যশোরে অপহৃত আইনজীবী উদ্ধার

যশোরে অপহৃত আইনজীবী উদ্ধার

বান্ধবী, তার স্বামীসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

আইনজীবী আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলনের সঙ্গে রাবেয়া সুলতানা রিতুর পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়। ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে মিলনকে ডেকে নেয় রিতু। এরপর কৌশলে বান্ধবী সুরাইয়ার বাড়িতে নিয়ে হাত পা বেঁধে ফেলে রাখে। তারপর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরিবারের লোকজন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কাছে যায়। পিবিআইয়ের তৎপরতায় গতকাল যশোরের অভয়নগর থেকে মিলনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল নিজ দপ্তরে প্রেস বিফ্রিংয়ে এই তথ্য জানান পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন।

তিনি আরও জানান, পারিবারিকভাবে মিলন ও রিতুর বিয়ে ঠিক হলেও তারা জানতো না রিতু উচ্চাভিলাসী জীবনযাপনের জন্য বিভিন্ন অপরাধ কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত এবং মাদকাসক্ত। এর আগেও দুটি অপরাধে জড়িত ছিল। কিন্তু তাতে পার পেয়ে গেছে। স্কুলের বান্ধবী সুরাইয়ার সঙ্গে পরিকল্পনা করে তারা এই অপহরণ করে। আর সুরাইয়া ও তার স্বামী রাজও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। তারা মানুষকে ব্ল্যাকমেইল ও অপহরণ করে টাকা আদায় করতো।

এ ঘটনায় ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ফরমায়েসখানা দেয়াড়া গ্রামের আলাউদ্দিন শিকদারের ছেলে শাহীন শিকদার (১৮), জামির সরদারের ছেলে আবদুস সালাম (২৪) ও সাতক্ষীরা সদরের সুলতানপুর বড়বাজার এলাকার আজমল হকের মেয়ে সুরাইয়া (২০)। ভিকটিম আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলন (৩৩) সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের এমএ হাকিমের ছেলে। এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় মামলা হয়েছে।

পিবিআই পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, পারিবারিকভাবে আইনজীবী আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলনের সঙ্গে সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার প্রতাবনগর গ্রামের এসএম হারুনুর রশিদের মেয়ে রাবেয়া সুলতানা রিতুর বিয়ে ঠিক হয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মিলন বাড়ি থেকে বের হয়ে খুলনা পাইওয়নিয়ার কলেজের সামনে বাগদত্তা রিতুর সঙ্গে দেখা করতে যান এবং তারা একত্রে ঘুরতে যান। পরবর্তীতে সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ২০ মিনিটের দিকে মিলন তার বন্ধু হাফিজুরকে ফোন করে বিপদে আছে ও তার টাকা প্রয়োজন বললে হাফিজ তাকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে পর্যায়ক্রমে তার পিতা এবং দুলাভাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করে ত্রিশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তাকে মারপিট করে কান্নাকাটির আওয়াজ শোনায়। মুক্তিপণ না দিলে মিলনকে হত্যা করবে বলে জানায়।

৮ ফেব্রুয়ারি মিলনের নিখোঁজ সংক্রান্ত বিষয়ে তার পিতা সাতক্ষীরার তালা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে ৯ ফেব্রুয়ারি অভয়নগর থানায় মামলা করেন মিলনের দুলাভাই শরিফুল ইসলাম। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। ওইদিন খুলনার দৌলতপুর মাছবাজার ঘাট এলাকা থেকে আসামি শাহীন শিকদারকে (১৮) গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে অভয়নগর উপজেলার একতারপুর গ্রাম থেকে আবদুস সালাম (২৪) ও সুরাইয়া (২০) গ্রেপ্তার ও ভিকটিম আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন আরও বলেন, মিলন ও রিতু শনিবার জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পার্কে ঘুরতে যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে অভিযুক্ত সুরাইয়ার সঙ্গে দেখা হয়। সুরাইয়া চা পানের কথা বলে মিলন ও রিতুকে যশোরের অভয়নগর থানার একাতারপুর গ্রামের বাসায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে কৌশলে ভিকটিমকে বাসায় রেখে তার বাগদত্তা রাবেয়া সুলতানা রিতুকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে শাহীন শিকদার, আবদুস সালাম, সুরাইয়া ও হাবিব মিলন ওরফে রাজ পরিকল্পনা মোতাবেক মিলনকে বাড়িতে আটকে রেখে মারপিট করে। এক পর্যায়ে মিলনের পরিবারের কাছে ত্রিশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

image

যশোর : প্রতারণার দায়ে গ্রেপ্তার বাগদত্তা, বান্ধবী ও তার স্বামী -সংবাদ

আরও খবর
আদর্শহীন রাজনীতি টিকে থাকতে পারে না
টিকা কার্যক্রমে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা হবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
হিমালয়ের হিমবাহ দুর্যোগ সতর্ক করা হয়েছিল আগেই
কোন গোষ্ঠী বা দলের প্রতি অনুরাগ নয় মাহবুব তালুকদার
বহিষ্কারের পরও বিদ্রোহীরা সরেনি অস্বস্তিকর অবস্থায় নৌকার প্রার্থী
রংপুরে এলজিইডির দুই প্রকৌশলী কারাগারে
কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া ইয়াবার ডিপো
২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২ দশমিক ৫৯
পাবনা পৌর নির্বাচনের ফল স্থগিত, পুনরায় ভোট গণনার নির্দেশ
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় টিকা গ্রহীতাদের ভিড় বাড়ছে

