বাড়িতে থেকেই সাজাভোগের আদেশ, পড়তে হবে দশটি বই

যশোরে মাদক মামলার আরও একটি ভিন্নধর্মী রায় দিয়েছেন আদালত। দু’বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পারভীন বেগমকে বাড়িতে থেকেই সাজাভোগের আদেশ দেন। তবে এ সময়ে বাড়িতে থেকে পড়তে হবে ১০টি। আর এটিসহ মানতে হবে ৮ শর্ত। সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে তাকে এই সাজ ভোগ করতে হবে। গতকাল যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস ভিন্নধর্মী এই রায় দিয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত পারভীন বেগম শহরের আশ্রম রোডের গাড়োয়ান পট্টির মৃত ওহাব মুন্সির মেয়ে। তবে শর্ত ভঙ্গ করা হলে তাকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত হয়ে কারাগারে অন্ত্যরীণ থাকতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের সরকারি কৌসুলি (এপিপি) আইয়ুব খান বাবুল।

রায় অনুযায়ী যে বইগুলো পড়তে হবে, সেগুলো হলো- ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি, নীলিমা ইব্রাহিমের আমি বীরঙ্গনা বলছি, মালেকা বেগমের মুক্তিযুদ্ধে নারী, মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আনিসুল হকের মা, জহির রায়হানের আরেক ফাগুন, একুশের গল্প, সেলিনা হোসেনের নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি ও যাপিত জীবন, শওকত ওসমানের আর্তনাদ ও সৈয়দ শামসুল হকের আরও একজন বই পাঠ করতে হবে। একই সঙ্গে অন্য শর্তগুলো হলো- সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে বাড়িতে থেকে কোন প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়ানো যাবে না।

সর্বত্র শান্তি বজায় রাখবেন এবং সবার সঙ্গে সদাচারণ করবেন। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে কখনও তলব করলে যথাস্থানে হাজির হবেন। কোন প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সঙ্গে মেলামেশা বা চলাফেরা করতে পারবেন না। আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে নিজের বাসস্থান ও জীবন ধারণের উপায় সম্পর্কে অবহিত করবেন। এই সময়কালীন প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ব্যতিত নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৫ জুন আসামি পারভীনকে আটক ও তার কাছ থেকে ২০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করে পুলিশ। এই মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১৫ বছরের মধ্যে আদালতে হাজিরা মিস করেননি পারভীন। এ মামলা ছাড়া তার আর কোন মামলাও নেই। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রমাণিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত শর্তযুক্ত করে বাড়িতে থেকে সাজা ভোগের রায় দিয়েছেন বিচারক। এর আগে গত মঙ্গলবার আরেকটি রায়ে আজিমন বেগম নামে এক নারীকে দু’বছর কারাদণ্ড দিয়ে একই ধরনের শর্তে বাড়িতে থাকার রায় দেয়া হয়েছিল। তবে আজিমনকে বই পড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১২ ফাল্গুন ১৪২৭ ১২ রজব ১৪৪২

ভাষা আন্দোলনে সদেনিরে কশিোরীরা

বাড়িতে থেকেই সাজাভোগের আদেশ, পড়তে হবে দশটি বই

যশোর অফিস

যশোরে মাদক মামলার আরও একটি ভিন্নধর্মী রায় দিয়েছেন আদালত। দু’বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পারভীন বেগমকে বাড়িতে থেকেই সাজাভোগের আদেশ দেন। তবে এ সময়ে বাড়িতে থেকে পড়তে হবে ১০টি। আর এটিসহ মানতে হবে ৮ শর্ত। সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে তাকে এই সাজ ভোগ করতে হবে। গতকাল যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস ভিন্নধর্মী এই রায় দিয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত পারভীন বেগম শহরের আশ্রম রোডের গাড়োয়ান পট্টির মৃত ওহাব মুন্সির মেয়ে। তবে শর্ত ভঙ্গ করা হলে তাকে ২ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দন্ডিত হয়ে কারাগারে অন্ত্যরীণ থাকতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের সরকারি কৌসুলি (এপিপি) আইয়ুব খান বাবুল।

রায় অনুযায়ী যে বইগুলো পড়তে হবে, সেগুলো হলো- ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি, নীলিমা ইব্রাহিমের আমি বীরঙ্গনা বলছি, মালেকা বেগমের মুক্তিযুদ্ধে নারী, মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আনিসুল হকের মা, জহির রায়হানের আরেক ফাগুন, একুশের গল্প, সেলিনা হোসেনের নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি ও যাপিত জীবন, শওকত ওসমানের আর্তনাদ ও সৈয়দ শামসুল হকের আরও একজন বই পাঠ করতে হবে। একই সঙ্গে অন্য শর্তগুলো হলো- সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে বাড়িতে থেকে কোন প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়ানো যাবে না।

সর্বত্র শান্তি বজায় রাখবেন এবং সবার সঙ্গে সদাচারণ করবেন। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে কখনও তলব করলে যথাস্থানে হাজির হবেন। কোন প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সঙ্গে মেলামেশা বা চলাফেরা করতে পারবেন না। আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে নিজের বাসস্থান ও জীবন ধারণের উপায় সম্পর্কে অবহিত করবেন। এই সময়কালীন প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ব্যতিত নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৫ জুন আসামি পারভীনকে আটক ও তার কাছ থেকে ২০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করে পুলিশ। এই মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১৫ বছরের মধ্যে আদালতে হাজিরা মিস করেননি পারভীন। এ মামলা ছাড়া তার আর কোন মামলাও নেই। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রমাণিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত শর্তযুক্ত করে বাড়িতে থেকে সাজা ভোগের রায় দিয়েছেন বিচারক। এর আগে গত মঙ্গলবার আরেকটি রায়ে আজিমন বেগম নামে এক নারীকে দু’বছর কারাদণ্ড দিয়ে একই ধরনের শর্তে বাড়িতে থাকার রায় দেয়া হয়েছিল। তবে আজিমনকে বই পড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়নি।