বগুড়ায় মোটর মালিকদের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ

বগুড়ায় গতকাল মোটর মালিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এ সময় মালিক গ্রুপের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিপেটা, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বগুড়ার চারমাথা বাস টার্মিনাল চত্বরে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে।

জানা গেছে, বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দু’গ্রুপের বিরোধ চলে আসছে। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইতোমধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছেন। তবে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম নির্বাচনের বিরোধিতা করে মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ও মালামাল তার হেফাজতে চারমাথা বাস টার্মিনাল এলাকায় রাখে।

গতকাল সকাল থেকে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম মোহনের নেতৃত্বে বেশ কিছু লোক চারমাথা এলাকায় আমিনুলের নিয়ন্ত্রণে থাকা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস দখলের ঘোষণা দেয়। খবর পেয়ে আমিনুলের সমর্থকরা চারমাথা এলাকায় সমবেত হয়। তারা যেকোন মূল্যে মোহন গ্রুপকে প্রতিহত করার জন্য মাইকে ঘোষণা দেয় এবং পরিবহন শ্রমিকদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি নিয়ে অবস্থান নিতে বলে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ ও সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে পুলিশ চারমাথায় অবস্থান নেয়। পুলিশ আমিনুলকে সমঝোতায় প্রস্তাব দিলে আমিনুল পুলিশকে জানিয়ে দেয় তারা শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে অন্য পক্ষকে প্রতিহত করবে। আমিনুল গ্রুপের লোকজন পুলিশের সামনেই লাঠি মিছিল শুরু করে। এ সময় মোহন গ্রুপের প্রায় দুই হাজার লোক সান্তাহার সড়ক দিয়ে এলজিইডির সামনে অবস্থান নেয়। পুলিশ দুই গ্রুপের মাঝামাঝি অবস্থান নেয়। মোহন গ্রুপের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের বেরিকেড ভেঙে আমিনুল গ্রুপের লোকজনকে ধাওয়া করে। টার্মিনাল এলাকা দখলে নিয়ে এলোপাতাড়ি যানবাহন ভাঙচুর করে। আমিনুলের নিয়ন্ত্রণে থাকা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ও তার ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ সময় ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে জিটিভির ক্যামেরাপারসন রাজু আহম্মেদকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ কনস্টেবল রমজান আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। সংঘর্ষের কারণে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়কে সবপ্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। আহত পুলিশ কনেস্টবল ও এক সাংবাদিককে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

image

গতকাল বগুড়া জেলা মোটর মালিক পক্ষের দু’গ্রুপ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় -সংবাদ

আরও খবর
মেয়র প্রার্থীকে তুলে নেয়ার অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করুন, ব্যবস্থা নিন
স্বাস্থ্য খাতে নিয়োগ বদলি যন্ত্রপাতি কেনায় ঘুষ বাণিজ্য
আ’লীগ কোন পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্বাসী নয়   কাদের
পিকে হালদারের পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা
ময়মনসিংহের ৯ আসামির রায় কাল
অধিক লাভের টোপে ফেলে দু’শতাধিক বিনিয়োগকারীর অর্থ লোপাট
ব্যাংক হিসাব থেকে প্রতারণা করে প্রায় দেড় কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়
কারাগারে বন্দীর হাতে বন্দী খুন
ফেসবুকে সম্পর্ক, শতাধিক নারীর সঙ্গে প্রতারণা যুবক গ্রেপ্তার
রাবির ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু ৭ মার্চ
চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন

বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৭ মাঘ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

বগুড়ায় মোটর মালিকদের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ

প্রতিনিধি, বগুড়া

image

গতকাল বগুড়া জেলা মোটর মালিক পক্ষের দু’গ্রুপ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় -সংবাদ

বগুড়ায় গতকাল মোটর মালিকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এ সময় মালিক গ্রুপের অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিপেটা, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বগুড়ার চারমাথা বাস টার্মিনাল চত্বরে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে।

জানা গেছে, বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দু’গ্রুপের বিরোধ চলে আসছে। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইতোমধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছেন। তবে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম নির্বাচনের বিরোধিতা করে মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ও মালামাল তার হেফাজতে চারমাথা বাস টার্মিনাল এলাকায় রাখে।

গতকাল সকাল থেকে মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম মোহনের নেতৃত্বে বেশ কিছু লোক চারমাথা এলাকায় আমিনুলের নিয়ন্ত্রণে থাকা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস দখলের ঘোষণা দেয়। খবর পেয়ে আমিনুলের সমর্থকরা চারমাথা এলাকায় সমবেত হয়। তারা যেকোন মূল্যে মোহন গ্রুপকে প্রতিহত করার জন্য মাইকে ঘোষণা দেয় এবং পরিবহন শ্রমিকদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি নিয়ে অবস্থান নিতে বলে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ ও সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে পুলিশ চারমাথায় অবস্থান নেয়। পুলিশ আমিনুলকে সমঝোতায় প্রস্তাব দিলে আমিনুল পুলিশকে জানিয়ে দেয় তারা শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে অন্য পক্ষকে প্রতিহত করবে। আমিনুল গ্রুপের লোকজন পুলিশের সামনেই লাঠি মিছিল শুরু করে। এ সময় মোহন গ্রুপের প্রায় দুই হাজার লোক সান্তাহার সড়ক দিয়ে এলজিইডির সামনে অবস্থান নেয়। পুলিশ দুই গ্রুপের মাঝামাঝি অবস্থান নেয়। মোহন গ্রুপের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের বেরিকেড ভেঙে আমিনুল গ্রুপের লোকজনকে ধাওয়া করে। টার্মিনাল এলাকা দখলে নিয়ে এলোপাতাড়ি যানবাহন ভাঙচুর করে। আমিনুলের নিয়ন্ত্রণে থাকা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ও তার ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ সময় ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে জিটিভির ক্যামেরাপারসন রাজু আহম্মেদকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ কনস্টেবল রমজান আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে। সংঘর্ষের কারণে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়কে সবপ্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। আহত পুলিশ কনেস্টবল ও এক সাংবাদিককে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।