ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে কেউ এগিয়ে নেই

ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ে নামার সময়ে কেউ বলে কয়ে সেঞ্চুরি করতে পারে না। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্স মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফিরেছেন মাত্র পাঁচ রান করে। আবার সাগরিকায় বোলিংয়ে ছন্দ হারানো টাইগার পেস বোলার মোস্তাফিজের জায়গায় একাদশে ঠাঁই পাওয়া আবু জায়েদ রাহী নির্বাচকদের আস্থার সম্মান দিয়েছেন দুটো উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে। চট্টগ্রাম টেস্টে আট উইকেট শিকারি মেহেদি মিরাজ উইকেটশূন্য থাকলেও তাইজুল দুটো উইকেটের দেখা পেয়েছেন। দিনশেষে পাঁচ উইকেটের বিনিময়ে ক্যারিবিয়ান দলের সংগ্রহ পাঁচ উইকেটে ২২৩ রান খুব বড় নয়। তবে প্রথম টেস্টের হাফ সেঞ্চুরিয়ান ইনফর্ম এনক্রুমা বোনার ৭৪ রানে আছেন অপরাজিত। এতক্ষন বলা হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথম দিনের সারসংক্ষেপ। আসলে চট্টগ্রাম টেস্টের মতো ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে কোন দলের সুস্পষ্ট আধিপত্য নেই।

মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া দুই টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুদ্রানিক্ষেপে জয়ী হয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেগ ব্র্যাথওয়েট। ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তটাকে যথার্থ প্রমাণ করে অধিনায়ক নিজে ও জন ক্যাম্পবেল দলের স্কোর দ্রুতলয়েই বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে দলের স্কোর পঞ্চাশের কোটায় নিয়ে যান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট।

ওপেনিং জুটিটা ভাঙে ২১তম ওভারের চতুর্থ বলে। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ফেরান ক্যাম্পবেলকে (৩৬)। লেগ বিফোর উইকেট হয়ে দলীয় ৬৬ রানে সাজঘরমুখো হওয়ার আগে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ক্যাম্পবেল। ক্যারিবিয়ান ওপেনারের ৬৮ বলের ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছিল ১টি ছক্কার মার।

ওয়ান ডাউনে নামা শ্যান মোসলেকে নিয়ে ব্র্যাথওয়েট মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যাওয়ার সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১ উইকেটে ৮৪ রান।

বিরতি থেকে ফিরেই মোসলেকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাকে ফিরিয়ে দলে একাদশে জায়গা পাওয়াটা উদযাপন করেন পেসার আবু জায়েদ রাহি। মাত্র ৭ রানে বোল্ড হওয়া মোসলে যে টেস্ট মেজাজে ছিলেন এর প্রমাণ দিচ্ছে তার মোকাবিলা করা ৩৮টি বল।

এরপর সঙ্গী হিসাবে এনক্রুমা বোনারকে পান ব্র্যাথওয়েট। দু’জনে ৩৯তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর তিন অঙ্কে নিয়ে যান। উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া ব্র্যাথওয়েট হাফ-সেঞ্চুরির থেকে তিন রান দূরে থাকতেই থেমে যান সাকিব আল হাসানের জায়গায় একাদশে আসা সৌম্য সরকারের মিডিয়াম পেসে স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্ত’র হাতে ধরা পড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অধিনায়ক। তার ১২২ বলের ইনিংসে ছিল মাত্র চারটি বাউন্ডারি। চট্টগ্রাম টেস্টে ২১০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে প্রায় একাই ক্যারিবিয়ানদের অবিশ্বাস্য জয় এনে দেয়া কাইল মায়ার্সকে মাত্র ৫ রানে ফেরানোর কাজটাও করেন আবু জায়েদ রাহি। সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন মায়ার্স। দলীয় ১০৪ রান থেকে ১১৬ রানের মধ্যে অর্থাৎ মাত্র ১২ রানের ব্যবধানে ব্র্যাথওয়েট ও মায়ার্সকে হারিয়ে চাপে পড়া ক্যারিবিয়ান দলকে চা-বিরতি পর্যন্ত স্বস্তিতে রাখেন এনক্রুমা বোনার ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড।

