চিঠিপত্র : আঞ্চলিক ভাষা গৌরবের

আঞ্চলিক ভাষা গৌরবের

বাংলাদেশ ছোট দেশ হলেও অঞ্চলভেদে প্রচলন আছে আঞ্চলিক ভাষা। রাজধানী ঢাকায় যাদের বসবাস তাদের একটা বড় অংশই এসেছেন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে। যার প্রতিটিতে রয়েছে নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষা। ঢাকায় থাকা এই পরিবারগুলো নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময় এই আঞ্চলিক ভাষাকে একেকভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তবে এই আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে একে অপরকে ছোট করা, অপমান করা কিংবা বিরূপ মন্তব্য করার প্রচলনও আছে। এর মাধ্যমে শুধু আঞ্চলিক ভাষাকে নয় বরং বাংলা ভাষাকেই অসম্মান করা হয়। কারণ বাংলা ভাষা বলতে সাধু বা চলতি ভাষা নয় বরং আঞ্চলিক ভাষাকেও বোঝায়। আঞ্চলিক ভাষা বাংলা সংস্কৃতির একটা অংশ। বাংলাভাষা বাদ দিয়ে যেমন বাঙালি না, তেমনি আঞ্চলিক ভাষা বাদ দিয়ে বাংলা ভাষাও নয়। ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিক, বরকত, সালাম, জব্বার পাঠ্য বইয়ের ভাষার জন্য নয়, বরং সব বাঙালির মুখের ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। তাই আসুন সবাই আঞ্চলিক ভাষাকে সম্মান করি, যার মাধ্যমে সম্মানিত হবে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাভাষা।

মো. আরিফুল ইসলাম

শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদনে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন

কেঁচো সার তথা জৈব সারের চাহিদা রাসায়নিক সারের চেয়ে অনেক বেশি। এতে অল্প পুঁজিতে লাভ অনেক বেশি। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে দেশি মিঠা পানির বহু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত প্রায়। রাসায়নিক সারে উৎপাদিত চাল, আটা, ডাল, পিয়াজ, মরিচ, আদা, রসুন, হলুদ, জিরা, ধনিয়া যাবতীয় মসলা জাতীয় দ্রব্য প্রাণীজ আমিষ জাতীয় খাদ্যে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, শাক-সবজি ইত্যাদিতে বিষক্রিয়ার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে গেছে।

সিলেট জেলার বিয়ানিবাজারে কেঁচোসার বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রতি মাসে এর লক্ষ্যমাত্রা ৫০ মেট্রিক-টন, উৎপাদন প্রক্রিয়া সহজ ও লাভজনক হওয়ায় অনেক শিক্ষিত নারী-পুরুষ এক্ষেত্রে এগিয়ে আসার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া এ সারের কাঁচামাল কচুরিপানা সহজেই পাওয়া গেলে ও স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে কেঁচো ক্রয় করতে হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র মতে, ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রামের মাধ্যমে কেঁচোসার সার উৎপাদন বিষয়ে আগ্রহী কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। বিয়ানিবাজার উপজেলার “সিআইজি”দের উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য “পঞ্চখন্ড কেঁচো সার” বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রতি মাসে এক মেট্রিক টন সার উৎপাদনে সক্ষম এমন ২০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষক এতে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ২০ টন উৎপাদন হলে ও খুব কম সময়ের মধ্যে পঞ্চখন্ড কেঁচো সার উৎপাদন সক্ষমতা মাসে দাঁড়াবে ৫০ মেট্রিক টন।

এ খাত অল্প খরচ এবং লাভজনক হওয়াতে ধীরে ধীরে কৃষকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি বছরেই একশত মেট্রিক টন সার বাজারজাত করা সম্ভব হবে। একজন কৃষক একটু পরিশ্রম করলে প্রতি মাসে ন্যূনতম ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে। কেঁচো সার উৎপাদনের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয় গোবর, কচুরিপানা, কলা গাছের টুকরা। এগুলো যেখানে সহজলভ্য সেখানেই উৎপাদন করা অধিক লাভজনক হবে। কেঁচো সার উৎপাদনে লোকসানের সম্ভাবনা নেই বরং মাস শেষে কৃষকরা মোটা অঙ্কের টাকার মুখ দেখবেন।

এমনকি এ সার পেতে বিয়ানিবাজার ছাড়া পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে অনেক নার্সারি ও ছাদ কৃষির মালিক প্রি-অর্ডার দিতে শুরু করেছেন। এ উদ্যোগকে সফল করতে হলে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় যে কৃষি অফিস তার আওতাধীন এলাকায় যতবেশী বেকার যুবক ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদন কারখানা সম্প্রসারিত করতে পারবেন তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। সর্বোচ্চ এ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করতে পারবেন যারা তাদের জাতীয়ভাবে প্রথম থেকে দশম স্থান অধিকারী কৃষি অফিসের কর্মজীবীদের সম্মাননা দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। সফলতার সহিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকার যুবক ও কৃষকদের স্বল্পসুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ ব্যবস্থা সফল হলে সরকারের সারে ভর্তুকি দেয়া কমে আসবে। এতে গ্রামাঞ্চলে বিপুল পরিমাণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়ে দরিদ্রতার হার হ্রাস গ্রামের মানুষের বেকারত্ব দূর হয়ে জীবনযাত্রার মান উন্নতসহ গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

আব্বাস উদ্দিন আহমদ

ধোপাদিঘীর দক্ষিণ পাড়

সিলেট ৩১০০।

আরও খবর

শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৯ মাঘ ১৪২৭, ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চিঠিপত্র : আঞ্চলিক ভাষা গৌরবের

