গোপন ক্যামেরায় দম্পতির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা : গ্রেপ্তার ২

টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা। আর সেই ক্যামেরায় ধারণ করা হয় অন্তরঙ্গ দৃশ্য। সেই দৃশ্য মোবাইলে পাঠিয়ে চাওয়া হয় টাকা। করা হয় নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল। শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে এসে তামিম রিসোর্ট নামের এক রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করে এমনই ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন এক দম্পতি। ওই রেস্ট হাউজে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হয় স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও। এ ঘটনায় ব্ল্যাকমেইলের শিকার দম্পতি প্রশাসনের আশ্রয় নিলে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে।

শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ জানায়, তামিম রিসোর্ট অ্যান্ড রেস্ট হাউজে রাত কাটানো দম্পতি এক সময় ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হন। রিসোর্টের দুই কর্মচারী টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ধারণ করে। পরে তাদের ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা চালায় ওই দুই কর্মচারী। এ বিষয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী রিয়াজ উদ্দিন।

মামলা নম্বর ২০। গত শুক্রবার রাতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের একজনকে সিলেটের কানাইঘাট থেকে ও একজনকে শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলোÑ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার চন্ডিপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে রেজওয়ান (২৩) ও শ্রীমঙ্গল শহরের বিরাইমপুর এলাকার মৃত শফিক মিয়ার ছেলে খালেদ মিয়া (২৭)।

শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক আল আমিন জানান, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসেন এক দম্পতি। রাত্রিযাপনে উঠেন মৌলভীবাজার সড়কের পাশে অবস্থিত তামিম রিসোর্ট নামের একটি রেস্ট হাউজে। কিন্তু ওই রেস্ট হাউজের দুই কর্মচারী টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে দম্পতির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করে। ঘটনার কিছু দিন পর রিয়াজউদ্দিনকে ইমু নম্বরে একটি মোবাইল ফোন থেকে কল করে বলে, তাদের মেলামেশার ছবি ও ভিডিও আছে।

এ বিষয়ে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়। তারপর গত বছরের ২১ অক্টোবর ‘নাদিরা আক্তার রুমি’ নামে ফেসবুকের একটি ফেক আইডি থেকে ম্যাসেঞ্জারে রিয়াজউদ্দিনের কাছে তাদের গোপন মেলামেশার ছবি পাঠায়। ওই নম্বর থেকে বাদীর ইমু নাম্বারে কল করে হুমকি দিয়ে জানায়, এই ছবি ও ভিডিও ফেরত পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, তা না হলে তাদের এই ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেয়া হবে। কিন্তু বাদী কোন টাকা না দিলে এক পর্যায়ে তারা ফেসবুকে তাদের বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের কমেন্ট ও ম্যাসেঞ্জারে তাদের নোংরা ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতে থাকে।

পরে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

তিনি আরও জানান, এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে দম্পতির শারীরিক মেলামেশার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্তরা ১৬৪ ধারায় কোর্টে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আবদুস ছালেক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। এ ঘটনায় মালিকপক্ষের কোন সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হবে।

রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৩১ মাঘ ১৪২৭, ৩১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

শ্রীমঙ্গলে রিসোর্ট

গোপন ক্যামেরায় দম্পতির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা : গ্রেপ্তার ২

প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা। আর সেই ক্যামেরায় ধারণ করা হয় অন্তরঙ্গ দৃশ্য। সেই দৃশ্য মোবাইলে পাঠিয়ে চাওয়া হয় টাকা। করা হয় নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল। শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে এসে তামিম রিসোর্ট নামের এক রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করে এমনই ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন এক দম্পতি। ওই রেস্ট হাউজে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হয় স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও। এ ঘটনায় ব্ল্যাকমেইলের শিকার দম্পতি প্রশাসনের আশ্রয় নিলে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে।

শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ জানায়, তামিম রিসোর্ট অ্যান্ড রেস্ট হাউজে রাত কাটানো দম্পতি এক সময় ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হন। রিসোর্টের দুই কর্মচারী টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ধারণ করে। পরে তাদের ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা চালায় ওই দুই কর্মচারী। এ বিষয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী রিয়াজ উদ্দিন।

মামলা নম্বর ২০। গত শুক্রবার রাতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের একজনকে সিলেটের কানাইঘাট থেকে ও একজনকে শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলোÑ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার চন্ডিপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে রেজওয়ান (২৩) ও শ্রীমঙ্গল শহরের বিরাইমপুর এলাকার মৃত শফিক মিয়ার ছেলে খালেদ মিয়া (২৭)।

শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক আল আমিন জানান, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসেন এক দম্পতি। রাত্রিযাপনে উঠেন মৌলভীবাজার সড়কের পাশে অবস্থিত তামিম রিসোর্ট নামের একটি রেস্ট হাউজে। কিন্তু ওই রেস্ট হাউজের দুই কর্মচারী টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে দম্পতির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করে। ঘটনার কিছু দিন পর রিয়াজউদ্দিনকে ইমু নম্বরে একটি মোবাইল ফোন থেকে কল করে বলে, তাদের মেলামেশার ছবি ও ভিডিও আছে।

এ বিষয়ে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলে ফোনের লাইন কেটে দেয়। তারপর গত বছরের ২১ অক্টোবর ‘নাদিরা আক্তার রুমি’ নামে ফেসবুকের একটি ফেক আইডি থেকে ম্যাসেঞ্জারে রিয়াজউদ্দিনের কাছে তাদের গোপন মেলামেশার ছবি পাঠায়। ওই নম্বর থেকে বাদীর ইমু নাম্বারে কল করে হুমকি দিয়ে জানায়, এই ছবি ও ভিডিও ফেরত পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, তা না হলে তাদের এই ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেয়া হবে। কিন্তু বাদী কোন টাকা না দিলে এক পর্যায়ে তারা ফেসবুকে তাদের বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের কমেন্ট ও ম্যাসেঞ্জারে তাদের নোংরা ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতে থাকে।

পরে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

তিনি আরও জানান, এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে দম্পতির শারীরিক মেলামেশার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্তরা ১৬৪ ধারায় কোর্টে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আবদুস ছালেক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। এ ঘটনায় মালিকপক্ষের কোন সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হবে।