলেছেন। আবেদন জমা দিয়ে পুকুর খনন করছি। এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হক বলেন, ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে পুকুর খনন করার বিষয়টি জানতে পেরে খননকার্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে তহশিলদারকে পাঠিয়েছি। তিনি প্রতিবেদন দেয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৪ মাঘ ১৪২৭, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

আ’লীগ নেতার জমির মাটি ভাটায় বিক্রি : ভাঙছে চারপাশ

image

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় সরবরাহের জন্য তোলা হচ্ছে ট্রাকে -সংবাদ

আইন অমান্য করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা তার ফসলি জমির মাটি বিক্রি করছেন বিভিন্ন ইটভাটায়। ওই নেতার নাম মো. জাফর সিদ্দিকী। তিনি ফরিদপুর জেলা পরিষদের সদস্য ও বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের হাটুভাঙ্গা মীরেরচর মাঠে তার মালিকানাধীন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে দীঘি খনন করছেন। এতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ফসলি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হচ্ছে। এছাড়া খননকৃত ওই দীঘির চারপাশেই ফসলি জমি ও মাটি আনা নেয়ার কাজে নিয়োজিত ট্রাকগুলো চলাচলের ফলে একপাশের বিস্তীর্ণ ফসলি জমিও নষ্ট হচ্ছে। এক্সকেভেটর (ভেকু) চালক মামুন শেখ বলেন, গত আড়াই মাস যাবত ঘণ্টা চুক্তিতে এখানে মাটি কাটছি। মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত ময়না ইউনিয়নের বান্দুগ্রাম নিবাসী আমীর হোসেন জানান, জাফর সিদ্দিকী এখানে ২শ ১৯ শতাংশ জায়গায় পুকুর খনন করে উত্তোলিত মাটি আশপাশের বিভিন্ন ভাটায় বিক্রি করছেন। প্রতি ট্রাক মাটি ৯শ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন এ মাটি টানার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে ৭-৮টি ট্রাক। নিজের ইটের ভাটায়ও ওই মাটি নিচ্ছেন। সূত্র মতে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পুকুর, খাল-বিল, নদ-নদী, চরাঞ্চল, পতিত ও আবাদি জমি থেকে মাটি কাটা নিষিদ্ধ। এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে নির্মিত উপজেলা, ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক ব্যবহার করে কোন ভারি যানবাহন দিয়ে ইটভাটার কাঁচামাল আনা নেয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু এর কোন নিয়মই মানছেন না স্থানীয় ওই প্রভাবশালী আ’লীগ নেতা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পার্শ্ববর্তী জমির একাধিক মালিক জানান, জাফর সিদ্দিকী প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি কোন নিষেধ শুনছেন না। ট্রাক বারবার যাওয়া-আসা করায় ধুলোতে আমাদের ফসলের অনেক ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। আ’লীগ নেতা জাফর সিদ্দিকী বলেন, ওই জমিতে ভালো ফসল হয় না। তাই পুকুর খননের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছিলাম। তিনি ওই জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নিকট আবেদন করতে বলেছেন। আবেদন জমা দিয়ে পুকুর খনন করছি। এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হক বলেন, ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে পুকুর খনন করার বিষয়টি জানতে পেরে খননকার্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে তহশিলদারকে পাঠিয়েছি। তিনি প্রতিবেদন দেয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।