আঞ্চলিক ভাষা গৌরবের

বাংলাদেশ ছোট দেশ হলেও অঞ্চলভেদে প্রচলন আছে আঞ্চলিক ভাষা। রাজধানী ঢাকায় যাদের বসবাস তাদের একটা বড় অংশই এসেছেন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে। যার প্রতিটিতে রয়েছে নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষা। ঢাকায় থাকা এই পরিবারগুলো নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময় এই আঞ্চলিক ভাষাকে একেকভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তবে এই আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে একে অপরকে ছোট করা, অপমান করা কিংবা বিরূপ মন্তব্য করার প্রচলনও আছে। এর মাধ্যমে শুধু আঞ্চলিক ভাষাকে নয় বরং বাংলা ভাষাকেই অসম্মান করা হয়। কারণ বাংলা ভাষা বলতে সাধু বা চলতি ভাষা নয় বরং আঞ্চলিক ভাষাকেও বোঝায়। আঞ্চলিক ভাষা বাংলা সংস্কৃতির একটা অংশ। বাংলাভাষা বাদ দিয়ে যেমন বাঙালি না, তেমনি আঞ্চলিক ভাষা বাদ দিয়ে বাংলা ভাষাও নয়। ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিক, বরকত, সালাম, জব্বার পাঠ্য বইয়ের ভাষার জন্য নয়, বরং সব বাঙালির মুখের ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। তাই আসুন সবাই আঞ্চলিক ভাষাকে সম্মান করি, যার মাধ্যমে সম্মানিত হবে রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাভাষা।

মো. আরিফুল ইসলাম

শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদনে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন

কেঁচো সার তথা জৈব সারের চাহিদা রাসায়নিক সারের চেয়ে অনেক বেশি। এতে অল্প পুঁজিতে লাভ অনেক বেশি। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে দেশি মিঠা পানির বহু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত প্রায়। রাসায়নিক সারে উৎপাদিত চাল, আটা, ডাল, পিয়াজ, মরিচ, আদা, রসুন, হলুদ, জিরা, ধনিয়া যাবতীয় মসলা জাতীয় দ্রব্য প্রাণীজ আমিষ জাতীয় খাদ্যে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, শাক-সবজি ইত্যাদিতে বিষক্রিয়ার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে গেছে।

সিলেট জেলার বিয়ানিবাজারে কেঁচোসার বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রতি মাসে এর লক্ষ্যমাত্রা ৫০ মেট্রিক-টন, উৎপাদন প্রক্রিয়া সহজ ও লাভজনক হওয়ায় অনেক শিক্ষিত নারী-পুরুষ এক্ষেত্রে এগিয়ে আসার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া এ সারের কাঁচামাল কচুরিপানা সহজেই পাওয়া গেলে ও স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে কেঁচো ক্রয় করতে হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র মতে, ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রামের মাধ্যমে কেঁচোসার সার উৎপাদন বিষয়ে আগ্রহী কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। বিয়ানিবাজার উপজেলার “সিআইজি”দের উদ্যোগে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য “পঞ্চখন্ড কেঁচো সার” বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রতি মাসে এক মেট্রিক টন সার উৎপাদনে সক্ষম এমন ২০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষক এতে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ২০ টন উৎপাদন হলে ও খুব কম সময়ের মধ্যে পঞ্চখন্ড কেঁচো সার উৎপাদন সক্ষমতা মাসে দাঁড়াবে ৫০ মেট্রিক টন।

এ খাত অল্প খরচ এবং লাভজনক হওয়াতে ধীরে ধীরে কৃষকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি বছরেই একশত মেট্রিক টন সার বাজারজাত করা সম্ভব হবে। একজন কৃষক একটু পরিশ্রম করলে প্রতি মাসে ন্যূনতম ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করার সুযোগ রয়েছে। কেঁচো সার উৎপাদনের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয় গোবর, কচুরিপানা, কলা গাছের টুকরা। এগুলো যেখানে সহজলভ্য সেখানেই উৎপাদন করা অধিক লাভজনক হবে। কেঁচো সার উৎপাদনে লোকসানের সম্ভাবনা নেই বরং মাস শেষে কৃষকরা মোটা অঙ্কের টাকার মুখ দেখবেন।

এমনকি এ সার পেতে বিয়ানিবাজার ছাড়া পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে অনেক নার্সারি ও ছাদ কৃষির মালিক প্রি-অর্ডার দিতে শুরু করেছেন। এ উদ্যোগকে সফল করতে হলে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় যে কৃষি অফিস তার আওতাধীন এলাকায় যতবেশী বেকার যুবক ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদন কারখানা সম্প্রসারিত করতে পারবেন তাদের আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। সর্বোচ্চ এ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করতে পারবেন যারা তাদের জাতীয়ভাবে প্রথম থেকে দশম স্থান অধিকারী কৃষি অফিসের কর্মজীবীদের সম্মাননা দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। সফলতার সহিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকার যুবক ও কৃষকদের স্বল্পসুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ ব্যবস্থা সফল হলে সরকারের সারে ভর্তুকি দেয়া কমে আসবে। এতে গ্রামাঞ্চলে বিপুল পরিমাণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়ে দরিদ্রতার হার হ্রাস গ্রামের মানুষের বেকারত্ব দূর হয়ে জীবনযাত্রার মান উন্নতসহ গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

আব্বাস উদ্দিন আহমদ

ধোপাদিঘীর দক্ষিণ পাড়

সিলেট ৩১০০।