ভাষা শহীদ স্মরণে বিদেশের মাটিতে বিভিন্ন শহরে রয়েছে শহীদ মিনার

ভাষা শহীদদের স্মরণে বিদেশের মাটিতে বিভিন্ন শহরে রয়েছে শহীদ মিনার। বাংলাদেশের বাইরে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় লন্ডনে। গ্রেট মেনচেস্টারের ওল্ডহ্যামের ওয়েস্টহুড নেবারহুডে তৈরি করা হয় এই শহীদ মিনারটি। ১৯৯৭ সালের ৫ অক্টোবর এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এছাড়া ভারত, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কানাডা, প্যারিস, রোম, টোকিওসহ ২০টির বেশি শহরে শহীদ মিনার রয়েছে।

গতকাল শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে ২০টিরও বেশি স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি করা হবে। গতকাল ফ্রান্সের তুলস শহরে একটি শহীদ মিনার উদ্বোধন করার কথা। এছাড়া ব্রাজিলের একটি শহরে শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে। এছাড়া রোম, টোকিওসহ আরও অনেক শহরে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে এবং হবে। ভাষার জন্য বাঙালি রক্ত দিয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের দায়িত্ব অন্য দেশের ভাষা রক্ষা করার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করা।’

জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় জাতিসংঘের সাধারণ সভায়। অতঃপর দিনকে স্বীকৃতি দিতে ১৮৮টি দেশ তাদের নীতিগত সমর্থন জানায়। এ প্রস্তাবে কোন দেশই কোনরকম বিরোধিতা করেনি, এমনকি পাকিস্তানও নয়। সর্বশেষে সে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২১ ফেব্রুয়ারি গৃহীত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। তারপর থেকে জাতীয় পরিসর থেকে আন্তর্জাতিক পরিম-লে পালিত হতে থাকে দিনটি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার। বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে এখন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে ভারত, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কানাডা, প্যারিসে।

লন্ডনে প্রথম শহীদ মিনার

বাংলাদেশের বাইরে প্রথম শহীদ মিনার স্থাপিত হয় লন্ডনে। গ্রেট মেনচেস্টারের ওল্ডহ্যামের ওয়েস্টহুড নেবারহুডে তৈরি হয়েছে এ মিনার। ১৯৯৭ সালের ৫ অক্টোবর সেখানকার ‘বাংলাদেশি কালচারাল অ্যান্ড হিস্ট্রি ইন ওল্ডহ্যাম’ সেদেশে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। লন্ডনে নির্মিত হয়েছে ৩টি স্থায়ী শহীদ মিনার। বাকি দুটি হলো আলতাব আলী পার্কে যা স্থাপিত হয় ১৯৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এবং লুটন শহরে যা স্থাপিত হয় ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মিত ওল্ডহামের এ শহীদ মিনারটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় ১৯৯৬ সালে। ১৯৯৭ সালের ৫ অক্টোবর তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। বাংলাদেশের বাইরে স্থায়ীভাবে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার এটি। ১৯৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডন শহরের অ্যাডলার স্ট্রিটে অবস্থিত হুয়াইট চার্চ লেন এবং হুইটচ্যাপেল হাই স্ট্রিটের পার্শ্ববর্তী আলতাব আলী পার্কে ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের রেপ্লিকা তৈরি করা হয়। আগে এ পার্কটির নাম ছিল সেন্ট মেরিস পার্ক। একজন প্রবাসী বাঙালি আলতাব আলীর স্মরণে পরবর্তী সময়ে এ পার্কটির নামকরণ করা হয় আলতাব আলী পার্ক। এ পার্কের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে শহীদ মিনারটির ছোট রেপ্লিকা অবস্থিত। মূলত ১৯৭৮ সালে ৪ মে প্রবাসী বাঙালি আলতাব আলী কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বর্ণবাদী হামলায় নিহত হন। তারপর সে এক ইতিহাস। পূর্ব লন্ডনের রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। আলতাব আলীর কফিনের পেছনে পেছনে হেঁটে যায় তারা। সে ছিল এক সংহতি, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিশাল ঐক্য। তারই স্মৃতিরক্ষার্থে নির্মিত হয় এ শহীদ মিনারে রিপ্লিকা। ভাষা নয়, বর্ণবাদের কারণে নিহত কোন শহীদের উদ্দেশে এটি পৃথিবীর প্রথম কোন বাঙালির স্মৃতিসৌধ।

