আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পেলেন ৩ গুণী এবং এক প্রতিষ্ঠান

সরাসরি হাতে পদক তুলে দিতে না পেরে প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ

প্রথমবারের মতো এবছর মাতৃভাষা পদক দিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদানের জন্য জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ তিন ব্যক্তি এবং এক প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রথমবারের মতো তুলে দেয়া হলো ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’।

গতকাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পদক তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১ এর উদ্বোধন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে অবদানের জন্য খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পেয়েছেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উজবেকিস্তানের গবেষক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ এবং লাতিন আমেরিকার আদি ভাষাগুলো নিয়ে কাজ করা বলিভিয়ার অনলাইন উদ্যোগ অ্যাক্টিভিজমো ল্যাংগুয়েজ এ বছর বাংলাদেশ সরকারের এ সম্মাননা পেয়েছেন।

অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পদক গ্রহণ করেন। ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচের পক্ষে উজবেকিস্তানের অনারারি কনসাল তাহের শাহ এবং অ্যাক্টিভিজমো ল্যাংগুয়েজের পক্ষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পদক নেন।

সরকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এ বছরই প্রথম এ সম্মাননা দেয়া হলো। দুই বছর পর পর জাতীয় পর্যায়ে দুটি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুটি পদক দেয়া হবে। নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক। ৮৭ বছর বয়সী এই ভাষাবিজ্ঞানী, লেখক ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। সেই সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্রও ধারণ করেছেন তিনি।

বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেইসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন তার লেখায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রথম গ্রন্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসের প্রথম গ্রন্থসহ প্রায় ৩০টি বই তার হাত দিয়ে এসেছে। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের সাবেক এই উপাচার্য এক সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক করে নেয়।

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এর আগে একুশে পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাওয়া আরেক বাংলাদেশি মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ ও এসব ভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম প্রণয়নে কাজ করেছেন। দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার চিত্র, মাতৃভাষায় শিক্ষা পরিস্থিতি, মাতৃভাষাভিত্তিক বহুভাষিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

সরাসরি নিজের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে না পারায় দুঃখপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রথম ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক ২০২১’ এবং ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক ২০২১’ দেয়া হলো। আমার দুঃখ এখানে থেকে গেল, আমি নিজে উপস্থিত থাকতে পারলাম না।

‘বিশেষ করে যখন আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রফিকুল ইসলাম স্যারের হাতে পদক তুলে দেয়া, এটা আমার জন্য কত সম্মানের এবং গৌরবের। কিন্তু আমার দুঃখ এখানে নিজের হাতে দিতে পারলাম না। স্যার আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন। ’

সরকারপ্রধান বলেন, আসলে প্রধানমন্ত্রী হলে সব স্বাধীনতা থাকে না। অনেকটা বন্দী জীবন-যাপন করতে হয়। সেরকমই আছি। কারণ আমি এক জায়গায় যেতে গেলে আমার সঙ্গে বহু লোক, নিরাপত্তার লোক, অমুক লোক, তমুক লোক, প্রায় হাজার খানেক লোককে রাস্তায় দাঁড় করায়ে নানাভাবে তাদের কাজে লাগায়। তাদের কথা চিন্তা করেই কিন্তু আমি যেতে পারিনি।

পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অভিনন্দন জানাই আপনাকে। একই সঙ্গে আরও যারা পুরস্কারটা পেয়েছেন যেমন মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা আমাদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর গবেষণা করেছেন। তাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উজবেকিস্তান, বলিভিয়ার পেয়েছেন তাদেরও আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, উজবেকিস্তানের নাগরিক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ তার মাতৃভাষার গবেষণায় অনন্য সাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। উজবেক ভাষার চর্চার প্রসার, সংরক্ষণ এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে তার ভূমিকা অগ্রগণ্য। ভাষাবিজ্ঞানের বিষয়গুলো ছাড়াও আর্থ-সামাজিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটগুলো তার কাজে গুরুত্ব পেয়েছে। বিশ্বে মাতৃভাষা হিসেবে উজবেক ভাষার অবস্থান সংহত করতে বিভিন্ন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ। লাতিন আমেরিকার স্থানীয় ভাষাগুলোকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে বলিভিয়ার অ্যাক্টিভিজমো ল্যাগুয়েজ। এ সংস্থার কোন অফিস নেই, এ উদ্যোগে জড়িত সবাই কাজ করেন ভার্চুয়ালি।

২০১৪ সালে মেক্সিকোতে ইনডিজেনাস ল্যাংগুয়েজ ডিজিটাল অ্যাক্টিভিস্টসদের প্রথম সম্মেলনের পর অ্যাক্টিভিজমো ল্যংগুয়েজের যাত্রা শুরু হয়। আমেনিকার লাতিন ভাষাভাষী অঞ্চলের আদিবাসীদের মাতৃভাষা এবং পুরনো ভাষাগুলোর সংরক্ষণ, প্রসার ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে এ সংস্থা।

অনুষ্ঠানে ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মিস বিয়েট্রিস খালদুন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রান্তে এই সময় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিত থাকার পাশপাশি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জীনাত ইমতিয়াজ আলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৯ ফাল্গুন ১৪২৭ ৯ রজব ১৪৪২

