৩০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না ব্যাংক

দেশের ব্যাংকগুলো তাদের শেয়ারধারীদের কত লভ্যাংশ দিতে পারবে, তা নির্ধারণ করে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি জারি করা নীতিমালা অনুযায়ী, কোন ব্যাংক কত লভ্যাংশ দিতে পারবে, তা তাদের মূলধন কাঠামোর ওপর নির্ভর করবে। তবে কোন ব্যাংক নগদ ও বোনাস মিলিয়ে ৩০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা এবং ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের রিটার্নের বিষয়টি বিবেচনা করে লভ্যাংশ দেয়ার এই নীতিমালা করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়, মহামারীর সংকটে ব্যাংকগুলো যাতে মুনাফা যথাসম্ভব অবন্টিত রেখে মূলধন শক্তিশালী করার মাধ্যমে পর্যাপ্ত তারল্য বজায় রাখতে পারে, সেজন্য গত বছরের ১১ মে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছিল। ওই প্রজ্ঞাপন শুধু ২০১৯ সালের জন্য প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু সামনের বছরগুলোতে ব্যাংকগুলোর মূলধন কাঠামো আরও সুসংহত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। সেজন্য সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে এই নতুন নীতিমালা অনুসরণ করতে বলা হচ্ছে।

যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নেয়নি এবং যেসব ব্যাংক মূলধনের পরিমাণ ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১৫ শতাংশ বা তার বেশি, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১৫% বা তার বেশি মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা শেয়ারধারীদের ১৫ শতাংশ নগদসহ সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নেয়নি এবং ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ১৩.৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা ১২.৫ শতাংশ নগদসহ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত লভ্যাংশ দিতে পারবে। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নেয়নি এবং ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১১.৮৭৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা সাড়ে ৭.৫ শতাংশ নগদসহ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত লভ্যাংশ দিতে পারবে। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নিয়েছে, মুনাফা থেকে তা সমন্বয়ের পর লভ্যাংশ দিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে যেসব ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১২.৫ শতাংশ বা তার বেশি মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা ৬ শতাংশ নগদসহ ১২ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নিয়েছে, মুনাফা থেকে তা সমন্বয়ের পর যারা ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১১.৮৭৫ শতাংশ থেকে ১২.৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা ৫ শতাংশ নগদসহ ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে।

যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নিয়েছে, মুনাফা থেকে তা সমন্বয়ের পর যারা ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ১০.৬২৫ শতাংশ থেকে ১১.৮৭ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিতে পারবে। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে সমাপ্ত বছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৬ মাঘ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

৩০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না ব্যাংক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

দেশের ব্যাংকগুলো তাদের শেয়ারধারীদের কত লভ্যাংশ দিতে পারবে, তা নির্ধারণ করে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি জারি করা নীতিমালা অনুযায়ী, কোন ব্যাংক কত লভ্যাংশ দিতে পারবে, তা তাদের মূলধন কাঠামোর ওপর নির্ভর করবে। তবে কোন ব্যাংক নগদ ও বোনাস মিলিয়ে ৩০ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা এবং ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের রিটার্নের বিষয়টি বিবেচনা করে লভ্যাংশ দেয়ার এই নীতিমালা করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়, মহামারীর সংকটে ব্যাংকগুলো যাতে মুনাফা যথাসম্ভব অবন্টিত রেখে মূলধন শক্তিশালী করার মাধ্যমে পর্যাপ্ত তারল্য বজায় রাখতে পারে, সেজন্য গত বছরের ১১ মে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছিল। ওই প্রজ্ঞাপন শুধু ২০১৯ সালের জন্য প্রযোজ্য ছিল। কিন্তু সামনের বছরগুলোতে ব্যাংকগুলোর মূলধন কাঠামো আরও সুসংহত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। সেজন্য সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে এই নতুন নীতিমালা অনুসরণ করতে বলা হচ্ছে।

যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নেয়নি এবং যেসব ব্যাংক মূলধনের পরিমাণ ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১৫ শতাংশ বা তার বেশি, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১৫% বা তার বেশি মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা শেয়ারধারীদের ১৫ শতাংশ নগদসহ সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নেয়নি এবং ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ১৩.৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা ১২.৫ শতাংশ নগদসহ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত লভ্যাংশ দিতে পারবে। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নেয়নি এবং ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১১.৮৭৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা সাড়ে ৭.৫ শতাংশ নগদসহ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত লভ্যাংশ দিতে পারবে। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নিয়েছে, মুনাফা থেকে তা সমন্বয়ের পর লভ্যাংশ দিতে পারবে। সে ক্ষেত্রে যেসব ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১২.৫ শতাংশ বা তার বেশি মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা ৬ শতাংশ নগদসহ ১২ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নিয়েছে, মুনাফা থেকে তা সমন্বয়ের পর যারা ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১১.৮৭৫ শতাংশ থেকে ১২.৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা ৫ শতাংশ নগদসহ ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে।

যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাড়তি সময় নিয়েছে, মুনাফা থেকে তা সমন্বয়ের পর যারা ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ১০.৬২৫ শতাংশ থেকে ১১.৮৭ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করেছে, তারা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিতে পারবে। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে সমাপ্ত বছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় জানানো হয়েছে।