সিরিজ বোমা

সাতক্ষীরায় পাঁচ মামলায় ১৪ জনের কারাদণ্ড

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী মুন্সিগঞ্জ ব্যতীত ৬৩ জেলার মধ্যে জেএমবির সিরিজ বোমা হামলায় ঘটনায় সাতক্ষীরায় পাঁচ মামলায় ১৪ জনকে তিন বছর থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি গোলাম মোহাম্মদের দায়েরকৃত মামলার সব আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলাম গতকাল দুপুর ১২টায় এ রায় দেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিরা ন্যায় বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেন তাদের আইনজীবীরা।

আসামিদের মধ্যে নাঈমউদ্দিন ওরফে নাঈম (পলাতক), ফকরুদ্দিন আল রাজী (পলাতক), মো. মনিরুজ্জামান মুন্না, ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিন সরদার, বেল্লাল হোসেন ওরফে আবদুল্লাহ, হাবিবুর রহমান ওরফে ইসমাইল ও মাহাবুবর রহমানকে ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩ ও ৪ ধারায় ১৩ বছর করে, নূর আলী মেম্বর ও মনোয়র হোসেন উজ্জলকে ১০ বছর করে, মো. মন্তাজ ওরফে মমতাজ, মো. রাকিব হাসান ওরফে রাসেলকে নয় বছর করে, আসাদুল হক, আনিছুর রহমান খোকন, আসাদুজ্জামান ওরফে সাঈদ ওরফে হাজারীকে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে আসামিদের হাজত বাসের মেয়াদ মূল সাজা থেকে বাদ যাবে।

সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের জেএমবি’র মামলা পরিচালনাকারি অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আবদুস সামাদ বলেন, ২০০৫ এর ১৭ আগস্ট শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, পুরাতন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা রোডের মোড়ে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলীর ব^াঁকালের দলিলউদ্দিন দফাদারের ছেলে নাসিরুদ্দিন দফাদার প্রত্যক্ষদর্শী বাকাল ইসলামপুর চরের পকেটমার রওশানের বিবরণ মতে ধরা পড়ে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাটি চিহ্নিত করা হয়।

এই সূত্র ধরে ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসব ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক হযরত আলী, উপপরিদর্শক জসীমউদ্দিন, উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাস, উপপরিদর্শক আবু তাহের ও উপপরিদর্শক একেএম নজিবুল্লাহ বাদি হয়ে ওই দিন ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩, ৪ ও ৬ ধারায় পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরও দেশজুড়ে বোমা হামলা চালানোর অভিযোগে তৎকালীন সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি গোলাম মোহাম্মদ বাদী হয়ে ২০০৫ সালের পহেলা অক্টোবর ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৯(৮) ও ২০(৩) ধারায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বাংলাদেশের অন্য জেলে থাকা শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানিসহ কয়েকজনকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

সাতক্ষীরায় গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজনকে ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) এ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানায় তারা। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়।

২০০৬ সালের ১৩ মার্চ সিআইডি পাঁচটি মামলায় ১৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। একইভাবে থানা ওসির দায়েরকৃত মামলায় ২৮ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। সে বছরই মামলাগুলো খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হয়। যথা সময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৭ এর ২৫ জুন মামলাগুলো খুলনা থেকে ফেরত আসে সাতক্ষীরায়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে মামলাগুলোর বিচার কাজ শুরু করেন। এসব মামলায় ১৪ জনের সাক্ষীগ্রহণ করা হয়। তবে থানার ওসি গোলাম মোস্তফার দায়েরকৃত মামলায় কেবলমাত্র দু’জন সাক্ষ্য নেয়া হয়।

মামলার নথি ও ৬২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে বিচারক ১৪ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। একই সঙ্গে পলাতক আসামি আবুল খায়েরকে বেকসুর খালাস দেন।