জাপানে শহীদ মিনার

বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সরকার নির্মিত এটি প্রথম শহীদ মিনার। এর আয়তন উচ্চতায় ২ দশমিক ৬ মিটার এবং প্রস্থে ২ দশমিক ৫ মিটার। ঢাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মাপের সঙ্গে মিলিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ স্টিল ফ্রেমে তৈরি এটি। জাপানের সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র, পার্ক প্রাঙ্গণের টোকিও মেট্রোপোলিটন আর্ট স্পেস-এর ইকেবুকুরো নিশিগুচি পার্কের পশ্চিম গেইটে এটি অবস্থিত। এ পার্কে শহীদ মিনার আছে বলে প্রবাসীরা পার্কটিকে নাম দিয়েছে ‘শহীদ মিনার পার্ক’। পার্কটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিশেষভাবে সমাদৃত।

কলকাতায় শহীদ মিনার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ময়দানে এটি অবস্থিত। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কমান্ডার মেজর জেনারেল স্যার ডেভিড অক্টারলোনি এটি নির্মাণ করেন। এক সময় এটি অক্টারলোনি মনুমেন্ট নামে পরিচিত ছিল। এর বর্তমান নাম শহীদ মিনার। এর উচ্চতা ৪৮ মিটার (১৫৭ ফুট)। মিশরীয়ান, সাইরিয়ান, তুর্কীয় স্থাপত্যের আদলে এটি তৈরি করা হয়েছে। এর প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন ডেভিড অক্টারলোনি। ভারতে রয়েছে ৩টি শহীদ মিনার। এরমধ্যে দুটি হলো পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া এবং চন্দন নগরে। তাছাড়া ১৯৬১ সালে শিলচরে সেখানকার শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার নির্মিত হয়। এমনকি কলকাতার উপ-দূতাবাসের প্রাঙ্গণেও শহীদ মিনার নির্মিত হচ্ছে। প্রায় দেড় লাখ রুপি ব্যয়ে আর সিসি ও টাইলস দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে। এ স্মারকটির ভিত্তি ৩ ফুট ও উচ্চতায় ১১ ফুট।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধ

এটি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের ওরমন্ড স্ট্রিটের অ্যাসফিল্ড পার্কে অবস্থিত। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। স্মৃতিসৌধটি সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি। এর সম্মুখভাগে একটি গ্লোব বসানো আছে। মূলত বিশ্বব্যাপী ভাষা ও সংস্কৃতিকে উৎসাহদানে ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করার পর বহির্বিশ্বে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এর সফল বাস্তবায়ন এই স্মৃতিসৌধ।

কানাডায় শহীদ মিনার

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেতনাকে ধারণ করে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের বিখ্যাত নগরী ভ্যাঙ্কুভারের পাশে ছোট শহর সুরে’র বিয়ার ক্রিক পার্কে নির্মিত হয়েছে স্থাপনা শিল্প লিঙ্গুয়া অ্যাকুয়া। এটি মূলত ভাস্কর্য, স্থাপত্য, গ্রাফিক, অডিওভিজুয়াল এবং জলতরঙ্গের এক নান্দনিক বিন্যাস। ২০০৯ সালের ১১ জুলাই এই নান্দনিক মনুমেন্টটির উদ্বোধন করা হয়।

সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৯ ফাল্গুন ১৪২৭ ৯ রজব ১৪৪২

ভাষা শহীদ স্মরণে বিদেশের মাটিতে বিভিন্ন শহরে রয়েছে শহীদ মিনার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

ভাষা শহীদদের স্মরণে বিদেশের মাটিতে বিভিন্ন শহরে রয়েছে শহীদ মিনার। বাংলাদেশের বাইরে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় লন্ডনে। গ্রেট মেনচেস্টারের ওল্ডহ্যামের ওয়েস্টহুড নেবারহুডে তৈরি করা হয় এই শহীদ মিনারটি। ১৯৯৭ সালের ৫ অক্টোবর এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এছাড়া ভারত, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কানাডা, প্যারিস, রোম, টোকিওসহ ২০টির বেশি শহরে শহীদ মিনার রয়েছে।

গতকাল শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে ২০টিরও বেশি স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি করা হবে। গতকাল ফ্রান্সের তুলস শহরে একটি শহীদ মিনার উদ্বোধন করার কথা। এছাড়া ব্রাজিলের একটি শহরে শীঘ্রই উদ্বোধন করা হবে। এছাড়া রোম, টোকিওসহ আরও অনেক শহরে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়েছে এবং হবে। ভাষার জন্য বাঙালি রক্ত দিয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের দায়িত্ব অন্য দেশের ভাষা রক্ষা করার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করা।’

জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় জাতিসংঘের সাধারণ সভায়। অতঃপর দিনকে স্বীকৃতি দিতে ১৮৮টি দেশ তাদের নীতিগত সমর্থন জানায়। এ প্রস্তাবে কোন দেশই কোনরকম বিরোধিতা করেনি, এমনকি পাকিস্তানও নয়। সর্বশেষে সে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২১ ফেব্রুয়ারি গৃহীত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। তারপর থেকে জাতীয় পরিসর থেকে আন্তর্জাতিক পরিম-লে পালিত হতে থাকে দিনটি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার। বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে এখন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে ভারত, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কানাডা, প্যারিসে।

লন্ডনে প্রথম শহীদ মিনার

বাংলাদেশের বাইরে প্রথম শহীদ মিনার স্থাপিত হয় লন্ডনে। গ্রেট মেনচেস্টারের ওল্ডহ্যামের ওয়েস্টহুড নেবারহুডে তৈরি হয়েছে এ মিনার। ১৯৯৭ সালের ৫ অক্টোবর সেখানকার ‘বাংলাদেশি কালচারাল অ্যান্ড হিস্ট্রি ইন ওল্ডহ্যাম’ সেদেশে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। লন্ডনে নির্মিত হয়েছে ৩টি স্থায়ী শহীদ মিনার। বাকি দুটি হলো আলতাব আলী পার্কে যা স্থাপিত হয় ১৯৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এবং লুটন শহরে যা স্থাপিত হয় ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে নির্মিত ওল্ডহামের এ শহীদ মিনারটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় ১৯৯৬ সালে। ১৯৯৭ সালের ৫ অক্টোবর তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। বাংলাদেশের বাইরে স্থায়ীভাবে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার এটি। ১৯৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডন শহরের অ্যাডলার স্ট্রিটে অবস্থিত হুয়াইট চার্চ লেন এবং হুইটচ্যাপেল হাই স্ট্রিটের পার্শ্ববর্তী আলতাব আলী পার্কে ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের রেপ্লিকা তৈরি করা হয়। আগে এ পার্কটির নাম ছিল সেন্ট মেরিস পার্ক। একজন প্রবাসী বাঙালি আলতাব আলীর স্মরণে পরবর্তী সময়ে এ পার্কটির নামকরণ করা হয় আলতাব আলী পার্ক। এ পার্কের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে শহীদ মিনারটির ছোট রেপ্লিকা অবস্থিত। মূলত ১৯৭৮ সালে ৪ মে প্রবাসী বাঙালি আলতাব আলী কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বর্ণবাদী হামলায় নিহত হন। তারপর সে এক ইতিহাস। পূর্ব লন্ডনের রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। আলতাব আলীর কফিনের পেছনে পেছনে হেঁটে যায় তারা। সে ছিল এক সংহতি, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিশাল ঐক্য। তারই স্মৃতিরক্ষার্থে নির্মিত হয় এ শহীদ মিনারে রিপ্লিকা। ভাষা নয়, বর্ণবাদের কারণে নিহত কোন শহীদের উদ্দেশে এটি পৃথিবীর প্রথম কোন বাঙালির স্মৃতিসৌধ।

