সারাদেশে নদী খননে উদ্ধার ১,৮০০ কি.মি নৌপথ

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মৃতপ্রায় কংশ নদ। দীর্ঘদিন ধরে এই নৌপথে নৌচলাচল বন্ধ ছিল। নদী খননের মাধ্যমে কংশ নদসহ গাগলাজোড় হতে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার নৌপথ ২০১৯ সালে সচল করা হয়। বর্তমানে বারহাট্টা অংশের খনন কাজ চলছে। একইভাবে ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া মংলা-ঘষিয়াখালী (এমজি) চ্যানেল ২০১৫ সালে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত নদী খননের মাধ্যমে এই পথসহ সারাদেশে ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে নদী খননের মাটি দিয়ে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিচু জায়গা ভরাট করা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে কংশ নদের গাগলাজোড় হতে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত কার্গো, বড় বড় ট্রলার লঞ্চ চলাচল করছে। ড্রেজিংকৃত মাটি দ্বারা মোহনগঞ্জ পার্ক, জানজিলা ইউনিয়ন পরিষদ, জানজিলা প্রাইমারি স্কুল, খুলুনজা প্রাইমারি স্কুল, গাগরা প্রাইমারি স্কুল, সাংকারপুর প্রাইমারি স্কুল ইত্যাদি প্রায় ৭০-৮০ জায়গায় ভরাট করা হয়েছে।

৫৩টি নৌরুটের ১২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের জন্য প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নদী খনন প্রকল্পের আওতায় এই নৌপথটি সচল করা হয়েছে। এছাড়া খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী, সুরমা, রক্তি বাউলাই, রক্সা নীলা এবং কংসসহ ১২টি নদী খনন কাজ শেষ হয়েছে। নদী খননের মাটি সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিচু জায়গা ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৫৩টি নৌরুটের ১২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের জন্য প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নদী খনন প্রকল্পের আওতায় এই নৌপথ উদ্ধার করা হচ্ছে। আরও ১২টি নৌপথ খনন কাজ চলছে। ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার মাটি অপসারণ করে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে বলে সংস্থাটির সূত্র জানায়।

জানা গেছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া মংলা-ঘষিয়াখালী (এমজি) চ্যানেল ড্রেজিং করে ২০১৫ সালে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এই চ্যানেল দিয়ে বর্তমানে ১ লাখ ৩৯ হাজারটি ভেসেল (বড় জাহাজ) ৮-১৪ ফুট গভীরতায় চলাচল করছে। বর্তমানে এ চ্যানেলে সর্বনিম্ন ১২ ফুট এবং জোয়ারের সময় ২০ ফুট পর্যন্ত পানির গভীরতা থাকে এবং প্রস্থ ২০০-৩০০ ফুট রয়েছে। নাব্যতা সংকটে খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী দিয়ে কার্গো লঞ্চ চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং করে এর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে এখন সারাবছর কার্গো লঞ্চ চলাচল করছে।

