বেরোবিতে চাকরি দেয়ার নামে ঘুষ

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল অর্থ একটি চক্র। শুধু তাই নয় চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারিত করেছে বেশ কয়েকজন চাকরি প্রত্যাশীকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর সম্রাট এ চক্রের মূল হোতা বলে অভিযোগ উঠেছে। তার সঙ্গে আছেন আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপাচার্য দপ্তরের প্রভাবশালী তিন কর্মকর্তা।

চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেবার ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাসিন্দা রুবেল সাদী নামে এক যুবককে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার গ্রেড ২ পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সেকশন অফিসার মনিরুজ্জামান পলাশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কম্পিউটার অপারেটর শেরেজামান সম্রাট এবং মাস্টাররোল কর্মচারী গুলশান আহমেদ শাওন। ১৬ লাখ টাকা চুক্তি করে। ইতিমধ্যে ১৩ লাখ টাকা দু’দফায় তাদের দিয়েছেন বলে চাকরি প্রত্যাশী রুবেল সাদী জানান।

বেশ কিছুদিন ঘোরানোর পর এর মূল হোতা স¤্রাট ও তার সহযোগীরা একটি নিয়োগপত্র প্রদান করে। সেটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগে গেলে নিয়োগপত্রটি ভুয়া বলে তাকে জানানো হয়। এ ধরনের কাউকেই নিয়োগ দেয়া হয়নি বলে জানিয়ে দেয়া হয়। এরপর টাকা ফেরত দেয়ার জন্য রুবেল সাদী তাদের চাপ দিলে নানা ধরনের হুমকি দেয়া হয় তাকে। রুবেল সাদীর ১৩ লাখ টাকা দেয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। এতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সম্রাট টাকা গুনে পকেটে রাখছেন একইভাবে তার সহযোগীরা টাকা নিচ্ছেন।

সরজমিন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন চাকরি প্রত্যাশী দুই নারী। তারা হলেন নগরীর বড়বাড়ি দেওডোবা এলাকার হাসি বেগম ও আয়েশা সিদ্দিকা। হাসি বেগম জানান, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার এটেনডেন্ট পদে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর চার দফায় সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সার্কুলার ছাড়াই ভিসি চাকরি দেন। অনেকেই চাকরি পেয়েছেন।

তার কথায় সরল বিশ্বাসে তাকে টাকা দেয়া হয়। এরপর তাকেসহ কয়েকজন ঢাকায় নিয়ে যান সম্রাট সেখানে ১০/১২ দিন অবস্থানও করেন এ জন্য বেশ কিছু টাকা খরচ হয়েছে তার। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে ভিসির সঙ্গে কথা বলিয়ে দিয়ে নিয়োগ করিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। ‘ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে ভিসি সাহেব যেহেতু প্রতিদিনই অফিস করেন আর স¤্রাটের সঙ্গে ভিসি সাহেবের কথাবার্তা আর দহরম মহরম দেখে নিশ্চিত ছিলাম চাকরি হবে’ বলেন হাসি বেগম।

এরপর আমাকে একটি নিয়োগপত্র দেয়া হয় সেখানে স্বাক্ষর আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামালের। নিয়োগপত্র নিয়ে প্রশানিক ভবনে গেলে তাকে জানানো হয় এ নিয়োগপত্রটি ভুয়া এ ধরনের কোন নিয়োগপত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাউকেই দেয়নি। এরপর থেকে টাকা ফেরত পাবার জন্য সম্রাটের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করে দেখা করলেও সে উল্টো নানান হুমকি দেয়। হাসি বেগম আরও জানান, সামান্য জমি ছিল তা বন্ধক রেখে মায়ের সোনার গহনা আর সুদের ওপর টাকা নিয়ে টাকা দেয়া হয়েছিল। এখন চাকরি না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

একই কথা জানালেন আয়েশা ছিদ্দিকা। তিনি জানান, তাকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেয়ার নামে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছে সম্রাট নামে ওই কর্মচারী। সে ভিসি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কথা বলে তাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বাস দিয়ে টাকা নিয়েছে। বেশ কিছুদিন ঘোরানোর পর তাকে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র দেয়া হয়। সেটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দপ্তরে গেলে তারা জানায়, এটি ভুয়া নিয়োগপত্র। এরপর কয়েকদিন ধরে টাকা ফেরতের জন্য ক্যাম্পাসে এসে তার দেখা মিলছে না ফোনও ধরে না। তিনি আরও বেশ কয়েকজনকে চাকরি দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা নিয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী সংবাদকে জানান, ভিসি দিনের পর দিন বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। এ সুযোগ নিয়েছে ভিসির দপ্তরের কিছু কর্মকর্তাসহ কয়েকজন, এরা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে চাকরি দেয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু তাই নয় এ পর্যন্ত যে সব নিয়োগ হয়েছে তার সঙ্গেও তারা জড়িত।

