বগুড়ার মেয়র প্রার্থী মান্নানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ

দুদকের দুর্নীতি মামলা

বগুড়ায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) ৩১ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবদুল মান্নান আকন্দকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে দুদকের মামলায় এই নির্দেশ দেন স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এমরান হোসেন চৌধুরী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া দুদকের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ। তিনি জানান, এসআইবিএলের ৩১ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলায় গতকাল চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিল। এতে আবদুল মান্নান আকন্দ অনুপস্থিত থাকার জন্য আবেদন দিয়েছিলেন। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে ওয়ারেন্ট জারি করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।

দুদকের করা ৩১ কোটি টাকা দুর্নীতির এই মামলায় আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে ২৬ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেনÑ ব্যাংকের বরখাস্ত কর্মকর্তা রফিকুল, আতিকুল কবির, মাহবুবুর রহমান, জালিয়াত চক্রের সদস্য মো. আকতার হোসেন, মো. জহুরুল হক, মো. এনামুল হক, মাকসুদুল হক ও ফেরদৌস আলম। গতকাল আদালতে আবদুল মান্নান ছাড়া সবাই উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ৩ নভেম্বর পর্যন্ত একটি সংঘবদ্ধ জালিয়াত ও অপরাধী চক্রের অন্যতম হোতা হিসেবে ব্যাংকের বগুড়া শাখার এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপক (সাময়িক বরখাস্ত) রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ শাখার ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (সাময়িক বরখাস্ত) মো. আতিকুল কবির, বগুড়া শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) মো. মাহবুবুর রহমানের যোগসাজশে ব্যাংকের গ্রাহকদের হিসাব থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই মামলা তদন্তের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নেয়া হয়। ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শুরু করেন প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক আখতার হামিদ ভূঞা। এরপর এ মামলার তদন্ত করেন উপ-পরিচালক সৈয়দ তাহসিনুল হক। পরে ২০১৪ সালের ৪ জুন তিনি আসামিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

পরে দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের (বগুড়া) তৎকালীন উপপরিচালক (বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত) মো. আনোয়ারুল হককে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। আনোয়ারুল এ ঘটনা তদন্ত করে নয়জনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেন ২০১৭ সালের আগস্টে।

সেই মামলায় চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিল গতকাল।

প্রসঙ্গত, আসন্ন বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে আবদুল মান্নান আকন্দ স্বতন্ত্র মেয়র পদে জগ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় পৌর আওয়ামী লীগের চার নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য আবদুল মান্নান আকন্দকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১৩ ফাল্গুন ১৪২৭ ১৩ রজব ১৪৪২

বগুড়ার মেয়র প্রার্থী মান্নানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ

দুদকের দুর্নীতি মামলা

প্রতিনিধি, বগুড়া

বগুড়ায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) ৩১ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আবদুল মান্নান আকন্দকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে দুদকের মামলায় এই নির্দেশ দেন স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এমরান হোসেন চৌধুরী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া দুদকের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ। তিনি জানান, এসআইবিএলের ৩১ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলায় গতকাল চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিল। এতে আবদুল মান্নান আকন্দ অনুপস্থিত থাকার জন্য আবেদন দিয়েছিলেন। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে ওয়ারেন্ট জারি করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।

দুদকের করা ৩১ কোটি টাকা দুর্নীতির এই মামলায় আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে ২৬ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেনÑ ব্যাংকের বরখাস্ত কর্মকর্তা রফিকুল, আতিকুল কবির, মাহবুবুর রহমান, জালিয়াত চক্রের সদস্য মো. আকতার হোসেন, মো. জহুরুল হক, মো. এনামুল হক, মাকসুদুল হক ও ফেরদৌস আলম। গতকাল আদালতে আবদুল মান্নান ছাড়া সবাই উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ৩ নভেম্বর পর্যন্ত একটি সংঘবদ্ধ জালিয়াত ও অপরাধী চক্রের অন্যতম হোতা হিসেবে ব্যাংকের বগুড়া শাখার এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপক (সাময়িক বরখাস্ত) রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ শাখার ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (সাময়িক বরখাস্ত) মো. আতিকুল কবির, বগুড়া শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) মো. মাহবুবুর রহমানের যোগসাজশে ব্যাংকের গ্রাহকদের হিসাব থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই মামলা তদন্তের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নেয়া হয়। ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শুরু করেন প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক আখতার হামিদ ভূঞা। এরপর এ মামলার তদন্ত করেন উপ-পরিচালক সৈয়দ তাহসিনুল হক। পরে ২০১৪ সালের ৪ জুন তিনি আসামিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

পরে দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের (বগুড়া) তৎকালীন উপপরিচালক (বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত) মো. আনোয়ারুল হককে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। আনোয়ারুল এ ঘটনা তদন্ত করে নয়জনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেন ২০১৭ সালের আগস্টে।

সেই মামলায় চার্জ গঠনের দিন ধার্য ছিল গতকাল।

প্রসঙ্গত, আসন্ন বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে আবদুল মান্নান আকন্দ স্বতন্ত্র মেয়র পদে জগ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ায় পৌর আওয়ামী লীগের চার নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সদস্য আবদুল মান্নান আকন্দকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।