চারটি কম উচ্চতা-ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে

নেত্রকোনায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদী খনন

বন্ধ রয়েছে নৌ-চলাচল 

কম উচ্চতা ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে এবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদী খনন কাজ। বন্ধ রয়েছে নৌ-চলাচল। নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিচু ৪টি সেতুর কারণে মোহনগঞ্জ-নালিতাবাড়ী ও দিলালপুর-নিকলি-নেত্রকোনা নৌপথে বন্ধ রয়েছে নৌ-চলাচল। এই নৌপথ সচল করার লক্ষ্যে নদী খনন করছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কতৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। কিন্তু অতিতপুর ব্রিজ, হুজরাপুর ব্রিজ, চন্দ্রপুর ব্রিজ ও বারহাট্টা ব্রিজ চারটি নিচু সেতুর কারণে ব্যাহত হচ্ছে নদী খনন কাজ। নৌ-চলাচল সুবিধার্থে সেতুগুলো সংস্কার করে উঁচু করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

জানা গেছে, সারাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং ২য় সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে ২৪টি নৌপথ খনন করা হচ্ছে। এরমধ্যে ১২টি রুটের কাজ সমাপ্ত এবং ১২টি রুটে খনন কাজ চলছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ। ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি বছরের জুনে প্রকল্পে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে জুলাই মাসে মোহনগঞ্জ-নালিতাবাড়ী ও দিলালপুর-নিকলি-নেত্রকোনা নৌপথে খনন কাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত এই দুটি রুটের সার্বিক অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। কিন্তু কম উচ্চতা ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে এই রুটের নদী খনন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সেতুর উচ্চতা কম থাকায় খননস্থলে ড্রেজার নেয়া যাচ্ছে না। এছাড়া নদীর মাঝখানে সেতুর পিলার থাকায় খনন শুরু করা যাচ্ছে না। নৌ-চলাচলের সুবিধার্থে সেতুগুলো উঁচু করার জন্য নৌ-মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আবদুল মতিন সংবাদকে বলেন, সারাদেশের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর নৌপথ রয়েছে। সাধারণত নদীর উপর সেতু নির্মাণের স্ট্যান্ডার মান অনুযায়ী ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স (স্বাভাবিক পানি প্রবাহ) থেকে ৪৫ ফুট উঁ”ু প্রথম শ্রেণীর নৌপথ, ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স (স্বাভাবিক পানি প্রবাহ) থেকে ২৫ ফুট উঁ”ু বা ৭ দশমিক ৬২ মিটার এবং হরিজেন্টাল ক্লিয়ারেন্স ১০০ ফুট বা ৩০ দশমিক ৪৮ মিটার দ্বিতীয় শ্রেণীর নৌপথ ও ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স ৭ ফুটের বেশি উচ্চতা তৃতীয় শ্রেণীর নৌপথ। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌপথের উপর সড়ক, রেল ও স্থানীয় সরকার বিভাগের একাধিক কম উচ্চতার সেতু রয়েছে। এর ফলে নৌপথে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বতর্মান সরকার নৌপথের যে গুরুত্ব দিয়েছে আগে এত গুরুত্ব দেয়া হয় নি। তাই অনেক সংস্থা নৌ-মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র ছাড়াই সেতু নির্মাণ করেছে। তাই সেসব স্থানে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে সারাদেশের নৌপথের উপর নির্মিত সেতুগুলো উচ্চতা সরেজমিনে পরিদর্শন মান নির্ণয় করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ’র এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২১ জানুয়ারি মগড়া নদীর মদন-আটপাড়া পর্যন্ত নৌপথ সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। এই নৌপথে দিলালপুর-চামড়াঘাট হতে শান্তিপুর হয়ে আটপাড়া পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে ৭১ কিলোমিটার নাব্য করা হয়েছে। মদন এলাকায় ৪ কিলোমিটার ড্রেজিং বাকি আছে। ড্রেজিংকৃত এলাকায় ১২-১৪ ফুট গভীরতায় পানি পাওয়া যায়। মরা নদীটি কাটার ফলে নদীতে পানি এসেছে। নদীতে কৃষকরা শত শত শ্যালো মেশিন বসিয়ে কৃষি কাজে নদীর পানি ব্যবহার করছে। নদীতে মালবাহী বড় বড় কার্গো, ট্রলার চলাচল করছে। ড্রেজিংকৃত মাটি দিয়ে সোনাজুর আশ্রয়কেন্দ্র, সোনাজুর কালী মন্দির, গোপাল আশ্রম স্কুল মধুয়াখালী, দেওশ্রী প্রাইমারি স্কুল, বাড়ি ভাদেরা স্কুল ও গ্রামের মাঠ ইত্যাদি প্রায় ৫০টি জায়গায় ভরাট করা হয়েছে।