ভৈরব-ছাতক নৌপথে শুকনা মৌসুমে হাফলোড (অর্ধবোঝাই) দিয়ে কার্গো চলাচল করত। এই নৌরুটে ড্রেজিংয়ের পর সারাবছর ফুললোডে কার্গো চলাচল করছে। খুলনা-নোয়াপাড়া নৌপথে প্রকট নাব্যতা সংকট ছিল, জোয়ারের সুবিধা ছাড়া এ গুরুত্বপূর্ণ রুট দিয়ে কার্গো চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং-এর পর সার্বক্ষণিক কাগো জাহাজ চলাচল করছে। মৃত বা মৃতপ্রায় গাগলাজোড়-মোহনগঞ্জ, আনোয়ারপুর-তাহেরপুর, বরিশাল-পটুয়াখালী নৌপথের সাহেবেরহাট নালা ড্রেজিং করে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের ড্রেজিংয়ের মাটি দ্বারা পতিত ও নিচু জমি ভরাট করে প্রায় ৫০০০ একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাটি দ্বারা ৫০০টির মতো শিক্ষা/ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এর নিচু জায়গা ভরাট করা হয়েছে। এছাড়া হাওর অঞ্চলের তাহেরপুর, বিশ্বম্বপুর, মদন, নিকলি, গাগলাজোড়-ধর্মপাশা-মোহনগঞ্জ, বাঞ্চারামপুর ইত্যাদি এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার নিচু জায়গা ভরাট করে গ্রামের গরিব মানুষের, গবাদি পশুর বসবাসের জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা জানায়।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও বিআইডব্লিউটিএ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. সাইদুর রহমান সংবাদকে বলেন, সরকারি ও বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে এই নৌপথ খনন কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তবে বিভিন্ন স্থানে নদী খননে স্থানীয়দের বাধা ও এলজিইডির কম উচ্চতার সেতুর কারণে নদী খনন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সময় কিছুটা বৃদ্ধি করার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০১২ সালে একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৮ সাল পর্যন্ত। প্রকল্পের সংশোধিত মাধ্যমে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। মেয়াদ জুলাই ২০১২ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২৪টি নৌ-পথে মোট ৯৯৭ লক্ষ ঘনমিটার মাটি খনন করা হবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত ৭৩২ দশমিক ১২ লক্ষ ঘনমিটার ড্রেজিং করে প্রায় ১৮০০ কিলোমিটার নৌপথ সচল করা হয়েছে। ২৪টি নৌরুটের মধ্যে ১২টি রুটের কাজ শেষ হয়েছে এবং ১২টি কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি রুটের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ এবং ৩টি রুটের ৬০ শতাংশ এবং ৩টি রুটের ২৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ ও আর্থিক ১২১৯ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা। বর্তমানে ১২টি রুটে ৩১টি ড্রেজার নদী খননের কাজে নিয়োজিত রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়।

প্রকল্প সূত্র জানায়, নাব্যতা সংকটে খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী দিয়ে কার্গো লঞ্চ চলাচল করতে পারত না প্রকল্পে আওতায় ড্রেজিং এর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে এখন সারা বছর চলাচল করছে। এছাড়া ভৈরব-ছাতক নৌ-পথের মাধ্যমে সারাদেশে কনস্ট্রাকশন ম্যারিয়াল পাথর, বালি, সিমেন্ট বোঝাই জাহাজ চলাচল করে থাকে। কিন্তু শুকনা মৌসুমে এ রুটের নাব্যতা সংকটের কারনে কার্গো চলাচল ব্যাহত হতো। ফলে শুকনা মৌসুমে পাথর, বালি, সিমেন্ট এর মূল্য বৃদ্ধি হত। ড্রেজিং-এর পর এ রুটে এখন সারা বছর পন্য বোঝাইকারী কার্গো চলাচল করতে পারছে। প্রতিদিন গড়ে এ রুটে ২০০টি কার্গো চলাচল করছে। খুলনা-নোয়াপাড়া নৌ-পথে প্রতিদিন গড়ে ১০০টি সার, সিমেন্ট, কয়লা, চাল, গম ইত্যাদি মালবাহী কার্গো চলাচল করে। কিন্তু এ রুটে প্রকট নাব্যতা সংকট ছিল। জোয়ারের সুবিধা ছাড়া এ গুরুত্ব রুট দিয়ে কার্গো চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং-এর পর সার্বক্ষনিক কার্গো জাহাজ চলাচল করছে। এঝাড়া মৃত প্রায় গাগলাজোড়-মোহনগঞ্জ, আনোয়ারপুর-তাহেরপুর, বরিশাল-পটুয়াখালী, দাউদকান্দি-হোমনা-মরিচাকান্দি-বাঞ্ছারামপুর, সাহেবেরহাট নালা ড্রেজিং করে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের ড্রেজিং-এর মাটি দ্বারা পতিত ও নিচু জমি ভরাট করে প্রায় ৫০০০ একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে।

রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৩১ মাঘ ১৪২৭, ৩১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সারাদেশে নদী খননে উদ্ধার ১,৮০০ কি.মি নৌপথ

