কারাগারে বন্দীর হাতে বন্দী খুন

কিশোরগঞ্জের ১নং কারাগারে এক বন্দির হাতে অন্য এক বন্দি খুন হয়েছেন। আহত হয়ে আরেক বন্দি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনা শুনে ডিআইজি (প্রিজন) মো. তৌহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন।

জেল সুপার মো. বজলুর রশিদ ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, তাড়াইলের কলনা মাইজপাড়া এলাকার ইসমাইল মিয়ার ছেলে ৪২২৩/১৭ নং হাজতি মো. সাইদুর মিয়া (৩৬) মাদকের মামলায় গত ৬ জানুয়ারি থেকে এ কারাগারে আছেন। তার মানসিক সমস্যা রয়েছে বলেও জেল সুপার জানিয়েছেন। সাইদুর টয়লেটের দরজার কাঠ ভেঙে মঙ্গলবার ভোররাত ৪টার দিকে ১১ নম্বর সেলে আটক সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের ইসরাইল মিয়ার ছেলে মাদকের মামলার ৯৮/২১ নং হাজতি আবদুল হাই (২৭) এবং নিকলীর রুদারপুড্ডা নয়াহাটি গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মাদকের মামলার ৭৯২৫/১৮ নং হাজতি জাহাঙ্গীরকে (২৮) মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। আহত দু’জনেরও মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে জেল সুপার জানিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে কারারক্ষী সবুজ রায়, মেহেদী হাসান ও নার্স নূরুজ্জামানের সহায়তায় আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে শহরের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৪টার দিকে হাজতি আবদুল হাইকে কর্তরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহত হাজতি জাহাঙ্গীরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনা শুনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম গতকাল বেলা ১২টার দিকে কারাগার পরিদর্শন করেন এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল্লাহ আল মাসউদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম হোসেন ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন। এছাড়া ডিআইজি (প্রিজন) মো. তৌহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কারাগারে গিয়েছেন। এ সময় নেত্রকোনার জেল সুপার মো. আবদুল কুদ্দুছও গিয়েছেন। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছ। এ ঘটনায় কারাগারের জেলার নাশির আহমেদ বাদী হয়ে ঘাতক হাজতি সাইদুর মিয়াকে একমাত্র আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন। মামলার ৮ জন সাক্ষী করা হয়েছে ডেপুটি জেলার আবিদ আহমেদ, নার্স নূরুজ্জামান ডালিম, প্রধান কারারক্ষী হাবিবুর রহমান, সহকারী প্রধান কারারক্ষী রফিকুল ইসলাম, কারারক্ষী মনির হোসেন, কারারক্ষী খোকন, কারারক্ষী সবুজ রায় এবং কারারক্ষী মেহেদী হাসানকে। মঙ্গলবার কারাগারে মোট বন্দির সংখ্যা ছিল এক হাজার ৫৬২। এরমধ্যে পুরুষ বন্দি এক হাজার ৫১৬ জন, আর মহিলা বন্দি ৪৬ জন।

আরও খবর
মেয়র প্রার্থীকে তুলে নেয়ার অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করুন, ব্যবস্থা নিন
স্বাস্থ্য খাতে নিয়োগ বদলি যন্ত্রপাতি কেনায় ঘুষ বাণিজ্য
আ’লীগ কোন পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্বাসী নয়   কাদের
পিকে হালদারের পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা
ময়মনসিংহের ৯ আসামির রায় কাল
অধিক লাভের টোপে ফেলে দু’শতাধিক বিনিয়োগকারীর অর্থ লোপাট
ব্যাংক হিসাব থেকে প্রতারণা করে প্রায় দেড় কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়
ফেসবুকে সম্পর্ক, শতাধিক নারীর সঙ্গে প্রতারণা যুবক গ্রেপ্তার
রাবির ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু ৭ মার্চ
বগুড়ায় মোটর মালিকদের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ
চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৭ মাঘ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

কারাগারে বন্দীর হাতে বন্দী খুন

জেলা বার্তা পরিবেশক, কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের ১নং কারাগারে এক বন্দির হাতে অন্য এক বন্দি খুন হয়েছেন। আহত হয়ে আরেক বন্দি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনা শুনে ডিআইজি (প্রিজন) মো. তৌহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছেন।

জেল সুপার মো. বজলুর রশিদ ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, তাড়াইলের কলনা মাইজপাড়া এলাকার ইসমাইল মিয়ার ছেলে ৪২২৩/১৭ নং হাজতি মো. সাইদুর মিয়া (৩৬) মাদকের মামলায় গত ৬ জানুয়ারি থেকে এ কারাগারে আছেন। তার মানসিক সমস্যা রয়েছে বলেও জেল সুপার জানিয়েছেন। সাইদুর টয়লেটের দরজার কাঠ ভেঙে মঙ্গলবার ভোররাত ৪টার দিকে ১১ নম্বর সেলে আটক সদর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের ইসরাইল মিয়ার ছেলে মাদকের মামলার ৯৮/২১ নং হাজতি আবদুল হাই (২৭) এবং নিকলীর রুদারপুড্ডা নয়াহাটি গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মাদকের মামলার ৭৯২৫/১৮ নং হাজতি জাহাঙ্গীরকে (২৮) মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। আহত দু’জনেরও মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে জেল সুপার জানিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে কারারক্ষী সবুজ রায়, মেহেদী হাসান ও নার্স নূরুজ্জামানের সহায়তায় আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে শহরের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ৪টার দিকে হাজতি আবদুল হাইকে কর্তরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহত হাজতি জাহাঙ্গীরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনা শুনে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম গতকাল বেলা ১২টার দিকে কারাগার পরিদর্শন করেন এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল্লাহ আল মাসউদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম হোসেন ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন। এছাড়া ডিআইজি (প্রিজন) মো. তৌহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কারাগারে গিয়েছেন। এ সময় নেত্রকোনার জেল সুপার মো. আবদুল কুদ্দুছও গিয়েছেন। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছ। এ ঘটনায় কারাগারের জেলার নাশির আহমেদ বাদী হয়ে ঘাতক হাজতি সাইদুর মিয়াকে একমাত্র আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন। মামলার ৮ জন সাক্ষী করা হয়েছে ডেপুটি জেলার আবিদ আহমেদ, নার্স নূরুজ্জামান ডালিম, প্রধান কারারক্ষী হাবিবুর রহমান, সহকারী প্রধান কারারক্ষী রফিকুল ইসলাম, কারারক্ষী মনির হোসেন, কারারক্ষী খোকন, কারারক্ষী সবুজ রায় এবং কারারক্ষী মেহেদী হাসানকে। মঙ্গলবার কারাগারে মোট বন্দির সংখ্যা ছিল এক হাজার ৫৬২। এরমধ্যে পুরুষ বন্দি এক হাজার ৫১৬ জন, আর মহিলা বন্দি ৪৬ জন।