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৮ মাঘ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

যশোরে অপহৃত আইনজীবী উদ্ধার

যশোরে অপহৃত আইনজীবী উদ্ধার

বান্ধবী, তার স্বামীসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

যশোর অফিস

image

যশোর : প্রতারণার দায়ে গ্রেপ্তার বাগদত্তা, বান্ধবী ও তার স্বামী -সংবাদ

আইনজীবী আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলনের সঙ্গে রাবেয়া সুলতানা রিতুর পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়। ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে মিলনকে ডেকে নেয় রিতু। এরপর কৌশলে বান্ধবী সুরাইয়ার বাড়িতে নিয়ে হাত পা বেঁধে ফেলে রাখে। তারপর পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরিবারের লোকজন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কাছে যায়। পিবিআইয়ের তৎপরতায় গতকাল যশোরের অভয়নগর থেকে মিলনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল নিজ দপ্তরে প্রেস বিফ্রিংয়ে এই তথ্য জানান পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন।

তিনি আরও জানান, পারিবারিকভাবে মিলন ও রিতুর বিয়ে ঠিক হলেও তারা জানতো না রিতু উচ্চাভিলাসী জীবনযাপনের জন্য বিভিন্ন অপরাধ কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত এবং মাদকাসক্ত। এর আগেও দুটি অপরাধে জড়িত ছিল। কিন্তু তাতে পার পেয়ে গেছে। স্কুলের বান্ধবী সুরাইয়ার সঙ্গে পরিকল্পনা করে তারা এই অপহরণ করে। আর সুরাইয়া ও তার স্বামী রাজও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। তারা মানুষকে ব্ল্যাকমেইল ও অপহরণ করে টাকা আদায় করতো।

এ ঘটনায় ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ফরমায়েসখানা দেয়াড়া গ্রামের আলাউদ্দিন শিকদারের ছেলে শাহীন শিকদার (১৮), জামির সরদারের ছেলে আবদুস সালাম (২৪) ও সাতক্ষীরা সদরের সুলতানপুর বড়বাজার এলাকার আজমল হকের মেয়ে সুরাইয়া (২০)। ভিকটিম আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলন (৩৩) সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বারুইহাটি গ্রামের এমএ হাকিমের ছেলে। এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় মামলা হয়েছে।

পিবিআই পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, পারিবারিকভাবে আইনজীবী আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলনের সঙ্গে সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার প্রতাবনগর গ্রামের এসএম হারুনুর রশিদের মেয়ে রাবেয়া সুলতানা রিতুর বিয়ে ঠিক হয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে মিলন বাড়ি থেকে বের হয়ে খুলনা পাইওয়নিয়ার কলেজের সামনে বাগদত্তা রিতুর সঙ্গে দেখা করতে যান এবং তারা একত্রে ঘুরতে যান। পরবর্তীতে সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ২০ মিনিটের দিকে মিলন তার বন্ধু হাফিজুরকে ফোন করে বিপদে আছে ও তার টাকা প্রয়োজন বললে হাফিজ তাকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দিয়ে পর্যায়ক্রমে তার পিতা এবং দুলাভাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করে ত্রিশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তাকে মারপিট করে কান্নাকাটির আওয়াজ শোনায়। মুক্তিপণ না দিলে মিলনকে হত্যা করবে বলে জানায়।

৮ ফেব্রুয়ারি মিলনের নিখোঁজ সংক্রান্ত বিষয়ে তার পিতা সাতক্ষীরার তালা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে ৯ ফেব্রুয়ারি অভয়নগর থানায় মামলা করেন মিলনের দুলাভাই শরিফুল ইসলাম। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। ওইদিন খুলনার দৌলতপুর মাছবাজার ঘাট এলাকা থেকে আসামি শাহীন শিকদারকে (১৮) গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে অভয়নগর উপজেলার একতারপুর গ্রাম থেকে আবদুস সালাম (২৪) ও সুরাইয়া (২০) গ্রেপ্তার ও ভিকটিম আবু হেনা মোস্তফা কামাল ওরফে মিলনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন আরও বলেন, মিলন ও রিতু শনিবার জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পার্কে ঘুরতে যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে অভিযুক্ত সুরাইয়ার সঙ্গে দেখা হয়। সুরাইয়া চা পানের কথা বলে মিলন ও রিতুকে যশোরের অভয়নগর থানার একাতারপুর গ্রামের বাসায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে কৌশলে ভিকটিমকে বাসায় রেখে তার বাগদত্তা রাবেয়া সুলতানা রিতুকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে শাহীন শিকদার, আবদুস সালাম, সুরাইয়া ও হাবিব মিলন ওরফে রাজ পরিকল্পনা মোতাবেক মিলনকে বাড়িতে আটকে রেখে মারপিট করে। এক পর্যায়ে মিলনের পরিবারের কাছে ত্রিশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।