আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি করার অভিযোগ করেছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণেরও অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত রোববার ডেল্টা লাইফের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানিটির নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী কামরুল আহসান এ ধরনের অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদিবা রহমান।

লিখিত বক্তব্যে কামরুল আহসান বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের বর্তমান চেয়ারম্যান যিনি এক সময় ডেল্টা লাইফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। এজন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডেল্টা লাইফের ২০১৯ সালের একচুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশনের বেসিস অনুমোদন দেয়া হয়নি। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার নবায়ন অনুমোদন না দিয়ে এবং কোম্পানিকে নানা অজুহাতে অন্যায়ভাবে জরিমানা আরোপের হুমকি দিচ্ছেন আইডিআরএ চেয়ারম্যান। এছাড়া কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বহিষ্কার করে প্রশাসক নিয়োগেরও হুমকি দিচ্ছেন। বিভিন্ন বিষয় সমাধানের জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে তিনি কোম্পানির কাছে প্রথমে ২ কোটি, পরে ১ কোটি ও সর্বশেষ ৫০ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। এ সংক্রান্ত অডিও ক্লিপ ও ট্রান্সক্রিপটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ আকারে দাখিল করা হয়েছে। পরে এ বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগ অধিকতর তদন্ত করার আদেশ দেন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের কারণে ডেল্টা লাইফ কোম্পানি নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে এ হয়রানি বন্ধ করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আদিবা রহমান বলেন, আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান আমাদের কাছে ঘুষ চেয়েছিলেন। আমরা সেই ঘুষ না দেয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ওই কর্মকর্তা (আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান) মোবাইল ফোনে ঘুষ চেয়েছেন। আমাদের কাছে এর রেকর্ড রয়েছে। এগুলো আমরা দুদকে দিয়েছি। অডিট রিপোর্টে কিছু অভিযোগ তুলেছেন। রিপোর্টেই বলা আছে এগুলো প্রমাণিত নয়। এক্ষেত্রে প্রমাণিত না হলে অভিযোগ আমলে নেয়া যায় না।

ডেল্টা লাইফকে পাঠানো আইডিআরএ’র এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ডেল্টা লাইফে গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে কিনা, তা নিরীক্ষার জন্য গত বছর দুটি ফার্মকে নিয়োগ দেয়া হয়। এগুলো হলো- এমএস হাওলাদার ইউনূস অ্যান্ড কোং এবং এমএস ফেমস অ্যান্ড আর। এর একটি ফার্ম নিরীক্ষা এবং অন্যটি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করেছে।

এদিকে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ২০০ ধারায় ডেল্টা লাইফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ১৭ জানুয়ারি মামলা করেছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেন এফসিএ।

জানা গেছে, বীমা খাতের অন্যতম প্রভাবশালী কোম্পানি ডেল্টা লাইফ। ১৯৮৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৫ সালে শেয়ারবাজারে আসে। এর আগেও মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় দীর্ঘদিন কোম্পানির লভ্যাংশ আটকে ছিল।

মঙ্গলবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৬ মাঘ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি করার অভিযোগ করেছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণেরও অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত রোববার ডেল্টা লাইফের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানিটির নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী কামরুল আহসান এ ধরনের অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদিবা রহমান।

লিখিত বক্তব্যে কামরুল আহসান বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের বর্তমান চেয়ারম্যান যিনি এক সময় ডেল্টা লাইফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। এজন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডেল্টা লাইফের ২০১৯ সালের একচুয়ারিয়াল ভ্যালুয়েশনের বেসিস অনুমোদন দেয়া হয়নি। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার নবায়ন অনুমোদন না দিয়ে এবং কোম্পানিকে নানা অজুহাতে অন্যায়ভাবে জরিমানা আরোপের হুমকি দিচ্ছেন আইডিআরএ চেয়ারম্যান। এছাড়া কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বহিষ্কার করে প্রশাসক নিয়োগেরও হুমকি দিচ্ছেন। বিভিন্ন বিষয় সমাধানের জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে তিনি কোম্পানির কাছে প্রথমে ২ কোটি, পরে ১ কোটি ও সর্বশেষ ৫০ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। এ সংক্রান্ত অডিও ক্লিপ ও ট্রান্সক্রিপটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ আকারে দাখিল করা হয়েছে। পরে এ বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগ অধিকতর তদন্ত করার আদেশ দেন। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের কারণে ডেল্টা লাইফ কোম্পানি নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে এ হয়রানি বন্ধ করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আদিবা রহমান বলেন, আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান আমাদের কাছে ঘুষ চেয়েছিলেন। আমরা সেই ঘুষ না দেয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ওই কর্মকর্তা (আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান) মোবাইল ফোনে ঘুষ চেয়েছেন। আমাদের কাছে এর রেকর্ড রয়েছে। এগুলো আমরা দুদকে দিয়েছি। অডিট রিপোর্টে কিছু অভিযোগ তুলেছেন। রিপোর্টেই বলা আছে এগুলো প্রমাণিত নয়। এক্ষেত্রে প্রমাণিত না হলে অভিযোগ আমলে নেয়া যায় না।

ডেল্টা লাইফকে পাঠানো আইডিআরএ’র এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ডেল্টা লাইফে গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে কিনা, তা নিরীক্ষার জন্য গত বছর দুটি ফার্মকে নিয়োগ দেয়া হয়। এগুলো হলো- এমএস হাওলাদার ইউনূস অ্যান্ড কোং এবং এমএস ফেমস অ্যান্ড আর। এর একটি ফার্ম নিরীক্ষা এবং অন্যটি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করেছে।

এদিকে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ২০০ ধারায় ডেল্টা লাইফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ১৭ জানুয়ারি মামলা করেছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেন এফসিএ।

জানা গেছে, বীমা খাতের অন্যতম প্রভাবশালী কোম্পানি ডেল্টা লাইফ। ১৯৮৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৫ সালে শেয়ারবাজারে আসে। এর আগেও মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় দীর্ঘদিন কোম্পানির লভ্যাংশ আটকে ছিল।