কালকিনির স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী নিখোঁজ, ১১ ঘণ্টা পর ফিরে আসেন

নিখোঁজের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর নিজ এলাকায় ফিরে এসেছেন মাদারীপুরের কালকিনি পৌর নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মসিউর রহমান সবুজ। গতকাল দিবাগত রাত ৪টায় সবুজ তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। সবুজ নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল বিকেল ৫টার দিকে কালকিনি থানার ওসি সরকারি গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরই নিখোঁজ হন সবুজ। পরে সবুজের সমর্থকদের সঙ্গে নৌকার প্রার্থী এসএম হনিফের সমর্থকদের সঙ্গে সংর্ঘষের সৃষ্টি হলে শতাধিক লোক আহত হয়।

মসিউর রহমান সবুজ বলেন, গতকাল বিকেলে হঠাৎ এসপি (জেলার পুলিশ সুপার) আমাকে মুঠোফোনে কল করে দেখা করতে বলেন। তিনি থানার ওসিকে আমার কাছে পাঠান। তখন আমি ওসির কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলার বিষয় নিয়ে এসপি আমার সঙ্গে কথা বলবেন। পরে আমি সরল মনে তার গাড়িতে উঠে এসপির অফিসে যাই। সেখানে যাওয়ার পর এসপি আমাকে তার গাড়িতে উঠিয়ে ঢাকার ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে নিয়ে যান। তখন রাত প্রায় ৮টা বাজে। সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করা আহ্বান জানান। পরে আমি বলি আমি দলের কোন পদে নাই। আমি তার কাছে কালকিনির বাস্তবতা তুলে ধরি। পরে ওবায়দুল কাদের আমাকে বলেন, তুমি আমার কথা শুনলে তোমাকে দলের ভালো অবস্থানে রাখা হবে। আমি তাকে বলি এলাকায় গিয়ে আমি কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাব। সবুজ আরও বলেন, আমি নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়িয়ে জনগণের কথায় নির্বাচন করব।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল পুলিশের গাড়িতে ওঠার পর সবুজ নিখোঁজের সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে তার সমর্থকেরা গতকাল সন্ধ্যা থেকে থানার সামনে অবস্থান নেন। পরে বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালান বিক্ষুব্ধ সমর্থকেরা। একপর্যায়ে নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে সবুজের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। টানা তিন ঘণ্টার সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হন। এ সময় দুই পক্ষের লোকজনের হাতে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দেখা যায়।

সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দও শোনা গেছে। সংঘর্ষের সময় শতাধিক দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন কমপক্ষে ৬০ জন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত একজনকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সোমবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৫ মাঘ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

কালকিনির স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী নিখোঁজ, ১১ ঘণ্টা পর ফিরে আসেন

প্রতিনিধি, মাদারীপুর (কালকিনি)

নিখোঁজের প্রায় ১১ ঘণ্টা পর নিজ এলাকায় ফিরে এসেছেন মাদারীপুরের কালকিনি পৌর নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মসিউর রহমান সবুজ। গতকাল দিবাগত রাত ৪টায় সবুজ তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। সবুজ নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল বিকেল ৫টার দিকে কালকিনি থানার ওসি সরকারি গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরই নিখোঁজ হন সবুজ। পরে সবুজের সমর্থকদের সঙ্গে নৌকার প্রার্থী এসএম হনিফের সমর্থকদের সঙ্গে সংর্ঘষের সৃষ্টি হলে শতাধিক লোক আহত হয়।

মসিউর রহমান সবুজ বলেন, গতকাল বিকেলে হঠাৎ এসপি (জেলার পুলিশ সুপার) আমাকে মুঠোফোনে কল করে দেখা করতে বলেন। তিনি থানার ওসিকে আমার কাছে পাঠান। তখন আমি ওসির কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলার বিষয় নিয়ে এসপি আমার সঙ্গে কথা বলবেন। পরে আমি সরল মনে তার গাড়িতে উঠে এসপির অফিসে যাই। সেখানে যাওয়ার পর এসপি আমাকে তার গাড়িতে উঠিয়ে ঢাকার ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে নিয়ে যান। তখন রাত প্রায় ৮টা বাজে। সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করা আহ্বান জানান। পরে আমি বলি আমি দলের কোন পদে নাই। আমি তার কাছে কালকিনির বাস্তবতা তুলে ধরি। পরে ওবায়দুল কাদের আমাকে বলেন, তুমি আমার কথা শুনলে তোমাকে দলের ভালো অবস্থানে রাখা হবে। আমি তাকে বলি এলাকায় গিয়ে আমি কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাব। সবুজ আরও বলেন, আমি নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়িয়ে জনগণের কথায় নির্বাচন করব।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল পুলিশের গাড়িতে ওঠার পর সবুজ নিখোঁজের সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে তার সমর্থকেরা গতকাল সন্ধ্যা থেকে থানার সামনে অবস্থান নেন। পরে বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালান বিক্ষুব্ধ সমর্থকেরা। একপর্যায়ে নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে সবুজের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। টানা তিন ঘণ্টার সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হন। এ সময় দুই পক্ষের লোকজনের হাতে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দেখা যায়।

সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দও শোনা গেছে। সংঘর্ষের সময় শতাধিক দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন কমপক্ষে ৬০ জন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত একজনকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।