গাংনীতে নানামুখী ব্যবহারে সড়ক এখন মরণফাঁদ

গাংনী উপজেলার বিভিন্ন সড়ক এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ইটভাটায় মাটি বহনের ফলে রাস্তায় মাটি পড়ে ধুলার সৃষ্টি ছাড়াও রাস্তার ওপর ফসল মাড়াই, শাক সবজির ডাঁটা শুকানো ও জ্বালানি কাঠ ফেলে রাখায় যান চলাচলে বিঘœ ঘটছে, ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও সমাধানের কোন পদক্ষেপ নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গাংনী উপজেলার চিৎলা, যুগিন্দা, বাহাগুন্দা, দীঘলকান্দি, রামনগর, কুলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার বেশিরভাগ দখল করে শাকসবজির ডাঁটা শুকানো ও মাড়াই করছেন কৃষকরা। সবজির কাঁচা ডাঁটার ওপর দিয়ে যানবাহন চালাতে গিয়ে চালকরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। গত মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনার শিকার হন ভরাট গ্রামের রাহাতুল (২৮) ও সাইফুল (৪৩)। একই দিনে ওই রাস্তায় একটি নসিমন উল্টে ৩ জন আহত হন। আহতরা হচ্ছেন, কুলবাড়িয়া গ্রামের রাহাতন (৪৭), সহিদুল (৩৩), রাজিব (২৩)। এছাড়াও শুক্রবার দুপুরে ধানখোলা রোডে চোখে ধুলা পড়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে আহত হন জামিরুল। বাহাগুন্দা গ্রামের সবজি চাষী আমিরুল জানান, ৩ বিঘা জমিতে তিনি লাল শাক আবাদ করেছিলেন। শাকের বীজ মাড়াইয়ের জন্য জায়গা না থাকা ছাড়াও যানবাহনের চাকায় সহজে মাড়াই হওয়ায় তিনি রাস্তার ওপর শাকের ডাঁটা ছড়িয়েছেন। একই কথা জানালেন যুগিন্দা গ্রামের মোশারফ হোসেন। তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে শাকের বীজ তৈরি করেছেন ও মাড়াইয়ের জন্য রাস্তায় শুকাতে দিয়েছেন। কুলবাড়িয়া গ্রামের সবজি চাষি মইনুল ইসলাম জানান, যদিও রাস্তার ওপর কোন ফসল মাড়াই ও শুকানো যান চলাচলের জন্য বিপদজনক তারপরও ফসল মাড়াইয়ের জন্য কোন জায়গা না থাকায় রাস্তাটি বিকল্প হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। তিনি নিজেও কয়েকদিন আগে সাইকেল চালাতে গিয়ে আহত হন। অপরদিকে গাংনীর বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি বহনের সময় রাস্তায় মাটি পড়ে ধুলার সৃষ্টি হয়। গাড়ি চলাচল ছাড়াও সামান্য বাতাসে ধুলা উড়ে চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। কয়েকজন ইটভাটা মালিক জানান, যারা মাটির ব্যবসা করেন তারা ইট ভাটাতে মাটি নিয়ে আসার সময় মাটি পড়ে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। এতে ইটভাটা মালিক দায়ী নয়। তবে সামান্য বৃষ্টিতে অধিকাংশ রাস্তায় কাদার সৃষ্টি হয়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়বে বলেও স্বীকার করেন তারা।

এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, বিষয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কেউ যাতে রাস্তা দখল করে অন্যের ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া সকল ইটভাটা মালিককে চিঠি দেয়া হয়েছে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১২ ফাল্গুন ১৪২৭ ১২ রজব ১৪৪২

গাংনীতে নানামুখী ব্যবহারে সড়ক এখন মরণফাঁদ

প্রতিনিধি, মেহেরপুর

image

গাংনী উপজেলার বিভিন্ন সড়ক এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ইটভাটায় মাটি বহনের ফলে রাস্তায় মাটি পড়ে ধুলার সৃষ্টি ছাড়াও রাস্তার ওপর ফসল মাড়াই, শাক সবজির ডাঁটা শুকানো ও জ্বালানি কাঠ ফেলে রাখায় যান চলাচলে বিঘœ ঘটছে, ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও সমাধানের কোন পদক্ষেপ নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গাংনী উপজেলার চিৎলা, যুগিন্দা, বাহাগুন্দা, দীঘলকান্দি, রামনগর, কুলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার বেশিরভাগ দখল করে শাকসবজির ডাঁটা শুকানো ও মাড়াই করছেন কৃষকরা। সবজির কাঁচা ডাঁটার ওপর দিয়ে যানবাহন চালাতে গিয়ে চালকরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। গত মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনার শিকার হন ভরাট গ্রামের রাহাতুল (২৮) ও সাইফুল (৪৩)। একই দিনে ওই রাস্তায় একটি নসিমন উল্টে ৩ জন আহত হন। আহতরা হচ্ছেন, কুলবাড়িয়া গ্রামের রাহাতন (৪৭), সহিদুল (৩৩), রাজিব (২৩)। এছাড়াও শুক্রবার দুপুরে ধানখোলা রোডে চোখে ধুলা পড়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে আহত হন জামিরুল। বাহাগুন্দা গ্রামের সবজি চাষী আমিরুল জানান, ৩ বিঘা জমিতে তিনি লাল শাক আবাদ করেছিলেন। শাকের বীজ মাড়াইয়ের জন্য জায়গা না থাকা ছাড়াও যানবাহনের চাকায় সহজে মাড়াই হওয়ায় তিনি রাস্তার ওপর শাকের ডাঁটা ছড়িয়েছেন। একই কথা জানালেন যুগিন্দা গ্রামের মোশারফ হোসেন। তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে শাকের বীজ তৈরি করেছেন ও মাড়াইয়ের জন্য রাস্তায় শুকাতে দিয়েছেন। কুলবাড়িয়া গ্রামের সবজি চাষি মইনুল ইসলাম জানান, যদিও রাস্তার ওপর কোন ফসল মাড়াই ও শুকানো যান চলাচলের জন্য বিপদজনক তারপরও ফসল মাড়াইয়ের জন্য কোন জায়গা না থাকায় রাস্তাটি বিকল্প হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। তিনি নিজেও কয়েকদিন আগে সাইকেল চালাতে গিয়ে আহত হন। অপরদিকে গাংনীর বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি বহনের সময় রাস্তায় মাটি পড়ে ধুলার সৃষ্টি হয়। গাড়ি চলাচল ছাড়াও সামান্য বাতাসে ধুলা উড়ে চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। কয়েকজন ইটভাটা মালিক জানান, যারা মাটির ব্যবসা করেন তারা ইট ভাটাতে মাটি নিয়ে আসার সময় মাটি পড়ে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। এতে ইটভাটা মালিক দায়ী নয়। তবে সামান্য বৃষ্টিতে অধিকাংশ রাস্তায় কাদার সৃষ্টি হয়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়বে বলেও স্বীকার করেন তারা।

এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, বিষয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কেউ যাতে রাস্তা দখল করে অন্যের ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া সকল ইটভাটা মালিককে চিঠি দেয়া হয়েছে রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।