জাপানে শহীদ মিনার

বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সরকার নির্মিত এটি প্রথম শহীদ মিনার। এর আয়তন উচ্চতায় ২ দশমিক ৬ মিটার এবং প্রস্থে ২ দশমিক ৫ মিটার। ঢাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মাপের সঙ্গে মিলিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ স্টিল ফ্রেমে তৈরি এটি। জাপানের সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র, পার্ক প্রাঙ্গণের টোকিও মেট্রোপোলিটন আর্ট স্পেস-এর ইকেবুকুরো নিশিগুচি পার্কের পশ্চিম গেইটে এটি অবস্থিত। এ পার্কে শহীদ মিনার আছে বলে প্রবাসীরা পার্কটিকে নাম দিয়েছে ‘শহীদ মিনার পার্ক’। পার্কটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিশেষভাবে সমাদৃত।

কলকাতায় শহীদ মিনার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ময়দানে এটি অবস্থিত। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কমান্ডার মেজর জেনারেল স্যার ডেভিড অক্টারলোনি এটি নির্মাণ করেন। এক সময় এটি অক্টারলোনি মনুমেন্ট নামে পরিচিত ছিল। এর বর্তমান নাম শহীদ মিনার। এর উচ্চতা ৪৮ মিটার (১৫৭ ফুট)। মিশরীয়ান, সাইরিয়ান, তুর্কীয় স্থাপত্যের আদলে এটি তৈরি করা হয়েছে। এর প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন ডেভিড অক্টারলোনি। ভারতে রয়েছে ৩টি শহীদ মিনার। এরমধ্যে দুটি হলো পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া এবং চন্দন নগরে। তাছাড়া ১৯৬১ সালে শিলচরে সেখানকার শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার নির্মিত হয়। এমনকি কলকাতার উপ-দূতাবাসের প্রাঙ্গণেও শহীদ মিনার নির্মিত হচ্ছে। প্রায় দেড় লাখ রুপি ব্যয়ে আর সিসি ও টাইলস দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে। এ স্মারকটির ভিত্তি ৩ ফুট ও উচ্চতায় ১১ ফুট।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধ

এটি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের ওরমন্ড স্ট্রিটের অ্যাসফিল্ড পার্কে অবস্থিত। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। স্মৃতিসৌধটি সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি। এর সম্মুখভাগে একটি গ্লোব বসানো আছে। মূলত বিশ্বব্যাপী ভাষা ও সংস্কৃতিকে উৎসাহদানে ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করার পর বহির্বিশ্বে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এর সফল বাস্তবায়ন এই স্মৃতিসৌধ।

কানাডায় শহীদ মিনার

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেতনাকে ধারণ করে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের বিখ্যাত নগরী ভ্যাঙ্কুভারের পাশে ছোট শহর সুরে’র বিয়ার ক্রিক পার্কে নির্মিত হয়েছে স্থাপনা শিল্প লিঙ্গুয়া অ্যাকুয়া। এটি মূলত ভাস্কর্য, স্থাপত্য, গ্রাফিক, অডিওভিজুয়াল এবং জলতরঙ্গের এক নান্দনিক বিন্যাস। ২০০৯ সালের ১১ জুলাই এই নান্দনিক মনুমেন্টটির উদ্বোধন করা হয়।