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

image

নৌপথ উদ্ধারে খনন অব্যাহত -সংবাদ

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ হতে বারহাট্টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মৃতপ্রায় কংশ নদ। দীর্ঘদিন ধরে এই নৌপথে নৌচলাচল বন্ধ ছিল। নদী খননের মাধ্যমে কংশ নদসহ গাগলাজোড় হতে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার নৌপথ ২০১৯ সালে সচল করা হয়। বর্তমানে বারহাট্টা অংশের খনন কাজ চলছে। একইভাবে ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া মংলা-ঘষিয়াখালী (এমজি) চ্যানেল ২০১৫ সালে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত নদী খননের মাধ্যমে এই পথসহ সারাদেশে ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হয়েছে। একই সঙ্গে নদী খননের মাটি দিয়ে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিচু জায়গা ভরাট করা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে কংশ নদের গাগলাজোড় হতে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত কার্গো, বড় বড় ট্রলার লঞ্চ চলাচল করছে। ড্রেজিংকৃত মাটি দ্বারা মোহনগঞ্জ পার্ক, জানজিলা ইউনিয়ন পরিষদ, জানজিলা প্রাইমারি স্কুল, খুলুনজা প্রাইমারি স্কুল, গাগরা প্রাইমারি স্কুল, সাংকারপুর প্রাইমারি স্কুল ইত্যাদি প্রায় ৭০-৮০ জায়গায় ভরাট করা হয়েছে।

৫৩টি নৌরুটের ১২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের জন্য প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নদী খনন প্রকল্পের আওতায় এই নৌপথটি সচল করা হয়েছে। এছাড়া খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী, সুরমা, রক্তি বাউলাই, রক্সা নীলা এবং কংসসহ ১২টি নদী খনন কাজ শেষ হয়েছে। নদী খননের মাটি সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিচু জায়গা ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ৫৩টি নৌরুটের ১২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের জন্য প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নদী খনন প্রকল্পের আওতায় এই নৌপথ উদ্ধার করা হচ্ছে। আরও ১২টি নৌপথ খনন কাজ চলছে। ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার মাটি অপসারণ করে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে বলে সংস্থাটির সূত্র জানায়।

জানা গেছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া মংলা-ঘষিয়াখালী (এমজি) চ্যানেল ড্রেজিং করে ২০১৫ সালে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এই চ্যানেল দিয়ে বর্তমানে ১ লাখ ৩৯ হাজারটি ভেসেল (বড় জাহাজ) ৮-১৪ ফুট গভীরতায় চলাচল করছে। বর্তমানে এ চ্যানেলে সর্বনিম্ন ১২ ফুট এবং জোয়ারের সময় ২০ ফুট পর্যন্ত পানির গভীরতা থাকে এবং প্রস্থ ২০০-৩০০ ফুট রয়েছে। নাব্যতা সংকটে খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী দিয়ে কার্গো লঞ্চ চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং করে এর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে এখন সারাবছর কার্গো লঞ্চ চলাচল করছে।

