বাগেরহাটে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে অর্থ-বাণিজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের নামে অর্থবাণিজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানেরা। গতকাল বেলা ১১টায় শরণখোলা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার স্বজনপ্রীতি ও অর্থবাণিজ্যের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার লিখিত অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে জমাদেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধদের অভিযোগ তালিকা থেকে বাদ পড়া অনলাইনে আবেদনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ১০২নং স্মারকে শরণখোলায় পত্র প্রেরণ করে। উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আফজাল হোসাইন, সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন ও সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ খালেক খান গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা বাছাই করেন। বাছাই কমিটি ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তিবার্তা ও উপস্থিত সম্মুখ যোদ্ধাদের সাক্ষী এবং সবাই ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেন।

কিন্তু ওই খসড়া তালিকা বাদ রেখে বাছাই কমিটি গোপনে ৩৪ জন অমুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্ত করে ৫৩ জনের নাম তালিকাভুক্ত করে জামুকায় প্রেরণ করে। বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বাদশা, হারুন অর রশিদ খান, আ. মালেক জোমাদ্দার, আবু জাফর জব্বার, ইউসুফ আলী হাওলাদার জানান, যাচাই-বাছাই কমিটির দুইজন সদস্য অনলাইনে আবেদনকারী দেড় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির নামে সর্বনি¤œ ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করেছেন।

এ সময় উপস্থিত অনলাইনে আবেদনকারী সুনিল শিকারী জানান, মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকাভুক্তির কথা বলে এক লাখ টাকা নিয়েও তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. মালেক মীর, আবদুল হালিম হাওলাদার, আবদুল খালেক হাওলাদার, রুহুল আমিন হাওরাদার ও ইউসুফ মুন্সি জানান, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে যে ৫৩ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তার ৩৪ জনই অমুক্তিযোদ্ধা এবং এরমধ্যে কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী রয়েছে। এমনকি এক নম্বর গেজেটের যাচাই-বাছাই করতেও ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন সাংবাদিকদের বলেন, কমিটিতে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপস্থিত সাক্ষীদের মতামতেরভিত্তিতে তালিকা করে জামুকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। বাছাই কমিটির সভাপতি এম আফজাল হোসাইন ও সদস্য এমএ খালেক খান অর্থবাণিজ্যের কথা অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগকারীদের নিয়ে ৫৩ জনের তালিকা করা হয়েছে। তাদের স্বার্থহানী ঘটায় আমাদের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১৩ ফাল্গুন ১৪২৭ ১৩ রজব ১৪৪২

বাগেরহাটে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে অর্থ-বাণিজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রতিনিধি, বাগেরহাট

বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের নামে অর্থবাণিজ্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানেরা। গতকাল বেলা ১১টায় শরণখোলা প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার স্বজনপ্রীতি ও অর্থবাণিজ্যের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার লিখিত অভিযোগ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে জমাদেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধদের অভিযোগ তালিকা থেকে বাদ পড়া অনলাইনে আবেদনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ১০২নং স্মারকে শরণখোলায় পত্র প্রেরণ করে। উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আফজাল হোসাইন, সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন ও সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ খালেক খান গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা বাছাই করেন। বাছাই কমিটি ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তিবার্তা ও উপস্থিত সম্মুখ যোদ্ধাদের সাক্ষী এবং সবাই ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেন।

কিন্তু ওই খসড়া তালিকা বাদ রেখে বাছাই কমিটি গোপনে ৩৪ জন অমুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্ত করে ৫৩ জনের নাম তালিকাভুক্ত করে জামুকায় প্রেরণ করে। বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বাদশা, হারুন অর রশিদ খান, আ. মালেক জোমাদ্দার, আবু জাফর জব্বার, ইউসুফ আলী হাওলাদার জানান, যাচাই-বাছাই কমিটির দুইজন সদস্য অনলাইনে আবেদনকারী দেড় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির নামে সর্বনি¤œ ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করেছেন।

এ সময় উপস্থিত অনলাইনে আবেদনকারী সুনিল শিকারী জানান, মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকাভুক্তির কথা বলে এক লাখ টাকা নিয়েও তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. মালেক মীর, আবদুল হালিম হাওলাদার, আবদুল খালেক হাওলাদার, রুহুল আমিন হাওরাদার ও ইউসুফ মুন্সি জানান, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে যে ৫৩ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তার ৩৪ জনই অমুক্তিযোদ্ধা এবং এরমধ্যে কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী রয়েছে। এমনকি এক নম্বর গেজেটের যাচাই-বাছাই করতেও ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন সাংবাদিকদের বলেন, কমিটিতে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপস্থিত সাক্ষীদের মতামতেরভিত্তিতে তালিকা করে জামুকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। বাছাই কমিটির সভাপতি এম আফজাল হোসাইন ও সদস্য এমএ খালেক খান অর্থবাণিজ্যের কথা অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগকারীদের নিয়ে ৫৩ জনের তালিকা করা হয়েছে। তাদের স্বার্থহানী ঘটায় আমাদের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।