মায়ানমার অভু্যুত্থান

বিক্ষোভে এবার জাতিগত সংখ্যালঘুরা

গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমুা দখলের প্রতিবাদে মায়ানমারে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এবার দেশটির সংখ্যালঘু বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা। রয়টার্স

নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং বিজয়ীদের হাতে ক্ষমুা হস্তান্তরে সামরিক বাহিনীর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি হওয়া অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনগণের সরব প্রতিবাদ অব্যাহত আছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ইয়াঙ্গুনে নাগা, চীনসহ মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা অভু্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা গণতান্ত্রিক সরকারকে পুনর্বহাল, সু চি ও অন্যান্য রাজনীতিকদের মুক্তি এবং ২০০৮ সালের সংবিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

জাতিগত সংখ্যালঘুরা বিক্ষোভে নতুন সংবিধানে ‘ফেডারেল সিস্টেম’ রাখারও দাবি জানিয়েছেন।

স্বৈরতন্ত্রের অধীনে দেশে ফেডারেল ব্যবস্থা চালু করতে পারব না আমরা। আমরা সামরিক জান্তাকে স্বীকৃতি দিতে পারি না, বলেছেন বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক, নাগা জাতিগোষ্ঠীর সদস্য কে জুং।

জাতিগত সংখ্যালঘুদের অনেক দল এখনও অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় নামেনি বলেও জানান এ যুবনেতা।

জুং বলেছেন, জাতিগত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অং সান সু চির জোট গড়ার ব্যর্থতার প্রতিফলন এটি। এরপরও এই লড়াইয়ে জিততে হবে আমাদের। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি। স্বৈরতন্ত্রের পতন পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।

চীন জাতিগোষ্ঠীর সদস্য সালাই মন বোই বিক্ষোভে জাতিগত সংখ্যালঘুরা মূলত ৪টি দাবির কথাই জোরের সঙ্গে উচ্চারণ করেছে। এগুলো হলো- সংবিধান বাতিল, স্বৈরতন্ত্রের অবসান, ফেডারেল সিস্টেম চালু ও সব বন্দীর মুক্তি।

অনেকেই আছে যারা এনএলডিকে পছন্দ করে না। কিন্তু আমরা এনএলডিকে নিয়ে কথা বলছি না, সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির এনএলডি প্রসঙ্গ টেনে বলেন এ যুবনেতা।

স্বায়ত্তশাসন প্রসঙ্গে সু চির প্রতিশ্রুতি নিয়ে জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকায় অনেকে অভু্যুত্থানবিরোধী প্রতিবাদে যুক্ত হচ্ছে না, বলছেন বিক্ষোভের আয়োজকরা।

এদিন জাতিগত সংখ্যালঘুদের বর্ণিল বিক্ষোভ ছাড়াও ইয়াংগনের সুলে প্যাগোডাতে কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে।

সামরিক বাহিনীর ক্ষমুা দখল ও সু চিসহ রাজনীতিকদের আটকের প্রতিবাদে নেপিডোতে ৯ ফেব্রুয়ারির বিক্ষোভে মাথায় গুলিবিদ্ধ সেই তরুণী গত শুক্রবার মারা যান। এটাই এবারের অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে প্রথম মৃত্যু।

মেয়া থুই থুই খাইং নামের ওই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের ওপর বল প্রয়োগের নিন্দাও জানিয়েছে তারা। মায়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় গুরুতর আহত পুলিশের এক সদস্যের মৃতু্যুর সংবাদও নিশ্চিত করেছে।

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৮ ফাল্গুন ১৪২৭ ৮ রজব ১৪৪২

মায়ানমার অভু্যুত্থান

বিক্ষোভে এবার জাতিগত সংখ্যালঘুরা

image

মায়ানমারে অভু্যুত্থানের বিরুদ্ধে এবার বিক্ষোভ করে জাতিগত সংখ্যালঘুরা

গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমুা দখলের প্রতিবাদে মায়ানমারে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এবার দেশটির সংখ্যালঘু বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা। রয়টার্স

নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং বিজয়ীদের হাতে ক্ষমুা হস্তান্তরে সামরিক বাহিনীর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি হওয়া অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনগণের সরব প্রতিবাদ অব্যাহত আছে।

তারই ধারাবাহিকতায় ইয়াঙ্গুনে নাগা, চীনসহ মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা অভু্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা গণতান্ত্রিক সরকারকে পুনর্বহাল, সু চি ও অন্যান্য রাজনীতিকদের মুক্তি এবং ২০০৮ সালের সংবিধান বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

জাতিগত সংখ্যালঘুরা বিক্ষোভে নতুন সংবিধানে ‘ফেডারেল সিস্টেম’ রাখারও দাবি জানিয়েছেন।

স্বৈরতন্ত্রের অধীনে দেশে ফেডারেল ব্যবস্থা চালু করতে পারব না আমরা। আমরা সামরিক জান্তাকে স্বীকৃতি দিতে পারি না, বলেছেন বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক, নাগা জাতিগোষ্ঠীর সদস্য কে জুং।

জাতিগত সংখ্যালঘুদের অনেক দল এখনও অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় নামেনি বলেও জানান এ যুবনেতা।

জুং বলেছেন, জাতিগত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অং সান সু চির জোট গড়ার ব্যর্থতার প্রতিফলন এটি। এরপরও এই লড়াইয়ে জিততে হবে আমাদের। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি। স্বৈরতন্ত্রের পতন পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।

চীন জাতিগোষ্ঠীর সদস্য সালাই মন বোই বিক্ষোভে জাতিগত সংখ্যালঘুরা মূলত ৪টি দাবির কথাই জোরের সঙ্গে উচ্চারণ করেছে। এগুলো হলো- সংবিধান বাতিল, স্বৈরতন্ত্রের অবসান, ফেডারেল সিস্টেম চালু ও সব বন্দীর মুক্তি।

অনেকেই আছে যারা এনএলডিকে পছন্দ করে না। কিন্তু আমরা এনএলডিকে নিয়ে কথা বলছি না, সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির এনএলডি প্রসঙ্গ টেনে বলেন এ যুবনেতা।

স্বায়ত্তশাসন প্রসঙ্গে সু চির প্রতিশ্রুতি নিয়ে জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকায় অনেকে অভু্যুত্থানবিরোধী প্রতিবাদে যুক্ত হচ্ছে না, বলছেন বিক্ষোভের আয়োজকরা।

এদিন জাতিগত সংখ্যালঘুদের বর্ণিল বিক্ষোভ ছাড়াও ইয়াংগনের সুলে প্যাগোডাতে কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে।

সামরিক বাহিনীর ক্ষমুা দখল ও সু চিসহ রাজনীতিকদের আটকের প্রতিবাদে নেপিডোতে ৯ ফেব্রুয়ারির বিক্ষোভে মাথায় গুলিবিদ্ধ সেই তরুণী গত শুক্রবার মারা যান। এটাই এবারের অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে প্রথম মৃত্যু।

মেয়া থুই থুই খাইং নামের ওই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের ওপর বল প্রয়োগের নিন্দাও জানিয়েছে তারা। মায়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় গুরুতর আহত পুলিশের এক সদস্যের মৃতু্যুর সংবাদও নিশ্চিত করেছে।