আসামিদের মধ্যে শায়খ রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাঁকাল ইসলামপুরের নাসিরুদ্দিন দফাদার ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর মস্তিস্কের রক্ষক্ষরণজনিত কারণে সাতক্ষীরা কারাগারে মারা যান। আসামিরা দেশের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থান করায় মামলার রায় হতে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর লেগে যায়। সাজাপ্রাপ্ত ১৪ জনসহ খালাস মামলার আরও ৫ জনকেসহ মোট ১৯ জনকে আদালতে হাজির করা হয়।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আবদুল লতিফ জানান, দেশব্যাপী বোমা হামলার মধ্যে সাতক্ষীরার ৫টি স্থানে হামলার ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়। এদের মধ্যে ১৪ জনের সাজা ও একজন খালাস পায়। আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিআেগ প্রমান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ রায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

তবে মামলার রায় সম্পর্কে অনুভূতি জানাতে যেয়ে দেশব্যাপী বোমা হামলা মামলার সাতক্ষীরায় প্রথম আসামি শনাক্তকারী বাঁকাল ইসলামপুর চরের রওশান আলী বলেন, এ রায়ে তিনি খুশি। তবে যেভাবে সাজা হয়েছে তাতে কয়েকজন আসামির সাজার চেয়ে হাজতবাসের মেয়াদ অনেক বেশি হয়ে গেছে। দ্রুত বিচার শেষ হলে তাদেরকে বেশি সাজা খাটতে হতো না।

আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আবু আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক আনিছুর রহিম ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফাহিমুল তক কিসলু বলেন, দেরিতে হলেও ১৫ বছর পর এসব মামলার সাজা হওয়ায় জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিতে পারবে না। তবে তারা সাতক্ষীরার গুড়পুকুরের বোম হামলা মামলা দুটির দ্রুত বিচার শেষ করার দাবি জানান।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আবদুস সামাদ। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সাবেক পিপি অ্যাড. আবু বক্কর ছিদ্দিক ও অ্যাড. আজিবর রহমান।

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৮ মাঘ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সিরিজ বোমা

সাতক্ষীরায় পাঁচ মামলায় ১৪ জনের কারাদণ্ড

প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা

image

সাতক্ষীরা : সিরিজ বোমা হামলার মামলায় দণ্ডিত জেএমবি’র আসামিরা

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী মুন্সিগঞ্জ ব্যতীত ৬৩ জেলার মধ্যে জেএমবির সিরিজ বোমা হামলায় ঘটনায় সাতক্ষীরায় পাঁচ মামলায় ১৪ জনকে তিন বছর থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি গোলাম মোহাম্মদের দায়েরকৃত মামলার সব আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলাম গতকাল দুপুর ১২টায় এ রায় দেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিরা ন্যায় বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেন তাদের আইনজীবীরা।

আসামিদের মধ্যে নাঈমউদ্দিন ওরফে নাঈম (পলাতক), ফকরুদ্দিন আল রাজী (পলাতক), মো. মনিরুজ্জামান মুন্না, ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিন সরদার, বেল্লাল হোসেন ওরফে আবদুল্লাহ, হাবিবুর রহমান ওরফে ইসমাইল ও মাহাবুবর রহমানকে ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩ ও ৪ ধারায় ১৩ বছর করে, নূর আলী মেম্বর ও মনোয়র হোসেন উজ্জলকে ১০ বছর করে, মো. মন্তাজ ওরফে মমতাজ, মো. রাকিব হাসান ওরফে রাসেলকে নয় বছর করে, আসাদুল হক, আনিছুর রহমান খোকন, আসাদুজ্জামান ওরফে সাঈদ ওরফে হাজারীকে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে আসামিদের হাজত বাসের মেয়াদ মূল সাজা থেকে বাদ যাবে।

সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের জেএমবি’র মামলা পরিচালনাকারি অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আবদুস সামাদ বলেন, ২০০৫ এর ১৭ আগস্ট শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, পুরাতন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা রোডের মোড়ে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলীর ব^াঁকালের দলিলউদ্দিন দফাদারের ছেলে নাসিরুদ্দিন দফাদার প্রত্যক্ষদর্শী বাকাল ইসলামপুর চরের পকেটমার রওশানের বিবরণ মতে ধরা পড়ে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাটি চিহ্নিত করা হয়।

