একদিনেই ১ লাখ টিকা

বেড়েই চলেছে ভিড়

দেশব্যাপী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাগ্রহীতাদের ভিড় বেড়েছে। গণটিকা কর্মসূচির তৃতীয় দিনে টিকাগ্রহীতা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। গতকাল একদিনেই টিকা নিয়েছেন এক লাখ এক হাজার ৮২ জন। এখন কেন্দ্রে তাৎক্ষণিক নিবন্ধনেও টিকা দেয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি মানুষ করোনার টিকা পেতে নিবন্ধন করেছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এই মাসের শেষ নাগাদ ‘গ্যাভি’ সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ আরও দেড় লাখ ডোজ টিকা পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান।

গতকাল রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচির তৃতীয় দিনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন এক লাখ এক হাজার ৮২ জন। এর মধ্যে রাজধানীর ৪৬টি কেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন ১২ হাজার ৫১৭ জন। আর এ পর্যন্ত মোট ভ্যাকসিন নিয়েছেন এক লাখ ৭৯ হাজার ৩১৮ জন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিন টিকা নিয়েছিলেন ৩১ হাজার ১৬০ জন। দ্বিতীয় দিন নেন ৪৬ হাজার ৫০৯ জন। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন মোট ২৬ জনকে টিকা দেয়া হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, তৃতীয় দিন টিকা নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৯৪ জনের সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (জ্বর, টিকা দেয়া স্থানে লাল হওয়া ইত্যাদি) দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত মোট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ২০৭ জনের।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৪ হাজার ৫৮৬ জন এবং নারী ২৬ হাজার ৪৯৬ জন। গতকাল টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৫ হাজার ২২০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে চার হাজার ৮৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ হাজার ৫৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩ হাজার ১১৪ জন, রংপুর বিভাগে ১০ হাজার ২৩৭ জন, খুলনা বিভাগে ১১ হাজার ৩৭২ জন, বরিশাল বিভাগে চার হাজার ১৮১ জন ও সিলেট বিভাগে আট হাজার ৫৫৯ জন রয়েছেন।

বর্তমানে ঢাকায় ৪৬টি হাসপাতাল ও সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালসহ সারাদেশে মোট এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে রাজধানীতে ২০৪টি টিম এবং সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালে দুই হাজার ১৯৬টি টিম টিকা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এছাড়াও ভ্যাকসিন বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাত হাজার ৩৪৪টি টিম।

সচিবালয়ে তৃতীয় দিনে ৩৮০ জনের টিকাগ্রহণ

গতকাল সচিবালয়ে ৩৮০ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ভ্যাকসিন নিয়েছেন জানিয়ে সচিবালয় ক্লিনিকের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ পর্যন্ত মোট ৮০৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এ ক্লিনিক থেকে টিকা নিয়েছেন।’

তিনি জানান, এ ক্লিনিকে প্রথম দিন ১৬৭ জন, দ্বিতীয় দিন ২৫৭ এবং তৃতীয় দিন ৩৮০ জন করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনদিনে সচিবালয়ে কর্মরত ৮০৮ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন। দিন দিন এ সংখ্যা বাড়ছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এ ভ্যাকসিন দেয়ার কার্যক্রম চলছে বলে জানান সিভিল সার্জন।

নিবন্ধনের কাগজ যাচাই করে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে জানিয়ে ডা. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, ‘ভ্যাসকিন নেয়ার পর ১০ থেকে ২০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ফের কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।’

বিএসএমএমইউ’তে সর্বোচ্চ টিকাদান

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হাসপাতালে তৃতীয় দিনে সর্বোচ্চ এক হাজার ৪৯৪ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। প্রথমদিনে এই হাসপাতালে ৫৬০ জন এবং দ্বিতীয় দিন ৮৯৮ জনকে টিকা দেয়া হয়। এই হাসপাতালে গতকাল টিকা নিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

স্পট নিবন্ধনেও টিকা দেয়া হচ্ছে

ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গতকাল করোনার টিকা বুথ পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান। এ সময় তিনি টিকা নেয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শনের সময় অন্যদের মধ্যে ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘টিকা নিয়ে ভয়ভীতি যতটুকু ছিল, এখন একেবারেই নেই। আমরা দেখছি ভ্যাকসিন মানুষ আনন্দের সঙ্গে নিতে আসছে। চমৎকার পরিবেশ আছে। আমাদের সমস্ত লজিস্টিক সাপোর্ট এখানে দেয়া আছে। স্পট নিবন্ধনও আমরা করছি। এখানে যদি কেউ এসে রেজিস্ট্রেশন করে তাদেরও ভ্যাকসিন দিচ্ছি। ম্যানুয়ালিও আমরা করছি। কিন্তু সবাইকে বলব রেজিস্ট্রিশন করে আসতে। বয়স্ক মানুষ যদি রেজিস্ট্রেশন করে না আসে তাদেরটা আমরা করে দিচ্ছি। টিকা নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অস্বস্তি বোধ করেনি।’

