মায়ার্সের ব্যাটেই সব শেষ

স্কোর : বাংলাদেশ ৪৩০ ও ২২৩/৮ডি.

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৯ ও ৩৯৫/৭। ফল : উইন্ডিজ ৩ উইকেটে জয়ী

শেষদিনের ভঙ্গুর উইকেট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রায় দ্বিতীয় সারির দলের সাতটা উইকেটের পতন ঘটানোর জন্য দলে তিন স্পিনার (চোটের কারণে সাকিব বাইরে), ঘরের মাঠে টাইগারদের গর্জন শোনার প্রত্যাশার রঙে পানি ঢেলে দিয়েছেন কাইল মায়ার্স। চট্টগ্রাম টেস্টের চারদিন এগিয়ে থেকেও শেষদিনটা নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ সফরে আসা ক্যারিবিয়ান দল। শেষ দিনটা নিজেদের করে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’- এই আপ্তবাক্যটারও যথার্থতা প্রমাণ করেছে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দলের পরাজয় কোন অজুহাতই দাঁড় করানো যাচ্ছে না। বরং ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটের কৌলিন্যের বারতা দিয়ে শেষ হয়েছে চট্টগ্রাম টেস্ট। যাতে পরাজিত দলটার নাম বাংলাদেশ।

ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের সেই ক্যালিপসো ছন্দ হারিয়েছে বহুকাল আগে। ব্রায়ান লারা উত্তর যুগে মাঝে মাঝে ক্রিস গেইলরা ‘হঠাৎ আলোর ঝলকানি’ দেখালেও ধারাবাহিকতা ছিল না অনেকদিন। কভিড-১৯ জনিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে দলের নিয়মিত ক্রিকেটারদের অনেকেই সফর থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণে স্কোয়াডে ঠাঁই পাওয়া কাইল মায়ার্ম অভিষেক ম্যাচে অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রেকর্ড বইয়ে পাতার পর পাতা লিখিয়েছেন নতুন করে (বিস্তারিত খেলার পাতায়), আরেক অভিষিক্ত এনক্রুমা বনার দিয়েছেন যোগ্য সহায়তা, টেল এন্ডাররা দিয়েছেন ধৈর্যের পরীক্ষা সব মিলিয়ে আবারো ক্যালিপসো ছন্দের ফিরে আসাটা দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। অথচ এই ক্যারিবিয়ান দলটাকে নিয়েই না কত উপহাস করা হয়েছে। বাংলাদেশ দলের জয়টা নিশ্চিত ধরেই ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্ট পাওয়ার হিসাব হয়েছে। কিন্তু শেষদিনে ক্যারিবিয়ানদের দৃঢ়তার বিপরীতে বাংলাদেশের পুরো একাদশকেই মনে হয়েছে ছন্নছাড়া।

তা কেন এমন হলো? পোস্টমর্টেম হতেই পারে। টেস্ট ক্রিকেটে সবে ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ করতে থাকা আফগানিস্তানের কাছে ঘরের মাটিতে পরাজয়ের পর বাংলাদেশ দল কি তা থেকে বেরিয়ে আসার হোমওয়ার্ক করেছিল? দলের ভেতরে কাজ কিছু হয়েছিল কিনা, তা জানার উপায় নেই। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টের শেষদিনে বাংলাদেশের ফিল্ডসম্যানরা যে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে তুলতে মাঠে নেমেছিলেন, তা দিনের শুরুতে স্পষ্ট ছিল। অনেকটাই হালকা মেজাজে ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। চট্টগ্রামের উইকেট প্রথাগতভাবে শেষদিনে স্পিনারদের সেভাবে সহায়তা না করলেও মোটামুটি টার্ন পাওয়া যাচ্ছিল। বোলাররা সঠিক জায়গায় বল ফেলতে ব্যর্থই হয়েছেন বলা যায়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি। দলে সাকিব না থাকলে আত্মবিশ্বাসের পারদ যে কতটা নিচে নামে তার বড় প্রমাণ হয়ে রইল এই টেস্ট। ফিল্ডিংয়ের সময়ে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান তামিম ইকবালও। ফলে মোমিনুল যেন অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েন। তাকে সাহস যোগানোর বা পরিকল্পনায় যোগ্য সহায়তা দেয়ার মতো এক মুশফিকুর রহিম ছাড়া আর কোন সিনিয়র ক্রিকেটার তখন মাঠে থাকেননি। ক্রিকেটারদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজই তামিম-সাকিবের অনুপস্থিতিতে ঘরের মাঠেই ক্রিকেটারদের চাপের বিষয়টা জানান দিচ্ছিল।