কংশ নদীর মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা এলাকায় ড্রেজিং কাজ পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার কংশ নদী সম্পূর্ণ মৃত। কংশ নদীর অতীতপুর, বারহাট্টা এলাকায় ১টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ড্রেজিংকৃত এলাকায় ১১-১২ ফুট গভীরতায় পানি পাওয়া যায়। কংশ নদীর গাগলাজোড় হতে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার অংশের ড্রেজিং কাজ ২০১৯ সালে সমাপ্ত হয়েছে। এ নদীতে সারাবছর কার্গো, বড় বড় ট্রলার, লঞ্চ চলাচল করছে। ড্রেজিংকৃত মাটি দিয়ে মোহনগঞ্জ পার্ক, জানজিলা ইওনিয়ন পরিষদ, জানজিলা প্রাইমারি স্কুল, খুলুনজা প্রাইমারি স্কুল, গাগরা প্রাইমারি স্কুল, সাংকারপুর প্রাইমারি স্কুল ইত্যাদিসহ প্রায় ৭০-৮০টি জায়গা ভরাট করা হয়েছে।

তবে অতিতপুর হতে বারহাট্টা পর্যন্ত এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত অতিতপুর ব্রিজ, হুজরাপুর ব্রিজ, চন্দ্রপুর ব্রিজ ও বারহাট্টা ব্রিজ চারটি নিচু ব্রিজ রয়েছে। ৪টি ব্রিজের মধ্যে চন্দ্রপুর-হুজরাপুর ব্রিজটির পিলারে ফাঁটল ধরে রড বের হয়ে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। যেকোন মুহূর্তে ব্রিজটি ভেঙে যেতে পারে। নিচু ব্রিজগুলোর জন্য নদী মরে যাচ্ছে। যেহেতু এখানে নদীর প্রস্থ কম ৮০-১০০ ফুট, এমন নদীর মাঝখানে পিলার না দিয়ে নদীর দু’প্রান্তে পিয়ার ব্যবহার করে উঁচু করে করতে হবে, যেন বর্ষাকালে সব ধরনের নৌযান চলাচল করতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি থাকে না এবং বর্র্ষাকালে নিচু ব্রিজগুলোর জন্য ১৮ ইঞ্চি কাঁটার সাকশন ড্রেজার এ নদীতে প্রবেশ করানো যায় না। ফলে এ অংশের ড্রেজিং কাজ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এ মুহূর্তে এ অংশে বিকল্প ব্যবস্থা কাজ করা সম্ভব। মাটি সরানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

তাই নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা পর্যন্ত এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত নিচু ৪টি ব্রিজ, অতিতপুর ব্রিজ, হুজরাপুর ব্রিজ, চন্দ্রপুর ব্রিজ ও বারহাট্টা ব্রিজ, ভেঙে উঁচু করতে হবে। নদীর মাঝখানে পিলার না দিয়ে নদীর দু’প্রান্তে পিয়ার ব্যবহার করে উঁচু করে বর্ষাকালে সব ধরনের নৌযান চলাচলের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৭ মাঘ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চারটি কম উচ্চতা-ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে

