কাটছে সংশয় বাড়ছে ভিড়

গণটিকা : দ্বিতীয় দিন সাড়ে ১৫ হাজার বেড়েছে

দেশব্যাপী করোনার টিকায় মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। ঢাকার কেন্দ্রগুলোতেও টিকাগ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে। গতকাল ছিল গণটিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন। প্রথমদিনের তুলনায় গতকাল টিকাগ্রহীতার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার বেড়েছে। এদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কেন্দ্রে টিকার নিবন্ধন করাতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ভিড় দেখা গেছে। দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রথমদিন আগাম নিবন্ধনকারী ব্যক্তিদের টিকা দেয়া হলেও দ্বিতীয় দিন ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। একদিকে নিবন্ধনকারীরা টিকা নিতে ভিড় করছেন, অপরদিকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়ে অনেকেই ভিড় করেন টিকাকেন্দ্রগুলোতে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল রাতে বলা হয়, সারাদেশের এক হাজার ১৫টি টিকাদান কেন্দ্রে গতকাল মোট ৪৬ হাজার ৫০৯ জনকে টিকা দেয়া হয়। প্রথমদিন সারাদেশে টিকা দেয়া হয়েছিল ৩১ হাজার ১৬০ জনকে। দ্বিতীয় দিনে দেশব্যাপী টিকাগ্রহীতা বেড়েছে ১৫ হাজার ৩৪৯ জন। গতকাল টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে ৩৫ হাজার ৮৪৩ জন পুরুষ এবং ১০ হাজার ৬৪৬ জন মহিলা।

রাজধানীর ৪৬টি কেন্দ্রে গতকাল টিকা নিয়েছে সাত হাজার ১৭৮ জন, প্রথমদিন যা ছিল পাঁচ হাজার ৭১ জন। রাজধানীর হাসপাতালে গতকাল টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে পাঁচ হাজার ২০১ জন পুরুষ এবং এক হাজার ৯৭৭ জন মহিলা।

প্রথমদিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) টিকা নিয়েছিলেন ৫৬০ জন, আর দ্বিতীয় দিন নিয়েছেন ৮৯৮ জন। প্রথমদিন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন ৩১৪ জন এবং গতকাল নিয়েছেন ৩৫৪ জন। প্রথমদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেন ২৭০ জন এবং দ্বিতীয় দিন নিয়েছেন ৫০০ জন। অধিকাংশ কেন্দ্রেই টিকাগ্রহীতা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে জানিয়েছেন, প্রথম ডোজ টিকা দেয়ার এক থেকে দেড় মাস পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে।

নারায়ণগঞ্জেও টিকায় আগ্রহ বাড়ছে

সংবাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছে, করোনার টিকা (ভ্যাকসিন) নেয়ার ব্যাপারে জনসাধারণের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। দ্বিতীয় দিনে জেলার ছয়টি কেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন ৩০৩ জন। প্রথম দিনে এই সংখ্যা ছিল ২২৪ জন। জেলায় এখন পর্যন্ত তিন হাজারেরও বেশি মানুষ নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। নিবন্ধন ও টিকাগ্রহীতাদের তালিকা ক্রমান্বয়ে বাড়বে বলেও আশাবাদ স্বাস্থ্য বিভাগের।

গতকাল সন্ধ্যায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যসূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে ৯০ জন এবং কোভিড ডেডিকেটেড নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে ১১০ জন করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর মধ্যে রূপগঞ্জে ২৫, আড়াইহাজারে ১৫, সোনারগাঁয়ে ৪৩ এবং বন্দরে ২০ জন করোনার টিকা নিয়েছেন। প্রথম দিনের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দ্বিতীয় দিন করোনার টিকাগ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে।

জেলা করোনা ফোকাল পারসন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘প্রথম দিনের তুলনায় বেশি সংখ্যক মানুষ টিকা নিয়েছেন। নিবন্ধনকারীর সংখ্যাও বাড়ছে।’ জনসাধারণের মধ্যে টিকা নিতে আগ্রহ থাকলেও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এই আগ্রহ তুলনামূলক কম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দ্বিতীয় দিনে টিকা নিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও করোনা ভ্যাকসিনেশন কমিটির সভাপতি মোস্তাইন বিল্লাহ। নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকা নেয়ার পর তিনি রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সবাইকে এই টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আসার আহ্বান জানান। টিকা নিয়েছেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বিও।