ভৈরব-ছাতক নৌপথে শুকনা মৌসুমে হাফলোড (অর্ধবোঝাই) দিয়ে কার্গো চলাচল করত। এই নৌরুটে ড্রেজিংয়ের পর সারাবছর ফুললোডে কার্গো চলাচল করছে। খুলনা-নোয়াপাড়া নৌপথে প্রকট নাব্যতা সংকট ছিল, জোয়ারের সুবিধা ছাড়া এ গুরুত্বপূর্ণ রুট দিয়ে কার্গো চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং-এর পর সার্বক্ষণিক কাগো জাহাজ চলাচল করছে। মৃত বা মৃতপ্রায় গাগলাজোড়-মোহনগঞ্জ, আনোয়ারপুর-তাহেরপুর, বরিশাল-পটুয়াখালী নৌপথের সাহেবেরহাট নালা ড্রেজিং করে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের ড্রেজিংয়ের মাটি দ্বারা পতিত ও নিচু জমি ভরাট করে প্রায় ৫০০০ একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাটি দ্বারা ৫০০টির মতো শিক্ষা/ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এর নিচু জায়গা ভরাট করা হয়েছে। এছাড়া হাওর অঞ্চলের তাহেরপুর, বিশ্বম্বপুর, মদন, নিকলি, গাগলাজোড়-ধর্মপাশা-মোহনগঞ্জ, বাঞ্চারামপুর ইত্যাদি এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার নিচু জায়গা ভরাট করে গ্রামের গরিব মানুষের, গবাদি পশুর বসবাসের জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা জানায়।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও বিআইডব্লিউটিএ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. সাইদুর রহমান সংবাদকে বলেন, সরকারি ও বেসরকারি ড্রেজারের মাধ্যমে এই নৌপথ খনন কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধার করা হবে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তবে বিভিন্ন স্থানে নদী খননে স্থানীয়দের বাধা ও এলজিইডির কম উচ্চতার সেতুর কারণে নদী খনন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই সময় কিছুটা বৃদ্ধি করার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০১২ সালে একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৮ সাল পর্যন্ত। প্রকল্পের সংশোধিত মাধ্যমে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। মেয়াদ জুলাই ২০১২ হতে জুন ২০২১ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২৪টি নৌ-পথে মোট ৯৯৭ লক্ষ ঘনমিটার মাটি খনন করা হবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত ৭৩২ দশমিক ১২ লক্ষ ঘনমিটার ড্রেজিং করে প্রায় ১৮০০ কিলোমিটার নৌপথ সচল করা হয়েছে। ২৪টি নৌরুটের মধ্যে ১২টি রুটের কাজ শেষ হয়েছে এবং ১২টি কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি রুটের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ এবং ৩টি রুটের ৬০ শতাংশ এবং ৩টি রুটের ২৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৯ শতাংশ ও আর্থিক ১২১৯ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা। বর্তমানে ১২টি রুটে ৩১টি ড্রেজার নদী খননের কাজে নিয়োজিত রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র জানায়।

প্রকল্প সূত্র জানায়, নাব্যতা সংকটে খাগদোন, লাউকাঠি, ভোলা নালা, কীর্তনখোলা, ইছামতি, কর্নতলী দিয়ে কার্গো লঞ্চ চলাচল করতে পারত না প্রকল্পে আওতায় ড্রেজিং এর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে এখন সারা বছর চলাচল করছে। এছাড়া ভৈরব-ছাতক নৌ-পথের মাধ্যমে সারাদেশে কনস্ট্রাকশন ম্যারিয়াল পাথর, বালি, সিমেন্ট বোঝাই জাহাজ চলাচল করে থাকে। কিন্তু শুকনা মৌসুমে এ রুটের নাব্যতা সংকটের কারনে কার্গো চলাচল ব্যাহত হতো। ফলে শুকনা মৌসুমে পাথর, বালি, সিমেন্ট এর মূল্য বৃদ্ধি হত। ড্রেজিং-এর পর এ রুটে এখন সারা বছর পন্য বোঝাইকারী কার্গো চলাচল করতে পারছে। প্রতিদিন গড়ে এ রুটে ২০০টি কার্গো চলাচল করছে। খুলনা-নোয়াপাড়া নৌ-পথে প্রতিদিন গড়ে ১০০টি সার, সিমেন্ট, কয়লা, চাল, গম ইত্যাদি মালবাহী কার্গো চলাচল করে। কিন্তু এ রুটে প্রকট নাব্যতা সংকট ছিল। জোয়ারের সুবিধা ছাড়া এ গুরুত্ব রুট দিয়ে কার্গো চলাচল করতে পারত না। প্রকল্পের আওতায় ড্রেজিং-এর পর সার্বক্ষনিক কার্গো জাহাজ চলাচল করছে। এঝাড়া মৃত প্রায় গাগলাজোড়-মোহনগঞ্জ, আনোয়ারপুর-তাহেরপুর, বরিশাল-পটুয়াখালী, দাউদকান্দি-হোমনা-মরিচাকান্দি-বাঞ্ছারামপুর, সাহেবেরহাট নালা ড্রেজিং করে নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পের ড্রেজিং-এর মাটি দ্বারা পতিত ও নিচু জমি ভরাট করে প্রায় ৫০০০ একর অকৃষি জমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে।