কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এখন ইয়াবার ডিপোতে পরিণত হয়েছে। সেখানে রয়েছে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা। তারা প্রতিনিয়ত যুব সমাজের হাতে তুলে দিচ্ছে মরণ নেশা ইয়াবা। পুলিশ জানিয়েছে, ৯ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী পৃথক অভিযানে পৌন ১৮ লাখ ইয়াবা, পৌন ২ কোটি টাকাসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে কক্সবাজার সদরের চৌফলদ-ী ঘাট থেকে সমুদ্র পথে পাচার হয়ে আসা ৭ বস্তা ভর্তি ১৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা। এ সময় আটক করা হয়েছে ২ জনকে। জব্দ করা হয়েছে পাচার কাজে ব্যবহৃত ট্রলারটিও। ওই অভিযানে সূত্র ধরে আটক এক জনের বাড়ি থেকে নগদ ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয় ২ জনকে। রাতে আবার অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ৩ লাখ ৭৫ হাজার ইয়াবা। এ সময় আটক করা হয় আরও ১ জনকে। সব মিলিয়ে পৃথক এ অভিযানে পৌন ১৮ লাখ ইয়াবা, পৌন ২ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আটক করা হয় ৫ জনকে। আটকরা হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার উত্তর নুনিয়ার ছড়া মো. নজরুল ইসলামের পুত্র মো. জহিরুল ইসলাম ফারুক (৩৭), একই এলাকার মো. মোজ্জাফরের পুত্র মো. নুরুল ইসলাম বাবু (৫৫), ফারুকের শ্বশুর আবুল হোসেনের পুত্র আবুল কালাম (৫৫), আবুল কালামের পুত্র শেখ আবদুল্লাহ (২০) ও ফারুকের মামা শ্বশুর আবু সৈয়দের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম (৪৪)।
১০ ফেব্রুয়ারি সকালে কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা ২টি দায়ের করেন। যার একটি মাদক আইনে, অপরটি অবৈধ অর্থ মজুদ রাখার দায়ে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, অভিযুক্ত এলাকাগুলোর উপর নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে ৮৮ জনের তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব মাদককারবারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এসপি বলেন, মাদককারবারী কিন্তু একা হয় না। এটা সিন্ডিকেট করে হয়। মাদককারবারীরা সামনে কাজ করে তেমনি তাদের পেছনে গডফাদারও থাকে। পাশাপাশি যারা কুশীলব আছে তাদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন আছে। আমরা শুধু একটি মামলা নয়, যাচাই বাছাই করে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা নেব। এসপি বলেন, মাদককারবারী কিন্তু একা হয় না। এটা সিন্ডিকেট করে হয়। মাদককারবারীরা সামনে কাজ করে তেমনি তাদের পেছনে গডফাদারও থাকে। পাশাপাশি যারা কুশীলব আছে তাদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন আছে। আমরা শুধু একটি মামলা নয়, যাচাই বাছাই করে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা নিবো।
এদিকে ৯ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও নগদ টাকার উদ্ধারের পর ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এতে দেখা যায়, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও নুনিয়ারছড়ার বাসিন্দা মঈনউদ্দীন তার ফেসবুকে লিখেছেন, উত্তর নুনিয়াছড়া থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জাহাজ ‘কর্ণফুলী’ কে নজরদারির আওতায় আনা হোক। টেকনাফ থেকে সড়কপথে কক্সবাজার আসতে অনেকগুলো চেকপোস্ট পার হতে হয় অথচ কর্ণফুলীতে সেন্টমার্টিন হয়ে কক্সবাজার শহরে ঢুকতে কোন চেকপোস্ট নেই। এই জাহাজে তল্লাশি চেকপোস্ট বসানো হোক।
তার উত্তরে কর্ণফুলী জাহাজের ব্যবস্থাপক হোসাইন বাহাদুর লিখেছেন, সহমত, আমরা কর্ণফুলী জাহাজ কতৃপক্ষ প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করতে প্রস্তুুত। পাশাপাশি উত্তর নুনিয়াছড়ায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আশ্রয়, প্রশ্রয়, দৈনিক বা মাসিক মাসোহারাসহ সার্বিক সহযোগিতা কারা করে তদন্ত পূর্বক তাদের কেউ আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
জাহেদুল ইসলাম তার ফেসবুকে লিখেছেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে যদি একাধিকবার উদ্ধার করা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠে সেখানে কি করে মাদক নির্মূল হবে ?