দলীয় ১৪৬ রানে চা-বিরতিতে যাওয়া এই দু’জন দিনের শেষ সেশনে হাফ সেঞ্চুরিপূর্ণ করেন। পঞ্চাশ রান পার হয়ে যাওয়া উদ্বোধনী জুটিটা ভেঙে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেয়া তাইজুল আবারও ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ন হন। বাহাত্তুরতম ওভারের শেষ বলে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ব্ল্যাকউডকে (২৮) থামান তাইজুল। ১৪৫ বলে বোনার-ব্লাকউডের ৬২ রানের পার্টনারশিপটা থেমে যায়। দলীয় ১৭৮ রানে পঞ্চম উইকেট পতনের পর দলের বোনারের সঙ্গী হন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জসুয়া ডা সিলভা। দিন শেষে ৪৫ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে যান তারা। টেস্ট ক্যারিয়ারে টানা দ্বিতীয় টেস্টে হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন বোনার। ১৭৩ বলের ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। ২০ রানে অপরাজিত থাকেন সিলভা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ৯০ ওভারে ২২৩/৫ (ব্র্যাথওয়েট ৪৭, ক্যাম্পবেল ৩৬, মোজলি ৭, বনার ৭৪*, মেয়ার্স ৫, ব্ল্যাকউড ২৮, ডি সিলভা ২২*, আবু জায়েদ ১৮-৫-৪৬-২, মিরাজ ২২-৫-৩৯-০, নাঈম ১২-১-৪২-০, তাইজুল ৩০-৫-৬৪-২, সৌম্য ৮-১-৩০-১)।

শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৯ মাঘ ১৪২৭, ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে কেউ এগিয়ে নেই

বিশেষ প্রতিনিধি

image

প্রথম টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মায়ার্সের উইকেট নিয়ে দিনের সফল বোলার রাহীর উল্লাস -সংবাদ

ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ে নামার সময়ে কেউ বলে কয়ে সেঞ্চুরি করতে পারে না। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্স মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফিরেছেন মাত্র পাঁচ রান করে। আবার সাগরিকায় বোলিংয়ে ছন্দ হারানো টাইগার পেস বোলার মোস্তাফিজের জায়গায় একাদশে ঠাঁই পাওয়া আবু জায়েদ রাহী নির্বাচকদের আস্থার সম্মান দিয়েছেন দুটো উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে। চট্টগ্রাম টেস্টে আট উইকেট শিকারি মেহেদি মিরাজ উইকেটশূন্য থাকলেও তাইজুল দুটো উইকেটের দেখা পেয়েছেন। দিনশেষে পাঁচ উইকেটের বিনিময়ে ক্যারিবিয়ান দলের সংগ্রহ পাঁচ উইকেটে ২২৩ রান খুব বড় নয়। তবে প্রথম টেস্টের হাফ সেঞ্চুরিয়ান ইনফর্ম এনক্রুমা বোনার ৭৪ রানে আছেন অপরাজিত। এতক্ষন বলা হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথম দিনের সারসংক্ষেপ। আসলে চট্টগ্রাম টেস্টের মতো ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে কোন দলের সুস্পষ্ট আধিপত্য নেই।

মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া দুই টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুদ্রানিক্ষেপে জয়ী হয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেগ ব্র্যাথওয়েট। ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তটাকে যথার্থ প্রমাণ করে অধিনায়ক নিজে ও জন ক্যাম্পবেল দলের স্কোর দ্রুতলয়েই বাড়িয়ে যাচ্ছিলেন। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে দলের স্কোর পঞ্চাশের কোটায় নিয়ে যান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট।