তিনি বলেন, সবার উচিত টিকা গ্রহণ করা। অন্য সাধারণ টিকার চেয়ে এই টিকা গ্রহণ পদ্ধতি আরও সহজ বলে মনে হয়েছে তার।

রংপুরে একদিনেই টিকাগ্রহীতা প্রায় দ্বিগুণ

সংবাদের রংপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দিনে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় পাঁচ হাজার ৫০৩ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। এই বিভাগে প্রথমদিন দুই হাজার ৯১২ জনকে টিকা দেয়া হয়েছিল।

প্রথমদিন টিকা দেবার পর কারোর শরীরে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা কারোর অসুস্থ হবার কোন খবর পাওয়া যায়নি। বরং স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকাদান কেন্দ্রে এসে টিকা প্রদান করেছে বলে তারা জানিয়েছে। রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. আহাদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল ৮ জেলায় করোনার টিকা দেয়া হয়েছে এর মধ্যে রংপুর জেলায় ১ হাজার ৩৪৭ জনকে, পঞ্চগড় জেলায় ৭৪৩ জনকে, নীলফামারীতে ৫৩০ জনকে, লালমনিরহাটে ৩২৯ জনকে কুড়িগ্রাম জেলায় ৫০২ জনকে, ঠাকুরগাঁয়ে ৬৪৯ জনকে, দিনাজপুরে ১১২৯ জনকে এবং গাইবান্ধায় ২৭৪ জনকে।

করোনার টিকা নিয়েছেন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতারা, প্রশাসনের কর্মকর্তা, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক, অধ্যক্ষ, মেডিকেল কলেজের শিক্ষকরা, নার্স, আয়া ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। এছাড়াও অ্য্যাপসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে ব্যক্তিরাও টিকা নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিচালক ডা. আহাদ আলী জানান, রংপুর বিভাগের দুই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে দুই শতাধিক বুথের মাধ্যমে করোনায় টিকা নিয়েছেন। টিকা নেবার পর কেউই অসুস্থতা অনুভব করেনি।

পাশর্^প্রতিক্রিয়া না হওয়ায় সিলেটেও আগ্রহ বাড়ছে

সিলেট থেকে দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, টিকা গ্রহণে জেলায় মানষের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। প্রথমদিনের টিকা গ্রহণের পর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দেয়ায় করোনাভাইরাসের এই টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ার কারণ।

গতকাল সিলেট নগরের দুটি টিকাদান কেন্দ্রে ১২১৯ জন টিকা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম। এদিন সদরের একটি কেন্দ্রে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা টিকাদান কর্মসূচি পরিদর্শন করেন।

তবে দ্বিতীয় দিন পুরো জেলায় মোট কতজন টিকা নিয়েছেন এ তথ্য বিকেল পর্যন্ত সিলেটের সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানাতে পারেনি। উপজেলার কেন্দ্রগুলোতেও টিকা গ্রহণে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

প্রথমদিকে সম্মুখসারির যোদ্ধাদের টিকা প্রদান করা হচ্ছে। গতকাল উৎসাহের সঙ্গে মানুষকে টিকাগ্রহণ করতে দেখা গেছে। ওসমানী হাসপাতাল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে রীতিমত উৎসবের আমেজ। মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা গ্রহণ করছেন।

এদিকে, গতকাল সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের ছালিয়া গ্রামের মকবুল আলী টিকা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন জোয়েন ওয়াগনার।

এ সময় টিকা এবং সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলেন জোয়েন ওয়াগনার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এ দেশের মানুষ আগে থেকে অনেক সচেতন। ইউএসএআইডি আমেরিকার জনগণ বাংলাদেশের জনগণের পাশে সবসময় আছে। ইউএসএআইডি’র আন্তরিকতায় এখন বাংলাদেশের মা ও শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমেছে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনার খাদিমনগরের পরিদর্শক অনুপ কুমার দেব, ২নং ওয়ার্ডের সহকারী স্বপ্না বেগম, মকবুল আলীর ছেলে আবদুস ছালাম ও সদর উপজেলা স্পোর্টস একাডেমির সদস্য আবুল কালাম আজাদ।

মঙ্গলবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৬ মাঘ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

কাটছে সংশয় বাড়ছে ভিড়

গণটিকা : দ্বিতীয় দিন সাড়ে ১৫ হাজার বেড়েছে

image

দেশব্যাপী করোনার টিকায় মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। ঢাকার কেন্দ্রগুলোতেও টিকাগ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে। গতকাল ছিল গণটিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন। প্রথমদিনের তুলনায় গতকাল টিকাগ্রহীতার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার বেড়েছে। এদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কেন্দ্রে টিকার নিবন্ধন করাতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ভিড় দেখা গেছে। দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া প্রথমদিন আগাম নিবন্ধনকারী ব্যক্তিদের টিকা দেয়া হলেও দ্বিতীয় দিন ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। একদিকে নিবন্ধনকারীরা টিকা নিতে ভিড় করছেন, অপরদিকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়ে অনেকেই ভিড় করেন টিকাকেন্দ্রগুলোতে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল রাতে বলা হয়, সারাদেশের এক হাজার ১৫টি টিকাদান কেন্দ্রে গতকাল মোট ৪৬ হাজার ৫০৯ জনকে টিকা দেয়া হয়। প্রথমদিন সারাদেশে টিকা দেয়া হয়েছিল ৩১ হাজার ১৬০ জনকে। দ্বিতীয় দিনে দেশব্যাপী টিকাগ্রহীতা বেড়েছে ১৫ হাজার ৩৪৯ জন। গতকাল টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে ৩৫ হাজার ৮৪৩ জন পুরুষ এবং ১০ হাজার ৬৪৬ জন মহিলা।

রাজধানীর ৪৬টি কেন্দ্রে গতকাল টিকা নিয়েছে সাত হাজার ১৭৮ জন, প্রথমদিন যা ছিল পাঁচ হাজার ৭১ জন। রাজধানীর হাসপাতালে গতকাল টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে পাঁচ হাজার ২০১ জন পুরুষ এবং এক হাজার ৯৭৭ জন মহিলা।

প্রথমদিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) টিকা নিয়েছিলেন ৫৬০ জন, আর দ্বিতীয় দিন নিয়েছেন ৮৯৮ জন। প্রথমদিন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন ৩১৪ জন এবং গতকাল নিয়েছেন ৩৫৪ জন। প্রথমদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেন ২৭০ জন এবং দ্বিতীয় দিন নিয়েছেন ৫০০ জন। অধিকাংশ কেন্দ্রেই টিকাগ্রহীতা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে জানিয়েছেন, প্রথম ডোজ টিকা দেয়ার এক থেকে দেড় মাস পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে।

নারায়ণগঞ্জেও টিকায় আগ্রহ বাড়ছে

সংবাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছে, করোনার টিকা (ভ্যাকসিন) নেয়ার ব্যাপারে জনসাধারণের আগ্রহ বাড়ছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। দ্বিতীয় দিনে জেলার ছয়টি কেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন ৩০৩ জন। প্রথম দিনে এই সংখ্যা ছিল ২২৪ জন। জেলায় এখন পর্যন্ত তিন হাজারেরও বেশি মানুষ নিবন্ধনের আওতায় এসেছে। নিবন্ধন ও টিকাগ্রহীতাদের তালিকা ক্রমান্বয়ে বাড়বে বলেও আশাবাদ স্বাস্থ্য বিভাগের।

গতকাল সন্ধ্যায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যসূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে ৯০ জন এবং কোভিড ডেডিকেটেড নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে ১১০ জন করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর মধ্যে রূপগঞ্জে ২৫, আড়াইহাজারে ১৫, সোনারগাঁয়ে ৪৩ এবং বন্দরে ২০ জন করোনার টিকা নিয়েছেন। প্রথম দিনের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দ্বিতীয় দিন করোনার টিকাগ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে।

জেলা করোনা ফোকাল পারসন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘প্রথম দিনের তুলনায় বেশি সংখ্যক মানুষ টিকা নিয়েছেন। নিবন্ধনকারীর সংখ্যাও বাড়ছে।’ জনসাধারণের মধ্যে টিকা নিতে আগ্রহ থাকলেও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এই আগ্রহ তুলনামূলক কম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