অন্যদিকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিজানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা কারবার ও ইয়াবা কারবারিদের থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এলাকার খুচরা ও বড় ইয়াবা কারবারিদের সঙ্গে যোগসাজস রয়েছে কাউন্সিলর মিজানের। যাদের থেকে তিনি নিয়মিত টাকা নেন। যদিও তিনি সভা সেমিনারে প্রকাশ্যে ইয়াবার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং তাদের ধরিয়ে দেয়ার ঘোষণাও দেন। কিন্তু এসবের আড়ালে রয়েছে তার ভিন্নরূপ। এ যাবত তিনি এলাকার থেকে একজন মাদক কারবারিকেও ধরিয়ে দিতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে তিনি নিজেই ইয়াবাকারি। এছাড়া তার ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজনরা মাদক কারবারে জড়িত।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর মিজানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি ইয়াবা কারবার বা ইয়াবা কারবারিদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, যারা ধরা খেয়েছে তারা আমার প্রতিবেশী, তারা কেউই আমার আত্মীয় নয়।
এদিকে স্থানীয়রা ফারুক গ্রেপ্তার হওয়ার পর নানা তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করেছে। এমনকি স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিরাও ছিল তার কাছে অসহায়। স্থানীয় কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, ফারুক একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। এর আগেও মাদকসহ আটক হয়ে ২ বার জেল খেটেছেন। মূলত ফারুকের রয়েছে ৫-৬টি মাছ ধরার ট্রলার। ওই ট্রলারগুলোকে পুঁজি করে সে নিয়মিত ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। বিশেষ করে সে মাদক বহনে ট্রলারগুলোকে কাজে লাগিয়েছে।
মিজান তার সম্পদের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইয়াবা ব্যবসার বদৌলতে ফারুক আজ অঢেল সম্পদের মালিক, রয়েছে প্রচুর পরিমাণ নগদ টাকা। কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনে রয়েছে কয়েকটি ফ্ল্যাট। বিভিন্ন জায়গায়ও রয়েছে প্রচুর জমি। কাউন্সিলর মিজান আরও বলেন, ২ বার কারাগারে থাকলেও ধমিয়ে রাখা যায়নি তার মাদক ব্যবসাকে। কারাগারে থাকাকালেও তার গড়ে তোলা সিন্ডিকেট এই ব্যবসা চালিয়ে নেন।
আটক ফারুকের ব্যাপারে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ফারুক ফিশিংয়ের আড়ালে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে লিপ্ত ছিল। এ রকম আরও বেশকিছু মাদক ব্যবসায়ীর সন্ধান পাওয়া গেছে। ইতিপূর্বে তালিকাকেও আমরা আমলে নিচ্ছি। কিন্তু ইয়াবা ব্যবসা তো আর একদিনে হয় না, প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ী পরিবর্তন এবং নতুন নতুন ইয়াবা কারবারী সংযুক্ত হচ্ছে। এ সময় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের প্রতি গোয়েন্দা নজরদারির কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন।
পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বলেন, আমরা এই টাকা মাদক বিক্রির টাকা হলেও যারা এই টাকা জেনে শুনে হেফাজতে রেখেছিল তারাও কিন্তু ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। তারাও আইনের আওতায় আসছে।
বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৮ মাঘ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২
জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার থেকে
কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এখন ইয়াবার ডিপোতে পরিণত হয়েছে। সেখানে রয়েছে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা। তারা প্রতিনিয়ত যুব সমাজের হাতে তুলে দিচ্ছে মরণ নেশা ইয়াবা। পুলিশ জানিয়েছে, ৯ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী পৃথক অভিযানে পৌন ১৮ লাখ ইয়াবা, পৌন ২ কোটি টাকাসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে কক্সবাজার সদরের চৌফলদ-ী ঘাট থেকে সমুদ্র পথে পাচার হয়ে আসা ৭ বস্তা ভর্তি ১৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা। এ সময় আটক করা হয়েছে ২ জনকে। জব্দ করা হয়েছে পাচার কাজে ব্যবহৃত ট্রলারটিও। ওই অভিযানে সূত্র ধরে আটক এক জনের বাড়ি থেকে নগদ ১ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৫শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় আটক করা হয় ২ জনকে। রাতে আবার অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ৩ লাখ ৭৫ হাজার ইয়াবা। এ সময় আটক করা হয় আরও ১ জনকে। সব মিলিয়ে পৃথক এ অভিযানে পৌন ১৮ লাখ ইয়াবা, পৌন ২ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আটক করা হয় ৫ জনকে। আটকরা হলেন- কক্সবাজার পৌরসভার উত্তর নুনিয়ার ছড়া মো. নজরুল ইসলামের পুত্র মো. জহিরুল ইসলাম ফারুক (৩৭), একই এলাকার মো. মোজ্জাফরের পুত্র মো. নুরুল ইসলাম বাবু (৫৫), ফারুকের শ্বশুর আবুল হোসেনের পুত্র আবুল কালাম (৫৫), আবুল কালামের পুত্র শেখ আবদুল্লাহ (২০) ও ফারুকের মামা শ্বশুর আবু সৈয়দের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম (৪৪)।
১০ ফেব্রুয়ারি সকালে কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা ২টি দায়ের করেন। যার একটি মাদক আইনে, অপরটি অবৈধ অর্থ মজুদ রাখার দায়ে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, অভিযুক্ত এলাকাগুলোর উপর নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া নতুন করে ৮৮ জনের তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব মাদককারবারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এসপি বলেন, মাদককারবারী কিন্তু একা হয় না। এটা সিন্ডিকেট করে হয়। মাদককারবারীরা সামনে কাজ করে তেমনি তাদের পেছনে গডফাদারও থাকে। পাশাপাশি যারা কুশীলব আছে তাদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন আছে। আমরা শুধু একটি মামলা নয়, যাচাই বাছাই করে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা নেব। এসপি বলেন, মাদককারবারী কিন্তু একা হয় না। এটা সিন্ডিকেট করে হয়। মাদককারবারীরা সামনে কাজ করে তেমনি তাদের পেছনে গডফাদারও থাকে। পাশাপাশি যারা কুশীলব আছে তাদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন আছে। আমরা শুধু একটি মামলা নয়, যাচাই বাছাই করে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা নিবো।
এদিকে ৯ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও নগদ টাকার উদ্ধারের পর ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
এতে দেখা যায়, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও নুনিয়ারছড়ার বাসিন্দা মঈনউদ্দীন তার ফেসবুকে লিখেছেন, উত্তর নুনিয়াছড়া থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জাহাজ ‘কর্ণফুলী’ কে নজরদারির আওতায় আনা হোক। টেকনাফ থেকে সড়কপথে কক্সবাজার আসতে অনেকগুলো চেকপোস্ট পার হতে হয় অথচ কর্ণফুলীতে সেন্টমার্টিন হয়ে কক্সবাজার শহরে ঢুকতে কোন চেকপোস্ট নেই। এই জাহাজে তল্লাশি চেকপোস্ট বসানো হোক।
তার উত্তরে কর্ণফুলী জাহাজের ব্যবস্থাপক হোসাইন বাহাদুর লিখেছেন, সহমত, আমরা কর্ণফুলী জাহাজ কতৃপক্ষ প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করতে প্রস্তুুত। পাশাপাশি উত্তর নুনিয়াছড়ায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আশ্রয়, প্রশ্রয়, দৈনিক বা মাসিক মাসোহারাসহ সার্বিক সহযোগিতা কারা করে তদন্ত পূর্বক তাদের কেউ আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
জাহেদুল ইসলাম তার ফেসবুকে লিখেছেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে যদি একাধিকবার উদ্ধার করা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠে সেখানে কি করে মাদক নির্মূল হবে ?
