বেতারকে অনুষ্ঠান করতে হবে শ্রোতাদের মতামত ও গবেষণার ভিত্তিতে

দেশে বাংলাদেশ বেতারের একটা সময় স্বর্ণালী যুগ ছিল। যেখানে গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে রেডিও ছিল। তারা রেডিও নিয়ে তাদের প্রিয় গান শোনার জন্য বসে থাকত। কখন শুরু হবে বাংলাদেশ বেতারের সুরের মেলা, ছায়াছন্দ, মধুছন্দাসহ বিভিন্ন নামের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান।

তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকায়নে ফলে আজ কালেরগর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে জনপ্রিয় বেতার মাধ্যেম রেডিও। তবে রেডিও না থাকলেও গানপ্রেমিকরা কিন্তু গান থেকে দূরে নেই। তারা কিন্তু ইতোমধ্যে যুক্ত করেছে নানা প্রযুক্তি, যেটার মাধ্যেম দিয়ে তারা নতুন উপায়ে বাংলাদেশ বেতারের কাছে থেকেই আনন্দ উপভোগ করে চলেছে। মোবাইল বা এফএম সেট এখন সর্বত্র মানুষের হাতের নাগালে। ক্রান্তিক অঞ্চলে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়ায় এসব মাধ্যেম দিয়েই মানুষ এখন গান শোনে বাংলাদেশ বেতারে। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে এক শ্রেণির গান প্রিয় মানুষ রয়েছেন যারা এখনও বাংলাদেশ বেতারের অনুরোধের আসন শোনেন।

তবে একটা সময় ডাকযোগে চিঠি পাঠাতো গানের অনুরোধ করে। তবে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এখন আর সেটি দেখা যায় না। এখন বাংলাদেশ বেতারের ফেসবুক পেজে সবাই তাদের মন্তব্য জানিয়ে দেয়। উপস্থাপকরা সে অনুযায়ী শ্রোতাদের তাদের পছন্দের গান শোনায়। বেতারের ১১টি আঞ্চলিক কেন্দ্রীয় বার্তা সংস্থা ও সব আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে মোট ৬০টি বুলেটিন প্রতিদিন প্রচারিত হয়। সব আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থানীয় সংবাদ পরিবেশন করে থাকে। এছাড়াও সহনীয় সংবাদ, ক্রীড়া সংবাদ ও বাণিজ্য সংবাদ উল্লেখযোগ্য জাতীয়, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ও আবহাওয়ার খবর বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে প্রচারিত হয়। যেটা এখনও প্রান্তিক মানুষের কাছে জনপ্রিয় খবরাখবর, বিনোদনের মাধ্যেম হিসেবে রয়েছে।

একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রায় দেড় কোটি মানুষ এখনও রেডিও শোনে। এর বড় অংশ বাংলাদেশ বেতারের শ্রোতা। তবে এই শ্রোতাদের বেশিরভাগই দুর্গম এবং প্রত্যন্ত এলাকার। তথ্যপ্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে দেশের সবচেয়ে পুরোনো এবং রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ বেতারকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উঠতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই পরিকল্পনা করতে হবে। সেজন্য শ্রোতাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারা কি ধরনের অনুষ্ঠান চায়, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ বেতারকে গবেষণা করতে হবে। শ্রোতাদের মতামত এবং গবেষণার ভিত্তিতেই অনুষ্ঠান সাজানোর চেষ্টা করলে অবশ্যই প্রতিযোগিতার এই যুগে বাংলাদেশ বেতার তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারবে এবং নতুন রূপে প্রান্তিক মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করতে পারবে।

রিয়াদ হোসেন

শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৩০ মাঘ ১৪২৭, ৩০ জমাদিউস সানি ১৪৪২

বেতারকে অনুষ্ঠান করতে হবে শ্রোতাদের মতামত ও গবেষণার ভিত্তিতে

দেশে বাংলাদেশ বেতারের একটা সময় স্বর্ণালী যুগ ছিল। যেখানে গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে রেডিও ছিল। তারা রেডিও নিয়ে তাদের প্রিয় গান শোনার জন্য বসে থাকত। কখন শুরু হবে বাংলাদেশ বেতারের সুরের মেলা, ছায়াছন্দ, মধুছন্দাসহ বিভিন্ন নামের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান।

তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকায়নে ফলে আজ কালেরগর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে জনপ্রিয় বেতার মাধ্যেম রেডিও। তবে রেডিও না থাকলেও গানপ্রেমিকরা কিন্তু গান থেকে দূরে নেই। তারা কিন্তু ইতোমধ্যে যুক্ত করেছে নানা প্রযুক্তি, যেটার মাধ্যেম দিয়ে তারা নতুন উপায়ে বাংলাদেশ বেতারের কাছে থেকেই আনন্দ উপভোগ করে চলেছে। মোবাইল বা এফএম সেট এখন সর্বত্র মানুষের হাতের নাগালে। ক্রান্তিক অঞ্চলে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়ায় এসব মাধ্যেম দিয়েই মানুষ এখন গান শোনে বাংলাদেশ বেতারে। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে এক শ্রেণির গান প্রিয় মানুষ রয়েছেন যারা এখনও বাংলাদেশ বেতারের অনুরোধের আসন শোনেন।

তবে একটা সময় ডাকযোগে চিঠি পাঠাতো গানের অনুরোধ করে। তবে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এখন আর সেটি দেখা যায় না। এখন বাংলাদেশ বেতারের ফেসবুক পেজে সবাই তাদের মন্তব্য জানিয়ে দেয়। উপস্থাপকরা সে অনুযায়ী শ্রোতাদের তাদের পছন্দের গান শোনায়। বেতারের ১১টি আঞ্চলিক কেন্দ্রীয় বার্তা সংস্থা ও সব আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে মোট ৬০টি বুলেটিন প্রতিদিন প্রচারিত হয়। সব আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থানীয় সংবাদ পরিবেশন করে থাকে। এছাড়াও সহনীয় সংবাদ, ক্রীড়া সংবাদ ও বাণিজ্য সংবাদ উল্লেখযোগ্য জাতীয়, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ও আবহাওয়ার খবর বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে প্রচারিত হয়। যেটা এখনও প্রান্তিক মানুষের কাছে জনপ্রিয় খবরাখবর, বিনোদনের মাধ্যেম হিসেবে রয়েছে।

একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রায় দেড় কোটি মানুষ এখনও রেডিও শোনে। এর বড় অংশ বাংলাদেশ বেতারের শ্রোতা। তবে এই শ্রোতাদের বেশিরভাগই দুর্গম এবং প্রত্যন্ত এলাকার। তথ্যপ্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে দেশের সবচেয়ে পুরোনো এবং রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ বেতারকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উঠতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই পরিকল্পনা করতে হবে। সেজন্য শ্রোতাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারা কি ধরনের অনুষ্ঠান চায়, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ বেতারকে গবেষণা করতে হবে। শ্রোতাদের মতামত এবং গবেষণার ভিত্তিতেই অনুষ্ঠান সাজানোর চেষ্টা করলে অবশ্যই প্রতিযোগিতার এই যুগে বাংলাদেশ বেতার তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারবে এবং নতুন রূপে প্রান্তিক মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করতে পারবে।

রিয়াদ হোসেন