এভাবে বিভিন্ন জনের কাছে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। টাকা দিয়ে চাকরি না পেয়ে দিশেহারা চাকরি প্রত্যাশীরা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর স¤্রাটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি হবার আগে থেকে তিনি স্টক বিজনেস করেন আলু হলুদ কিনে রাখেন। যারা অভিযোগ করেছে তারা অগ্রিম টাকা নেয়ার পর টাকা দিচ্ছিল না, চাপ দেয়ার পর ২/৩ দফায় তাকে টাকা দিয়েছে। তিনি কারও কাছ থেকে টাকা নেননি বলে দাবি করেন তবে ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট তাবিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধির কাছে ভাইরাল ভিডিও দেখেছেন বলে জানান। তিনি জানান, ভিডিওতে দুটি জায়গায় টাকা নেবার দৃশ্য দেখা গেছে এর একটি নগরীর মিতালী রেস্টুরেন্ট অন্যটি নগরীর পার্কের মোড় বা অন্য কোন জায়গায়। তবে বঙ্গবন্ধু হলের অফিসে টাকা নেবার কোন দৃশ্য নেই। তবে ঘটনাটি দুঃখজনক সে কারণে জরুরি ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক মাসুদুল হাসানকে প্রধান করে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে জানতে তদন্ত কমিটির প্রধান মাসুদুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাকে তিন কার্যদিবসের সময় দেয়া হয়েছে সব সহযোগিতা করলে দ্রুতই প্রতিবেদন দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১২ ফাল্গুন ১৪২৭ ১২ রজব ১৪৪২

বেরোবিতে চাকরি দেয়ার নামে ঘুষ

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

image

বেরোবিতে চাকরি দেয়ার নামে ঘুষ গ্রহণের ছবি গতকাল ভাইরাল হয়

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল অর্থ একটি চক্র। শুধু তাই নয় চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারিত করেছে বেশ কয়েকজন চাকরি প্রত্যাশীকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর সম্রাট এ চক্রের মূল হোতা বলে অভিযোগ উঠেছে। তার সঙ্গে আছেন আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপাচার্য দপ্তরের প্রভাবশালী তিন কর্মকর্তা।

চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেবার ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাসিন্দা রুবেল সাদী নামে এক যুবককে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার গ্রেড ২ পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সেকশন অফিসার মনিরুজ্জামান পলাশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কম্পিউটার অপারেটর শেরেজামান সম্রাট এবং মাস্টাররোল কর্মচারী গুলশান আহমেদ শাওন। ১৬ লাখ টাকা চুক্তি করে। ইতিমধ্যে ১৩ লাখ টাকা দু’দফায় তাদের দিয়েছেন বলে চাকরি প্রত্যাশী রুবেল সাদী জানান।

বেশ কিছুদিন ঘোরানোর পর এর মূল হোতা স¤্রাট ও তার সহযোগীরা একটি নিয়োগপত্র প্রদান করে। সেটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগে গেলে নিয়োগপত্রটি ভুয়া বলে তাকে জানানো হয়। এ ধরনের কাউকেই নিয়োগ দেয়া হয়নি বলে জানিয়ে দেয়া হয়। এরপর টাকা ফেরত দেয়ার জন্য রুবেল সাদী তাদের চাপ দিলে নানা ধরনের হুমকি দেয়া হয় তাকে। রুবেল সাদীর ১৩ লাখ টাকা দেয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। এতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সম্রাট টাকা গুনে পকেটে রাখছেন একইভাবে তার সহযোগীরা টাকা নিচ্ছেন।

সরজমিন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন চাকরি প্রত্যাশী দুই নারী। তারা হলেন নগরীর বড়বাড়ি দেওডোবা এলাকার হাসি বেগম ও আয়েশা সিদ্দিকা। হাসি বেগম জানান, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার এটেনডেন্ট পদে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর চার দফায় সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সার্কুলার ছাড়াই ভিসি চাকরি দেন। অনেকেই চাকরি পেয়েছেন।

