ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশুর আইনি স্বীকৃতি এবার কি বদলাবে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি

ধর্ষণে জন্ম নেয়া এক শিশু আদালতের রায়ে পৈতৃক পরিচয় পেয়েছে, পেয়েছে সম্পত্তির উত্তরাধিকার। এ স্বীকৃতি পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩ বছর। আদালত বলেছেন, যদি ধর্ষকের কোন সম্পত্তি না থাকে, তবে ওই শিশুর ২১ বছর বয়স পর্যন্ত যাবতীয় ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে।

রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ গত সোমবার একটি ধর্ষণ মামলার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এর মধ্যদিয়ে ধর্ষণের শিকার নারীর ন্যায়বিচার পাওয়ার দীর্ঘ অপেক্ষারও অবসান হয়েছে।

ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির উত্তরাধিকার হওয়া ও পিতৃ পরিচয় পাওয়ার ঘটনায় একটি নজির স্থাপিত হলো। এ রায় ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচকভাবে বদলাতে সক্ষম হবে- এটা আমাদের প্রত্যাশা। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচকভাবে না বদলালে কঠোর আইন করেও ধর্ষণ ব্যাধি থেকে নিস্তার মিলবে না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ধর্ষণের শিকার নারী বা এর ফলে জন্ম নেয়া শিশুকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়, অনেক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এ অবস্থার অবসান হওয়া জরুরি।

ধর্ষণের বিচার হয়েছে এটা ভালো খবর। তবে বিচারের জন্য এক যুগেরও বেশি সময় লেগেছে। বিদ্যমান প্রক্রিয়ায় ভিকটিমকে বিচার পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। পাড়ি দিতে হয় কণ্টকাকীর্ণ পথ। বিচারে দীর্ঘসূত্রতার অবসান ঘটাতে হবে।

ধর্ষণের বিচার দ্রুত করার কথা রয়েছে। আইন কঠিন করার চেয়ে জরুরি হচ্ছে বিচার নিশ্চিত করা। যত বেশি বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাবে অপরাধের প্রবণতা তত কমবে। আইন কঠোর করা হলো, কিন্তু বিচার করা গেল না- পরিস্থিতি এমন হলে ধর্ষণের মতো অপরাধ প্রতিরোধ করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৮ মাঘ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশুর আইনি স্বীকৃতি এবার কি বদলাবে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি

ধর্ষণে জন্ম নেয়া এক শিশু আদালতের রায়ে পৈতৃক পরিচয় পেয়েছে, পেয়েছে সম্পত্তির উত্তরাধিকার। এ স্বীকৃতি পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩ বছর। আদালত বলেছেন, যদি ধর্ষকের কোন সম্পত্তি না থাকে, তবে ওই শিশুর ২১ বছর বয়স পর্যন্ত যাবতীয় ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে।

রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ গত সোমবার একটি ধর্ষণ মামলার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এর মধ্যদিয়ে ধর্ষণের শিকার নারীর ন্যায়বিচার পাওয়ার দীর্ঘ অপেক্ষারও অবসান হয়েছে।

ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির উত্তরাধিকার হওয়া ও পিতৃ পরিচয় পাওয়ার ঘটনায় একটি নজির স্থাপিত হলো। এ রায় ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া শিশুর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচকভাবে বদলাতে সক্ষম হবে- এটা আমাদের প্রত্যাশা। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচকভাবে না বদলালে কঠোর আইন করেও ধর্ষণ ব্যাধি থেকে নিস্তার মিলবে না। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ধর্ষণের শিকার নারী বা এর ফলে জন্ম নেয়া শিশুকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়, অনেক বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এ অবস্থার অবসান হওয়া জরুরি।

ধর্ষণের বিচার হয়েছে এটা ভালো খবর। তবে বিচারের জন্য এক যুগেরও বেশি সময় লেগেছে। বিদ্যমান প্রক্রিয়ায় ভিকটিমকে বিচার পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। পাড়ি দিতে হয় কণ্টকাকীর্ণ পথ। বিচারে দীর্ঘসূত্রতার অবসান ঘটাতে হবে।

ধর্ষণের বিচার দ্রুত করার কথা রয়েছে। আইন কঠিন করার চেয়ে জরুরি হচ্ছে বিচার নিশ্চিত করা। যত বেশি বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাবে অপরাধের প্রবণতা তত কমবে। আইন কঠোর করা হলো, কিন্তু বিচার করা গেল না- পরিস্থিতি এমন হলে ধর্ষণের মতো অপরাধ প্রতিরোধ করা যাবে না।