শেয়ারবাজারে বড় পতন

সপ্তাহের শুরুটাই হলো বড় পতন দিয়ে। দীর্ঘদিন পতনে থাকা শেয়ারবাজারে সম্প্রতি উত্থান শুরু হয়। ক্রমেই বাড়তে থাকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক। একই সঙ্গে বাড়ে শেয়ারদর ও লেনদেনের পরিমাণ। তবে হঠাৎ ফের শুরু হয়েছে বড় পতন। গতকাল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪২.৮৮ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪২৬.৭৬ পয়েন্ট কমেছে। এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২২৪টির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারে হঠাৎ এই পতনের বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭৭১ কোটি ১২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে যা আগের দিন থেকে ৫৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪২.৮৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫০৪.৭৮ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২৫.৮৭ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ৮২.৬২ পয়েন্ট এবং সিডিএসইটি ৪০.৫৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১২৩৫.৪৩ পয়েন্টে, ২০৯১.১১ পয়েন্ট এবং ১১৭০.৫৮ পয়েন্টে। ডিএসইতে গতকাল ৩৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৪৩টির বা ১২.১৮ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ২২৪টির বা ৬৩.৪৫ শতাংশের এবং ৮৬টির বা ২৪.৩৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪২৬.৭৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯০৪.৩৮ পয়েন্টে। সিএসইতে গতকাল ২২৪টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫০টির আর ৪৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৪৪ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘এটা স্বাভাবিক পতন না। তবে এর পেছনে কারণ আছে। প্রথমত, সম্প্রতি কয়েকটি কোম্পানি বাজারে এসেছে। এসব কোম্পানির শেয়ার বেশি দামে কিনেছে অনেক বিনিয়োগকারী। এখন তারা মনে করছে, হয়তো সেসব কোম্পানির ভালো লভ্যাংশ পাবেন না। তাই তারা শেয়ারগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন। এর কারণে বাজারে পতন হতে পারে। আরেকটা কারণ হলো, বর্তমানে ব্যাংকিং খাত নিয়ে ঝামেলা চলছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ওয়ার্কিং ক্যাপিটালকে ট্রার্ম লোনে কনর্ভাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ব্যাংকের ঋণ আদায় কমবে। তাই ব্যাংকের শেয়ারগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। এতে বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়েছে। আর শেয়ার বিক্রির চাপ বৃদ্ধির কারছে সূচক কমছে। আমার কাছে এই দুটাই কারণ মনে হয়। তবে আমি অনুরোধ করব, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) যেমন বিষয়গুলো খেয়াল করে যে, কেন শেয়ারবাজারে এমন পতন হচ্ছে।’

গতকাল ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ১৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৫৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৫৬ লাখ ৩১ হাজার ৮২৬টি শেয়ার ২৭ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৫৫ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৯ কোটি ৩০ লাখ ৮২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে গ্রামীণফোনের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ কোটি ৮০ লাখ ৩৪ হাজার টাকার লাফার্জহোলসিমের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬ কোটি ১২ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে রেনেটার। গতকাল ডিএসই’র ২০টি খাতের ৩৫৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। ২০টি খাতের মধ্যে সাতটি খাতের কোন কোম্পানির শেয়ার দর গতকাল বাড়েনি।

আরও খবর
মায়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান : তুরস্কের রাষ্ট্রদূত
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নরওয়েকে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শান্তিরক্ষা মিশনে ১৯০০ নারী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী
বিএনপির অপকর্ম বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না কাদের
গণফোরাম থেকে কিবরিয়ার পদত্যাগ
বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে চেয়ারম্যানের নির্যাতন
আল জাজিরার তথ্যচিত্র মন্দ সাংবাদিকতার দৃষ্টান্ত এডিটরস গিল্ড
ফিরোজের অবৈধ সম্পদের চার্জশিট দিচ্ছে দুদক
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের অবরোধ-বিক্ষোভ
এক সপ্তাহেও গ্রেপ্তার হয়নি এজাহারভুক্ত চার আসামি
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী গ্রেপ্তার

সোমবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৫ মাঘ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

শেয়ারবাজারে বড় পতন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সপ্তাহের শুরুটাই হলো বড় পতন দিয়ে। দীর্ঘদিন পতনে থাকা শেয়ারবাজারে সম্প্রতি উত্থান শুরু হয়। ক্রমেই বাড়তে থাকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক। একই সঙ্গে বাড়ে শেয়ারদর ও লেনদেনের পরিমাণ। তবে হঠাৎ ফের শুরু হয়েছে বড় পতন। গতকাল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪২.৮৮ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪২৬.৭৬ পয়েন্ট কমেছে। এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২২৪টির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারে হঠাৎ এই পতনের বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭৭১ কোটি ১২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে যা আগের দিন থেকে ৫৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৪২.৮৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫০৪.৭৮ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২৫.৮৭ পয়েন্ট, ডিএসই-৩০ সূচক ৮২.৬২ পয়েন্ট এবং সিডিএসইটি ৪০.৫৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১২৩৫.৪৩ পয়েন্টে, ২০৯১.১১ পয়েন্ট এবং ১১৭০.৫৮ পয়েন্টে। ডিএসইতে গতকাল ৩৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৪৩টির বা ১২.১৮ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ২২৪টির বা ৬৩.৪৫ শতাংশের এবং ৮৬টির বা ২৪.৩৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪২৬.৭৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯০৪.৩৮ পয়েন্টে। সিএসইতে গতকাল ২২৪টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৫০টির আর ৪৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৪৪ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘এটা স্বাভাবিক পতন না। তবে এর পেছনে কারণ আছে। প্রথমত, সম্প্রতি কয়েকটি কোম্পানি বাজারে এসেছে। এসব কোম্পানির শেয়ার বেশি দামে কিনেছে অনেক বিনিয়োগকারী। এখন তারা মনে করছে, হয়তো সেসব কোম্পানির ভালো লভ্যাংশ পাবেন না। তাই তারা শেয়ারগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন। এর কারণে বাজারে পতন হতে পারে। আরেকটা কারণ হলো, বর্তমানে ব্যাংকিং খাত নিয়ে ঝামেলা চলছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ওয়ার্কিং ক্যাপিটালকে ট্রার্ম লোনে কনর্ভাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ব্যাংকের ঋণ আদায় কমবে। তাই ব্যাংকের শেয়ারগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। এতে বাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়েছে। আর শেয়ার বিক্রির চাপ বৃদ্ধির কারছে সূচক কমছে। আমার কাছে এই দুটাই কারণ মনে হয়। তবে আমি অনুরোধ করব, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) যেমন বিষয়গুলো খেয়াল করে যে, কেন শেয়ারবাজারে এমন পতন হচ্ছে।’

গতকাল ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ১৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৫৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৫৬ লাখ ৩১ হাজার ৮২৬টি শেয়ার ২৭ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৫৫ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৯ কোটি ৩০ লাখ ৮২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে গ্রামীণফোনের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ কোটি ৮০ লাখ ৩৪ হাজার টাকার লাফার্জহোলসিমের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬ কোটি ১২ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে রেনেটার। গতকাল ডিএসই’র ২০টি খাতের ৩৫৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। ২০টি খাতের মধ্যে সাতটি খাতের কোন কোম্পানির শেয়ার দর গতকাল বাড়েনি।