নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ৬৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এই উপজেলায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নেই। ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপির উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হলেও প্রায় দু’বছরেও আলোর মুখ দেখিনি। এমনকি উপজেলার সর্ববৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ামতপুর সরকারি কলেজেও আজ পর্যন্ত কোন শহীদ মিনার নেই। হাতে গোনা কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজও কোন শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। ফলে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রীরা ৫২’র ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে তদন্ত করে জানা যায়, উপজেলা সদরসহ ৮টি ইউনিয়নে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজ ২শ ৪টি সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে কলেজ রয়েছে ৬টি (আলাদাভাবে) এবং স্কুলের সাথে কলেজ রয়েছে ২টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪৪টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১শ’ ২৮টি এবং মাদ্রাসা রয়েছে ২৬টি। শুধুমাত্র বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রী কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে বাকি কলেজগুলোতে আজও শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। ৪৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৪টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। বাকি ৩০টি বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। ১শ’ ২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে তাও ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকায়। উপজেলার ২৬টি মাদ্রাসার মধ্যে কোন মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। উপজেলার ২শ’ ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি ১শ ৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় নাই।
নিমদীঘি কারিগরি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজনু রহমান জানান, গত কয়েকমাস হলো শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকৌশল বিভাগ থেকে জরিপ করে গেছে শহীদ মিনার নির্মাণ করার জন্য। এখন পর্যন্ত কোন উত্তর পাইনি।
বটতলী কলেজের অধ্যক্ষ মো. তারেক মাহমুদ বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান নন এমপিওভুক্ত। সবেমাত্র একটি চারতলা ভীত বিশিষ্ট একতলা বিল্ডিং পেয়েছি। অর্থের অভাবে কোন শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায় নাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়া মারীয়া পেরেরা কেন্দ্রীয়ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, যেহেতু উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণ হচ্ছে, নির্মাণ কাজ শেষ হলেই কোন জায়গায় শহীদ মিনার সুন্দর মানানসই হবে সেই জায়গায় অবশ্যই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। জায়গা না থাকার কারণে এতদিন শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায় নাই। বালাতৈড় কলেজে খুব শীঘ্রই শহীদ মিনার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। তিনি উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার প্রসঙ্গে বলেন, ২০২০ সাল তো করোনা সঙ্কটেই চলে গেল। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। করোনা সঙ্কট দূর হলেও সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, শহীদ মিনারের জন্য সরকারিভাবে কোন বরাদ্দ হয় না। উপজেলা পরিষদ থেকে সিদ্ধান্ত নিলে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে প্রধানকে চিঠি দেব নিজ নিজ তহবিল থেকে শহীদ মিনার তৈরি করার জন্য।
মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৩ ফাল্গুন ১৪২৭ ৩ রজব ১৪৪২
প্রতিনিধি, নিয়ামতপুর (নওগাঁ)
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ৬৯ বছর পেরিয়ে গেলেও এই উপজেলায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নেই। ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপির উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হলেও প্রায় দু’বছরেও আলোর মুখ দেখিনি। এমনকি উপজেলার সর্ববৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ামতপুর সরকারি কলেজেও আজ পর্যন্ত কোন শহীদ মিনার নেই। হাতে গোনা কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আজও কোন শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। ফলে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রীরা ৫২’র ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। উপজেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে তদন্ত করে জানা যায়, উপজেলা সদরসহ ৮টি ইউনিয়নে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কলেজ ২শ ৪টি সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে কলেজ রয়েছে ৬টি (আলাদাভাবে) এবং স্কুলের সাথে কলেজ রয়েছে ২টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪৪টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১শ’ ২৮টি এবং মাদ্রাসা রয়েছে ২৬টি। শুধুমাত্র বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রী কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে বাকি কলেজগুলোতে আজও শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। ৪৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৪টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। বাকি ৩০টি বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। ১শ’ ২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে তাও ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকায়। উপজেলার ২৬টি মাদ্রাসার মধ্যে কোন মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। উপজেলার ২শ’ ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি ১শ ৮১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় নাই।
নিমদীঘি কারিগরি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজনু রহমান জানান, গত কয়েকমাস হলো শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকৌশল বিভাগ থেকে জরিপ করে গেছে শহীদ মিনার নির্মাণ করার জন্য। এখন পর্যন্ত কোন উত্তর পাইনি।
বটতলী কলেজের অধ্যক্ষ মো. তারেক মাহমুদ বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান নন এমপিওভুক্ত। সবেমাত্র একটি চারতলা ভীত বিশিষ্ট একতলা বিল্ডিং পেয়েছি। অর্থের অভাবে কোন শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায় নাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়া মারীয়া পেরেরা কেন্দ্রীয়ভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, যেহেতু উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণ হচ্ছে, নির্মাণ কাজ শেষ হলেই কোন জায়গায় শহীদ মিনার সুন্দর মানানসই হবে সেই জায়গায় অবশ্যই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। জায়গা না থাকার কারণে এতদিন শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায় নাই। বালাতৈড় কলেজে খুব শীঘ্রই শহীদ মিনার নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। তিনি উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার প্রসঙ্গে বলেন, ২০২০ সাল তো করোনা সঙ্কটেই চলে গেল। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। করোনা সঙ্কট দূর হলেও সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, শহীদ মিনারের জন্য সরকারিভাবে কোন বরাদ্দ হয় না। উপজেলা পরিষদ থেকে সিদ্ধান্ত নিলে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে প্রধানকে চিঠি দেব নিজ নিজ তহবিল থেকে শহীদ মিনার তৈরি করার জন্য।