মায়ানমারের রাজনৈতিক সংকট

কূটনৈতিক উদ্যোগে সমাধানের চেষ্টা ইন্দোনেশিয়ার

মায়ানমারের রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যেই গতকাল রাস্তায় নেমে আরও বিক্ষোভ দেখানোর জন্য প্রস্তুত হয়েছে মায়ানমারের সামরিক জান্তা বিরোধী প্রতিবাদকারীরা। রয়টার্স

প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন, কর্তৃপক্ষের এমন হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও চলতি সপ্তাহের গত সোমবার দেশটির জান্তা বিরোধীরা বিশাল সমাবেশ ও সাধারণ ধর্মঘট করেছে। তারা ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি ও আটক অন্যদের মুক্তি দাবি করেছে। সামগ্রিকভাবে রাস্তায় প্রতিবাদকারীদের উপস্থিতি কম থাকলেও গতকাল দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের উত্তরাংশের মায়ানগোনে একটি বহুজাতিক সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে তারা। মায়ানমার সরকারের ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি নথি থেকে জানা গেছে, আজ ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি মায়ানমার যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন, সম্ভবত মায়ানমারের সঙ্কট সমাধানে একটি কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু করাই তার সফরের লক্ষ্য।

মায়ানমার গেলে ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে যাওয়া প্রথম বিদেশি দূত হবেন মারসুদি। মারসুদির উদ্যোগের ফলে জান্তা সরকারের সঙ্গে কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তাতে সু চির দলের জয় পাওয়া নভেম্বরের নির্বাচনের গুরুত্ব কমে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্নবোধ করছেন মায়ানমারের কিছু গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারী, তাই মারসুদির ভ্রমণকে তারা হয়তো স্বাগত চোখে দেখবেন না বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

মায়ানমার বিষয়ে একটি বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করার জন্য দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন রেতনো। জানা গেছে, জাকার্তা প্রস্তাব দিয়েছে ওই অঞ্চলের দেশগুলো পর্যবেক্ষক পাঠাবে এটি নিশ্চিত করতে যেন মায়ানমারের জেনারেলরা ‘সব দলকে নিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের’ আয়োজন করে।

ইয়াঙ্গুনে ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসের সামনে কয়েকশত লোক জড়ো হয়ে ওই নির্বাচন প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। মায়ানমারের মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের সেখানে আরেকটি প্রতিবাদ করার কথা রয়েছে।

মায়ানমারভিত্তিক আন্দোলনকারী গোষ্ঠী ‘ফিউচার ন্যাশন অ্যালায়েন্স’ এক বিবৃতিতে বলেছে, রেতনোর ভ্রমণ ‘সামরিক জান্তাকে স্বীকৃতি দেয়ার সমতুল্যই হবে’।

গোষ্ঠীটি দাবি করেছে, বিদেশি কর্মকর্তাদের ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের কমিটি সিআরপিএইচের ‘বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক’ প্রতিনিধি তিন লিন অং-য়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, রেতনো থাইল্যান্ডে আছেন আর তারপর ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও যেতে পারেন, কিন্তু কোন দেশ তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।

ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান মায়ানমারের নতুন নির্বাচনের পক্ষে নয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১২ ফাল্গুন ১৪২৭ ১২ রজব ১৪৪২

মায়ানমারের রাজনৈতিক সংকট

কূটনৈতিক উদ্যোগে সমাধানের চেষ্টা ইন্দোনেশিয়ার

image

সামরিক জান্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত - এপি

মায়ানমারের রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যেই গতকাল রাস্তায় নেমে আরও বিক্ষোভ দেখানোর জন্য প্রস্তুত হয়েছে মায়ানমারের সামরিক জান্তা বিরোধী প্রতিবাদকারীরা। রয়টার্স

প্রতিবাদকারীরা রাস্তায় নেমে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন, কর্তৃপক্ষের এমন হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও চলতি সপ্তাহের গত সোমবার দেশটির জান্তা বিরোধীরা বিশাল সমাবেশ ও সাধারণ ধর্মঘট করেছে। তারা ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চি ও আটক অন্যদের মুক্তি দাবি করেছে। সামগ্রিকভাবে রাস্তায় প্রতিবাদকারীদের উপস্থিতি কম থাকলেও গতকাল দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের উত্তরাংশের মায়ানগোনে একটি বহুজাতিক সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে তারা। মায়ানমার সরকারের ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি নথি থেকে জানা গেছে, আজ ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি মায়ানমার যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন, সম্ভবত মায়ানমারের সঙ্কট সমাধানে একটি কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু করাই তার সফরের লক্ষ্য।

মায়ানমার গেলে ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে যাওয়া প্রথম বিদেশি দূত হবেন মারসুদি। মারসুদির উদ্যোগের ফলে জান্তা সরকারের সঙ্গে কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তাতে সু চির দলের জয় পাওয়া নভেম্বরের নির্বাচনের গুরুত্ব কমে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্নবোধ করছেন মায়ানমারের কিছু গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারী, তাই মারসুদির ভ্রমণকে তারা হয়তো স্বাগত চোখে দেখবেন না বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

মায়ানমার বিষয়ে একটি বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করার জন্য দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন রেতনো। জানা গেছে, জাকার্তা প্রস্তাব দিয়েছে ওই অঞ্চলের দেশগুলো পর্যবেক্ষক পাঠাবে এটি নিশ্চিত করতে যেন মায়ানমারের জেনারেলরা ‘সব দলকে নিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের’ আয়োজন করে।

ইয়াঙ্গুনে ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসের সামনে কয়েকশত লোক জড়ো হয়ে ওই নির্বাচন প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। মায়ানমারের মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের সেখানে আরেকটি প্রতিবাদ করার কথা রয়েছে।

মায়ানমারভিত্তিক আন্দোলনকারী গোষ্ঠী ‘ফিউচার ন্যাশন অ্যালায়েন্স’ এক বিবৃতিতে বলেছে, রেতনোর ভ্রমণ ‘সামরিক জান্তাকে স্বীকৃতি দেয়ার সমতুল্যই হবে’।

গোষ্ঠীটি দাবি করেছে, বিদেশি কর্মকর্তাদের ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের কমিটি সিআরপিএইচের ‘বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক’ প্রতিনিধি তিন লিন অং-য়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, রেতনো থাইল্যান্ডে আছেন আর তারপর ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও যেতে পারেন, কিন্তু কোন দেশ তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।

ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান মায়ানমারের নতুন নির্বাচনের পক্ষে নয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।