নেত্রকোনায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদী খনন

বন্ধ রয়েছে নৌ-চলাচল 

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

image

নেত্রকোনার বারহাট্টা ব্রিজ

কম উচ্চতা ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে এবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নদী খনন কাজ। বন্ধ রয়েছে নৌ-চলাচল। নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিচু ৪টি সেতুর কারণে মোহনগঞ্জ-নালিতাবাড়ী ও দিলালপুর-নিকলি-নেত্রকোনা নৌপথে বন্ধ রয়েছে নৌ-চলাচল। এই নৌপথ সচল করার লক্ষ্যে নদী খনন করছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কতৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। কিন্তু অতিতপুর ব্রিজ, হুজরাপুর ব্রিজ, চন্দ্রপুর ব্রিজ ও বারহাট্টা ব্রিজ চারটি নিচু সেতুর কারণে ব্যাহত হচ্ছে নদী খনন কাজ। নৌ-চলাচল সুবিধার্থে সেতুগুলো সংস্কার করে উঁচু করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

জানা গেছে, সারাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং ২য় সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে ২৪টি নৌপথ খনন করা হচ্ছে। এরমধ্যে ১২টি রুটের কাজ সমাপ্ত এবং ১২টি রুটে খনন কাজ চলছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ। ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি বছরের জুনে প্রকল্পে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে জুলাই মাসে মোহনগঞ্জ-নালিতাবাড়ী ও দিলালপুর-নিকলি-নেত্রকোনা নৌপথে খনন কাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত এই দুটি রুটের সার্বিক অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। কিন্তু কম উচ্চতা ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে এই রুটের নদী খনন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সেতুর উচ্চতা কম থাকায় খননস্থলে ড্রেজার নেয়া যাচ্ছে না। এছাড়া নদীর মাঝখানে সেতুর পিলার থাকায় খনন শুরু করা যাচ্ছে না। নৌ-চলাচলের সুবিধার্থে সেতুগুলো উঁচু করার জন্য নৌ-মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আবদুল মতিন সংবাদকে বলেন, সারাদেশের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর নৌপথ রয়েছে। সাধারণত নদীর উপর সেতু নির্মাণের স্ট্যান্ডার মান অনুযায়ী ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স (স্বাভাবিক পানি প্রবাহ) থেকে ৪৫ ফুট উঁ”ু প্রথম শ্রেণীর নৌপথ, ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স (স্বাভাবিক পানি প্রবাহ) থেকে ২৫ ফুট উঁ”ু বা ৭ দশমিক ৬২ মিটার এবং হরিজেন্টাল ক্লিয়ারেন্স ১০০ ফুট বা ৩০ দশমিক ৪৮ মিটার দ্বিতীয় শ্রেণীর নৌপথ ও ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স ৭ ফুটের বেশি উচ্চতা তৃতীয় শ্রেণীর নৌপথ। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌপথের উপর সড়ক, রেল ও স্থানীয় সরকার বিভাগের একাধিক কম উচ্চতার সেতু রয়েছে। এর ফলে নৌপথে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বতর্মান সরকার নৌপথের যে গুরুত্ব দিয়েছে আগে এত গুরুত্ব দেয়া হয় নি। তাই অনেক সংস্থা নৌ-মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র ছাড়াই সেতু নির্মাণ করেছে। তাই সেসব স্থানে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে সারাদেশের নৌপথের উপর নির্মিত সেতুগুলো উচ্চতা সরেজমিনে পরিদর্শন মান নির্ণয় করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ’র এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২১ জানুয়ারি মগড়া নদীর মদন-আটপাড়া পর্যন্ত নৌপথ সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। এই নৌপথে দিলালপুর-চামড়াঘাট হতে শান্তিপুর হয়ে আটপাড়া পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার। এরমধ্যে ৭১ কিলোমিটার নাব্য করা হয়েছে। মদন এলাকায় ৪ কিলোমিটার ড্রেজিং বাকি আছে। ড্রেজিংকৃত এলাকায় ১২-১৪ ফুট গভীরতায় পানি পাওয়া যায়। মরা নদীটি কাটার ফলে নদীতে পানি এসেছে। নদীতে কৃষকরা শত শত শ্যালো মেশিন বসিয়ে কৃষি কাজে নদীর পানি ব্যবহার করছে। নদীতে মালবাহী বড় বড় কার্গো, ট্রলার চলাচল করছে। ড্রেজিংকৃত মাটি দিয়ে সোনাজুর আশ্রয়কেন্দ্র, সোনাজুর কালী মন্দির, গোপাল আশ্রম স্কুল মধুয়াখালী, দেওশ্রী প্রাইমারি স্কুল, বাড়ি ভাদেরা স্কুল ও গ্রামের মাঠ ইত্যাদি প্রায় ৫০টি জায়গায় ভরাট করা হয়েছে।

কংশ নদীর মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা এলাকায় ড্রেজিং কাজ পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার কংশ নদী সম্পূর্ণ মৃত। কংশ নদীর অতীতপুর, বারহাট্টা এলাকায় ১টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত রয়েছে। ড্রেজিংকৃত এলাকায় ১১-১২ ফুট গভীরতায় পানি পাওয়া যায়। কংশ নদীর গাগলাজোড় হতে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার অংশের ড্রেজিং কাজ ২০১৯ সালে সমাপ্ত হয়েছে। এ নদীতে সারাবছর কার্গো, বড় বড় ট্রলার, লঞ্চ চলাচল করছে। ড্রেজিংকৃত মাটি দিয়ে মোহনগঞ্জ পার্ক, জানজিলা ইওনিয়ন পরিষদ, জানজিলা প্রাইমারি স্কুল, খুলুনজা প্রাইমারি স্কুল, গাগরা প্রাইমারি স্কুল, সাংকারপুর প্রাইমারি স্কুল ইত্যাদিসহ প্রায় ৭০-৮০টি জায়গা ভরাট করা হয়েছে।

তবে অতিতপুর হতে বারহাট্টা পর্যন্ত এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত অতিতপুর ব্রিজ, হুজরাপুর ব্রিজ, চন্দ্রপুর ব্রিজ ও বারহাট্টা ব্রিজ চারটি নিচু ব্রিজ রয়েছে। ৪টি ব্রিজের মধ্যে চন্দ্রপুর-হুজরাপুর ব্রিজটির পিলারে ফাঁটল ধরে রড বের হয়ে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। যেকোন মুহূর্তে ব্রিজটি ভেঙে যেতে পারে। নিচু ব্রিজগুলোর জন্য নদী মরে যাচ্ছে। যেহেতু এখানে নদীর প্রস্থ কম ৮০-১০০ ফুট, এমন নদীর মাঝখানে পিলার না দিয়ে নদীর দু’প্রান্তে পিয়ার ব্যবহার করে উঁচু করে করতে হবে, যেন বর্ষাকালে সব ধরনের নৌযান চলাচল করতে পারে। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি থাকে না এবং বর্র্ষাকালে নিচু ব্রিজগুলোর জন্য ১৮ ইঞ্চি কাঁটার সাকশন ড্রেজার এ নদীতে প্রবেশ করানো যায় না। ফলে এ অংশের ড্রেজিং কাজ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এ মুহূর্তে এ অংশে বিকল্প ব্যবস্থা কাজ করা সম্ভব। মাটি সরানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

তাই নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা পর্যন্ত এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত নিচু ৪টি ব্রিজ, অতিতপুর ব্রিজ, হুজরাপুর ব্রিজ, চন্দ্রপুর ব্রিজ ও বারহাট্টা ব্রিজ, ভেঙে উঁচু করতে হবে। নদীর মাঝখানে পিলার না দিয়ে নদীর দু’প্রান্তে পিয়ার ব্যবহার করে উঁচু করে বর্ষাকালে সব ধরনের নৌযান চলাচলের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।