ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবন্ধী দুই সন্তান নিয়ে বিপাকে মা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের চকবাজারে চিতই পিঠা বিক্রেতা হাসিনা বেগম। জন্মপ্রতিবন্ধী দুই সন্তান ও অসুস্থ স্বামী রফিকুল ইসলামকে নিয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছেন তিনি। স্বামী এবং দুই সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাদের মুখে খাবার আর দেখাশুনা করতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

সরকারি সহায়তার আশায় বারবার জনপ্রতিনিধি আর প্রশাসনের কাছে ঘুরে দুই সন্তানের দু’টি ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করতে পারলেও আর কোন সহায়তা জোটেনি তাদের কপালে। তবে প্রতিবন্ধী পরিবারটিকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন সরাইল উপজেলা সমাজসেবা অফিস।

হাসিনার একমাত্র ছেলে সজল মিয়া (১৮) ও মেয়ে রচনা বেগম দু’জনই জন্ম থেকে শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী। তারা দু’জনের একজনও চলাফেরা করতে পারেনা। এমনকি উঠতে ও বসতেও । মলমূত্র সবই হয় বিছানায়। নিজের হাতে খাবারও খেতে পারেনা। হাসিনা বেগমই তিনবেলা পাশে বসে নিজ হাতে ভাত খাইয়ে দেন। অসুস্থ স্বামী ও প্রতিবন্ধী ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন হাসিনা বেগম।

স্বামী অসুস্থ হওয়ায় পরিবারে কর্মজীবী আর কেউ নেই। স্বামীর নিজের কোন জায়গা জমিও নেই। মাঝে মাঝে স্বামী নদীতে গিয়ে মাছ ধরলেও শারীরিক দূর্বলতার কারণে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।

সংসারের আয়ের কোন পথ না থাকায় বসবাসের ঘরটিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বাজারে পিঠা বিক্রি করে যা পান তা দিয়েই কোনরকমে চলে তাদের সংসার। খাবারের পানির জন্য অনেক কষ্ট করেন। এক বছর আগে আশুগঞ্জের এক ব্যক্তি একটা টিউবওয়েল দিয়েছিলেন। টিউবওয়েলটির পানি গোমূত্রের মতো লাল ও গাঢ় হওয়ায় পানি ব্যবহারের অনুপযোগী। প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে মেঘনা নদী থেকে প্রতিদিন ৮/১০ কলসি পানি এনে গোসল করাতে হয় দুই সন্তানকে। হাসিনা বেগম বলেন, এই অভাবী সংসার টানতে টানতে নিজেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। শত কষ্টে দিন কাটলেও কপালে সরকারি সহায়তা তো দুরের কথা খোঁজখবর নেয়নি কেউ। পিঠা বিক্রয় করে যা পাই, তা দিয়েই চলতে হয়। এছাড়া কি বা করার আছে! রাজাপুর গ্রামের ইউপি সদস্য জিন্নত আলী বলেন, রফিকের দুই সন্তানই প্রতিবন্ধী। রফিক নিজেও অসুস্থ। রোজগার করতে পারেনা। রফিকের বউ চক বাজারে পিঠা বিক্রি করে সংসার চালায়। তাদের দুই প্রতিবন্ধী সন্তানেরই ভাতার কার্ড হয়েছে’। সরাইল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক মৃদুল জানান, যেহেতু প্রতিবন্ধী দুইটি সন্তন প্রতিবন্ধী ভাতা পায়, এছাড়া আর কোন সহায়তা করার উপজেলা প্রশাসনের কাছে সুযোগ নেই।

সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২ ফাল্গুন ১৪২৭ ২ রজব ১৪৪২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিবন্ধী দুই সন্তান নিয়ে বিপাকে মা

জেলা বার্তা পরিবেশক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

image

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের চকবাজারে চিতই পিঠা বিক্রেতা হাসিনা বেগম। জন্মপ্রতিবন্ধী দুই সন্তান ও অসুস্থ স্বামী রফিকুল ইসলামকে নিয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছেন তিনি। স্বামী এবং দুই সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাদের মুখে খাবার আর দেখাশুনা করতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

সরকারি সহায়তার আশায় বারবার জনপ্রতিনিধি আর প্রশাসনের কাছে ঘুরে দুই সন্তানের দু’টি ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করতে পারলেও আর কোন সহায়তা জোটেনি তাদের কপালে। তবে প্রতিবন্ধী পরিবারটিকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন সরাইল উপজেলা সমাজসেবা অফিস।

হাসিনার একমাত্র ছেলে সজল মিয়া (১৮) ও মেয়ে রচনা বেগম দু’জনই জন্ম থেকে শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী। তারা দু’জনের একজনও চলাফেরা করতে পারেনা। এমনকি উঠতে ও বসতেও । মলমূত্র সবই হয় বিছানায়। নিজের হাতে খাবারও খেতে পারেনা। হাসিনা বেগমই তিনবেলা পাশে বসে নিজ হাতে ভাত খাইয়ে দেন। অসুস্থ স্বামী ও প্রতিবন্ধী ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন হাসিনা বেগম।

স্বামী অসুস্থ হওয়ায় পরিবারে কর্মজীবী আর কেউ নেই। স্বামীর নিজের কোন জায়গা জমিও নেই। মাঝে মাঝে স্বামী নদীতে গিয়ে মাছ ধরলেও শারীরিক দূর্বলতার কারণে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।

সংসারের আয়ের কোন পথ না থাকায় বসবাসের ঘরটিও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বাজারে পিঠা বিক্রি করে যা পান তা দিয়েই কোনরকমে চলে তাদের সংসার। খাবারের পানির জন্য অনেক কষ্ট করেন। এক বছর আগে আশুগঞ্জের এক ব্যক্তি একটা টিউবওয়েল দিয়েছিলেন। টিউবওয়েলটির পানি গোমূত্রের মতো লাল ও গাঢ় হওয়ায় পানি ব্যবহারের অনুপযোগী। প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে মেঘনা নদী থেকে প্রতিদিন ৮/১০ কলসি পানি এনে গোসল করাতে হয় দুই সন্তানকে। হাসিনা বেগম বলেন, এই অভাবী সংসার টানতে টানতে নিজেই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। শত কষ্টে দিন কাটলেও কপালে সরকারি সহায়তা তো দুরের কথা খোঁজখবর নেয়নি কেউ। পিঠা বিক্রয় করে যা পাই, তা দিয়েই চলতে হয়। এছাড়া কি বা করার আছে! রাজাপুর গ্রামের ইউপি সদস্য জিন্নত আলী বলেন, রফিকের দুই সন্তানই প্রতিবন্ধী। রফিক নিজেও অসুস্থ। রোজগার করতে পারেনা। রফিকের বউ চক বাজারে পিঠা বিক্রি করে সংসার চালায়। তাদের দুই প্রতিবন্ধী সন্তানেরই ভাতার কার্ড হয়েছে’। সরাইল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক মৃদুল জানান, যেহেতু প্রতিবন্ধী দুইটি সন্তন প্রতিবন্ধী ভাতা পায়, এছাড়া আর কোন সহায়তা করার উপজেলা প্রশাসনের কাছে সুযোগ নেই।