টিকা : ঢাকায় কোটা পূরণ

জেলা-উপজেলায় তেমন সাড়া নেই

প্রথম দফা টার্গেট ৩৫ লাখ, দেয়া হয় ৭ লাখ

করোনাভাইরাস টিকা দেয়ার নির্ধারিত কোটা ঢাকায় পূরণ হলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কারণে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। সার্ভার, এসএমএস ও রেজিস্ট্রেশনে সমস্যাসহ নানা কারণে সরকারের টিকাদান কার্যক্রমে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে টার্গেটকৃত সময়ে নির্ধারিত পরিমাণ টিকা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ডিজি অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রথম ডোজ শেষ করার টার্গেট রয়েছে। এ সময়ে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টিকা দেয়ার টার্গেট আছে। দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে মোট ৭০ লাখ টিকা দেয়ার টার্গেট রয়েছে। এ পর্যন্ত ৬ দিন টিকা দেয়া হয়েছে। ঢাকার বড় বড় হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশনের কোটা শেষ হয়ে গেছে। এখন কোটা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দিনাজপুর ও রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় সার্ভার সমস্যার কথা জানা গেছে। সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা শহরে অনেকেই রেজিস্ট্রেশন করেছেন। কিন্তু গত সাত দিনেও এসএমএস পায়নি। এছাড়া শহরের বাইরে সার্ভার সমস্যাসহ নানা কারণে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে। অনেকেই রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রথম টার্গেট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশন করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করার পরও গত এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের মোবাইলে এসএমএস আসেনি। তারা আছেন এখন টেনশনে।

গতকাল দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে, দিনাজপুর বড় জেলা। সেখানে প্রথম ডোজ টার্গেট ২৫ হাজার ৫শ। দুই ডোজে মিলে ৫১ হাজার। গত ৬ দিনে মাত্র ১৪ হাজার মানুষ টিকা নিয়েছেন।

সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানা গেছে, জেলা শহরে সাড়া কিছুটা ভালো হলেও উপজেলায় তেমন সাড়া নেই। সেখানে ১শ থেকে ২শ জন টিকা দেয়া কষ্টকর। অনেকেই বলছেন আচ্ছা দেখি কি হয়। মোবাইল ফোনে সময়মত ম্যাসেজ পাওয়া যায় না। ১২ দিনের মধ্যে টার্গেট পূরণ করার কথা থাকলেও এখন তা হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেয়ার প্রচারণা ও ক্যাম্পেইন নেই বললেই চলে।

দিনাজপুর জেলা সভিল সার্জন ডা. মো. আবদুল কুদ্দুছ সমস্যাগুলোর কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলায় প্রচারণা কম থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। সবাই মিলে প্রচারণা চালালে টার্গেট পূরণ হতে পারে বলে তিনি আশাবাদী।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গাফ্ফার মুঠোফোনে বলেন, জেলার কিছু কিছু জায়গায় এখনও অনেকেই ভয়ে টিকা নিচ্ছে না। লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে প্রতিদিন প্রায় গড়ে এক হাজার মানুষ টিকা নিচ্ছেন। উপজেলা পর্যায়ে দিনে সাড়ে ৪শ থেকে ৪শ জন টিকা নিচ্ছেন। তবে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যা হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে (ইউডিসি) ২ জন কম্পিউটার জানা দায়িত্ব প্রাপ্ত লোক আছে। সার্ভার সমস্যার কারণে সেখানেও ভোগান্তি হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, সার্ভারে সমস্যার কারণে অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

মহাখালী রোগতত্ত, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেকেই টিকা দেয়া হচ্ছে এমন খবরও জানে না। অবশ্য গত শুক্রবার থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রচারণায় নেমেছে। টিকা দেয়ার প্রচারণা ও রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক বুথ চালু করা দরকার বলে তিনি মনে করেন। বর্তমানে যে টিকা আছে তার মেয়াদ এপ্রিল মাস পর্যন্ত। এ সময় নিদিষ্ট কোটার টিকা শেষ করা ভালো হবে। টিকার চাহিদা বেশি হলে বাড়ানো যাবে। এতে সমস্যা হবে না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বণিক জানান, ঢাকায় কোটা আরও বেশি দেয়া দরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, দ্বিতীয় ডোজ দুই মাস পরে দিতে পারে। যেখানে আগ্রহ বেশি সেখানে সরবরাহ আরও বেশি করা নিশ্চিত করতে হবে।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক তথ্যে বলা হয়েছে, গতকাল ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে ১ লাখ ৯৪৩৭১ জন (১৯৪৩৭১) টিকা নিয়েছেন। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮০ জন টিকা দিয়েছেন। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা নিয়েছে ১৩৩০ জন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯৩০ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯১০ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০৬১ জন। শেখ রাসেল গ্যাস্টো লিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১০০৪ জন। ঢাকার ৪৬টি সেন্টারে ২৬,৫৬৪ জন। গতকাল পর্যন্ত রাজধানীতে টিকা নিয়েছে ৯৫,৪৬৫ জন।

