শেরপুরে টিআর প্রকল্পে হরিলুটের অভিযোগ

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির কাজে হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। কাগজে কলমে কাজ দেখানো হলেও বাস্তবচিত্র ভিন্ন। যেন কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই অবস্থা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে ‘আমি ও আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত’ সেøাগান সাঁটানো থাকলেও চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে টিআর প্রকল্পের আওতায় ১ম কিস্তির নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ৪৫টি প্রকল্পে মোট ২৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮৩৩ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া উপজেলাওয়ারি প্রথম কিস্তির ২২টি প্রকল্পে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮৪ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কাগজে কলমে এসব কাজের বাস্তবায়ন সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে অধিকাংশ প্রকল্পেই কাজ না করে সরকারি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দি দুর্গামন্দির সংস্কারের জন্য দুটি আলাদা বরাদ্দে ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও এক টাকার কাজও হয়নি। মন্দির কমিটির নেতা সনাতন চন্দ্র জানান, মন্দিরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে শুনেছি কিন্তু কোন কাজ করা হয়নি। একই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সুভাস চন্দ্র জানান, এখনো কোন কাজ করা হয়নি। কিছু টাকা আছে যা দিয়ে আমরা মন্দিরের নামে জায়গা কিনবো ভাবছি।

খানপুর ইউনিয়নের কয়েরখালী হাটের পশ্চিমপার্শ্বের কবরস্থান সংস্কারের জন্য ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কোন কাজ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, টাকা বরাদ্দ হলেও কবরস্থান সংস্কারের কোন কাজই হয়নি।

সুঘাট ইউনিয়নের ফুলজোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সংস্কারের জন্য ৯০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রকল্পের টাকায় কোন কাজই হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বেল্লাল হোসেন জানান, বরাদ্দ ৯০ টাকার টাকা হলেও পেয়েছি ৩০ হাজার টাকা। তাই দিয়েই কাজ করার চেষ্টা করেছি। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে জানিয়েও লাভ হয়নি। অফিস থেকে বলা হয়েছে সভাপতির সাথে সমন্বয় করে কাজ করেন। এছাড়া ঘোড়দৌড় মাদ্রাসার অফিসরুম টাইলসকরণ প্রকল্পে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, শেরপুর উপজেলা অফিসার্স ক্লাব সংস্কারে ৯০ হাজার টাকা, শেরপুর অটিজম এন্ড প্রতিবন্ধী স্কুল সংষ্কারের নামে ৯৩হাজার ৮৩৩ টাকা, খন্দাকারপাড়া লক্ষী ও কালীমন্দির সংষ্কারের জন্য ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও বরাদ্দের সিংহভাগ টাকার কোন কাজই হয়নি। ভুয়া বিল ভাউচার জমা দিয়ে নামপত্র কাগজে-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে এসব প্রকল্পের সিংগভাগ টাকাই আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এসব ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোছা. শামসুন্নাহার শিউলী জানান, প্রথম পর্যায়ের টিআর প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কাজগুলো হচ্ছে কি না তা আমরা দেখার চেষ্টা করছি। তবে এসব কাজে কোন অনিয়মের অভিযোগ এখনো পাননি বলে তিনি জানান।

এসব বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিয়াকত আলী সেখের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৮ মাঘ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

শেরপুরে টিআর প্রকল্পে হরিলুটের অভিযোগ

প্রতিনিধি, শেরপুর (বগুড়া)

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির কাজে হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। কাগজে কলমে কাজ দেখানো হলেও বাস্তবচিত্র ভিন্ন। যেন কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই অবস্থা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে ‘আমি ও আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত’ সেøাগান সাঁটানো থাকলেও চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে টিআর প্রকল্পের আওতায় ১ম কিস্তির নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক ৪৫টি প্রকল্পে মোট ২৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮৩৩ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া উপজেলাওয়ারি প্রথম কিস্তির ২২টি প্রকল্পে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮৪ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কাগজে কলমে এসব কাজের বাস্তবায়ন সম্পন্ন দেখানো হলেও বাস্তবে অধিকাংশ প্রকল্পেই কাজ না করে সরকারি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দি দুর্গামন্দির সংস্কারের জন্য দুটি আলাদা বরাদ্দে ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও এক টাকার কাজও হয়নি। মন্দির কমিটির নেতা সনাতন চন্দ্র জানান, মন্দিরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে শুনেছি কিন্তু কোন কাজ করা হয়নি। একই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সুভাস চন্দ্র জানান, এখনো কোন কাজ করা হয়নি। কিছু টাকা আছে যা দিয়ে আমরা মন্দিরের নামে জায়গা কিনবো ভাবছি।

খানপুর ইউনিয়নের কয়েরখালী হাটের পশ্চিমপার্শ্বের কবরস্থান সংস্কারের জন্য ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কোন কাজ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, টাকা বরাদ্দ হলেও কবরস্থান সংস্কারের কোন কাজই হয়নি।

সুঘাট ইউনিয়নের ফুলজোড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সংস্কারের জন্য ৯০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রকল্পের টাকায় কোন কাজই হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বেল্লাল হোসেন জানান, বরাদ্দ ৯০ টাকার টাকা হলেও পেয়েছি ৩০ হাজার টাকা। তাই দিয়েই কাজ করার চেষ্টা করেছি। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে জানিয়েও লাভ হয়নি। অফিস থেকে বলা হয়েছে সভাপতির সাথে সমন্বয় করে কাজ করেন। এছাড়া ঘোড়দৌড় মাদ্রাসার অফিসরুম টাইলসকরণ প্রকল্পে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, শেরপুর উপজেলা অফিসার্স ক্লাব সংস্কারে ৯০ হাজার টাকা, শেরপুর অটিজম এন্ড প্রতিবন্ধী স্কুল সংষ্কারের নামে ৯৩হাজার ৮৩৩ টাকা, খন্দাকারপাড়া লক্ষী ও কালীমন্দির সংষ্কারের জন্য ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও বরাদ্দের সিংহভাগ টাকার কোন কাজই হয়নি। ভুয়া বিল ভাউচার জমা দিয়ে নামপত্র কাগজে-কলমে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে এসব প্রকল্পের সিংগভাগ টাকাই আত্মসাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এসব ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোছা. শামসুন্নাহার শিউলী জানান, প্রথম পর্যায়ের টিআর প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কাজগুলো হচ্ছে কি না তা আমরা দেখার চেষ্টা করছি। তবে এসব কাজে কোন অনিয়মের অভিযোগ এখনো পাননি বলে তিনি জানান।

এসব বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিয়াকত আলী সেখের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।