দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজন ক্ষুদ্রঋণ খাতে আধুনিকায়ন

ক্ষুদ্রঋণ বা মাইক্রো ফিন্যান্স খাত আধুনিকায়নের মাধ্যমেই অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন সম্ভব। এই দুইয়ের সমন্বয়ে ২০৪১ সাল নাগাদ উচ্চ-আয়ের দেশের কাতারে যাবে বাংলাদেশ। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড আয়োজিত ‘মাইক্রো ফিন্যান্স খাতে আধুনিকায়নের শক্তি উন্মোচন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এই বিষয়ে সহমত পোষণ করেন অংশগ্রহণকারী বক্তারা।

ঐতিহ্যগতভাবে একটি মানব নিবিড় অপারেশন হলেও তৃণমূল পর্যায়ে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিতরণ থেকে শুরু করে ঋণ পরিশোধ সংগ্রহ প্রক্রিয়া আধুনিকায়নের উল্লেখযোগ্য সুযোগ, গ্রাহকের তথ্যাদি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশিক্ষণ ও পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাওয়া যাবে। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলো এই ইকোসিস্টেমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও মাইক্রো ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বর্ধনের জন্য যথেষ্ট নয়। আধুনিকায়নের মধ্য দিয়ে মাইক্রো ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলো বৃহত্তর দক্ষতা অর্জনে আগ্রহী যা মূলত তাদের অর্থনৈতিক খরচ কমাতে ও উন্নত সুবিধা প্রদানে সাহায্য করবে।

ওয়েবিনারে বক্তব্য রেখেছেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয়, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটি-এর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ, সাজিদা ফাউন্ডেশন-এর সিইও জাহিদা ফিজা কবির, বিকাশ-এর সিইও কামাল কাদির, টিএমএসএস-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, মো. আবদুল আওয়াল, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (সিডিএফ), মানবিক সাহায্য সংস্থার (এমএসএস) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনোয়ার রেজা খান এবং পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. সালেহ বিন শামস। মূল বক্তব্য পাঠ করেন লাইটক্যাসল পার্টনারস এর স্ট্র্যাটেজি, ফিন্যান্স অ্যান্ড কনসালটিং সার্ভিসেস ডিরেক্টর জাহেদুল আমিন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক-এর হেড অব ফিন্যান্সিয়্যাল ইনস্টিটিউশন্স আলমগীর মোরশেদ।

স্বাগত বক্তব্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও সমৃদ্ধির পাশাপাশি অবশ্যই সমন্বিত উন্নয়নও থাকতে হবে। মাইক্রো ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাম্য এলাকায় ক্ষুদ্র আয়ের মানুষদের চাকরি প্রদান, আয় ব্যবধান কমানো এবং বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তির অগ্রগতি বিশেষ করে নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অর্থায়নের সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশের প্রায় ৪০ মিলিয়ন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) সরবরাহকারীদের ওয়ালেট হোল্ডার এবং ১০০ মিলিয়ন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কল্যাণে এখন সময় এসেছে আধুনিক অবকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে মাইক্রো ফিন্যান্সের জন্য যুতসই সমাধান বের করা যা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের সম্প্রদায়কে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে।

দীর্ঘ ১১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকই দেশের একমাত্র বহুজাতিক ব্যাংক, যার রয়েছে বাংলাদেশে দৃঢ় স্থানীয় উপস্থিতি এবং এর বৈশ্বিক পরিধি ও পণ্য কাজে লাগানোর সক্ষমতার অনন্য এক সংমিশ্রণ। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একজন হিসেবে ব্যাংকটি নিজেই দেশে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসা এবং বিদেশি বিনিয়োগকে সহজ করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য লেনদেনের মধ্যে বাংলাদেশের একক বৃহত্তম বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগ লেনদেন, যা বাংলাদেশের জন্য এ যাবৎকালের একক বৃহত্তম ভোক্তা খাত অধিগ্রহণ ছিল তার এক্সক্লুসিভ ফিন্যান্সিয়্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেছে এই ব্যাংক। ২০১৮ সালে ব্যাংকটি ঢাকা স্টক এক্সেঞ্জে যেকোন বিদেশি স্টক একচেঞ্জের জন্য প্রথমবারের মতো সম-অংশগ্রহণ সুবিধা চালু করে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ শীর্ষক ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই ইভেন্টের অধীনে ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর, হংকং এবং লন্ডনে ছয়টি বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১৫ ফাল্গুন ১৪২৭ ১৫ রজব ১৪৪২

দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজন ক্ষুদ্রঋণ খাতে আধুনিকায়ন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ক্ষুদ্রঋণ বা মাইক্রো ফিন্যান্স খাত আধুনিকায়নের মাধ্যমেই অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি ও টেকসই উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন সম্ভব। এই দুইয়ের সমন্বয়ে ২০৪১ সাল নাগাদ উচ্চ-আয়ের দেশের কাতারে যাবে বাংলাদেশ। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড আয়োজিত ‘মাইক্রো ফিন্যান্স খাতে আধুনিকায়নের শক্তি উন্মোচন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এই বিষয়ে সহমত পোষণ করেন অংশগ্রহণকারী বক্তারা।

ঐতিহ্যগতভাবে একটি মানব নিবিড় অপারেশন হলেও তৃণমূল পর্যায়ে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিতরণ থেকে শুরু করে ঋণ পরিশোধ সংগ্রহ প্রক্রিয়া আধুনিকায়নের উল্লেখযোগ্য সুযোগ, গ্রাহকের তথ্যাদি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশিক্ষণ ও পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাওয়া যাবে। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলো এই ইকোসিস্টেমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও মাইক্রো ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বর্ধনের জন্য যথেষ্ট নয়। আধুনিকায়নের মধ্য দিয়ে মাইক্রো ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলো বৃহত্তর দক্ষতা অর্জনে আগ্রহী যা মূলত তাদের অর্থনৈতিক খরচ কমাতে ও উন্নত সুবিধা প্রদানে সাহায্য করবে।

ওয়েবিনারে বক্তব্য রেখেছেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয়, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটি-এর এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ, সাজিদা ফাউন্ডেশন-এর সিইও জাহিদা ফিজা কবির, বিকাশ-এর সিইও কামাল কাদির, টিএমএসএস-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, মো. আবদুল আওয়াল, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (সিডিএফ), মানবিক সাহায্য সংস্থার (এমএসএস) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনোয়ার রেজা খান এবং পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. সালেহ বিন শামস। মূল বক্তব্য পাঠ করেন লাইটক্যাসল পার্টনারস এর স্ট্র্যাটেজি, ফিন্যান্স অ্যান্ড কনসালটিং সার্ভিসেস ডিরেক্টর জাহেদুল আমিন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক-এর হেড অব ফিন্যান্সিয়্যাল ইনস্টিটিউশন্স আলমগীর মোরশেদ।

স্বাগত বক্তব্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও সমৃদ্ধির পাশাপাশি অবশ্যই সমন্বিত উন্নয়নও থাকতে হবে। মাইক্রো ফিন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাম্য এলাকায় ক্ষুদ্র আয়ের মানুষদের চাকরি প্রদান, আয় ব্যবধান কমানো এবং বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তির অগ্রগতি বিশেষ করে নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অর্থায়নের সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশের প্রায় ৪০ মিলিয়ন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) সরবরাহকারীদের ওয়ালেট হোল্ডার এবং ১০০ মিলিয়ন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কল্যাণে এখন সময় এসেছে আধুনিক অবকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে মাইক্রো ফিন্যান্সের জন্য যুতসই সমাধান বের করা যা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের সম্প্রদায়কে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে।

দীর্ঘ ১১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকই দেশের একমাত্র বহুজাতিক ব্যাংক, যার রয়েছে বাংলাদেশে দৃঢ় স্থানীয় উপস্থিতি এবং এর বৈশ্বিক পরিধি ও পণ্য কাজে লাগানোর সক্ষমতার অনন্য এক সংমিশ্রণ। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একজন হিসেবে ব্যাংকটি নিজেই দেশে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসা এবং বিদেশি বিনিয়োগকে সহজ করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য লেনদেনের মধ্যে বাংলাদেশের একক বৃহত্তম বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগ লেনদেন, যা বাংলাদেশের জন্য এ যাবৎকালের একক বৃহত্তম ভোক্তা খাত অধিগ্রহণ ছিল তার এক্সক্লুসিভ ফিন্যান্সিয়্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেছে এই ব্যাংক। ২০১৮ সালে ব্যাংকটি ঢাকা স্টক এক্সেঞ্জে যেকোন বিদেশি স্টক একচেঞ্জের জন্য প্রথমবারের মতো সম-অংশগ্রহণ সুবিধা চালু করে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট’ শীর্ষক ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই ইভেন্টের অধীনে ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর, হংকং এবং লন্ডনে ছয়টি বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।