বয়স্কদের জন্য ফের টিকাদান কেন্দ্রে

নিবন্ধন চালু হতে পারে : স্বাস্থ্যসচিব

দেশের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য টিকাদান কেন্দ্রে নিবন্ধনের ব্যবস্থা শীঘ্রই পুনরায় চালু করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, গ্রামের মানুষের আগ্রহ বাড়াতে প্রয়োজনে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। টিকার জন্য এখন পর্যন্ত ১৪ লাখ লোক নিবন্ধন করেছে। ৩৫ লাখ টিকা দেয়ার পর আমরা পরিসংখ্যান যাচাই করব। যদি দেখা যায় গ্রামের মানুষের মধ্যে টিকা নেয়ার প্রবণতা কম তাহলে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যাদের বয়স বেশি বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ আছে আছেন, ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে গেলে তাদের নিবন্ধন করা হবে। এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে আমরা চিন্তা করছি- বলেন আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। গতকাল এই সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে যাবে। ‘এটা সম্ভব হয়েছে টিকাদান কার্যক্রমে বাংলাদেশের ভালো অভিজ্ঞতার কারণে।’ গত ২ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের টিকার জন্য কেউ অনলাইনে নিবন্ধন করতে না পারলে টিকাদান কেন্দ্রেও সেই ব্যবস্থা রাখা হবে। ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একযোগে শুরু হয় টিকাদান। বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়। তবে অনলাইনে নিবন্ধন না করেই অনেকে টিকাদান কেন্দ্রে চলে আসেন। বিভিন্ন কেন্দ্র ভিড় বেড়ে যায়, তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ আপাতত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। টিকাদান কার্যক্রম ঠিকভাবে চালাতেই আপাতত ওই সুবিধা বন্ধের সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৩১ মাঘ ১৪২৭, ৩১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

টিকা : ঢাকায় কোটা পূরণ

জেলা-উপজেলায় তেমন সাড়া নেই

প্রথম দফা টার্গেট ৩৫ লাখ, দেয়া হয় ৭ লাখ

বাকিবিল্লাহ |

image

করোনাভাইরাস টিকা দেয়ার নির্ধারিত কোটা ঢাকায় পূরণ হলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কারণে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। সার্ভার, এসএমএস ও রেজিস্ট্রেশনে সমস্যাসহ নানা কারণে সরকারের টিকাদান কার্যক্রমে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে টার্গেটকৃত সময়ে নির্ধারিত পরিমাণ টিকা দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ডিজি অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রথম ডোজ শেষ করার টার্গেট রয়েছে। এ সময়ে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টিকা দেয়ার টার্গেট আছে। দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে মোট ৭০ লাখ টিকা দেয়ার টার্গেট রয়েছে। এ পর্যন্ত ৬ দিন টিকা দেয়া হয়েছে। ঢাকার বড় বড় হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশনের কোটা শেষ হয়ে গেছে। এখন কোটা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দিনাজপুর ও রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় সার্ভার সমস্যার কথা জানা গেছে। সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা শহরে অনেকেই রেজিস্ট্রেশন করেছেন। কিন্তু গত সাত দিনেও এসএমএস পায়নি। এছাড়া শহরের বাইরে সার্ভার সমস্যাসহ নানা কারণে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়ছে। অনেকেই রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রথম টার্গেট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশন করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করার পরও গত এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের মোবাইলে এসএমএস আসেনি। তারা আছেন এখন টেনশনে।

গতকাল দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে, দিনাজপুর বড় জেলা। সেখানে প্রথম ডোজ টার্গেট ২৫ হাজার ৫শ। দুই ডোজে মিলে ৫১ হাজার। গত ৬ দিনে মাত্র ১৪ হাজার মানুষ টিকা নিয়েছেন।

সিভিল সার্জন অফিস থেকে জানা গেছে, জেলা শহরে সাড়া কিছুটা ভালো হলেও উপজেলায় তেমন সাড়া নেই। সেখানে ১শ থেকে ২শ জন টিকা দেয়া কষ্টকর। অনেকেই বলছেন আচ্ছা দেখি কি হয়। মোবাইল ফোনে সময়মত ম্যাসেজ পাওয়া যায় না। ১২ দিনের মধ্যে টার্গেট পূরণ করার কথা থাকলেও এখন তা হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেয়ার প্রচারণা ও ক্যাম্পেইন নেই বললেই চলে।