দ্বিতীয় দিনে টিকা নিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও করোনা ভ্যাকসিনেশন কমিটির সভাপতি মোস্তাইন বিল্লাহ। নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকা নেয়ার পর তিনি রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সবাইকে এই টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আসার আহ্বান জানান। টিকা নিয়েছেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বিও।

তিনি বলেন, সবার উচিত টিকা গ্রহণ করা। অন্য সাধারণ টিকার চেয়ে এই টিকা গ্রহণ পদ্ধতি আরও সহজ বলে মনে হয়েছে তার।

রংপুরে একদিনেই টিকাগ্রহীতা প্রায় দ্বিগুণ

সংবাদের রংপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দিনে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় পাঁচ হাজার ৫০৩ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। এই বিভাগে প্রথমদিন দুই হাজার ৯১২ জনকে টিকা দেয়া হয়েছিল।

প্রথমদিন টিকা দেবার পর কারোর শরীরে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা কারোর অসুস্থ হবার কোন খবর পাওয়া যায়নি। বরং স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিকাদান কেন্দ্রে এসে টিকা প্রদান করেছে বলে তারা জানিয়েছে। রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. আহাদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল ৮ জেলায় করোনার টিকা দেয়া হয়েছে এর মধ্যে রংপুর জেলায় ১ হাজার ৩৪৭ জনকে, পঞ্চগড় জেলায় ৭৪৩ জনকে, নীলফামারীতে ৫৩০ জনকে, লালমনিরহাটে ৩২৯ জনকে কুড়িগ্রাম জেলায় ৫০২ জনকে, ঠাকুরগাঁয়ে ৬৪৯ জনকে, দিনাজপুরে ১১২৯ জনকে এবং গাইবান্ধায় ২৭৪ জনকে।

করোনার টিকা নিয়েছেন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতারা, প্রশাসনের কর্মকর্তা, মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক, অধ্যক্ষ, মেডিকেল কলেজের শিক্ষকরা, নার্স, আয়া ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। এছাড়াও অ্য্যাপসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে ব্যক্তিরাও টিকা নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিচালক ডা. আহাদ আলী জানান, রংপুর বিভাগের দুই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে দুই শতাধিক বুথের মাধ্যমে করোনায় টিকা নিয়েছেন। টিকা নেবার পর কেউই অসুস্থতা অনুভব করেনি।

পাশর্^প্রতিক্রিয়া না হওয়ায় সিলেটেও আগ্রহ বাড়ছে

সিলেট থেকে দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, টিকা গ্রহণে জেলায় মানষের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। প্রথমদিনের টিকা গ্রহণের পর কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দেয়ায় করোনাভাইরাসের এই টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ার কারণ।

গতকাল সিলেট নগরের দুটি টিকাদান কেন্দ্রে ১২১৯ জন টিকা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম। এদিন সদরের একটি কেন্দ্রে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা টিকাদান কর্মসূচি পরিদর্শন করেন।

তবে দ্বিতীয় দিন পুরো জেলায় মোট কতজন টিকা নিয়েছেন এ তথ্য বিকেল পর্যন্ত সিলেটের সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানাতে পারেনি। উপজেলার কেন্দ্রগুলোতেও টিকা গ্রহণে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

প্রথমদিকে সম্মুখসারির যোদ্ধাদের টিকা প্রদান করা হচ্ছে। গতকাল উৎসাহের সঙ্গে মানুষকে টিকাগ্রহণ করতে দেখা গেছে। ওসমানী হাসপাতাল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে রীতিমত উৎসবের আমেজ। মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা গ্রহণ করছেন।

এদিকে, গতকাল সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের ছালিয়া গ্রামের মকবুল আলী টিকা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন জোয়েন ওয়াগনার।

এ সময় টিকা এবং সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলেন জোয়েন ওয়াগনার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এ দেশের মানুষ আগে থেকে অনেক সচেতন। ইউএসএআইডি আমেরিকার জনগণ বাংলাদেশের জনগণের পাশে সবসময় আছে। ইউএসএআইডি’র আন্তরিকতায় এখন বাংলাদেশের মা ও শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমেছে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনার খাদিমনগরের পরিদর্শক অনুপ কুমার দেব, ২নং ওয়ার্ডের সহকারী স্বপ্না বেগম, মকবুল আলীর ছেলে আবদুস ছালাম ও সদর উপজেলা স্পোর্টস একাডেমির সদস্য আবুল কালাম আজাদ।