জয়ের জন্য ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে যে দলের তিন ক্রিকেটার চতুর্থ দিনেই সাজঘরে ফিরেছে, তাদের চাপে ফেলার জন্য যে কৌশলের প্রয়োজন ছিল, তা মাঠে দেখা যায়নি। বরং পঞ্চম দিনে কাইল মায়ার্স ও এনক্রুমা বনারের পার্টনারশিপ যত এগিয়েছে, ততই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের হাল ছাড়তে দেখা গেছে। মায়ার্স- এনক্রুমা জুটি দিনের প্রথম দুটো সেশন বাংলাদেশের বোলারদের হতাশায় পুড়িয়েছেন। অথচ দিনের প্রথম সেশনে এই জুটি ভাঙার তিনটা বড় সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।

ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকা মায়ার্স তথা চট্টগ্রাম টেস্টে ক্যারিবিয়ান রূপকথার নায়ককে ফেরানোর সবচেয়ে সহজ সুযোগটা ছিল তিনি যখন ৪৭ রানে। তাইজুলের বলে তার বিরূদ্ধে লেগ বিফোর উইকেটের আবেদন হলে আম্পায়ার সাড়া দেননি। দুটো রিভিউ হাতে থাকলেও তার সুযোগ নেননি অধিনায়ক মোমিনুল। রিপ্লেতে সুস্পষ্টভাবেই দেখা গেছে যে বল আঘাত করছিল স্ট্যাম্পে। এর মাত্র দুই রান মিরাজের বলে স্লিপে পর তার ক্যাচ ছাড়েন শান্ত, যদিও ক্যাচটা কঠিন ছিল। বাংলাদেশ দলের হাতছাড়া করা সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে মায়ার্সই শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম টেস্টের নায়ক। দিনের প্রথম সেশনে বোনারকেও আউট করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবারও রিভিউ নিতে সিদ্ধান্তহীনতা। নাইম হাসানের শার্প টার্নার আঘাত করেছিল বনারের প্যাডে। লেগ বিফোর উইকেটের আবেদনে সাড়া দেননি ফিল্ড আম্পায়ার। রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ। ২৫ রানে জীবন পাওয়া বনার ৮৬ রানে তাইজুলের বলে লেগ বিফোর উইকেট হওয়ার আগে মায়ার্সের সঙ্গে উপহার দেন ২১৬ রান। এই জুটিটাই গড়ে দেয় চতুর্থ দিনে তিন উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের ভিত।

প্রথম দুই সেশন উইকেটশূন্য থাকা বাংলাদেশ দল বনারকে ফেরানোর পর নাইম হাসানের বলে ৯ রান করা জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে সাজঘরের পথ ধরিয়ে নাটকীয়তার আভাস দিয়েছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম দিনটা যে ছিল ক্যারিবিয়ানদের। মায়ার্সের সঙ্গে জুটি বেধে মাত্র ২০ রান কর আউট হওয়া জসুয়া ডা সিলভার পার্টনারশিপটা হয়ে যায় আরও ১০০ রানের। ৩৯২ রানে জসুয়া ডি সিলভা আউট হওয়ার পর কেমার রোচ রানের খাতা না খুলেই ফেরেন। বিশালদেহী স্পিনার রাকিম কর্নওয়াল মাত্র তিন বল মোকাবিলা করে নামের পাশে রান জমা করতে ব্যর্থ হলেও অপর প্রান্তে মায়ার্সের ব্যাট থেকে আসা জয়সূচক রানটা উদযাপন করেই মাঠ ছাড়েন।

ক্যারিবিয়ানদের (নাকি মায়ার্সের) এই জয়ে ম্লান হয়ে যায় বাংলাদেশের মেহেদি মিরাজের ক্যারিবিয়ানদের দুই ইনিংসে আটটি উইকেট শিকারসহ টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম আর অধিনায়ক মোমিনুলের রেকর্ড গড়া দশম সেঞ্চুরি। বাংলাদেশ দলকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম পয়েন্ট অর্জন থেকে বঞ্চিত করে আগের ৪০ পয়েন্টের সঙ্গে আরও ২০ পয়েন্ট যোগ করে তৃপ্তির হাসি হাসে ফিল সিমন্সের শিষ্যরা।

সোমবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৫ মাঘ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

মায়ার্সের ব্যাটেই সব শেষ

বিশেষ প্রতিনিধি

image

ডাবল সেঞ্চুরি করার পর মায়ার্সকে মুশফিকের অভিনন্দন -বিসিবি

স্কোর : বাংলাদেশ ৪৩০ ও ২২৩/৮ডি.

