শিক্ষার্থীদের অন্ধকারাচ্ছন্ন এক বছর

শীতের শেষে এসেছে ঋতুতে পরিবর্তন। সবার মাঝে হাজির হয়েছে ঋতুরাজ বসন্ত। তবু যেন শিক্ষার্থীদের জীবন ছেয়ে রয়েছে ঘন কুয়াশাতে। তাদের জন্য কোন খুশির বার্তা নিয়ে আসেনি এবারের বসন্ত। তাদের অপেক্ষার প্রহর যেন ফুরোতেই চাইছে না। তবে কি এ বসন্তেও রয়ে যাবে অমাবস্যার অন্ধকার? কবে আলোর দেখা মিলবে, শিক্ষার্থীরা রয়েছে তারই প্রতীক্ষায়।

প্রায় এক বছর হতে চললো দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। করোনা মহামারি শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে একটি বছর। এরই মাঝে শ্রেণীকক্ষের দেয়ালগুলোতে মাকড়সা জাল বুনেছে আর চেয়ার, টেবিল ও বেঞ্চগুলোতে পড়েছে ধুলো-ময়লার আস্তরণ। শিক্ষার্থীদের দশাও শ্রেণীকক্ষগুলোর মতোই, তাদের মস্তিষ্কে পড়ালেখা নামক শব্দটি ময়লায় চাপা পড়েছে। তারা যে শিক্ষার্থী সে কথাও হয়তো ভুলতে বসেছে অনেকেই। তাদের পড়ার টেবিল আর বই খাতার অবস্থা দেখে মনে হবে সাইমুম ঝড় এসে সব লন্ডভন্ড করে গেছে। তার সাক্ষী হিসেবে শুধু রেখে গেছে ধুলো-বালির আস্তরণ।

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা মনের অন্ধকার দূর করে। শিক্ষা সবাইকে আলোর পথ দেখায়। শিক্ষা জাতি গঠনে সহায়তা করে। শিক্ষা নিয়ে এ রকম কতো কথাই না রয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা সেসব শিক্ষা অর্জন করতে যায়, সে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই আজ বন্ধ।

করোনা মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেই রয়েছে ঘোর অন্ধকারে। তাহলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলো পাবে কোথায়? জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা করবে কোথায়?

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্যতীত শিক্ষাঙ্গন এত দীর্ঘদিন বন্ধ দেখেনি কেউই। এক কথাই বলা চলে শিক্ষার্থীদের অন্ধকারাচ্ছন্ন এক বছর। কেউ কি কখনও ভেবেছিলো এত দীর্ঘদিন বন্ধ রাখতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান? করোনা মহামারি এলোমেলো করে দিয়েছে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা।

চার দেয়ালে বন্দি থেকে শিক্ষার্থীরা আজ ক্লান্ত। তারা ফিরতে চায় শিক্ষাঙ্গনে, ফিরতে চায় তাদের স্বাভাবিক জীবনে। সময় এসেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার। অন্ধকার দূরীভূত হয়ে ঝলমলে আলোর প্রত্যাশায় শিক্ষার্থীরা। বসন্ত পেরিয়ে গ্রীষ্ম আসার আগেই প্রাণের সঞ্চার হোক শিক্ষার্থীদের জীবনে।

মো. শফিউল্লাহ

বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১১ ফাল্গুন ১৪২৭ ১১ রজব ১৪৪২

শিক্ষার্থীদের অন্ধকারাচ্ছন্ন এক বছর

শীতের শেষে এসেছে ঋতুতে পরিবর্তন। সবার মাঝে হাজির হয়েছে ঋতুরাজ বসন্ত। তবু যেন শিক্ষার্থীদের জীবন ছেয়ে রয়েছে ঘন কুয়াশাতে। তাদের জন্য কোন খুশির বার্তা নিয়ে আসেনি এবারের বসন্ত। তাদের অপেক্ষার প্রহর যেন ফুরোতেই চাইছে না। তবে কি এ বসন্তেও রয়ে যাবে অমাবস্যার অন্ধকার? কবে আলোর দেখা মিলবে, শিক্ষার্থীরা রয়েছে তারই প্রতীক্ষায়।

প্রায় এক বছর হতে চললো দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। করোনা মহামারি শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে একটি বছর। এরই মাঝে শ্রেণীকক্ষের দেয়ালগুলোতে মাকড়সা জাল বুনেছে আর চেয়ার, টেবিল ও বেঞ্চগুলোতে পড়েছে ধুলো-ময়লার আস্তরণ। শিক্ষার্থীদের দশাও শ্রেণীকক্ষগুলোর মতোই, তাদের মস্তিষ্কে পড়ালেখা নামক শব্দটি ময়লায় চাপা পড়েছে। তারা যে শিক্ষার্থী সে কথাও হয়তো ভুলতে বসেছে অনেকেই। তাদের পড়ার টেবিল আর বই খাতার অবস্থা দেখে মনে হবে সাইমুম ঝড় এসে সব লন্ডভন্ড করে গেছে। তার সাক্ষী হিসেবে শুধু রেখে গেছে ধুলো-বালির আস্তরণ।

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা মনের অন্ধকার দূর করে। শিক্ষা সবাইকে আলোর পথ দেখায়। শিক্ষা জাতি গঠনে সহায়তা করে। শিক্ষা নিয়ে এ রকম কতো কথাই না রয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা সেসব শিক্ষা অর্জন করতে যায়, সে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই আজ বন্ধ।

করোনা মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেই রয়েছে ঘোর অন্ধকারে। তাহলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার আলো পাবে কোথায়? জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা করবে কোথায়?

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্যতীত শিক্ষাঙ্গন এত দীর্ঘদিন বন্ধ দেখেনি কেউই। এক কথাই বলা চলে শিক্ষার্থীদের অন্ধকারাচ্ছন্ন এক বছর। কেউ কি কখনও ভেবেছিলো এত দীর্ঘদিন বন্ধ রাখতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান? করোনা মহামারি এলোমেলো করে দিয়েছে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা।

চার দেয়ালে বন্দি থেকে শিক্ষার্থীরা আজ ক্লান্ত। তারা ফিরতে চায় শিক্ষাঙ্গনে, ফিরতে চায় তাদের স্বাভাবিক জীবনে। সময় এসেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার। অন্ধকার দূরীভূত হয়ে ঝলমলে আলোর প্রত্যাশায় শিক্ষার্থীরা। বসন্ত পেরিয়ে গ্রীষ্ম আসার আগেই প্রাণের সঞ্চার হোক শিক্ষার্থীদের জীবনে।

মো. শফিউল্লাহ