শতাধিক শিক্ষালয়ে শহীদ মিনার নেই

রংপুরের পীরগাছার শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয় আশপাশের কোন শহীদ মিনারে। অনেকে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে শ্রদ্ধা জানান। সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭৮টি, মাদ্রাসা ৩৬টি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫৩টি, কলেজ রয়েছে ১৭টি। মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২শ ৮৪ রয়েছে। এরমধ্যে পশ্চিমদেবু, অন্নদানগর, সাতদরগা, নাছুমামুদ, অনন্তরাম, তাম্বুলপুর, দুড়াগাড়ি, নেকমামুদ, দুধিয়াবাড়ী, চন্ডিপুর, পবিত্রঝাড়, তালুক ইশাদ, ব্রাহ্মণীকুন্ডা, কালিগঞ্জ, মমিন বাজার, তালুক ইশাদ ফকিরটারী সরকারি, ধনীর বাজার, রাজবাড়ী, নেকমামুদ বালিকা, পবিত্রঝাড়, পীরগাছা বালিকসহ প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এছাড়াও হাতে গোনা ২-১টি মাদ্রাসা ছাড়া অন্যসব মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই।

শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে তাতেও অযতœ-অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। প্রায় প্রতিটি শহীদ মিনার স্তম্ভ ধুলায় মলিন হয়ে গেছে। এর মধ্যে একেবারে করুণ অবস্থা চরছাওলা কামারের হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি। এটির শহীদবেদিতে ফাটল ও ছত্রাক জন্মেছে।

বড়দরগা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম খোকন জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। পাশের একটি শহীদ মিনার রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান। পীরগাছা উপজেলার চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি শহীদ মিনার স্থাপন দরকার। সরকারিভাবে আলাদা কোন বরাদ্দ না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত পীরগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুজামান ম-ল জানান, আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অংশগ্রহণ করি। তাই আমার বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। পীরগাছা বহুভাষী সাঁটলিপি একাডেমির অধ্যক্ষ এমদাদুল হক বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চাহিদা দেয়ার এক বছর পেরিয়ে গেলেও বরাদ্দ না পাওয়ায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, উপজেলায় ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েেেছ। শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে বরাদ্দ না থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় নাই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সুজা জানান, শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা দিবসটি যথাযথভাবে পালন করতে পারে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকা উচিত।

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৮ ফাল্গুন ১৪২৭ ৮ রজব ১৪৪২

শতাধিক শিক্ষালয়ে শহীদ মিনার নেই

প্রতিনিধি, পীরগাছা (রংপুর)

রংপুরের পীরগাছার শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয় আশপাশের কোন শহীদ মিনারে। অনেকে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে শ্রদ্ধা জানান। সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭৮টি, মাদ্রাসা ৩৬টি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫৩টি, কলেজ রয়েছে ১৭টি। মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২শ ৮৪ রয়েছে। এরমধ্যে পশ্চিমদেবু, অন্নদানগর, সাতদরগা, নাছুমামুদ, অনন্তরাম, তাম্বুলপুর, দুড়াগাড়ি, নেকমামুদ, দুধিয়াবাড়ী, চন্ডিপুর, পবিত্রঝাড়, তালুক ইশাদ, ব্রাহ্মণীকুন্ডা, কালিগঞ্জ, মমিন বাজার, তালুক ইশাদ ফকিরটারী সরকারি, ধনীর বাজার, রাজবাড়ী, নেকমামুদ বালিকা, পবিত্রঝাড়, পীরগাছা বালিকসহ প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এছাড়াও হাতে গোনা ২-১টি মাদ্রাসা ছাড়া অন্যসব মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই।

শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে তাতেও অযতœ-অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। প্রায় প্রতিটি শহীদ মিনার স্তম্ভ ধুলায় মলিন হয়ে গেছে। এর মধ্যে একেবারে করুণ অবস্থা চরছাওলা কামারের হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি। এটির শহীদবেদিতে ফাটল ও ছত্রাক জন্মেছে।

বড়দরগা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম খোকন জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। পাশের একটি শহীদ মিনার রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান। পীরগাছা উপজেলার চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি শহীদ মিনার স্থাপন দরকার। সরকারিভাবে আলাদা কোন বরাদ্দ না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত পীরগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুজামান ম-ল জানান, আমরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অংশগ্রহণ করি। তাই আমার বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। পীরগাছা বহুভাষী সাঁটলিপি একাডেমির অধ্যক্ষ এমদাদুল হক বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চাহিদা দেয়ার এক বছর পেরিয়ে গেলেও বরাদ্দ না পাওয়ায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, উপজেলায় ৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েেেছ। শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে বরাদ্দ না থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় নাই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সুজা জানান, শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা দিবসটি যথাযথভাবে পালন করতে পারে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকা উচিত।