অন্যদিকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিজানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা কারবার ও ইয়াবা কারবারিদের থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এলাকার খুচরা ও বড় ইয়াবা কারবারিদের সঙ্গে যোগসাজস রয়েছে কাউন্সিলর মিজানের। যাদের থেকে তিনি নিয়মিত টাকা নেন। যদিও তিনি সভা সেমিনারে প্রকাশ্যে ইয়াবার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং তাদের ধরিয়ে দেয়ার ঘোষণাও দেন। কিন্তু এসবের আড়ালে রয়েছে তার ভিন্নরূপ। এ যাবত তিনি এলাকার থেকে একজন মাদক কারবারিকেও ধরিয়ে দিতে পারেননি। অভিযোগ রয়েছে তিনি নিজেই ইয়াবাকারি। এছাড়া তার ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজনরা মাদক কারবারে জড়িত।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর মিজানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি ইয়াবা কারবার বা ইয়াবা কারবারিদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, যারা ধরা খেয়েছে তারা আমার প্রতিবেশী, তারা কেউই আমার আত্মীয় নয়।
এদিকে স্থানীয়রা ফারুক গ্রেপ্তার হওয়ার পর নানা তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করেছে। এমনকি স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিরাও ছিল তার কাছে অসহায়। স্থানীয় কাউন্সিলর মিজানুর রহমান বলেন, ফারুক একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। এর আগেও মাদকসহ আটক হয়ে ২ বার জেল খেটেছেন। মূলত ফারুকের রয়েছে ৫-৬টি মাছ ধরার ট্রলার। ওই ট্রলারগুলোকে পুঁজি করে সে নিয়মিত ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। বিশেষ করে সে মাদক বহনে ট্রলারগুলোকে কাজে লাগিয়েছে।
মিজান তার সম্পদের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইয়াবা ব্যবসার বদৌলতে ফারুক আজ অঢেল সম্পদের মালিক, রয়েছে প্রচুর পরিমাণ নগদ টাকা। কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনে রয়েছে কয়েকটি ফ্ল্যাট। বিভিন্ন জায়গায়ও রয়েছে প্রচুর জমি। কাউন্সিলর মিজান আরও বলেন, ২ বার কারাগারে থাকলেও ধমিয়ে রাখা যায়নি তার মাদক ব্যবসাকে। কারাগারে থাকাকালেও তার গড়ে তোলা সিন্ডিকেট এই ব্যবসা চালিয়ে নেন।
আটক ফারুকের ব্যাপারে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ফারুক ফিশিংয়ের আড়ালে ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে লিপ্ত ছিল। এ রকম আরও বেশকিছু মাদক ব্যবসায়ীর সন্ধান পাওয়া গেছে। ইতিপূর্বে তালিকাকেও আমরা আমলে নিচ্ছি। কিন্তু ইয়াবা ব্যবসা তো আর একদিনে হয় না, প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ী পরিবর্তন এবং নতুন নতুন ইয়াবা কারবারী সংযুক্ত হচ্ছে। এ সময় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের প্রতি গোয়েন্দা নজরদারির কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন।
পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বলেন, আমরা এই টাকা মাদক বিক্রির টাকা হলেও যারা এই টাকা জেনে শুনে হেফাজতে রেখেছিল তারাও কিন্তু ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। তারাও আইনের আওতায় আসছে।