তার কথায় সরল বিশ্বাসে তাকে টাকা দেয়া হয়। এরপর তাকেসহ কয়েকজন ঢাকায় নিয়ে যান সম্রাট সেখানে ১০/১২ দিন অবস্থানও করেন এ জন্য বেশ কিছু টাকা খরচ হয়েছে তার। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে ভিসির সঙ্গে কথা বলিয়ে দিয়ে নিয়োগ করিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। ‘ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে ভিসি সাহেব যেহেতু প্রতিদিনই অফিস করেন আর স¤্রাটের সঙ্গে ভিসি সাহেবের কথাবার্তা আর দহরম মহরম দেখে নিশ্চিত ছিলাম চাকরি হবে’ বলেন হাসি বেগম।

এরপর আমাকে একটি নিয়োগপত্র দেয়া হয় সেখানে স্বাক্ষর আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামালের। নিয়োগপত্র নিয়ে প্রশানিক ভবনে গেলে তাকে জানানো হয় এ নিয়োগপত্রটি ভুয়া এ ধরনের কোন নিয়োগপত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাউকেই দেয়নি। এরপর থেকে টাকা ফেরত পাবার জন্য সম্রাটের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করে দেখা করলেও সে উল্টো নানান হুমকি দেয়। হাসি বেগম আরও জানান, সামান্য জমি ছিল তা বন্ধক রেখে মায়ের সোনার গহনা আর সুদের ওপর টাকা নিয়ে টাকা দেয়া হয়েছিল। এখন চাকরি না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

একই কথা জানালেন আয়েশা ছিদ্দিকা। তিনি জানান, তাকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি দেয়ার নামে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছে সম্রাট নামে ওই কর্মচারী। সে ভিসি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কথা বলে তাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বাস দিয়ে টাকা নিয়েছে। বেশ কিছুদিন ঘোরানোর পর তাকে একটি ভুয়া নিয়োগপত্র দেয়া হয়। সেটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দপ্তরে গেলে তারা জানায়, এটি ভুয়া নিয়োগপত্র। এরপর কয়েকদিন ধরে টাকা ফেরতের জন্য ক্যাম্পাসে এসে তার দেখা মিলছে না ফোনও ধরে না। তিনি আরও বেশ কয়েকজনকে চাকরি দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা নিয়েছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী সংবাদকে জানান, ভিসি দিনের পর দিন বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। এ সুযোগ নিয়েছে ভিসির দপ্তরের কিছু কর্মকর্তাসহ কয়েকজন, এরা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে চাকরি দেয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু তাই নয় এ পর্যন্ত যে সব নিয়োগ হয়েছে তার সঙ্গেও তারা জড়িত।

এভাবে বিভিন্ন জনের কাছে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। টাকা দিয়ে চাকরি না পেয়ে দিশেহারা চাকরি প্রত্যাশীরা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বঙ্গবন্ধু হলের কম্পিউটার অপারেটর স¤্রাটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি হবার আগে থেকে তিনি স্টক বিজনেস করেন আলু হলুদ কিনে রাখেন। যারা অভিযোগ করেছে তারা অগ্রিম টাকা নেয়ার পর টাকা দিচ্ছিল না, চাপ দেয়ার পর ২/৩ দফায় তাকে টাকা দিয়েছে। তিনি কারও কাছ থেকে টাকা নেননি বলে দাবি করেন তবে ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট তাবিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধির কাছে ভাইরাল ভিডিও দেখেছেন বলে জানান। তিনি জানান, ভিডিওতে দুটি জায়গায় টাকা নেবার দৃশ্য দেখা গেছে এর একটি নগরীর মিতালী রেস্টুরেন্ট অন্যটি নগরীর পার্কের মোড় বা অন্য কোন জায়গায়। তবে বঙ্গবন্ধু হলের অফিসে টাকা নেবার কোন দৃশ্য নেই। তবে ঘটনাটি দুঃখজনক সে কারণে জরুরি ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক মাসুদুল হাসানকে প্রধান করে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে জানতে তদন্ত কমিটির প্রধান মাসুদুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তাকে তিন কার্যদিবসের সময় দেয়া হয়েছে সব সহযোগিতা করলে দ্রুতই প্রতিবেদন দেয়া হবে।