এই সূত্র ধরে ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসব ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক হযরত আলী, উপপরিদর্শক জসীমউদ্দিন, উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাস, উপপরিদর্শক আবু তাহের ও উপপরিদর্শক একেএম নজিবুল্লাহ বাদি হয়ে ওই দিন ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩, ৪ ও ৬ ধারায় পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরও দেশজুড়ে বোমা হামলা চালানোর অভিযোগে তৎকালীন সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি গোলাম মোহাম্মদ বাদী হয়ে ২০০৫ সালের পহেলা অক্টোবর ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৯(৮) ও ২০(৩) ধারায় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বাংলাদেশের অন্য জেলে থাকা শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানিসহ কয়েকজনকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

সাতক্ষীরায় গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজনকে ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) এ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানায় তারা। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়।

২০০৬ সালের ১৩ মার্চ সিআইডি পাঁচটি মামলায় ১৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। একইভাবে থানা ওসির দায়েরকৃত মামলায় ২৮ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। সে বছরই মামলাগুলো খুলনার দ্রুত বিচার আদালতে পাঠানো হয়। যথা সময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৭ এর ২৫ জুন মামলাগুলো খুলনা থেকে ফেরত আসে সাতক্ষীরায়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে মামলাগুলোর বিচার কাজ শুরু করেন। এসব মামলায় ১৪ জনের সাক্ষীগ্রহণ করা হয়। তবে থানার ওসি গোলাম মোস্তফার দায়েরকৃত মামলায় কেবলমাত্র দু’জন সাক্ষ্য নেয়া হয়।

মামলার নথি ও ৬২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে বিচারক ১৪ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। একই সঙ্গে পলাতক আসামি আবুল খায়েরকে বেকসুর খালাস দেন।

আসামিদের মধ্যে শায়খ রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাঁকাল ইসলামপুরের নাসিরুদ্দিন দফাদার ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর মস্তিস্কের রক্ষক্ষরণজনিত কারণে সাতক্ষীরা কারাগারে মারা যান। আসামিরা দেশের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থান করায় মামলার রায় হতে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর লেগে যায়। সাজাপ্রাপ্ত ১৪ জনসহ খালাস মামলার আরও ৫ জনকেসহ মোট ১৯ জনকে আদালতে হাজির করা হয়।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আবদুল লতিফ জানান, দেশব্যাপী বোমা হামলার মধ্যে সাতক্ষীরার ৫টি স্থানে হামলার ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়। এদের মধ্যে ১৪ জনের সাজা ও একজন খালাস পায়। আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিআেগ প্রমান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ রায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

তবে মামলার রায় সম্পর্কে অনুভূতি জানাতে যেয়ে দেশব্যাপী বোমা হামলা মামলার সাতক্ষীরায় প্রথম আসামি শনাক্তকারী বাঁকাল ইসলামপুর চরের রওশান আলী বলেন, এ রায়ে তিনি খুশি। তবে যেভাবে সাজা হয়েছে তাতে কয়েকজন আসামির সাজার চেয়ে হাজতবাসের মেয়াদ অনেক বেশি হয়ে গেছে। দ্রুত বিচার শেষ হলে তাদেরকে বেশি সাজা খাটতে হতো না।

আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আবু আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক আনিছুর রহিম ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফাহিমুল তক কিসলু বলেন, দেরিতে হলেও ১৫ বছর পর এসব মামলার সাজা হওয়ায় জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিতে পারবে না। তবে তারা সাতক্ষীরার গুড়পুকুরের বোম হামলা মামলা দুটির দ্রুত বিচার শেষ করার দাবি জানান।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আবদুস সামাদ। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সাবেক পিপি অ্যাড. আবু বক্কর ছিদ্দিক ও অ্যাড. আজিবর রহমান।