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পেলেন ৩ গুণী এবং এক প্রতিষ্ঠান

সরাসরি হাতে পদক তুলে দিতে না পেরে প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

প্রথমবারের মতো এবছর মাতৃভাষা পদক দিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদানের জন্য জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ তিন ব্যক্তি এবং এক প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রথমবারের মতো তুলে দেয়া হলো ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’।

গতকাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পদক তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১ এর উদ্বোধন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণে অবদানের জন্য খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পেয়েছেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উজবেকিস্তানের গবেষক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ এবং লাতিন আমেরিকার আদি ভাষাগুলো নিয়ে কাজ করা বলিভিয়ার অনলাইন উদ্যোগ অ্যাক্টিভিজমো ল্যাংগুয়েজ এ বছর বাংলাদেশ সরকারের এ সম্মাননা পেয়েছেন।

অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পদক গ্রহণ করেন। ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচের পক্ষে উজবেকিস্তানের অনারারি কনসাল তাহের শাহ এবং অ্যাক্টিভিজমো ল্যাংগুয়েজের পক্ষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন পদক নেন।

সরকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এ বছরই প্রথম এ সম্মাননা দেয়া হলো। দুই বছর পর পর জাতীয় পর্যায়ে দুটি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুটি পদক দেয়া হবে। নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক এবং নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক। ৮৭ বছর বয়সী এই ভাষাবিজ্ঞানী, লেখক ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। সেই সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্রও ধারণ করেছেন তিনি।

বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের এই প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেইসব ইতিহাস গ্রন্থিত করেছেন তার লেখায়। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রথম গ্রন্থ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসের প্রথম গ্রন্থসহ প্রায় ৩০টি বই তার হাত দিয়ে এসেছে। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের সাবেক এই উপাচার্য এক সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালে সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক করে নেয়।

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এর আগে একুশে পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক পাওয়া আরেক বাংলাদেশি মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ ও এসব ভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম প্রণয়নে কাজ করেছেন। দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার চিত্র, মাতৃভাষায় শিক্ষা পরিস্থিতি, মাতৃভাষাভিত্তিক বহুভাষিক শিক্ষাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

সরাসরি নিজের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে না পারায় দুঃখপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রথম ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক ২০২১’ এবং ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক ২০২১’ দেয়া হলো। আমার দুঃখ এখানে থেকে গেল, আমি নিজে উপস্থিত থাকতে পারলাম না।

‘বিশেষ করে যখন আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রফিকুল ইসলাম স্যারের হাতে পদক তুলে দেয়া, এটা আমার জন্য কত সম্মানের এবং গৌরবের। কিন্তু আমার দুঃখ এখানে নিজের হাতে দিতে পারলাম না। স্যার আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন। ’

সরকারপ্রধান বলেন, আসলে প্রধানমন্ত্রী হলে সব স্বাধীনতা থাকে না। অনেকটা বন্দী জীবন-যাপন করতে হয়। সেরকমই আছি। কারণ আমি এক জায়গায় যেতে গেলে আমার সঙ্গে বহু লোক, নিরাপত্তার লোক, অমুক লোক, তমুক লোক, প্রায় হাজার খানেক লোককে রাস্তায় দাঁড় করায়ে নানাভাবে তাদের কাজে লাগায়। তাদের কথা চিন্তা করেই কিন্তু আমি যেতে পারিনি।

পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অভিনন্দন জানাই আপনাকে। একই সঙ্গে আরও যারা পুরস্কারটা পেয়েছেন যেমন মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা আমাদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর গবেষণা করেছেন। তাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উজবেকিস্তান, বলিভিয়ার পেয়েছেন তাদেরও আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, উজবেকিস্তানের নাগরিক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ তার মাতৃভাষার গবেষণায় অনন্য সাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। উজবেক ভাষার চর্চার প্রসার, সংরক্ষণ এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে তার ভূমিকা অগ্রগণ্য। ভাষাবিজ্ঞানের বিষয়গুলো ছাড়াও আর্থ-সামাজিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটগুলো তার কাজে গুরুত্ব পেয়েছে। বিশ্বে মাতৃভাষা হিসেবে উজবেক ভাষার অবস্থান সংহত করতে বিভিন্ন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ। লাতিন আমেরিকার স্থানীয় ভাষাগুলোকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে বলিভিয়ার অ্যাক্টিভিজমো ল্যাগুয়েজ। এ সংস্থার কোন অফিস নেই, এ উদ্যোগে জড়িত সবাই কাজ করেন ভার্চুয়ালি।

২০১৪ সালে মেক্সিকোতে ইনডিজেনাস ল্যাংগুয়েজ ডিজিটাল অ্যাক্টিভিস্টসদের প্রথম সম্মেলনের পর অ্যাক্টিভিজমো ল্যংগুয়েজের যাত্রা শুরু হয়। আমেনিকার লাতিন ভাষাভাষী অঞ্চলের আদিবাসীদের মাতৃভাষা এবং পুরনো ভাষাগুলোর সংরক্ষণ, প্রসার ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে এ সংস্থা।

অনুষ্ঠানে ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মিস বিয়েট্রিস খালদুন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রান্তে এই সময় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিত থাকার পাশপাশি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জীনাত ইমতিয়াজ আলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।