ইজারা ছাড়াই আড়িয়ালখাঁর বালুতে ভরাট শত শত একর

ফরিদপুরের সদরপুরের ঢেউখালী ইউনিয়নে আড়িয়ালখাঁ নদী ড্রেজিং করে তীরবর্তী এলাকার প্রায় শত শত একর ফসলি জমিতে বালু ফেলা হচ্ছে। ঢেকে ফেলা হচ্ছে উঠতি ফসল। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও ফল পাচ্ছে না তারা। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রভাবশালীরা কোন ধরনের ইজারা ছাড়াই রাতের আঁধারে দীর্ঘদিন ধরে এসব বালু ও মাটি বিক্রি করে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ।

এই নিয়ে কথা হয় ভুক্তভোগি কৃষক তৈয়ব খলিফা, আ. রহিম, রানা খলিফা, মোস্তাফার সঙ্গে, তারা জানান আমরা এখন বর্গীদের কবলে আছি, কোন কিছুই বলতে পারছি না। উঠতি ফসলের ক্ষেত বালু দিয়ে ভরে ফেলছে ফসল তুলে ঘরে নেওয়ার জো নেই। নীরবে শুধু চোখের পানি ফেলা ছাড়া কোন উপায় নেই। তার আরও বলেন, থানা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছি এতেও কোন ফল পাইনি। আমাদের চোখের সামনে ড্রেজারে বালুতে পেঁয়াজ, রসুন, বোরো ধানের ক্ষেত, সরিষার ক্ষেতসহ ফসল তলিয়ে যাচ্ছে আমরা শুধু তাকিয়েই দেখছি, কিছুই প্রতিকার করতে পারছি না। উল্লেখ্য যে, যেখানে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে, সেখানেই পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কোটি কোটি টাকা খরচ করে বোল্ডার দিয়ে নদীভাঙন রোধ করা হচ্ছে। বালি উত্তোলনের ফলে বাঁধের কয়েকটি জায়গায় ছোটখাটো ধসের সষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে বালুবাহিত বিশাল চাকার ট্রাক্টরের যাতায়াতে সদরপুর- শিবচরের তাড়াইলের পাকা রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার পথে। প্রসঙ্গত আড়িয়ালখাঁ নদীর পশ্চিমতীর সংরক্ষণ বাঁধ ঘেসে ও ড্রেজিং প্রকল্পের আওতা পদ্মা নদীর ডানতীর সন্নিকটস্থ বলাশিয়া ট্রলার ঘাট হতে চন্দ্রপাড়া ঘাটের দিকে ১৫০০ মিটার ড্রেজিং কাজ চলমান রয়েছে। এখান হতে একটি প্রভাবশালী চক্র বিভিন্ন কৌশলে ড্রেজিংকৃত বালু বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলার এসিল্যান্ড এলাকা পরিদর্শনে গেলে সেখানে মাটি কাটা অবস্থায় ভেকু দেখতে পেয়ে তিনটি ভেকুর ব্যাটারি খুলে নিয়ে আসেন এবং ভেকু চালানো যাবে না, এই মর্মে হুসিয়ারী করে আসে। বিকালে ঐ ভেকুর ব্যাটারি নিয়ে এসে অচল করে দেয় অথচ সেই ব্যাটারি গুলি সকালে নিয়ে গিয়ে আবার রাত থেকেই সেই জায়গায় সেই সব ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে ভাটায় ইট ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে ড্রেজার ও ভেকু দ্বারা বালু উত্তেলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ড এর এস ও সামসুল হাসান বলেন, ড্রেজিং এর কাজের সময় উত্তোলিত বালু নির্দিষ্ট স্থানে রেখে তা জেলা প্রশাসককে বুঝিয়ে দিতে হবে। বালু কারো ফসলি জমিতে রাখা যাবে না।

সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২ ফাল্গুন ১৪২৭ ২ রজব ১৪৪২

ইজারা ছাড়াই আড়িয়ালখাঁর বালুতে ভরাট শত শত একর

প্রতিনিধি, সদরপুর (ফরিদপুর)

image

ফরিদপুরের সদরপুরের ঢেউখালী ইউনিয়নে আড়িয়ালখাঁ নদী ড্রেজিং করে তীরবর্তী এলাকার প্রায় শত শত একর ফসলি জমিতে বালু ফেলা হচ্ছে। ঢেকে ফেলা হচ্ছে উঠতি ফসল। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও ফল পাচ্ছে না তারা। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রভাবশালীরা কোন ধরনের ইজারা ছাড়াই রাতের আঁধারে দীর্ঘদিন ধরে এসব বালু ও মাটি বিক্রি করে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ।

এই নিয়ে কথা হয় ভুক্তভোগি কৃষক তৈয়ব খলিফা, আ. রহিম, রানা খলিফা, মোস্তাফার সঙ্গে, তারা জানান আমরা এখন বর্গীদের কবলে আছি, কোন কিছুই বলতে পারছি না। উঠতি ফসলের ক্ষেত বালু দিয়ে ভরে ফেলছে ফসল তুলে ঘরে নেওয়ার জো নেই। নীরবে শুধু চোখের পানি ফেলা ছাড়া কোন উপায় নেই। তার আরও বলেন, থানা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছি এতেও কোন ফল পাইনি। আমাদের চোখের সামনে ড্রেজারে বালুতে পেঁয়াজ, রসুন, বোরো ধানের ক্ষেত, সরিষার ক্ষেতসহ ফসল তলিয়ে যাচ্ছে আমরা শুধু তাকিয়েই দেখছি, কিছুই প্রতিকার করতে পারছি না। উল্লেখ্য যে, যেখানে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে, সেখানেই পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কোটি কোটি টাকা খরচ করে বোল্ডার দিয়ে নদীভাঙন রোধ করা হচ্ছে। বালি উত্তোলনের ফলে বাঁধের কয়েকটি জায়গায় ছোটখাটো ধসের সষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে বালুবাহিত বিশাল চাকার ট্রাক্টরের যাতায়াতে সদরপুর- শিবচরের তাড়াইলের পাকা রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার পথে। প্রসঙ্গত আড়িয়ালখাঁ নদীর পশ্চিমতীর সংরক্ষণ বাঁধ ঘেসে ও ড্রেজিং প্রকল্পের আওতা পদ্মা নদীর ডানতীর সন্নিকটস্থ বলাশিয়া ট্রলার ঘাট হতে চন্দ্রপাড়া ঘাটের দিকে ১৫০০ মিটার ড্রেজিং কাজ চলমান রয়েছে। এখান হতে একটি প্রভাবশালী চক্র বিভিন্ন কৌশলে ড্রেজিংকৃত বালু বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলার এসিল্যান্ড এলাকা পরিদর্শনে গেলে সেখানে মাটি কাটা অবস্থায় ভেকু দেখতে পেয়ে তিনটি ভেকুর ব্যাটারি খুলে নিয়ে আসেন এবং ভেকু চালানো যাবে না, এই মর্মে হুসিয়ারী করে আসে। বিকালে ঐ ভেকুর ব্যাটারি নিয়ে এসে অচল করে দেয় অথচ সেই ব্যাটারি গুলি সকালে নিয়ে গিয়ে আবার রাত থেকেই সেই জায়গায় সেই সব ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে ভাটায় ইট ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে ড্রেজার ও ভেকু দ্বারা বালু উত্তেলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ড এর এস ও সামসুল হাসান বলেন, ড্রেজিং এর কাজের সময় উত্তোলিত বালু নির্দিষ্ট স্থানে রেখে তা জেলা প্রশাসককে বুঝিয়ে দিতে হবে। বালু কারো ফসলি জমিতে রাখা যাবে না।