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৯ ও ৩৯৫/৭। ফল : উইন্ডিজ ৩ উইকেটে জয়ী

শেষদিনের ভঙ্গুর উইকেট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রায় দ্বিতীয় সারির দলের সাতটা উইকেটের পতন ঘটানোর জন্য দলে তিন স্পিনার (চোটের কারণে সাকিব বাইরে), ঘরের মাঠে টাইগারদের গর্জন শোনার প্রত্যাশার রঙে পানি ঢেলে দিয়েছেন কাইল মায়ার্স। চট্টগ্রাম টেস্টের চারদিন এগিয়ে থেকেও শেষদিনটা নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ সফরে আসা ক্যারিবিয়ান দল। শেষ দিনটা নিজেদের করে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’- এই আপ্তবাক্যটারও যথার্থতা প্রমাণ করেছে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দলের পরাজয় কোন অজুহাতই দাঁড় করানো যাচ্ছে না। বরং ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটের কৌলিন্যের বারতা দিয়ে শেষ হয়েছে চট্টগ্রাম টেস্ট। যাতে পরাজিত দলটার নাম বাংলাদেশ।

ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের সেই ক্যালিপসো ছন্দ হারিয়েছে বহুকাল আগে। ব্রায়ান লারা উত্তর যুগে মাঝে মাঝে ক্রিস গেইলরা ‘হঠাৎ আলোর ঝলকানি’ দেখালেও ধারাবাহিকতা ছিল না অনেকদিন। কভিড-১৯ জনিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে দলের নিয়মিত ক্রিকেটারদের অনেকেই সফর থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণে স্কোয়াডে ঠাঁই পাওয়া কাইল মায়ার্ম অভিষেক ম্যাচে অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রেকর্ড বইয়ে পাতার পর পাতা লিখিয়েছেন নতুন করে (বিস্তারিত খেলার পাতায়), আরেক অভিষিক্ত এনক্রুমা বনার দিয়েছেন যোগ্য সহায়তা, টেল এন্ডাররা দিয়েছেন ধৈর্যের পরীক্ষা সব মিলিয়ে আবারো ক্যালিপসো ছন্দের ফিরে আসাটা দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। অথচ এই ক্যারিবিয়ান দলটাকে নিয়েই না কত উপহাস করা হয়েছে। বাংলাদেশ দলের জয়টা নিশ্চিত ধরেই ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্ট পাওয়ার হিসাব হয়েছে। কিন্তু শেষদিনে ক্যারিবিয়ানদের দৃঢ়তার বিপরীতে বাংলাদেশের পুরো একাদশকেই মনে হয়েছে ছন্নছাড়া।

তা কেন এমন হলো? পোস্টমর্টেম হতেই পারে। টেস্ট ক্রিকেটে সবে ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ করতে থাকা আফগানিস্তানের কাছে ঘরের মাটিতে পরাজয়ের পর বাংলাদেশ দল কি তা থেকে বেরিয়ে আসার হোমওয়ার্ক করেছিল? দলের ভেতরে কাজ কিছু হয়েছিল কিনা, তা জানার উপায় নেই। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টের শেষদিনে বাংলাদেশের ফিল্ডসম্যানরা যে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে তুলতে মাঠে নেমেছিলেন, তা দিনের শুরুতে স্পষ্ট ছিল। অনেকটাই হালকা মেজাজে ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। চট্টগ্রামের উইকেট প্রথাগতভাবে শেষদিনে স্পিনারদের সেভাবে সহায়তা না করলেও মোটামুটি টার্ন পাওয়া যাচ্ছিল। বোলাররা সঠিক জায়গায় বল ফেলতে ব্যর্থই হয়েছেন বলা যায়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছিল সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি। দলে সাকিব না থাকলে আত্মবিশ্বাসের পারদ যে কতটা নিচে নামে তার বড় প্রমাণ হয়ে রইল এই টেস্ট। ফিল্ডিংয়ের সময়ে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে যান তামিম ইকবালও। ফলে মোমিনুল যেন অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েন। তাকে সাহস যোগানোর বা পরিকল্পনায় যোগ্য সহায়তা দেয়ার মতো এক মুশফিকুর রহিম ছাড়া আর কোন সিনিয়র ক্রিকেটার তখন মাঠে থাকেননি। ক্রিকেটারদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজই তামিম-সাকিবের অনুপস্থিতিতে ঘরের মাঠেই ক্রিকেটারদের চাপের বিষয়টা জানান দিচ্ছিল।

জয়ের জন্য ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে যে দলের তিন ক্রিকেটার চতুর্থ দিনেই সাজঘরে ফিরেছে, তাদের চাপে ফেলার জন্য যে কৌশলের প্রয়োজন ছিল, তা মাঠে দেখা যায়নি। বরং পঞ্চম দিনে কাইল মায়ার্স ও এনক্রুমা বনারের পার্টনারশিপ যত এগিয়েছে, ততই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের হাল ছাড়তে দেখা গেছে। মায়ার্স- এনক্রুমা জুটি দিনের প্রথম দুটো সেশন বাংলাদেশের বোলারদের হতাশায় পুড়িয়েছেন। অথচ দিনের প্রথম সেশনে এই জুটি ভাঙার তিনটা বড় সুযোগ হাতছাড়া করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।

ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকা মায়ার্স তথা চট্টগ্রাম টেস্টে ক্যারিবিয়ান রূপকথার নায়ককে ফেরানোর সবচেয়ে সহজ সুযোগটা ছিল তিনি যখন ৪৭ রানে। তাইজুলের বলে তার বিরূদ্ধে লেগ বিফোর উইকেটের আবেদন হলে আম্পায়ার সাড়া দেননি। দুটো রিভিউ হাতে থাকলেও তার সুযোগ নেননি অধিনায়ক মোমিনুল। রিপ্লেতে সুস্পষ্টভাবেই দেখা গেছে যে বল আঘাত করছিল স্ট্যাম্পে। এর মাত্র দুই রান মিরাজের বলে স্লিপে পর তার ক্যাচ ছাড়েন শান্ত, যদিও ক্যাচটা কঠিন ছিল। বাংলাদেশ দলের হাতছাড়া করা সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে মায়ার্সই শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম টেস্টের নায়ক। দিনের প্রথম সেশনে বোনারকেও আউট করার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। এবারও রিভিউ নিতে সিদ্ধান্তহীনতা। নাইম হাসানের শার্প টার্নার আঘাত করেছিল বনারের প্যাডে। লেগ বিফোর উইকেটের আবেদনে সাড়া দেননি ফিল্ড আম্পায়ার। রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ। ২৫ রানে জীবন পাওয়া বনার ৮৬ রানে তাইজুলের বলে লেগ বিফোর উইকেট হওয়ার আগে মায়ার্সের সঙ্গে উপহার দেন ২১৬ রান। এই জুটিটাই গড়ে দেয় চতুর্থ দিনে তিন উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের ভিত।

প্রথম দুই সেশন উইকেটশূন্য থাকা বাংলাদেশ দল বনারকে ফেরানোর পর নাইম হাসানের বলে ৯ রান করা জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে সাজঘরের পথ ধরিয়ে নাটকীয়তার আভাস দিয়েছিল। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম দিনটা যে ছিল ক্যারিবিয়ানদের। মায়ার্সের সঙ্গে জুটি বেধে মাত্র ২০ রান কর আউট হওয়া জসুয়া ডা সিলভার পার্টনারশিপটা হয়ে যায় আরও ১০০ রানের। ৩৯২ রানে জসুয়া ডি সিলভা আউট হওয়ার পর কেমার রোচ রানের খাতা না খুলেই ফেরেন। বিশালদেহী স্পিনার রাকিম কর্নওয়াল মাত্র তিন বল মোকাবিলা করে নামের পাশে রান জমা করতে ব্যর্থ হলেও অপর প্রান্তে মায়ার্সের ব্যাট থেকে আসা জয়সূচক রানটা উদযাপন করেই মাঠ ছাড়েন।

ক্যারিবিয়ানদের (নাকি মায়ার্সের) এই জয়ে ম্লান হয়ে যায় বাংলাদেশের মেহেদি মিরাজের ক্যারিবিয়ানদের দুই ইনিংসে আটটি উইকেট শিকারসহ টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম আর অধিনায়ক মোমিনুলের রেকর্ড গড়া দশম সেঞ্চুরি। বাংলাদেশ দলকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম পয়েন্ট অর্জন থেকে বঞ্চিত করে আগের ৪০ পয়েন্টের সঙ্গে আরও ২০ পয়েন্ট যোগ করে তৃপ্তির হাসি হাসে ফিল সিমন্সের শিষ্যরা।