দিনাজপুর জেলা সভিল সার্জন ডা. মো. আবদুল কুদ্দুছ সমস্যাগুলোর কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলায় প্রচারণা কম থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। সবাই মিলে প্রচারণা চালালে টার্গেট পূরণ হতে পারে বলে তিনি আশাবাদী।

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গাফ্ফার মুঠোফোনে বলেন, জেলার কিছু কিছু জায়গায় এখনও অনেকেই ভয়ে টিকা নিচ্ছে না। লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে প্রতিদিন প্রায় গড়ে এক হাজার মানুষ টিকা নিচ্ছেন। উপজেলা পর্যায়ে দিনে সাড়ে ৪শ থেকে ৪শ জন টিকা নিচ্ছেন। তবে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যা হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে (ইউডিসি) ২ জন কম্পিউটার জানা দায়িত্ব প্রাপ্ত লোক আছে। সার্ভার সমস্যার কারণে সেখানেও ভোগান্তি হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, সার্ভারে সমস্যার কারণে অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

মহাখালী রোগতত্ত, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক হোসেন বলেন, গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেকেই টিকা দেয়া হচ্ছে এমন খবরও জানে না। অবশ্য গত শুক্রবার থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রচারণায় নেমেছে। টিকা দেয়ার প্রচারণা ও রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক বুথ চালু করা দরকার বলে তিনি মনে করেন। বর্তমানে যে টিকা আছে তার মেয়াদ এপ্রিল মাস পর্যন্ত। এ সময় নিদিষ্ট কোটার টিকা শেষ করা ভালো হবে। টিকার চাহিদা বেশি হলে বাড়ানো যাবে। এতে সমস্যা হবে না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বণিক জানান, ঢাকায় কোটা আরও বেশি দেয়া দরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মতে, দ্বিতীয় ডোজ দুই মাস পরে দিতে পারে। যেখানে আগ্রহ বেশি সেখানে সরবরাহ আরও বেশি করা নিশ্চিত করতে হবে।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক তথ্যে বলা হয়েছে, গতকাল ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে ১ লাখ ৯৪৩৭১ জন (১৯৪৩৭১) টিকা নিয়েছেন। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮০ জন টিকা দিয়েছেন। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা নিয়েছে ১৩৩০ জন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯৩০ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯১০ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০৬১ জন। শেখ রাসেল গ্যাস্টো লিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১০০৪ জন। ঢাকার ৪৬টি সেন্টারে ২৬,৫৬৪ জন। গতকাল পর্যন্ত রাজধানীতে টিকা নিয়েছে ৯৫,৪৬৫ জন।

বয়স্কদের জন্য ফের টিকাদান কেন্দ্রে

নিবন্ধন চালু হতে পারে : স্বাস্থ্যসচিব

দেশের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য টিকাদান কেন্দ্রে নিবন্ধনের ব্যবস্থা শীঘ্রই পুনরায় চালু করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকাদান কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, গ্রামের মানুষের আগ্রহ বাড়াতে প্রয়োজনে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। টিকার জন্য এখন পর্যন্ত ১৪ লাখ লোক নিবন্ধন করেছে। ৩৫ লাখ টিকা দেয়ার পর আমরা পরিসংখ্যান যাচাই করব। যদি দেখা যায় গ্রামের মানুষের মধ্যে টিকা নেয়ার প্রবণতা কম তাহলে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যাদের বয়স বেশি বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ আছে আছেন, ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে গেলে তাদের নিবন্ধন করা হবে। এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে আমরা চিন্তা করছি- বলেন আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারাদেশে সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। গতকাল এই সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে যাবে। ‘এটা সম্ভব হয়েছে টিকাদান কার্যক্রমে বাংলাদেশের ভালো অভিজ্ঞতার কারণে।’ গত ২ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের টিকার জন্য কেউ অনলাইনে নিবন্ধন করতে না পারলে টিকাদান কেন্দ্রেও সেই ব্যবস্থা রাখা হবে। ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একযোগে শুরু হয় টিকাদান। বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়। তবে অনলাইনে নিবন্ধন না করেই অনেকে টিকাদান কেন্দ্রে চলে আসেন। বিভিন্ন কেন্দ্র ভিড় বেড়ে যায়, তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ আপাতত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। টিকাদান কার্যক্রম ঠিকভাবে চালাতেই আপাতত ওই সুবিধা বন্ধের সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।