ওপেনিং জুটিটা ভাঙে ২১তম ওভারের চতুর্থ বলে। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ফেরান ক্যাম্পবেলকে (৩৬)। লেগ বিফোর উইকেট হয়ে দলীয় ৬৬ রানে সাজঘরমুখো হওয়ার আগে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ক্যাম্পবেল। ক্যারিবিয়ান ওপেনারের ৬৮ বলের ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছিল ১টি ছক্কার মার।

ওয়ান ডাউনে নামা শ্যান মোসলেকে নিয়ে ব্র্যাথওয়েট মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যাওয়ার সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ১ উইকেটে ৮৪ রান।

বিরতি থেকে ফিরেই মোসলেকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাকে ফিরিয়ে দলে একাদশে জায়গা পাওয়াটা উদযাপন করেন পেসার আবু জায়েদ রাহি। মাত্র ৭ রানে বোল্ড হওয়া মোসলে যে টেস্ট মেজাজে ছিলেন এর প্রমাণ দিচ্ছে তার মোকাবিলা করা ৩৮টি বল।

এরপর সঙ্গী হিসাবে এনক্রুমা বোনারকে পান ব্র্যাথওয়েট। দু’জনে ৩৯তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর তিন অঙ্কে নিয়ে যান। উইকেটে সেট হয়ে যাওয়া ব্র্যাথওয়েট হাফ-সেঞ্চুরির থেকে তিন রান দূরে থাকতেই থেমে যান সাকিব আল হাসানের জায়গায় একাদশে আসা সৌম্য সরকারের মিডিয়াম পেসে স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্ত’র হাতে ধরা পড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অধিনায়ক। তার ১২২ বলের ইনিংসে ছিল মাত্র চারটি বাউন্ডারি। চট্টগ্রাম টেস্টে ২১০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে প্রায় একাই ক্যারিবিয়ানদের অবিশ্বাস্য জয় এনে দেয়া কাইল মায়ার্সকে মাত্র ৫ রানে ফেরানোর কাজটাও করেন আবু জায়েদ রাহি। সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দেন মায়ার্স। দলীয় ১০৪ রান থেকে ১১৬ রানের মধ্যে অর্থাৎ মাত্র ১২ রানের ব্যবধানে ব্র্যাথওয়েট ও মায়ার্সকে হারিয়ে চাপে পড়া ক্যারিবিয়ান দলকে চা-বিরতি পর্যন্ত স্বস্তিতে রাখেন এনক্রুমা বোনার ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড।

দলীয় ১৪৬ রানে চা-বিরতিতে যাওয়া এই দু’জন দিনের শেষ সেশনে হাফ সেঞ্চুরিপূর্ণ করেন। পঞ্চাশ রান পার হয়ে যাওয়া উদ্বোধনী জুটিটা ভেঙে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেয়া তাইজুল আবারও ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ন হন। বাহাত্তুরতম ওভারের শেষ বলে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ব্ল্যাকউডকে (২৮) থামান তাইজুল। ১৪৫ বলে বোনার-ব্লাকউডের ৬২ রানের পার্টনারশিপটা থেমে যায়। দলীয় ১৭৮ রানে পঞ্চম উইকেট পতনের পর দলের বোনারের সঙ্গী হন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জসুয়া ডা সিলভা। দিন শেষে ৪৫ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে যান তারা। টেস্ট ক্যারিয়ারে টানা দ্বিতীয় টেস্টে হাফ-সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন বোনার। ১৭৩ বলের ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। ২০ রানে অপরাজিত থাকেন সিলভা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ৯০ ওভারে ২২৩/৫ (ব্র্যাথওয়েট ৪৭, ক্যাম্পবেল ৩৬, মোজলি ৭, বনার ৭৪*, মেয়ার্স ৫, ব্ল্যাকউড ২৮, ডি সিলভা ২২*, আবু জায়েদ ১৮-৫-৪৬-২, মিরাজ ২২-৫-৩৯-০, নাঈম ১২-১-৪২-০, তাইজুল ৩০-৫-৬৪-২, সৌম্য ৮-১-৩০-১)।