জিডিপিতে করের অবদান বৃদ্ধির বিকল্প নেই

জিডিপিতে করের অবদান বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান। গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা তার সঙ্গে গতকাল বিডা’র কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সালমান এফ. রহমান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাজস্ব আহরণ অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। তবে বাংলাদেশের জিডিপিতে করের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে কম। জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানোর জন্য, সবাইকে কর প্রদানে আগ্রহী হতে হবে। কর প্রদানের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বছর প্রায় ৫৫ হাজার নাগরিককে কর জাল-এর আওতায় নিয়ে এসেছে। কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিদ্যমান রাজস্ব কাঠামো যুগোপযোগীকরণ এবং ডিজিটাল ব্যবস্থার কার্যক্রম আরও দ্রুততার সাঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে বিশ^মানের বিমানবন্দরে পরিণত করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে, যা উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো ও এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বৈশি^ক বাণিজ্যের নেতিবাচক প্রভাব, বাণিজ্য যুদ্ধ, ব্রেক্সিট, স্বল্পন্নোত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং সর্বোপরি কোভিড-এর প্রভাবের কারণে দেশের বেসরকারি খাত বেশ প্রতিকূলতার মাঝে পরিচালিত হচ্ছে। ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা গ্রহণ করতে হলে বাংলাদেশকে ২৭টি শর্ত পূরণ করতে হবে। এমন বাস্তবতায় যথাসময়ে ইইউ-এর শর্তপূরণের কার্যক্রম তদারকি এবং ইইউ-এর সঙ্গে যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় করতে একটি ‘ন্যাশনাল স্ট্রাটেজি কমিটি’ প্রণয়ণ প্রয়োজন। দেশে ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় হ্রাস এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিডা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু করেছে, যা ব্যবসায়ীদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে। তবে এ সেবার কার্যকর প্রয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থায় দক্ষ জনবল নিয়োগে জোরারোপ করেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিশ^ব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বৈশি^ক বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে গেছে এবং উল্লিখিত সময়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এমতাবস্থায় বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের শিল্পনীতি, আমদানি-রপ্তানি নীতি, বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালাসহ সংশ্লিষ্ট সব নীতিমালার সমন্বয় খুবই জরুরি। কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে মূলধনের সীমা ২৫ লাখ টাকা এবং বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ ১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তা কিছুটা যৌক্তিকীকরণ করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানসমূহ একক মালিকানাধীন কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন হতে আগ্রহী হবে এবং এর মাধ্যমে কর আহরণের সীমা আরও বর্ধিত হবে।

শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১৩ ফাল্গুন ১৪২৭ ১৩ রজব ১৪৪২

জিডিপিতে করের অবদান বৃদ্ধির বিকল্প নেই

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

জিডিপিতে করের অবদান বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান। গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা তার সঙ্গে গতকাল বিডা’র কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সালমান এফ. রহমান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাজস্ব আহরণ অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। তবে বাংলাদেশের জিডিপিতে করের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে কম। জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানোর জন্য, সবাইকে কর প্রদানে আগ্রহী হতে হবে। কর প্রদানের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বছর প্রায় ৫৫ হাজার নাগরিককে কর জাল-এর আওতায় নিয়ে এসেছে। কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিদ্যমান রাজস্ব কাঠামো যুগোপযোগীকরণ এবং ডিজিটাল ব্যবস্থার কার্যক্রম আরও দ্রুততার সাঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে। কক্সবাজার বিমানবন্দরকে বিশ^মানের বিমানবন্দরে পরিণত করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে, যা উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো ও এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বৈশি^ক বাণিজ্যের নেতিবাচক প্রভাব, বাণিজ্য যুদ্ধ, ব্রেক্সিট, স্বল্পন্নোত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং সর্বোপরি কোভিড-এর প্রভাবের কারণে দেশের বেসরকারি খাত বেশ প্রতিকূলতার মাঝে পরিচালিত হচ্ছে। ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা গ্রহণ করতে হলে বাংলাদেশকে ২৭টি শর্ত পূরণ করতে হবে। এমন বাস্তবতায় যথাসময়ে ইইউ-এর শর্তপূরণের কার্যক্রম তদারকি এবং ইইউ-এর সঙ্গে যোগাযোগ আরও সুদৃঢ় করতে একটি ‘ন্যাশনাল স্ট্রাটেজি কমিটি’ প্রণয়ণ প্রয়োজন। দেশে ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় হ্রাস এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিডা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু করেছে, যা ব্যবসায়ীদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে। তবে এ সেবার কার্যকর প্রয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থায় দক্ষ জনবল নিয়োগে জোরারোপ করেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিশ^ব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বৈশি^ক বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে গেছে এবং উল্লিখিত সময়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এমতাবস্থায় বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের শিল্পনীতি, আমদানি-রপ্তানি নীতি, বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালাসহ সংশ্লিষ্ট সব নীতিমালার সমন্বয় খুবই জরুরি। কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে মূলধনের সীমা ২৫ লাখ টাকা এবং বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ ১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তা কিছুটা যৌক্তিকীকরণ করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানসমূহ একক মালিকানাধীন কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন হতে আগ্রহী হবে এবং এর মাধ্যমে কর আহরণের সীমা আরও বর্ধিত হবে।