সাবেক সামরিক শাসক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীরোত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ হিসেবে করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) খেতাবটি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটাকে আমি মনে করি, সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। এই সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছে, তাদেরকে আমি কখনই মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনে করি না। তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং পুরোপুরিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কলঙ্ক লেপন করা হলো। আমি এহেন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন বিএনপি মহাসচিব গতকাল টেলিফোনে সাংবাদিকদের এই প্রতিক্রিয়া জানান।
জিয়া যে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের অপকর্ম’ এবং বেরিয়ে আসা ‘সমস্ত দুর্নীতি’ থেকে জনগণের দৃষ্টি দূরে সরিয়ে নিতেই এটা করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান সম্পর্কে শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, বাইরের বহু লেখকের বহু লেখা আছে, যার প্রমাণ রয়েছে। এই যে বীরোত্তম খেতাবটি তিনি পেয়েছিলেন, সেই খেতাবটি পেয়েছিলেন কিন্তু স্বাধীনতার পরে। শেখ মুজিবুর রহমানের যে সরকার, সেই সরকারই এই খেতাব তাকে দিয়েছিল।’
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখনও এ বিষয়টি জানি না। তবে যদি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটা হবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের চরম অবমাননা। এটা বাংলাদেশের মানুষ ও সারাবিশ্বের মানুষ জানে যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ২৬ তারিখ সকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে প্রথম রিভল্ট করেন। তারপরে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে গিয়ে নিজে প্রথমে স্বাধীনতার ডাক দেন, পরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্বাধীনতার ডাক দেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জিয়াউর রহমান প্রথম সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছেন। তিনি প্রথম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করেছেন। তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তিনি জেড ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন। তার নামেই প্রথম জেডফোর্স গঠন করা হয়। তিনি স্বাধীনতার পরে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ খেতাব ‘বীর উত্তম’ পেয়েছেন। এখন ৫০ বছর পরে যদি সরকার এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা হবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ওপরে চরম অবমাননা। এটা হবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার একটা উদাহরণ। অত্যন্ত খারাপ একটা নজির হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত এ দেশের জনগণ মেনে নেবেন না। জনগণের কাছে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক এবং শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই থাকবেন। তারা যতই খেতাব মুছে দিতে চেষ্টা করুক, জনগণের মন থেকে কখনও মুছে দেয়া সম্ভব হবে না।’
বিএনপির অন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এটাতো মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে আগুন লাগিয়েছে। জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি বাতিল মানে হলো মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করা, অস্বীকার করা। দলমত নির্বিশেষ সব মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা। এটা জনগণ মানে না, মানবেও না।’
বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৮ মাঘ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
সাবেক সামরিক শাসক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীরোত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ হিসেবে করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) খেতাবটি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটাকে আমি মনে করি, সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। এই সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছে, তাদেরকে আমি কখনই মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনে করি না। তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং পুরোপুরিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কলঙ্ক লেপন করা হলো। আমি এহেন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন বিএনপি মহাসচিব গতকাল টেলিফোনে সাংবাদিকদের এই প্রতিক্রিয়া জানান।
জিয়া যে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের অপকর্ম’ এবং বেরিয়ে আসা ‘সমস্ত দুর্নীতি’ থেকে জনগণের দৃষ্টি দূরে সরিয়ে নিতেই এটা করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান সম্পর্কে শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, বাইরের বহু লেখকের বহু লেখা আছে, যার প্রমাণ রয়েছে। এই যে বীরোত্তম খেতাবটি তিনি পেয়েছিলেন, সেই খেতাবটি পেয়েছিলেন কিন্তু স্বাধীনতার পরে। শেখ মুজিবুর রহমানের যে সরকার, সেই সরকারই এই খেতাব তাকে দিয়েছিল।’
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখনও এ বিষয়টি জানি না। তবে যদি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটা হবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের চরম অবমাননা। এটা বাংলাদেশের মানুষ ও সারাবিশ্বের মানুষ জানে যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ২৬ তারিখ সকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে প্রথম রিভল্ট করেন। তারপরে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে গিয়ে নিজে প্রথমে স্বাধীনতার ডাক দেন, পরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্বাধীনতার ডাক দেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘স্বাধীনতার ডাক দিয়ে জিয়াউর রহমান প্রথম সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছেন। তিনি প্রথম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করেছেন। তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তিনি জেড ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন। তার নামেই প্রথম জেডফোর্স গঠন করা হয়। তিনি স্বাধীনতার পরে জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ খেতাব ‘বীর উত্তম’ পেয়েছেন। এখন ৫০ বছর পরে যদি সরকার এ ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা হবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের ওপরে চরম অবমাননা। এটা হবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার একটা উদাহরণ। অত্যন্ত খারাপ একটা নজির হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত এ দেশের জনগণ মেনে নেবেন না। জনগণের কাছে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক এবং শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই থাকবেন। তারা যতই খেতাব মুছে দিতে চেষ্টা করুক, জনগণের মন থেকে কখনও মুছে দেয়া সম্ভব হবে না।’
বিএনপির অন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এটাতো মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে আগুন লাগিয়েছে। জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি বাতিল মানে হলো মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করা, অস্বীকার করা। দলমত নির্বিশেষ সব মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা। এটা জনগণ মানে না, মানবেও না।’