গত সোমবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৭৮ হাজার মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন জানিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশন করেছে ছয় লাখের বেশি।’

চলতি মাসেই আসছে দেড় লাখ ডোজ টিকা

টিকা নিয়ে অস্থিরতার কোন কারণ নেই- মন্তব্য করে সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন আছে। ভ্যাকসিন আমরা বিভিন্ন সোর্স থেকে পাচ্ছি। সেরামেরটা আমরা নিয়ে আসছি। একই সঙ্গে কোভেক্স, ‘গ্যাভি’ এনালাইসটা পাচ্ছি। ফাইজারেরটাও পাচ্ছি। ভ্যাকসিনের কোন সংকট হবে না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মাসের শেষের দিকে গ্যাভি এনালাইসের ভ্যাকসিন পাবো। প্রায় দেড় লাখ ভ্যাকসিন আসবে। এই ভ্যাকসিনের একটা মেয়াদ আছে। যত তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারবো ততই ভালো।’

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) বিশ্বের অপেক্ষাকৃত স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে স্বল্পমূল্যে টিকা দেয়ার লক্ষ্যে গ্যাভি ( গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন) এবং সংক্রামক রোগের টিকা তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক সংস্থার (সিইপিআই) নেতৃত্বে করোনার টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের বৈশ্বিক উদ্যোগ ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি’র (কোভ্যাক্স) গড়ে উঠেছে।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম জানিয়েছেন ১০ শতাংশ ওয়েস্টেজ (অপচয় বা ক্ষতি) ধরেই কাজ করছেন তারা। একটা ভায়ালে ১০টি ডোজ থাকায় একসঙ্গে দশ জন লোক না আসলে ভ্যাকসিন খুলছেন না। কারণ এতে ওয়েস্টেজ হবে।

বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৭ মাঘ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

একদিনেই ১ লাখ টিকা

বেড়েই চলেছে ভিড়

image

গতকাল রাজধানীর টিকা প্রদান কেন্দ্রে নিবন্ধনের জন্য উপচেপড়া ভিড় -সংবাদ

দেশব্যাপী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাগ্রহীতাদের ভিড় বেড়েছে। গণটিকা কর্মসূচির তৃতীয় দিনে টিকাগ্রহীতা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। গতকাল একদিনেই টিকা নিয়েছেন এক লাখ এক হাজার ৮২ জন। এখন কেন্দ্রে তাৎক্ষণিক নিবন্ধনেও টিকা দেয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি মানুষ করোনার টিকা পেতে নিবন্ধন করেছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এই মাসের শেষ নাগাদ ‘গ্যাভি’ সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ আরও দেড় লাখ ডোজ টিকা পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান।

গতকাল রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারাদেশে গণটিকাদান কর্মসূচির তৃতীয় দিনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন এক লাখ এক হাজার ৮২ জন। এর মধ্যে রাজধানীর ৪৬টি কেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন ১২ হাজার ৫১৭ জন। আর এ পর্যন্ত মোট ভ্যাকসিন নিয়েছেন এক লাখ ৭৯ হাজার ৩১৮ জন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিন টিকা নিয়েছিলেন ৩১ হাজার ১৬০ জন। দ্বিতীয় দিন নেন ৪৬ হাজার ৫০৯ জন। এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন মোট ২৬ জনকে টিকা দেয়া হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, তৃতীয় দিন টিকা নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৯৪ জনের সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (জ্বর, টিকা দেয়া স্থানে লাল হওয়া ইত্যাদি) দেখা গেছে। এখন পর্যন্ত মোট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ২০৭ জনের।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৪ হাজার ৫৮৬ জন এবং নারী ২৬ হাজার ৪৯৬ জন। গতকাল টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৫ হাজার ২২০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে চার হাজার ৮৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৩ হাজার ৫৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩ হাজার ১১৪ জন, রংপুর বিভাগে ১০ হাজার ২৩৭ জন, খুলনা বিভাগে ১১ হাজার ৩৭২ জন, বরিশাল বিভাগে চার হাজার ১৮১ জন ও সিলেট বিভাগে আট হাজার ৫৫৯ জন রয়েছেন।

বর্তমানে ঢাকায় ৪৬টি হাসপাতাল ও সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালসহ সারাদেশে মোট এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে রাজধানীতে ২০৪টি টিম এবং সারাদেশে ৯৫৫টি হাসপাতালে দুই হাজার ১৯৬টি টিম টিকা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এছাড়াও ভ্যাকসিন বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাত হাজার ৩৪৪টি টিম।

সচিবালয়ে তৃতীয় দিনে ৩৮০ জনের টিকাগ্রহণ

গতকাল সচিবালয়ে ৩৮০ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ভ্যাকসিন নিয়েছেন জানিয়ে সচিবালয় ক্লিনিকের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ পর্যন্ত মোট ৮০৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এ ক্লিনিক থেকে টিকা নিয়েছেন।’

তিনি জানান, এ ক্লিনিকে প্রথম দিন ১৬৭ জন, দ্বিতীয় দিন ২৫৭ এবং তৃতীয় দিন ৩৮০ জন করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনদিনে সচিবালয়ে কর্মরত ৮০৮ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন। দিন দিন এ সংখ্যা বাড়ছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এ ভ্যাকসিন দেয়ার কার্যক্রম চলছে বলে জানান সিভিল সার্জন।

নিবন্ধনের কাগজ যাচাই করে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে জানিয়ে ডা. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, ‘ভ্যাসকিন নেয়ার পর ১০ থেকে ২০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ফের কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।’

বিএসএমএমইউ’তে সর্বোচ্চ টিকাদান

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হাসপাতালে তৃতীয় দিনে সর্বোচ্চ এক হাজার ৪৯৪ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। প্রথমদিনে এই হাসপাতালে ৫৬০ জন এবং দ্বিতীয় দিন ৮৯৮ জনকে টিকা দেয়া হয়। এই হাসপাতালে গতকাল টিকা নিয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

স্পট নিবন্ধনেও টিকা দেয়া হচ্ছে

ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গতকাল করোনার টিকা বুথ পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান। এ সময় তিনি টিকা নেয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শনের সময় অন্যদের মধ্যে ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘টিকা নিয়ে ভয়ভীতি যতটুকু ছিল, এখন একেবারেই নেই। আমরা দেখছি ভ্যাকসিন মানুষ আনন্দের সঙ্গে নিতে আসছে। চমৎকার পরিবেশ আছে। আমাদের সমস্ত লজিস্টিক সাপোর্ট এখানে দেয়া আছে। স্পট নিবন্ধনও আমরা করছি। এখানে যদি কেউ এসে রেজিস্ট্রেশন করে তাদেরও ভ্যাকসিন দিচ্ছি। ম্যানুয়ালিও আমরা করছি। কিন্তু সবাইকে বলব রেজিস্ট্রিশন করে আসতে। বয়স্ক মানুষ যদি রেজিস্ট্রেশন করে না আসে তাদেরটা আমরা করে দিচ্ছি। টিকা নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অস্বস্তি বোধ করেনি।’

গত সোমবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৭৮ হাজার মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন জানিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশন করেছে ছয় লাখের বেশি।’

চলতি মাসেই আসছে দেড় লাখ ডোজ টিকা

টিকা নিয়ে অস্থিরতার কোন কারণ নেই- মন্তব্য করে সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন আছে। ভ্যাকসিন আমরা বিভিন্ন সোর্স থেকে পাচ্ছি। সেরামেরটা আমরা নিয়ে আসছি। একই সঙ্গে কোভেক্স, ‘গ্যাভি’ এনালাইসটা পাচ্ছি। ফাইজারেরটাও পাচ্ছি। ভ্যাকসিনের কোন সংকট হবে না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মাসের শেষের দিকে গ্যাভি এনালাইসের ভ্যাকসিন পাবো। প্রায় দেড় লাখ ভ্যাকসিন আসবে। এই ভ্যাকসিনের একটা মেয়াদ আছে। যত তাড়াতাড়ি শেষ করতে পারবো ততই ভালো।’

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) বিশ্বের অপেক্ষাকৃত স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে স্বল্পমূল্যে টিকা দেয়ার লক্ষ্যে গ্যাভি ( গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন) এবং সংক্রামক রোগের টিকা তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক সংস্থার (সিইপিআই) নেতৃত্বে করোনার টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের বৈশ্বিক উদ্যোগ ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি’র (কোভ্যাক্স) গড়ে উঠেছে।

স্বাস্থ্য সচিব বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম জানিয়েছেন ১০ শতাংশ ওয়েস্টেজ (অপচয় বা ক্ষতি) ধরেই কাজ করছেন তারা। একটা ভায়ালে ১০টি ডোজ থাকায় একসঙ্গে দশ জন লোক না আসলে ভ্যাকসিন খুলছেন না। কারণ এতে ওয়েস্টেজ হবে।