ঘিওরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুখরোচক খাবার তৈরি

বিএসটিআই ও খাদ্য বিভাগের ছাড়পত্র ছাড়াই ঘিওর বাজারে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশে দিলবার নামে একটি করখানায় তৈরি হচ্ছে চানাচুর, ডালভাজা, কটকটিসহ বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার। এই সব অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা খাবার খেয়ে শিশুসহ সাধারণ মানুষ ডায়েরিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে। জানা গেছে, ২০১২ সালের দিকে ঘিওর বাজারের কাঠপট্টিতে (ইছামতী নদীর সংলগ্ন) একটি বাড়িতে দিলবার নামে একটি কারখানা গড়ে তোলা হয়। এই কারখানাতে এলাকার শিশু শ্রমিকসহ অল্প মজুরিতে লোকজন দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চানাচুর, কটকটি, ছোলাভাজা, বুট ভাজা তৈরি করে ঘিওর হাট, বরংগাইল, তরা হাটসহ বিভিন্ন বাজারে অহরহ বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মুখরোচক খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ডালডা, আটা, বিভিন্ন ধরনের রং, সেকারিন, ছোডাসহ বিষাক্ত কেমিকেল। যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কারখানায় শ্রমিকদের কোন পোশাক নেই, হ্যান্ড গ্লাফস ও মাস্ক নেই। চারপাশে ময়লা আবর্জনা। লাকরী দিয়ে বিশাল মাটির চুলার মধ্যে কড়াই মধ্যে ডালডা জাল করা হচ্ছে। নোংরা ময়লাযুক্ত আটা দিয়ে ছোট ছোট ঝুঁড়ি করে বিভিন্ন ক্যামিকেল মিশিয়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে টগবগে ডালডার মধ্যে। এর পরে শুকনা মরিচের গুড়া ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে চানাচুর তৈরি করা হচ্ছে। খালি গায়ে নোংরা পরিবেশে দিনের পর তৈরি করে এই সমস্ত খাবার সামগ্রী। দিলবার চানাচুর কারখানার মালিক মো. জাহাঙ্গীর মিয়া দাপটের সঙ্গে প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন যাবত অবাধে এই সমস্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার দ্র্যবাদি তৈরি করে বিক্রয় করেন। বাজারে প্রায় প্রতিটি দোকানে এই চানাচুর বিক্রি হয়। অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত তার এই কারখানা চলছে। এই সমস্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার বলে এলাকার লোকজন দাবি করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক জানান, চানাচুর, কটকটি, ডালভাজা তৈরিতে যে সমস্ত তেল এবং উপকরণ ব্যবহার করা হয় এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই সমস্ত খাবার সামগ্রী তৈরিতে কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। এ সমস্ত মুখোরোচক খাদ্যসামগ্রী স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে তিনি জানান। দিলবার চানাচুর কারখানার মালিক মো. জাহাঙ্গীর মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে নামে মাত্র ব্যবসা করছি। দিনের পরদিন লোকসান দিয়ে শেষ হয়ে গেছি। চানাচুর আগের মতো চলে না। পত্রিকায় নিউজ দিলে কয়দিনের জন্য কারখানা বন্ধ রাখা লাগব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইরিন আক্তার জানান, এই সমস্ত অবৈধ চানাচুর কারখানায়গুলোতে ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

image
আরও খবর
দু’শতাধিক শিক্ষালয়ে শহীদ মিনার নেই
যমুনা থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ
বাঁশখালী বৈলছড়ি নজমুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় অর্থ আত্মসাতের দায়ে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত
হবিগঞ্জে ২০৫ কার্যদিবসে এক হাজার মামলা নিষ্পত্তি
১১ কিমি. রাস্তায় পাল্টাচ্ছে হোগলাবুনিয়ার দৃশ্যপট
নওগাঁয় ম্যারাথন দৌঁড় প্রতিযোগ
অবহেলায় ধ্বংস হচ্ছে মিনি সুন্দরবন
নবাবগঞ্জে প্রতিমা ভাংচুর : আটক ১
পাওনা টাকার জন্য শিকলবন্দি যুবক
গ্রামবাসী হরিণ ধরে ফিরিয়ে দিল বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে
ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে ডাকাতি, আহত ৪
সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত
শিক্ষকের বাসায় রসিক চোর, রান্নাবান্না করে খেয়ে অতঃপর চুরি

মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৩ ফাল্গুন ১৪২৭ ৩ রজব ১৪৪২

ঘিওরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুখরোচক খাবার তৈরি

প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ

image

বিএসটিআই ও খাদ্য বিভাগের ছাড়পত্র ছাড়াই ঘিওর বাজারে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশে দিলবার নামে একটি করখানায় তৈরি হচ্ছে চানাচুর, ডালভাজা, কটকটিসহ বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার। এই সব অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা খাবার খেয়ে শিশুসহ সাধারণ মানুষ ডায়েরিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে। জানা গেছে, ২০১২ সালের দিকে ঘিওর বাজারের কাঠপট্টিতে (ইছামতী নদীর সংলগ্ন) একটি বাড়িতে দিলবার নামে একটি কারখানা গড়ে তোলা হয়। এই কারখানাতে এলাকার শিশু শ্রমিকসহ অল্প মজুরিতে লোকজন দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চানাচুর, কটকটি, ছোলাভাজা, বুট ভাজা তৈরি করে ঘিওর হাট, বরংগাইল, তরা হাটসহ বিভিন্ন বাজারে অহরহ বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মুখরোচক খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ডালডা, আটা, বিভিন্ন ধরনের রং, সেকারিন, ছোডাসহ বিষাক্ত কেমিকেল। যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কারখানায় শ্রমিকদের কোন পোশাক নেই, হ্যান্ড গ্লাফস ও মাস্ক নেই। চারপাশে ময়লা আবর্জনা। লাকরী দিয়ে বিশাল মাটির চুলার মধ্যে কড়াই মধ্যে ডালডা জাল করা হচ্ছে। নোংরা ময়লাযুক্ত আটা দিয়ে ছোট ছোট ঝুঁড়ি করে বিভিন্ন ক্যামিকেল মিশিয়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে টগবগে ডালডার মধ্যে। এর পরে শুকনা মরিচের গুড়া ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে চানাচুর তৈরি করা হচ্ছে। খালি গায়ে নোংরা পরিবেশে দিনের পর তৈরি করে এই সমস্ত খাবার সামগ্রী। দিলবার চানাচুর কারখানার মালিক মো. জাহাঙ্গীর মিয়া দাপটের সঙ্গে প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন যাবত অবাধে এই সমস্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার দ্র্যবাদি তৈরি করে বিক্রয় করেন। বাজারে প্রায় প্রতিটি দোকানে এই চানাচুর বিক্রি হয়। অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত তার এই কারখানা চলছে। এই সমস্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার বলে এলাকার লোকজন দাবি করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক জানান, চানাচুর, কটকটি, ডালভাজা তৈরিতে যে সমস্ত তেল এবং উপকরণ ব্যবহার করা হয় এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই সমস্ত খাবার সামগ্রী তৈরিতে কোন প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না। এ সমস্ত মুখোরোচক খাদ্যসামগ্রী স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে তিনি জানান। দিলবার চানাচুর কারখানার মালিক মো. জাহাঙ্গীর মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে নামে মাত্র ব্যবসা করছি। দিনের পরদিন লোকসান দিয়ে শেষ হয়ে গেছি। চানাচুর আগের মতো চলে না। পত্রিকায় নিউজ দিলে কয়দিনের জন্য কারখানা বন্ধ রাখা লাগব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আইরিন আক্তার জানান, এই সমস্ত অবৈধ চানাচুর কারখানায়গুলোতে ইতোমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।