ইএফটির ফরম পূরণে শিক্ষা ও হিসাব কর্মকর্তার বাণিজ্য!

বাগেরহাটের শরণখোলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের (ইএফটি) (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্যান্সফার) তহবিল হস্তান্তরের ফরম অনলাইনে পূরণ করে দেয়ার নামে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা (ইএফটির) মাধ্যমে দেয়ার জন্য গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে এক আদেশ করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত ১১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ-শতাধিক শিক্ষকের ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের (বেতন) তহবিল হস্তান্তরের জন্য (ইএফটির) ফরম পূরণের অনলাইন কার্যক্রম শুরু করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। সব শিক্ষকদের ফরম অনলাইনে পূরণ করে দেয়ার জন্য ১নং ধানসাগর ও ৪নং সাউথখালী ইউনিয়নের দায়িত্ব পান সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান পাইক এবং ৩নং রায়েন্দা ইউনিয়নের দায়িত্ব পান সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মি. রতন কুমার বল। এছাড়া ২নং খোন্তাকাটা ইউনিয়নের দায়িত্ব দেয়া হয় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মি. বিধান চন্দ্র রায়কে। এ সুযোগে সংশ্লিষ্টরা তাদের পছন্দের লোক নিয়োগ করে অনলাইন কার্যক্রম আরম্ভ করেন। আর এতে অফিস খরচ বাবদ প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ৫শ টাকা আদায় শুরু করেন। অপরদিকে, চাকরিতে যোগদানের সময় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের শিক্ষা অফিসে জমা করা কাগজপত্রে কিছুটা ত্রুটি থাকায় তা ঠিক করে দেয়াসহ ফরম পূরণের জন্য শিক্ষা কর্মকর্তার পাশাপাশি উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে খুশি করার নামে একটি চক্র সাধারণ শিক্ষকদের এক প্রকার জিম্মি করে (পুনরায়) জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে হাতানোর প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। উপজেলার কয়েক জন শিক্ষক জানান, অনলাইনে (ইএফটির) ফরম পূরণের ক্ষেত্রে কোন প্রকার টাকা পয়সা গ্রহণ করা যাবে না মর্মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশ থাকলেও তা উপেক্ষা করে চলছেন শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল ইসলাম। তাছাড়া অনলাইনে একটি ফরম পূরণে সর্বোচ্চ-৫০/৬০ টাকার বেশি খরচ লাগার কথা নয়। অথচ জনপ্রতি ৫শ’ টাকা ধার্য করা হয়েছে। যা আমরা স্ব-স্ব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে জমা করে যাচ্ছি। কিন্তু ভুল-০ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে পুনরায় শিক্ষাকর্তাসহ উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে এক হাজার টাকা করে আদায় আরাম্ভ করে একটি চক্র। এমনকি টাকা ছাড়া সাধারণ শিক্ষকদের কোন কথা শিক্ষা অফিস সংশ্লিষ্টরা যেন শুনতেই চান না । এ ধরনের নানা হয়রানির হাত থেকে আামরা মুক্তি পেতে চাই । তবে, উপজেলা হিসাব-রক্ষন কর্মকর্তা মো. নুরুল আমীন বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমার নামে যারা টাকা দিয়েছেন তারা অভিযোগ দিলে ওই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব। এছাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল ইসলাম জানান, (ইএফটির) ফরম পূরণে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। কম্পিউটারে দক্ষ এমন ৬ জন সহকারী শিক্ষককে ফরম পুরনের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে ফরম হিসাব বিভাগে দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে তারা অধিদপ্তরে পাঠাবেন। তবে, যারা কাজ করছেন হয়তো তাদের কিছু খরচ দিতে হচ্ছে।

সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২ ফাল্গুন ১৪২৭ ২ রজব ১৪৪২

ইএফটির ফরম পূরণে শিক্ষা ও হিসাব কর্মকর্তার বাণিজ্য!

প্রতিনিধি, শরণখোলা (বাগেরহাট)

বাগেরহাটের শরণখোলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের (ইএফটি) (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্যান্সফার) তহবিল হস্তান্তরের ফরম অনলাইনে পূরণ করে দেয়ার নামে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা (ইএফটির) মাধ্যমে দেয়ার জন্য গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে এক আদেশ করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত ১১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ-শতাধিক শিক্ষকের ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের (বেতন) তহবিল হস্তান্তরের জন্য (ইএফটির) ফরম পূরণের অনলাইন কার্যক্রম শুরু করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। সব শিক্ষকদের ফরম অনলাইনে পূরণ করে দেয়ার জন্য ১নং ধানসাগর ও ৪নং সাউথখালী ইউনিয়নের দায়িত্ব পান সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান পাইক এবং ৩নং রায়েন্দা ইউনিয়নের দায়িত্ব পান সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মি. রতন কুমার বল। এছাড়া ২নং খোন্তাকাটা ইউনিয়নের দায়িত্ব দেয়া হয় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মি. বিধান চন্দ্র রায়কে। এ সুযোগে সংশ্লিষ্টরা তাদের পছন্দের লোক নিয়োগ করে অনলাইন কার্যক্রম আরম্ভ করেন। আর এতে অফিস খরচ বাবদ প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ৫শ টাকা আদায় শুরু করেন। অপরদিকে, চাকরিতে যোগদানের সময় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের শিক্ষা অফিসে জমা করা কাগজপত্রে কিছুটা ত্রুটি থাকায় তা ঠিক করে দেয়াসহ ফরম পূরণের জন্য শিক্ষা কর্মকর্তার পাশাপাশি উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে খুশি করার নামে একটি চক্র সাধারণ শিক্ষকদের এক প্রকার জিম্মি করে (পুনরায়) জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে হাতানোর প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। উপজেলার কয়েক জন শিক্ষক জানান, অনলাইনে (ইএফটির) ফরম পূরণের ক্ষেত্রে কোন প্রকার টাকা পয়সা গ্রহণ করা যাবে না মর্মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশ থাকলেও তা উপেক্ষা করে চলছেন শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল ইসলাম। তাছাড়া অনলাইনে একটি ফরম পূরণে সর্বোচ্চ-৫০/৬০ টাকার বেশি খরচ লাগার কথা নয়। অথচ জনপ্রতি ৫শ’ টাকা ধার্য করা হয়েছে। যা আমরা স্ব-স্ব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে জমা করে যাচ্ছি। কিন্তু ভুল-০ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে পুনরায় শিক্ষাকর্তাসহ উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে এক হাজার টাকা করে আদায় আরাম্ভ করে একটি চক্র। এমনকি টাকা ছাড়া সাধারণ শিক্ষকদের কোন কথা শিক্ষা অফিস সংশ্লিষ্টরা যেন শুনতেই চান না । এ ধরনের নানা হয়রানির হাত থেকে আামরা মুক্তি পেতে চাই । তবে, উপজেলা হিসাব-রক্ষন কর্মকর্তা মো. নুরুল আমীন বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমার নামে যারা টাকা দিয়েছেন তারা অভিযোগ দিলে ওই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করব। এছাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল ইসলাম জানান, (ইএফটির) ফরম পূরণে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। কম্পিউটারে দক্ষ এমন ৬ জন সহকারী শিক্ষককে ফরম পুরনের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাজ শেষ হলে ফরম হিসাব বিভাগে দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে তারা অধিদপ্তরে পাঠাবেন। তবে, যারা কাজ করছেন হয়তো তাদের কিছু খরচ দিতে হচ্ছে।