রেলের অনলাইন টিকেটে ভোগান্তি

জনগণের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজীকরণের লক্ষ্যে বাস ও ট্রেনের টিকিট ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে সংগ্রহ করার এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে সরকার, যা ছিল অত্যন্ত যুগোপযোগী এবং আধুনিক প্রযুক্তিগত বিশ্বায়নের প্রতিচ্ছবি।

কিন্তু অনলাইন টিকিট প্রাপ্তির এই সহজ ব্যবস্থা কিছু ব্যক্তি ও সিস্টেমের অসচেতনতার ফলে জনগণের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে অনলাইনে রেলসেবা অ্যাপ থেকে টিকিট সংগ্রহ করি। যাতে টিকিটের নির্ধারিত মূল্য থেকে সার্ভিস চার্জ বাবদ ২০ টাকা বেশি রাখা হয়। ১০ মিনিটের মধ্যেই আমার সিলেক্টেড টিকিটটি বাংলাদেশ রেলওয়ে সার্ভার থেকে ইমেইল করা হয় এবং রেলসেবা অ্যাপের জার্নি হিস্ট্রোরিতে জমা হয়। টিকিটটি উভয় ফাইল থেকে ডাইনলোড করি রাখি যাতে স্টেশনে টিকিট চেক করার সময় দেখাতে পারি।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় রেলওয়ে কর্মকর্তাগণ আমাকে থামিয়ে বলে, ই-মেইলে প্রাপ্ত অনলাইন টিকিট ও রেলসেবা অ্যাপের জার্নি হিস্ট্রোরিতে থাকা টিকিট গ্রহণযোগ্য নয়, বরং টিকিট প্রিন্ট করে আনতে হবে। স্টেশনের ভিতরে প্রিন্ট করার ব্যবস্থা না থাকায় বাহির থেকে ১০ টাকা খরছ করে টিকিট প্রিন্ট করে দেখানোর পর বললো, প্রিন্ট কপিও গ্রহণ যোগ্য নয়। টিকিট কাউন্টারে জমা দিয়ে হার্ড কপি সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রিন্ট কপি জমা দিয়ে হার্ড কপি সংগ্রহ করে ট্রেনে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করি। এতে টিকিটের নির্ধারিত মূল থেকে বেশি চার্জ ও চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছি।

কিন্তু রেলের অ্যাপে বেশ কিছু ফিচার সংযুক্ত করা আছে। মোবাইলের পিডিএফ সফট কপিতে কিউআর কোড বসানো থাকে, যা স্ক্যান করলেই স্পষ্ট হওয়া যায় টিকিট আসল না নকল। রেলসেবা অ্যাপে টিকিট ভেরিফাই করার প্রক্রিয়াও যুক্ত আছে। অর্থাৎ ফটোশপ বা বিভিন্ন অ্যাপ দিয়ে টিকিট নকল করার সুযোগ এখন আর নেই। অনলাইন থেকে টিকিট সংগ্রহ করার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নাম্বার উভয় অন্তর্ভুক্ত করা লাগে। রেলওয়ে কর্মকর্তারা টিকিট চেক করার সময় যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল নাম্বার ও রেলসেবা অ্যাপ দিয়ে টিকিটের বৈধতা যাচাই করতে পারেন। তাহলে প্রিন্ট করা ও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করার পুরনো ঝামেলা পোহাতে হবে না। রেলওয়ে কর্মকর্তাগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, আপনাদের একটু ব্যক্তি সচেতনতা ও সিস্টেমের পরিবর্তনই পারে টিকিট প্রাপ্তির ভোগান্তি কমিয়ে ট্রেনের টিকিটের ডিজিটাল প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে।

মুরাদ হোসেন

বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৭ মাঘ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

রেলের অনলাইন টিকেটে ভোগান্তি

image

জনগণের যাতায়াত ব্যবস্থা সহজীকরণের লক্ষ্যে বাস ও ট্রেনের টিকিট ঘরে বসে মোবাইলের মাধ্যমে সংগ্রহ করার এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে সরকার, যা ছিল অত্যন্ত যুগোপযোগী এবং আধুনিক প্রযুক্তিগত বিশ্বায়নের প্রতিচ্ছবি।

কিন্তু অনলাইন টিকিট প্রাপ্তির এই সহজ ব্যবস্থা কিছু ব্যক্তি ও সিস্টেমের অসচেতনতার ফলে জনগণের চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত ১৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে অনলাইনে রেলসেবা অ্যাপ থেকে টিকিট সংগ্রহ করি। যাতে টিকিটের নির্ধারিত মূল্য থেকে সার্ভিস চার্জ বাবদ ২০ টাকা বেশি রাখা হয়। ১০ মিনিটের মধ্যেই আমার সিলেক্টেড টিকিটটি বাংলাদেশ রেলওয়ে সার্ভার থেকে ইমেইল করা হয় এবং রেলসেবা অ্যাপের জার্নি হিস্ট্রোরিতে জমা হয়। টিকিটটি উভয় ফাইল থেকে ডাইনলোড করি রাখি যাতে স্টেশনে টিকিট চেক করার সময় দেখাতে পারি।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় রেলওয়ে কর্মকর্তাগণ আমাকে থামিয়ে বলে, ই-মেইলে প্রাপ্ত অনলাইন টিকিট ও রেলসেবা অ্যাপের জার্নি হিস্ট্রোরিতে থাকা টিকিট গ্রহণযোগ্য নয়, বরং টিকিট প্রিন্ট করে আনতে হবে। স্টেশনের ভিতরে প্রিন্ট করার ব্যবস্থা না থাকায় বাহির থেকে ১০ টাকা খরছ করে টিকিট প্রিন্ট করে দেখানোর পর বললো, প্রিন্ট কপিও গ্রহণ যোগ্য নয়। টিকিট কাউন্টারে জমা দিয়ে হার্ড কপি সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রিন্ট কপি জমা দিয়ে হার্ড কপি সংগ্রহ করে ট্রেনে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করি। এতে টিকিটের নির্ধারিত মূল থেকে বেশি চার্জ ও চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছি।

কিন্তু রেলের অ্যাপে বেশ কিছু ফিচার সংযুক্ত করা আছে। মোবাইলের পিডিএফ সফট কপিতে কিউআর কোড বসানো থাকে, যা স্ক্যান করলেই স্পষ্ট হওয়া যায় টিকিট আসল না নকল। রেলসেবা অ্যাপে টিকিট ভেরিফাই করার প্রক্রিয়াও যুক্ত আছে। অর্থাৎ ফটোশপ বা বিভিন্ন অ্যাপ দিয়ে টিকিট নকল করার সুযোগ এখন আর নেই। অনলাইন থেকে টিকিট সংগ্রহ করার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নাম্বার উভয় অন্তর্ভুক্ত করা লাগে। রেলওয়ে কর্মকর্তারা টিকিট চেক করার সময় যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল নাম্বার ও রেলসেবা অ্যাপ দিয়ে টিকিটের বৈধতা যাচাই করতে পারেন। তাহলে প্রিন্ট করা ও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করার পুরনো ঝামেলা পোহাতে হবে না। রেলওয়ে কর্মকর্তাগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, আপনাদের একটু ব্যক্তি সচেতনতা ও সিস্টেমের পরিবর্তনই পারে টিকিট প্রাপ্তির ভোগান্তি কমিয়ে ট্রেনের টিকিটের ডিজিটাল প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে।

মুরাদ হোসেন