বিদেশি বিনিয়োগ টানতে প্রচারণা চালাবে বিডা

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। প্রতিবছর ঘুরে ফিরে গড়ে ৩০০ কোটি ডলার এফডিআই (ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) আসে দেশে। কাঙ্খিত বিনিয়োগ না আসার পেছনে অনুকূল পরিবেশ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও বাংলাদেশ সম্পর্কে দেশের বাইরে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তাই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিডা। এ জন্য দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে কয়েকটি দেশে প্রচারণা চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই সমঝোতার অংশ হিসেবেই চলতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ-ইতালি বিনিয়োগ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজনে কাজ করবে বিবিএফ। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী দিনে বাংলাদেশে আরও বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে দুই সংস্থা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে।

অনুষ্ঠানে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত একযুগের উন্নয়নে বিশ্বে আজ বাংলাদেশ বিস্ময়। সামনে আমাদের কিছু টার্গেট আছে, তা হলো ২০৩১ সালে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্য-উন্নত দেশে পরিণত হওয়া, যা বিদেশি বিনিয়োগের ওপরে নির্ভরশীল। আর বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিডা। উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতা এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু আমরা কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং নতুন সুযোগগুলো অর্জন করার লক্ষ্য নিয়েছি। বিডা ও বিবিএফের অংশীদারিত্ব আরও বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

বিবিএফের চেয়ারম্যান মাসুদ এ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে আরও ব্যাপক পরিসরে প্রচার করতে হবে, যা বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমরা আমাদের বিবিএফ গ্লোবাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করব। বিবিএফ বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের বিনিয়োগের বিভিন্ন খাত যেমন কৃষি, আইসিটি, ইলেকট্রনিক্স, হালকা প্রকৌশল, এনার্জি, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্যসেবাসহ অগ্রাধিকার খাতগুলো তুলে ধরবে যা দেশে অধিক হারে বিনিয়োগে সহায়ক হবে।’

বিডার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরে গড়ে ৩০০ কোটি ডলার করে এফডিআই আসছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা সহজীকরণ সূচকে ১৯০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। সবশেষ প্রতিবেদনে এই অবস্থান ১৬৮তম। এমন বাস্তবতায় বিদেশে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত করতে বিবিএফকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার।

জানতে চাইলে বিবিএফের চেয়ারম্যান মাসুদ এ খান আরও বলেন, আমাদের বৈশ্বিক একটা নেটওয়ার্ক আছে। আমরা বিদেশি দূতাবাসগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) সেবাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরা হবে। এটা ঠিক যে বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা সহজীকরণ সূচকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। বিদ্যমান যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে তা উতরাতে চাই।

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১২ ফাল্গুন ১৪২৭ ১২ রজব ১৪৪২

বিদেশি বিনিয়োগ টানতে প্রচারণা চালাবে বিডা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। প্রতিবছর ঘুরে ফিরে গড়ে ৩০০ কোটি ডলার এফডিআই (ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) আসে দেশে। কাঙ্খিত বিনিয়োগ না আসার পেছনে অনুকূল পরিবেশ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও বাংলাদেশ সম্পর্কে দেশের বাইরে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তাই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিডা। এ জন্য দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে কয়েকটি দেশে প্রচারণা চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই সমঝোতার অংশ হিসেবেই চলতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ-ইতালি বিনিয়োগ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজনে কাজ করবে বিবিএফ। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী দিনে বাংলাদেশে আরও বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে দুই সংস্থা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে।

অনুষ্ঠানে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত একযুগের উন্নয়নে বিশ্বে আজ বাংলাদেশ বিস্ময়। সামনে আমাদের কিছু টার্গেট আছে, তা হলো ২০৩১ সালে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্য-উন্নত দেশে পরিণত হওয়া, যা বিদেশি বিনিয়োগের ওপরে নির্ভরশীল। আর বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিডা। উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতা এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু আমরা কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং নতুন সুযোগগুলো অর্জন করার লক্ষ্য নিয়েছি। বিডা ও বিবিএফের অংশীদারিত্ব আরও বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

বিবিএফের চেয়ারম্যান মাসুদ এ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে আরও ব্যাপক পরিসরে প্রচার করতে হবে, যা বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আমরা আমাদের বিবিএফ গ্লোবাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করব। বিবিএফ বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের বিনিয়োগের বিভিন্ন খাত যেমন কৃষি, আইসিটি, ইলেকট্রনিক্স, হালকা প্রকৌশল, এনার্জি, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্যসেবাসহ অগ্রাধিকার খাতগুলো তুলে ধরবে যা দেশে অধিক হারে বিনিয়োগে সহায়ক হবে।’

বিডার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশে কয়েক বছর ধরে গড়ে ৩০০ কোটি ডলার করে এফডিআই আসছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা সহজীকরণ সূচকে ১৯০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। সবশেষ প্রতিবেদনে এই অবস্থান ১৬৮তম। এমন বাস্তবতায় বিদেশে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত করতে বিবিএফকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার।

জানতে চাইলে বিবিএফের চেয়ারম্যান মাসুদ এ খান আরও বলেন, আমাদের বৈশ্বিক একটা নেটওয়ার্ক আছে। আমরা বিদেশি দূতাবাসগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) সেবাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরা হবে। এটা ঠিক যে বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা সহজীকরণ সূচকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। বিদ্যমান যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে তা উতরাতে চাই।